ব্যক্তিগত তথ্য | |||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | হাভিয়ের চিচারিতো এর্নান্দেস বালকাসার[১] | ||||||||||
জন্ম | ১ জুন ১৯৮৮ | ||||||||||
জন্ম স্থান | গুয়াদালাহারা, মেক্সিকো | ||||||||||
উচ্চতা | ১.৭৫ মি (৫ ফু ৯ ইঞ্চি)[২] | ||||||||||
মাঠে অবস্থান | স্টাইকার | ||||||||||
ক্লাবের তথ্য | |||||||||||
বর্তমান দল | ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড | ||||||||||
জার্সি নম্বর | ১৪ | ||||||||||
যুব পর্যায় | |||||||||||
১৯৯৭–২০০৬ | গুয়াদালাহারা যুব দল | ||||||||||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* | |||||||||||
বছর | দল | ম্যাচ | (গোল) | ||||||||
২০০৬–২০১০ | গুয়াদালাহারা | ৬৪ | (২৬) | ||||||||
২০১০– ২০১৩ | ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড | ৮৯ | (৩৪) | ||||||||
জাতীয় দল‡ | |||||||||||
২০০৭ | মেক্সিকো অনূর্ধ্ব-২০ দল | ২ | (১) | ||||||||
২০০৯– | মেক্সিকো জাতীয় দল | ৫৭ | (৩৫) | ||||||||
অর্জন ও সম্মাননা
| |||||||||||
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে এবং ১ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখ অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিক। ‡ জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা ২৬ অক্টোবর ২০১৩ (ইউটিসি) তারিখ অনুযায়ী সঠিক। |
হাভিয়ের এর্নান্দেস বালকাসার (স্পেনীয় উচ্চারণ: [xaˈβjeɾ erˈnandes]; জন্ম ১ জুন ১৯৮৮) একজন মেক্সিকান পেশাদার ফুটবলার যিনি প্রিমিয়ার লিগ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও মেক্সিকো জাতীয় দলে একজন আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলে থাকেন। তার ডাক নাম চিচিরিতো। ইউনাইটেডে খেলার পুর্বে তিনি মেক্সিকান ক্লাব গুয়াদালাহারায় খেলেছেন। মেক্সিকান খেলোয়াড়দের মধ্যে তিনিই সর্বপ্রথম যুক্তরাজ্যের প্রিমিয়ার লিগের বড় দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলেছেন। মেক্সিকোর হয়ে এর্নান্দেসের অভিষেক ঘটে কলম্বিয়ার বিপক্ষে, সেপ্টেম্বর ২০০৯ সালে। তিনি ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপ এবং ২০১১ কনকাকাফ গোল্ড কাপে মেক্সিকোর প্রতিনিধিত্ব করেছেন। কনকাকাফ গোল্ড কাপে ৭টি গোল করেন এবং টুর্নামেন্টের সবচেয়ে মূল্যবান খেলোয়াড় নির্বাচিত হন।[৩] এর্নান্দেস যৌথভাবে মেক্সিকোর তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা।[৪]
