হঠাৎ বৃষ্টি | |
---|---|
পরিচালক | বাসু চ্যাটার্জী |
প্রযোজক | গ্রামকো ফিল্মস (ভারত) আশির্বাদ চলচ্চিত্র (বাংলাদেশ) |
উৎস | কাধল কোট্টাই (তামিল) |
শ্রেষ্ঠাংশে | ফেরদৌস প্রিয়াঙ্কা ত্রিবেদী |
সুরকার | নচিকেতা চক্রবর্তী |
চিত্রগ্রাহক | শিরশা রায় |
সম্পাদক | সতীশ পাটনাকর |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১৫০ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ ভারত |
ভাষা | বাংলা |
হঠাৎ বৃষ্টি ১৯৯৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনায় একটি বাংলা ভাষার প্রণয়ধর্মী চলচ্চিত্র।[১] ছবিটি পরিচালনা করেছেন বাসু চ্যাটার্জী। প্রধান চরিত্রে অভিনয় ফেরদৌস ও প্রিয়াঙ্কা ত্রিবেদী। এটি ভারত ও বাংলাদেশে দারুণ ব্যবসায়ীক সাফল্য লাভ করে।[২]
এটি মূলত ১৯৯৬-এ জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত তামিল ভাষা'র কাধাল কত্তাই চলচ্চিত্রের পুনর্নির্মাণ[৩] এবং একই গল্পে বলিউড-এ নির্মাণ করা হয় স্রেফ তুম ছবিটি।
দীপা নন্দী (প্রিয়াঙ্কা ত্রিবেদী) একজন বেকার শিক্ষিত নারী। দীপা তারামতিতে তার বোন এবং বোনের স্বামী প্রেমেন্দ্র (রাইসুল ইসলাম আসাদ) এর সাথে থাকে। চাকরি সন্ধানে দীপা কলকাতায় যায়। সে তার বন্ধু অরুনার বাসায় উঠে। বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারের পরেও দীপা কোন চাকরি পায় না, ফলে দীপা তারামতিতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ট্রেনে করে তারামতিতে ফিরতে যাওয়ার সময় তার ব্যাগ ছিনতাই হয়ে যায়। যেই ব্যাগে তার সকল সার্টিফিকেট, টাকা সহ অনেক মূল্যবান কাগজপত্র ছিলো। সহযাত্রীরা তার টিকিটের জন্য অর্থ প্রদান করে এবং দীপা বাড়ি পৌঁছাতে সক্ষম হয়। তার শ্যালক তাকে ফিরতে দেখে ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করে।
এদিকে অজিত চৌধুরী (ফেরদৌস) ট্রেনে রাজস্থানের এক মরু দেশ জয়সালমের যাচ্ছিলেন। যেখানে তার চাকরির পোস্টিং ছিলো। ঘটনাচক্রে পকেটমার দীপার ব্যাগ থেকে টাকা নিয়ে ব্যাগটি ট্রেনে ফেলে দিয়েছিল। হঠাৎ ট্রেনের মধ্যে দীপা নন্দীর ব্যাগটি দেখতে পায় অজিত। এরপর সহযাত্রীর সাথে অজিতের আলোচনার সময় জানা যায় যে অজিত অনাথ। লোকের নাম এবং জন্মদিন সংগ্রহ করা এবং তাদেরকে জন্মদিনের কার্ড প্রেরণে তার শখ রয়েছে। জয়সালমের পৌঁছে হারাধন কুন্ডু বা কুন্ডু সিং (মনোজ মিত্র) এর সাথে মিলিত হয়। কুন্ডু সিংহের দাদা ঢাকা থেকে এসে একটি হোটেল স্থাপন করেছিলেন। তবে ব্যবসায় মন্দা হয় এবং কুন্ডুর এখনকার কাজ হয় দর্শনার্থীদের হোটেল ইত্যাদি পেতে সহায়তা করা। কুন্ডু সিং অজিতের জন্য একটি কক্ষের ব্যবস্থা করেন। এখানে অজিত তার পাশের ঘরের বাসিন্দা রূপমতীর সাথে মিলিত হয়।
