স্বতঃসিদ্ধকারী ভবিষ্যদ্বাণী বলতে এমন এক ধরনের কল্পনাপ্রসূত ভবিষ্যদ্বাণীকে বোঝায়, যেখানে ঐ ভবিষ্যদ্বাণী সিদ্ধ হওয়া তথা ফলে যাবার ব্যাপারে কোনও ব্যক্তির বিশ্বাস বা প্রত্যাশার কারণে আসলেই সেটি সম্পূর্ণ কিংবা আংশিকভাবে বাস্তবায়িত হয়।[১][২] এই ব্যাপারটি ইঙ্গিত দেয় যে মানুষের বিশ্বাস তার নিজের বা তার আশেপাশের মানুষদের কর্মকাণ্ডকে প্রভাবিত করে। সহজ ভাষায় বলতে ভবিষ্যতের কোনও মিথ্যা বা কাল্পনিক পরিস্থিতির সাথে সংশ্লিষ্ট ভবিষ্যদ্বাণী, ভীতি বা উদ্বেগের প্রতি মানুষের মানসিক প্রতিক্রিয়ার কারণে ঐ পরিস্থিতিটি আসলেই বাস্তবে রূপ নিতে পারে।
মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী রবার্ট কে মের্টন ১৯৪৮ সালে প্রথম স্বতঃসিদ্ধকারী ভবিষ্যদ্বাণীর ইংরেজি পরিভাষা "সেলফ ফুলফিলিং প্রফেসি" (Self-fulfilling prophecy) প্রণয়ন করেন। তিনি এই পরিভাষাটি দিয়ে "কোনও পরিস্থিতির এমন একটি মিথ্যা সংজ্ঞাকে" বর্ণনা করেন, "যেটি এমন সব আচরণের সৃষ্টি করে যার ফলে ঐ আদি মিথ্যা ধারণাটি বাস্তবে রূপ নেয়।"[৩]
স্বতঃসিদ্ধকারী ভবিষ্যদ্বাণীর একটি উদাহরণ হল চিকিৎসাক্ষেত্রে ছলৌষধ বা প্লাসিবোর ব্যবহারজনিত ক্রিয়া। এক্ষেত্রে কোনও রোগীকে এমন একটি তথাকথিত "ঔষধ" প্রদান করা হয়, যার কোনও আরোগ্যমূলক বা নিরাময়মূলক ক্রিয়া থাকে না। কিন্তু দেখা যায় যে এই মিথ্যা চিকিৎসাতে বিশ্বাস আনার কারণে কোনও সক্রিয় ঔষধের ক্রিয়া ছাড়াই রোগীর শারীরিক অবস্থা উন্নতি লাভ করে। এ ব্যাপারটিকে ছলৌষধ ক্রিয়া (Placebo effect প্লাসিবো ইফেক্ট) বলে।
কোনও প্রদত্ত পরিবেশে একটি স্বতঃসিদ্ধকারী ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবে রূপলাভ করার সম্ভাবনা তিনটি নিয়ামক দ্বারা প্রভাবিত হয়: বাহ্যিক অবয়ব, প্রত্যক্ষণ (উপলব্ধি) ও বিশ্বাস।[৪] যখন কোনও ঘটনাকে চোখে দেখা যায় না, তখন স্বতঃসিদ্ধকারী ভবিষ্যদ্বাণীর প্রেক্ষাপটে সেটির বাহ্যিক অবয়ব বা চেহারার উপর নির্ভর করা হয়।[৪]
|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)