এর্নান্দেসের জন্ম মেক্সিকোর গুয়াদালাহারায় এবং তিনি ৭ বছর বয়সে প্রথম একটি বিনোদনমূলক টুর্নামেন্টে খেলেন। তার বাবা, হাভিয়ের এর্নান্দেস গুতিয়েরেস, যিনি নিজে মেক্সিকো জাতীয় দলের একজন স্ট্রাইকার, বলেন যে তিনি কোনওদিন ধারণা করেননি যে তার ছেলে পেশাদার ফুটবল খেলবে। এর্নান্দেস ১৫ বছর বয়সে সিডি গুয়াদালাহারা ফুটবল ক্লাবে যোগ দেন।[৫] তিনি ২০০৫ অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে খেলার জন্য ডাক পেলেও চোটের কারণে খেলতে পারেননি; যদিও মেক্সিকো টুর্নামেন্টটি জিতে নেয়।[৬]
এর্নান্দেস শিভাসের লোয়ার ডিভিশন দল শিভাস চোরাসের হয়ে ২০০৫-০৬ মৌসুমে খেলা শুরু করেন। ২০০৬ অ্যাপারচুরায় নেক্সাকার বিরুদ্ধে তার অভিষেক ঘটে। ৮২ মিনিটে খেলার স্কোর ৩-০ থাকা অবস্থায় তিনি ওমর ব্রাভোর বদলী হিসেবে মাঠে নামেন এবং ৫ মিনিট পরে দলের ৪র্থ গোল করেন। ২০০৬-০৭ মৌসুমে তার খেলা ৭টি এটিই ছিল তার একমাত্র গোল। ২০০৭-০৮ মৌসুমেও তিনি ৬টি খেলায় মাঠে গোলশূন্য থাকেন।
এর্নান্দেস ২০০৮ প্রিমেরা ডিভিশন দে অ্যাপারচুরায় ১০ খেলায় মাঠে নামলেও একটিও গোল করতে পারেননি। ২০০৯ প্রিমেরা ডিভিশন দে ক্লাউসুরাতে তিনি ১৫ খেলায় ৪ গোল করেন। ২০০৯ সালের অ্যাপারচুরায় তিনি ১৭ খেলায় ১১ গোল করেন যা তাকে লিগে যৌথভাবে ৩য় সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে বসায়।[৭] ২০০৯-১০ প্রিমেরা ডিভিশন দে মেক্সিকোতে, তিনি প্রথম ৫ খেলায় ৮ গোল করেন।[৮] ওই মৌসুমে ইনজুরির কারণে ৫ টি খেলতে না পারা সত্ত্বেও তিনি ১১ ম্যাচে ১০ গোল করে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন।[৯]
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এর্নান্দেসের সম্পর্কে প্রথম জানতে পারে ২০০৯ সালের অক্টোবরে। তাই ডিসেম্বর মাসে তারা একজন স্কাউটকে মেক্সিকোতে পাঠায় তার খেলা পর্যবেক্ষণ করার জন্য। ওই স্কাউট তাকে কয়েকটি খেলায় পর্যবেক্ষণ করেন এবং তার সম্পর্কে ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষকে ইতিবাচক ধারণা দেন। এর্নান্দেসের বয়স তখনও কম থাকার কারণে ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষ তাকে দলে নিয়ে আসার ব্যাপারে একটু অপেক্ষা করতে চাইছিল। কিন্তু ২০১০ বিশ্বকাপে তার অংশগ্রহণের সম্ভবনা তৈরি হওয়ায়, ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষ অনেকটাই তাড়াহুড়া করে তার জন্য বিড করে। এইজন্যে ইউনাইটেডের প্রধান স্কাউট জিম লওয়ারকে মেক্সিকোতে পাঠায়, যিনি তাকে ফেব্রুয়ারি মার্চ অবধি তাকে পর্যবেক্ষণ করে এবং তার সম্পর্কে আবার একটি ইতিবাচক রিপোর্ট দেয় যার ফলশ্রুতিতে ক্লাবের আইনজীবীরা মেক্সিকোতে গিয়ে তার সাথে চুক্তিসম্পন্ন করে।[১০]
