হলদিয়া | |
---|---|
শহর | |
ডাকনাম: বন্দর নগরী | |
স্থানাঙ্ক: ২২°০২′ উত্তর ৮৮°০৪′ পূর্ব / ২২.০৩° উত্তর ৮৮.০৬° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
বিভাগ | মেদিনীপুর |
জেলা | পূর্ব মেদিনীপুর |
সরকার | |
• ধরন | পৌরসভা |
• শাসক | হলদিয়া পৌরসভা |
• সভাপতি (চেয়ারম্যান) | শ্যামল আদক |
আয়তন | |
• মোট | ১০২ বর্গকিমি (৩৯ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ২,০৭,৬৯৫ |
ওয়েবসাইট | purbamedinipur |
হলদিয়া পশ্চিমবঙ্গের ২৪তম জনবহুল শহর[১] ও হলদিয়া মহকুমার সদর কার্যালয়। শহরটি পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় অবস্থিত। হলদিয়া শহরের সম্পূর্ণ অংশ হলদিয়া মহকুমার মধ্যে বিস্তৃত হয়েছে। শহরের মূল আবাস অঞ্চলের বাইরের বেশিরভাগ অঞ্চল শিল্পাঞ্চল বা গ্রামীণ অঞ্চল। জনসংখ্যার ভিত্তিতে ভারতের শহরগুলির মধ্যে এটি ২৩১তম এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সর্বাধিক জনবহুল শহর। ২০১১ সালের জনগণনার পরে শহরটির জনসংখ্যা বেড়েছে এবং জুলাই ২০০১ সালের মার্চ মাস থেকে ২০১১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত জনসংখ্যা ৩০,১৪৫ জন বৃদ্ধি পেয়ে ২,০০,৮২৭ জন হয়। [১০] এটি জনসংখ্যার ভিত্তিতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বৃহত্তম পৌরসভা ও মহানগর। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী জনসংখ্যার ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গের শহরপুঞ্জগুলি মধ্যে ১৪তম স্থানে রয়েছে।
তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, পেট্রোলিয়াম পণ্য সম্পর্কিত শিল্পগুলি গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে অবস্থিত শহরটির অর্থনীতির বৃহত্তম খাত। শহরটির নিকতে কোন সক্রিয় তেলের ক্ষেত্রের অবস্থান না থাকলেও শিল্পে প্রয়োজনীয় তেলের যোগান মধ্যপাচ্যের থেকে আমদানির মধ্যমে পূরণ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের তেল শোধনাগার, বন্দর ও রাজ্য সরকারের সাথে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা হলদিয়া পেট্রোকেমিকাল প্রচুর সংখ্যক শ্রমিক নিয়োগ করে।
হলদিয়া পশ্চিমবঙ্গের একটি গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র-বন্দর ও শিল্পনগরী। হুগলি নদী মোহনার কাছে হুগলি ও হলদি নদীর মিলনস্থলে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮ মিটার উচ্চতায় হলদিয়া শহরটি অবস্থিত। হলদিয়া পুরসভা ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন বিভাগ এই শহরের প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত।
হলদিয়ায় ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর একটি ঘাঁটি অবস্থিত। উপকূলরক্ষী বাহিনীর ছয়টি হোভারক্র্যাফটের দুটি হলদিয়ার হোভার-বন্দরে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের একাধিক প্রথম সারির উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলদিয়ায় অবস্থিত হওয়ায় বর্তমানে হলদিয়া পরিণত হয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাকেন্দ্রে।
শহরটির অবস্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হল ২২°০২′ উত্তর ৮৮°০৪′ পূর্ব / ২২.০৩° উত্তর ৮৮.০৬° পূর্ব।[২] সমুদ্র সমতল হতে এর গড় উচ্চতা হল ৮ মিটার (২৬ ফুট)।
হালদিয়া জনসংখ্যা | |||
---|---|---|---|
আদমশুমারি | জনসংখ্যা | %± | |
১৯৯১ | ১,০০,৩৪৭ | — | |
২০০১ | ১,৭০,৬৭৩ | ৭০.১% | |
২০১১ | ২,০০,৮২৭ | ১৭.৭% | |
[৩] |
২০১১ সালের হিসেব অনুযায়ী, হালদিয়া পৌর এলাকার জনসংখ্যা ২,০০,৮২৭[৩] এবং হালদিয়া শহর অঞ্চলের মোট জনসংখ্যা ২,০৭,৬৯৫। লিঙ্গানুপাত প্রতি ১০০০ জন পুরুষে ৯১৬ জন নারী। এই হার জাতীয় লিঙ্গানুপাত হারের তুলনায় কম; তার কারণ, অনেক উপার্জনশীল পুরুষ তাদের পরিবারের মহিলা সদস্যদের গ্রামে রেখে শহরে কাজ করতে আসেন। হালদিয়া সাক্ষরতার হার ৮৯.০৬ শতাংশ; যা জাতীয় সাক্ষরতার হার ৭৪.০৪ শতাংশের তুলনায় বেশি।
হলদি নদীর তীরে অবস্থিত হলদিয়া টাউনশিপ ও দুর্গাচক শহরের প্রধান বসতাঞ্চল। হলদিয়ায় নদীর তীর এক মনোরম স্থান। বহু মানুষ নদীতীরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলদিয়ায় আসেন। এক সময়ে হলদিয়া থেকে কলকাতা পর্যন্ত ক্যাটাম্যারান পরিষেবা চালু ছিল। পরে অধিক ভাড়ার জন্য যাত্রীসংখ্যা কমে যাওয়ায় সেই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়।
কলকাতা শহরের ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ভারী পণ্য আনা-নেওয়ার উদ্দেশ্যে কলকাতার একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক বন্দর হিসেবে হলদিয়া বন্দর-শহরটি গড়ে তোলা হয়। এই শিল্পনগরীতে একাধিক ফ্যাক্টরি রয়েছে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাউথ এশিয়ান পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেড, ইন্ডিয়ান ওয়েল কর্পোরেশন লিমিটেড, এক্সাইড, শ ওয়ালেস, টাটা কেমিক্যালস, হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস ও হিন্দুস্তান ইউনিলিভার। এছাড়াও হলদিয়াতে একাধিক মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে উঠেছে। হলদিয়া বন্দরে মিৎসুবিসি কেমিক্যাল কোম্পানির মতো বিদেশি কোম্পানির ফ্যাক্টরিও গড়ে উঠেছে। স্থাপিত হয়েছে ড্রেজিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেডের মতো কোম্পানিও। শেষোক্ত কোম্পানিটি হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালসের সহকারী শিল্প হিসেবে স্থাপিত হয়েছিল। হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস ভারতে এই ধরনের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রকল্প।
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)