হওয়াম অংবি ঙাংবি দেবী | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | ১ আগস্ট ১৯২৪ |
মৃত্যু | ১২ জুন ২০১৪ |
সমাধি | ২১°০৬′১১″ উত্তর ৭২°২৭′৫১″ পূর্ব / ২১.১০৩০° উত্তর ৭২.৪৬৪১° পূর্ব |
পেশা | শাস্ত্রীয় নৃত্যশিল্পী, সঙ্গীতজ্ঞ |
দাম্পত্য সঙ্গী | হওয়াম আমোবা সিং |
পিতা-মাতা | কৈজাম বকুল সিং |
পুরস্কার | পদ্মশ্রী, ২০১০ সঙ্গীত নাটক একাডেমী পুরস্কার, ১৯৯৩ |
হওয়াম অংবি ঙাংবি দেবী (১ আগস্ট ১৯২৪ – ১২ জুন ২০১৪) একজন ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যশিল্পী, সঙ্গীতজ্ঞ।[১] তিনি মণিপুরী নৃত্য-এর লাই হারাওবা এবং রাস নৃত্যের পারদর্শিতার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।[২][৩][৪] ১৯৯৩ সালে তিনি সঙ্গীত নাটক একাডেমী পুরস্কার লাভ করেছিলেনে। ২০১০ সালে ভারত সরকার মণিপুরী শাস্ত্রীয় নৃত্যের ক্ষেত্রটিতে তাঁর অগ্রণী অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পদ্মশ্রী প্রদান করেন।[৫][৬]
১৯২৪ সালের ১ আগস্ট তারিখে মণিপুর-এর ইম্ফল-এর উরিপক বাচ্চস্পতি লেইকাইয়ে হওয়াম অংবি ঙাংবি দেবীর জন্ম হয়েছিল।[২] তাঁর পিতা কৈজাম বকুল সিংকেে স্থানীয়ভাবে সংকীর্তন পালা পরিবেশক বলে পরিচিত ছিলেন।[১][৭] হওয়াম অংবি ঙাংবি দেবী পাঁচ বছর বয়স থেকে মণিপুরী সংকীর্তন সংঘ-এ নৃত্য এবং গান শিখেছিলেন। ১৯৩০ সালে তিনি প্রথমবার কলকাতার জইপাইগুড়ি উৎসবে শিল্পী হিসাবে যোগদান করেছিলেন। পরে তিনি লাই হারাওবা, রাস এবং পাহাড়িয়া অঞ্চলের পারম্পরিক নৃত্যশৈলী অধ্যয়ন করেছিলেন। সেইসময়ে তিনি ১৯৩২ সাল থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত গুরু অটুমা সিং, য়ুমনাম ওজা নাটুম সিং, গুরু এম. আমুবি সিং[৮] এবং ঙানংম ওজা যোগিন্দ্র সিং ইত্যাদি বিখ্যাত ব্যক্তির কাছে নৃত্যের শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন।[২] তিনি ওস্তাদ মেইসনাম বিধু সিং এবং সিঙাখাম রাধাচন্দ্রণ সিংয়ের কাছে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের শিক্ষাও গ্রহণ করেছিলেন।[১][২]
হওয়াম অংবি ঙাংবি দেবী মণিপুর-এর প্রথম শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী। তিনি আকাশবাণীতে গান গাইতে আরম্ভ করেছিলেন এবং ১৯৪৮ সালে প্রথম মণিপুরী চলচ্চিত্র মাইনু পেমছার পার্শ্বসঙ্গীতশিল্পী হিসাবে গান গেয়েছিলেন।[১][৯] মণিপুরে জওহরলাল নেহরু মণিপুর নৃত্য একাডেমী প্রতিষ্ঠা হওয়ায়[১০] তিনি এর নৃত্য এবং সঙ্গীত বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে নিযুক্তি লাভ করেছিলেন।[২] তিনি এখানকার লাই হারাওবা নৃত্যের শিক্ষক ছিলেন।[১১] তিনি লাই হারাওবা নৃত্যের ওপরে গবেষণা করে প্রতিষ্ঠানটির জন্য পাঠ্যক্রম প্রস্তুত করেছিলেন। এর সাথে তিনি নিজেও ললিত কলা একাডেমী থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। তারপর ১৯৩৬ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত তিনি মণিপুর নাট্য সন্থা, রূপমহল থিয়েটার এবং আর্য থিয়েটারে অভিনেত্রী হিসাবে জড়িত ছিলেন।[১]
পরে তিনি ১৯৬৬ সালে জওহরলাল নেহরু মণিপুর নৃত্য একাডেমীর লোকনৃত্য বিভাগের প্রধান পদে অধিষ্ঠিত হন। ১৯৮৫ সালে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের উপাধ্যক্ষ পদে থাকায় চাকরির থেকে অবসর গ্রহণ করেন।[১][২] তিনি বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় এবং আন্তঃরাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেছিলেন।[১]
১৯৪১ সালে তিনি হওয়াম আমোবা সিংয়ের সঙ্গে বিবাহপাশে আবদ্ধ হয়েছিলেন এবং তাঁদের একজন পুত্র সন্তান আছে।[১] ২০১৪ সালের ১১ জুন তারিখে ইম্ফলের নিজ বাসভবনে তাঁর মৃত্যু হয়।[২]
হওয়াম অংবি ঙাংবি দেবী আসাম সরকার-এর থেকে বীরাঙ্গনা উপাধি লাভ করেছিলেন। ১৯৮০ সালে তিনি মণিপুর সরকারের অন্তর্গত মণিপুর রাজ্যিক কলা একাডেমী থেকে সোনার পদক লাভ করেছিলেন।[১][২] ১৯৮৫ সালে তাঁকে মণিপুরী সাহিত্য পরিষদ নৃত্য ভূষণ পুরস্কারে সম্মানিত করে।[১][২] ১৯৯৩ সালে তিনি সঙ্গীত নাটক একাডেমী পুরস্কার লাভ করেছিলেন।[৪] ২০১০ সালে ভারত সরকার মণিপুরী শাস্ত্রীয় নৃত্যের ক্ষেত্রটিতে তাঁর অগ্রণী অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পদ্মশ্রী প্রদান করেন।[১][২][৪]