০৮ এপ্রিল ২০১০ সালে, এর্নান্দেস ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া সাপেক্ষে অপ্রকাশিত পরিমাণ বেতনে ইউনাইটেডে খেলার জন্য চুক্তি সম্পন্ন করতে সম্মত হয়[১১] এর আগের দিন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বায়ার্ন মিউনিখের বিরুদ্ধে ম্যাচটিতে তিনি ওল্ড ট্রাফোর্ডে উপস্থিত ছিলেন।[১২] এই চুক্তিটি এতটাই গোপনীয়তার মধ্যে করা হয় যে এর্নান্দেসের এজেন্টও এর ব্যাপারে কিছুই জানতেন না।[১৩][১৪] চুক্তির শর্তমতে ৩০ জুলাই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড শিভাসের বিরুদ্ধে তাদের নতুন স্টেডিয়াম এস্তাদিও শিভাসে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলে।[১৫] ২৭ মে তিনি ইউনাইটেডে খেলার জন্য ওয়ার্ক পারমিট পান এবং ১ জুলাই তার সাথে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করা হয়।[১৬]
এর্নান্দেসের অভিষেক ঘটে ২৮ জুলাই ২০১০ সালে এমএলএস অল স্টারের বিরুদ্ধে। ওই ম্যাচের ৬৩তম মিনিটে তিনি ন্যানির বদলী হিসেবে মাঠে নামেন এবং তার ১৮ মিনিট পর ইউনাইটেডের হয়ে নিজের প্রথম গোল করেন। ড্যারেন ফ্লেচারের দূর থেকে আগিয়ে দেয়া বলটিকে তিনি অত্যন্ত চতুরতার সহিত নিক রিমান্ডোর মাথার উপর দিয়ে জালে পাঠিয়ে দেন।[১৭] এর দুইদিন পরে তিনি শিভাসের হয়ে প্রীতি ম্যাচে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে গোল করেন। ওই খেলায় প্রথমার্ধে তিনি শিভাসের হয়ে খেলা শুরু করেন এবং খেলা শুরু হওয়ার ৮ মিনিটের মাথায় গোল করেন; দ্বিতীয়ার্ধে তিনি জার্সি পরিবর্তন করে ইউনাইটেডের পক্ষে খেলেন।[১৮] আয়ারল্যান্ড লিগের ১ম একাদশের বিরুদ্ধে প্রাকমৌসুম সফরের টানা তিন খেলায় গোল করার কৃতিত্ব অর্জন করেন;খেলায় ইউনাইটেড ৭-১ গোলে জয় পায়।[১৯]
৮ই আগস্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপুর্ন খেলায় কমিউনিটি শিল্ড কাপে চেলসির বিরুদ্ধে অভিষেক ঘটে। দ্বিতীয়ার্ধে বদলী হিসেবে নামা এর্নান্দেস একটি গোল করেন এবং খেলায় ইউনাইটেড ৩-১ গোলে জয়লাভ করে[২০] ১৬ আগস্ট তার প্রিমিয়ার লিগে অভিষেক নিউক্যাসেল ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ডে। ঘরের মাঠে ওই খেলায় ৬৩ মিনিটে তিনি ওয়েইন রুনির বদলী হিসেবে মাঠে নামেন;খেলায় ইউনাইটেড ৩-০ গোলে জয়লাভ করেন।[২১] ২৯ সেপ্টেম্বর ভালেনসিয়ার বিরুদ্ধে তিনি তার প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ গোল করেন। বদলী হিসেবে মাঠে নেমে খেলার একমাত্র গোল করেন যার ফলে ইউনাইটেড ১-০ গোলে জয়লাভ করে।[২২] ১৬ অক্টোবর লিগে তিনি তার প্রথম গোল করেন ওয়েস্ট ব্রমের বিরুদ্ধে; ইউনাইটেডের ঘরের মাঠে হওয়া ওই খেলায় ২-২ গোলে ড্র হয়[২৩] এর ৮ দিন পরে তিনি স্টোক সিটির বিপক্ষে জোড়া গোল করেন, যার উপর ভিত্তি করে ইউনাইটেড ২-১ গোলে জয়লাভ করেন।[২৪]