অজিত পরে টেনে খুঁজে পাওয়া ব্যাগটি দীপা নন্দীর ঠিকানায় ফেরত পাঠায়। দীপা নন্দী ব্যাগটি পেয়ে খুশি হয়। এবং অবাক হয়ে অচেনা মানুষটির কথা ভাবে। এবং তার পরবর্তীতে তিনি চিঠির উওর পাঠায় অজিতকে। এভাবে অনেক চিঠি আদান-প্রদান হয়। টেলিফোনেও একদিন কথা হয়। কিন্ত সংযোগে সমস্যা থাকায় উভয়ের মধ্যে তেমন কথা হয় নি। একসময় তারা একে অপরের প্রেমে পড়ে যায়। এদিকে রূপমতী (জুন মালিয়া) অজিতের প্রতি মোহিত হয়ে অজিতকে মুগ্ধ করার জন্য কুন্ডু সিংহের কাছ থেকে বাংলা শব্দ শেখার চেষ্টা করে। কিন্তু কুণ্ডু সিংহ যখন দীপার সাথে অজিতের চিঠির বিষয়ে রূপমতীকে জানায়, রূপমতী বিরক্ত হয়ে অজিতের মুখোমুখি হয়।
অজিত প্রতি রবিবার দীপাকে ফোন করে এবং দীপা অজিতকে একটি টি-শার্ট প্রেরণ করে যাতে সে অজিতকে চিনতে পারে। এদিকে দীপা চাকরির জন্য একটি সাক্ষাত্কারের ডাক পায়। তার শ্যালক প্রেমেন্দ্র দীপার কলকাতায় যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। অন্যদিকে জয়সলমেরে, কোম্পানির প্রধান অজিতকে ইউনিয়নের ঝামেলা পরিচালনা করার জন্য কারখানায় নতুন দায়িত্ব নেওয়ার জন্য বলে। ইউনিয়নের নেতারা অজিতকে হুমকি দেয়। অজিত চেষ্টা করে চাকরি ছেড়ে কলকাতায় ফিরে যাবার। তবে কোম্পানি অজিতকে কলকাতায়ই বদলি করে। কলকাতায় যাওয়ার আগে রূপমতী অজিতের কাছে ক্ষমা চায়।
উভয়ই কলকাতায় যাওয়ার পর, অজিত ট্রেন স্টেশনে নেমে দীপার সাথে ধাক্কা খায় কিন্তু তারা একে অপরকে চিনতে পারে না। কলকাতায় গিয়ে তাদের চিঠি আদান-প্রদান বন্ধ হয়ে যায়৷ অজিত যে প্রতিষ্ঠানের কাজ পায় তার মালিকের মেয়ে ও অফিসের বস তার প্রেমে পড়ে। কিন্ত সে জানিয়ে দেয় যে সে অন্য একজনকে ভালোবাসে। কিন্ত বস তার উপর জোর করতে থাকে। এ থেকে বাঁচতে সে ঐ চাকরি ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে সিএনজি চালানো শুরু করে। অপরদিকে দীপা তারামাটিতে ফিরে যায়, অজিতের সাথে দীপার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দীপা খুব চিন্তায় পড়ে৷ একসময় তার বিয়েও ঠিক করে তার বোন ও দুলাভাই। এতে তিনি হতাশ হয়ে পড়ে। কিন্ত তবুও তিনি কলকাতা শহর আসেন। তিনি অজিতের অফিস এসে শুনতে পান যে অজিত চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। তবে বসের কাছে তার থাকার বাসার ঠিকানা নেন৷ উক্ত ঠিকানায় গিয়ে অজিতের অফিসের কর্মী যার সাথে তিনি থাকতেন, তার সাথে দেখা হয়। কিন্ত অজিত তখন আর তার সাথে থাকতেন না। সে তখন অন্য জায়গায় চলে গেছে। তবুও অফিসের কর্মী তাকে খুঁজিয়ে পাওয়ার আশ্বাস দেয়।
