হাফ অব আ ইয়েলো সান (ইংরেজি: Half of a Yellow Sun) নাইজেরীয় লেখক চিমামান্ডা এনগোজি আডিচি রচিত একটি উপন্যাস। ২০০৬ সালে লন্ডনের ফোর্থ এস্টেট থেকে প্রকাশিত বইটিতে ওলানা, উগউ, ও রিচার্ড নামক চরিত্রের দৃষ্টিকোণ থেকে বায়াফ্রান যুদ্ধের গল্প বর্ণিত হয়েছে।[২]
২০০৭ সালে হাফ অব আ ইয়েলো সান কল্পকাহিনীতে উইমেন্স পুরস্কার অর্জন করে।[৩] ২০১৯ সালে দ্য গার্ডিয়ান-এর ২০০০ সাল পরবর্তী সেরা বইয়ের তালিকায় ১০ম স্থান লাভ করে[৪] এবং বিবিসি নিউজ-এর ১০০ "সবচেয়ে অনুপ্রেরণাদায়ী" উপন্যাসের তালিকায় তালিকাভুক্ত হয়।[৫]
- উগউ - উপন্যাসটি শুরু ও শেষ হয় উগউকে দিয়ে। সে ওপি গ্রামের এক বালক, যে পরবর্তীকালে ওডেনিগবোর গৃহপরিচারক হিসেবে কাজ করে। ওডেনইগবো ও ওলানার অধীনে উগউ পড়াশোনা চালিয়ে যায় এবং উপন্যাস জুড়ে তার সাহিত্য দক্ষতার বিকাশ ঘটে। সে তার মা ও বোনের সাথে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করে এবং তার মায়ের স্বাস্থ্য ও সুস্থতার খোঁজ রাখে। বায়াফ্রান সেনাবাহিনীতে জোর করে তাকে যুক্ত করা হলে তার জীবনযাত্রা ব্যহত হয়। সেখানে সে ভয়াবহ যুদ্ধের সম্মুখীন হয় এবং বাধ্য হয়ে ধর্ষনে লিপ্ত হয়।
- ওডেনিগবো - ওডেনিগবো এনসুকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক। তার সূক্ষ্ম মতবাদের কারণে কিছু চরিত্র তাকে "বিপ্লবী' বলে আখ্যা দেয়। তিনি পুঁজিবাদ ও প্যান-আফ্রিকানবাদ বা জাতীয়তাবাদের চেয়ে সমাজতন্ত্র ও সম্প্রদায়বাদের প্রতি বেশি আকৃষ্ট ছিলেন। যুদ্ধ শুরু হলে এনসুকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদ থেকে তাকে অব্যহতি নিতে বাধ্য করা হলে তিনি যুদ্ধে সক্রিয় হন।
- ওলানা - ওলানা এই উপন্যাসের বর্ণনাকারী তিনটি চরিত্রের একটি। তিনি ওজোবিয়ার কন্যা এবং কাইনেনির যমজ বোন। ওলানা নাইজেরিয়ায় বেড়ে ওঠে এবং পরে যুক্তরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। পেশাগতভাবে তিনি এনসুকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক। যুদ্ধের পর তিনি উমুয়াহিয়ার একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করেন এবং ওরলুর শরণার্থীদের সেবার্থে তার বোনকে সহায়তা করেন।
- কাইনেনি - কাইনেনি ওলানার যমজ বোন এবং প্রথম দর্শনে তাকে ওলানার থেকে অনেক আলাদা মনে হবে। তিনি স্বাধীনচেতা, শান্ত এবং খুবই হিসেবী। কাইনেনি পোর্ট হারকোর্টে বাস করেন, সেখানে তার বাবার ব্যবসা রয়েছে। তার বাবা তাকে নিয়ে গর্ব করে এক বন্ধুকে বলেন যে সে "শুধু ছেলের মতই নয়, সে দুইজনের সমতুল্য"। যুদ্ধের শুরুতে তিনি যুদ্ধ থেকে মুনাফা অর্জনকারী ছিলেন। কিন্তু যুদ্ধের বিভীষিকা দেখার পর তার চরিত্রে সম্পূর্ণ পরিবর্তন আসে এবং তার বাবার ব্যবসা দেখাশোনার পরিবর্তে তিনি শরণার্থী শিবির পরিচালনা করেন।
নাট্যকার বিয়ি বান্ডেলে এই উপন্যাসের চলচ্চিত্র উপযোগী চিত্রনাট্য রচনা করেন।[৬] ২০১৩ সালে টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে চলচ্চিত্রটি উদ্বোধনী প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয় এবং ২০১৪ সালে বিশ্বব্যাপী মুক্তি পায়। এই চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন চুয়াটেল এজিওফর এবং ট্যান্ডি নিউটন।[৭]