ওই পারফর্মেন্সের দুই দিন পর লিগ কাপে তিনি শেষ মুহূর্তে ইউনাইটেডের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন যেটি আবার ছিল লিগ কাপে তার প্রথম গোল;খেলায় ইউনাইটেড উলভারহ্যাম্পটনকে ৩-২ গোলে পরাজিত করে কোয়ার্টার ফাইনালে উন্নীত হয়।[২৫][২৬] ৪ জানুয়ারি তিনি স্টোক সিটির বিরুদ্ধে গোল করেন যার ফলে তিনি মেক্সিকান খেলোয়াড়দের মধ্যে প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ গোল করার কৃতিত্ব অর্জন করেন।[২৭] ৮ই মে চেলসির বিপক্ষে খেলা শুরুর ৩৬ সেকেন্ডের মাথায় তিনি গোল করেন।[২৮] ওই গোলের ফলে রুড ভ্যান নিলস্টরয়ের পর তিনিই একমাত্র অভিষেক মৌসুমে ২০ গোল করার কৃতিত্ব অর্জন করেন।[২৯] ১৮ই মে তিনি ভক্তদের ভোটে স্যার ম্যাট বেবসি প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার জিতেন।[৩০] ০৫ জুলাই ২০০১ সালে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ফুটবল হিস্টোরি অ্যান্ড স্ট্যাটিকস তাকে "ওয়াল্ড গোলগেটার ২০১১" নামে ভূষিত করে।[৩১]
ক্লাব | মৌসুম | লিগ | কাপ | লিগ কাপ | কন্টিনেন্টাল | অন্যান্য | সর্বমোট | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | ||
গুয়াদালাহারা | ২০০৬-০৭ | ৮ | ১ | ০ | ০ | – | ১ | ০ | ০ | ০ | ৯ | ১ | |
২০০৭-০৮ | ৬ | ০ | ০ | ০ | – | ৪ | ০ | ১ | ০ | ১১ | ০ | ||
২০০৮-০৯ | ২২ | ৪ | ৩ | ০ | – | ৭ | ৩ | ০ | ০ | ৩২ | ৭ | ||
২০০৯-১০ | ২৮ | ২১ | ০ | ০ | – | ০ | ০ | ০ | ০ | ২৮ | ২১ | ||
সর্বমোট | ৬৪ | ২৬ | ৩ | ০ | – | ১২ | ৩ | ১ | ০ | ৮০ | ২৯ | ||
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড | ২০১০-১১ | ২৭ | ১৩ | ৫ | ১ | ৩ | ১ | ৯ | ৪ | ১ | ১ | ৪৫ | 20 |
২০১১-১২ | ২৮ | ১০ | ১ | ০ | ০ | ০ | ৭ | ২ | ০ | ০ | ৩৬ | ১২ | |
২০১২-১৩ | ২২ | ১০ | ৬ | ৪ | ২ | ১ | ৬ | ৩ | – | ৩৬ | ১৮ | ||
২০১৩-১৪ | ১২ | ১ | ০ | ০ | ৩ | ৩ | ৩ | ০ | ০ | ০ | ১৮ | ৪ | |
সর্বমোট | ৮৯ | ৩৪ | ১২ | ৫ | ৪ | ৫ | ২৫ | ৯ | ১ | ১ | ১৩৫ | ৫৪ | |
পেশাদারী ক্রীড়াজীবন সর্বমোট | ১৫২ | ৬০ | ১৫ | ৫ | ৮ | ৫ | ৩৭ | ১২ | ২ | ১ | ২১৪ | ৮৩ |
২১ ডিসেম্বর ২০১৩ পর্যন্ত সঠিক[৩২][৩৩][৩৪][৩৫][৩৬]
মেক্সিকো জাতীয় দল | ||
---|---|---|
বছর | উপস্থিতি | গোল |
২০০৯ | ১ | ০ |
২০১০ | ১৯ | ১১ |
২০১১ | ১৩ | ১২ |
২০১২ | ১০ | ৫ |
২০১৩ | ১৪ | ৭ |
সর্বমোট | ৫৭ | ৩৫ |
২৬ অক্টোবর ২০১৩ পর্যন্ত সঠিক[৩৭]