দীপা আর তার বান্ধবী অনেক চেষ্টা করেন৷ তাকে খুঁজতে দিশেহারা হয়ে যায়। একসময় অজিতের সাথে ট্যাক্সিতে দেখা হয়, তবে এর আগে দেখা না হওয়ায় একে অপরকে চিন্তে পায়নি। রাত হয়েছিলো সেই সাথে তুমুল বৃষ্টি। রাস্তায় তেমন গাড়ি ছিলো না। তাই তার গাড়িতে চরে নানা জায়গায় গিয়ে অজিতের খোঁজ করতে লাগলো। দীপা বৃষ্টিতে ভিজে গিয়েছিলো তাই অজিত তাকে তার বন্ধুর বাড়িতে নেমে কাপড় পরিবর্তন করার অনুরোধ জানায়। দীপা তাতে রাজি হয়। তার বন্ধুর বাড়িতে সেও কাপড় পরিবর্তন করে। সে দীপার দেওয়া টি-শার্টটি পরে কিন্ত তার উপর চাদর জড়িয়ে দেয়। ফলে দীপা সেটি দেখতে পায় না।
দীপা বাসা যাওয়ার জন্য স্টেশন ফেরার পথে তার বন্ধুর বাসায় যায় কিন্ত বাসা বন্ধ পায়। পাশের বাসার পরিচিত দিদির কাছে তাকে একটা চিঠি দিয়ে আসে৷ যে আমি এসেছিলাম, রাত ০৯:৩০ মিনিটের ট্রেনে বাসা ফিরবো।
দীপা যখন অজিতের ট্যাক্সিতে স্টেশন যাচ্ছিলো, তখন অপরদিকে তার বান্ধুবী যখন ট্যাক্সিতে বাসা ফিরছিলো। এই ড্রাইভার এবং অজিত একসাথে থাকতো৷ তার বান্ধবী এবং ড্রাইভার মধ্যে এক কথোপকথনে অজিত এবং দীপার মিল খুুুুঁজে পায়। দীপার বান্ধবী অবাক হয়ে তার নাম শুনতে চায়। শুনে সে চমকে উঠে বলে। এই সেই অজিত যাকে দীপা খুঁজছে। তার বান্ধবী যখন তার বাসায় চিঠি দেখতে পায় ও ততক্ষণাত সে ঐ ট্যাক্সিতে স্টেশন গিয়ে তাদেরকে খুঁজতে লাগে।
ট্রেন যখন ছেড়ে দেয়, দীপা তখন ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে। ঠিক তখনি অজিত তার চাদর শরীর থেকে সরাতেই তার টি-শার্ট দীপার চোখে। দীপা অজিত বলে চিৎকার করে ট্রেন থেকে নেমে আসে,অজিতও বুঝতে পেরে দৌড়ে যায় এবং দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে। ততক্ষণে তার বান্ধবী এবং ট্যাক্সি ড্রাইভারো এসে হাজির হয়।(এখানেই সিনেমাটির সমাপ্তি হয়)।
হঠাৎ বৃষ্টি গানের সংগীত পরিচালনা করেছেন নচিকেতা চক্রবর্তী। গানের কথা লিখেছেন সঞ্জীব তিওয়ারী।
নং. | শিরোনাম | রচয়িতা | শিল্পী | দৈর্ঘ্য |
---|---|---|---|---|
১. | "ছোট ছোট স্বপ্নের দিন" | সঞ্জীব তিওয়ারী | নচিকেতা চক্রবর্তী | |
২. | "একদিন স্বপ্নের দিন" | সঞ্জীব তিওয়ারী | নচিকেতা চক্রবর্তী, শিখা বসু | |
৩. | "সোনালী প্রান্তরে" | সঞ্জীব তিওয়ারী | নচিকেতা চক্রবর্তী | |
৪. | "রুক যা" | সঞ্জীব তিওয়ারী | কবিতা কৃষ্ণমূর্তি | |
৫. | "আমি জানতাম" | সঞ্জীব তিওয়ারী | স্বস্তিকা মিত্র | |
৬. | "ঘুম আসে না" | সঞ্জীব তিওয়ারী | নচিকেতা চক্রবর্তী |