উৎপত্তিস্থল | উত্তর আমেরিকা |
---|---|
প্রধান উপকরণ | ভুট্টাগুঁড়া |
হাশপাপি হল একধরনের ছোট গোলাকার মুখরোচক সুখাদ্য যা ভুট্টার গুঁড়ো দিয়ে তৈরি ব্যাটার ডুবো তেলে ভেজে তৈরি করা হয়। হাশপাপিকে প্রায়শই সামুদ্রিক খাবার এবং অন্যান্য ডুবো তেলে ভাজা খাবারের সাথে পার্শ্ব খাবার হিসাবে পরিবেশন করা হয়।
রান্নায় ভুট্টা ব্যবহার আদিবাসী আমেরিকানদের মধ্যে শুরু হয়েছিল। এই আদিবাসী আমেরিকান লোকেরা প্রথম সফলভাবে ভুট্টা চাষ করেছিল। চেরোকি, চিকাসও, চক্টো, ক্রিক এবং সেমিনোল ইত্যাদি স্থানীয় জনজাতিদের রান্নার প্রধান উপাদানগুলির মধ্যে একটি হল ভুট্টা যা খাবারে পিষে মেশানো। তারা ভুট্টার উপর ক্ষারীয় লবণ ও লেবু মাখিয়ে খাবার হিসাবে গ্রহন করত। এটি একটি আদিবাসী আমেরিকান খাদ্যাভ্যাসের প্রনালী যা নিক্সটামালাইজেশন নামে পরিচিত।[১] মার্কিন গৃহযুদ্ধের সময় কর্নব্রেড (ভুট্টার আটায় তৈরি রুটি) বেশ জনপ্রিয় ছিল কারণ এটি সস্তা ছিল এবং বিভিন্ন আকারের তৈরি করা হত।
হাশপাপি শব্দটি প্রথম নথিভুক্ত হয় ১৮৯৯ সালে।[২] এই নামের উৎস সম্পর্কে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র নেই। জনৈক ব্যক্তি দাবি করেন যে শিকারী, জেলে বা বাবুর্চি পেশার সাথে যুক্ত মানুষদের থেকে এই খাবারের নামকরন হয়েছে। তারা কিছু মৌলিক ভুট্টার মিশ্রণ দিয়ে তৈরি এই খাবার তাদের পোষা কুকুরছানাদের (ইংরেজিতে কুকুরছানাকে পাপি বলা হয়) খাওয়াতেন। তাদের রান্নার সময় যাতে তাদের পোষা কুকুরেরা চুপ (ইংরেজি হাশ) করে থাকে এবং তাদের বিরক্ত না করে তাই তারা কুকুরদের এটি খাওয়াতেন।[৩] এই লোককথা থেকেই এই হাশপাপি নামের উৎপত্তি। এটি দক্ষিণ ক্যারোলিনা নদী অঞ্চলের খাবার রেড-হর্স ব্রেড -এর অনুরূপ বলে দবি করা হয়। প্রাক্তন ক্রীতদাস রাধুনী রোমিও গোভানের নামের সাথে যুক্ত এই রেড-হর্স ব্রেড তৈরি করতে প্রায় একই উপাদান ব্যবহার হয় বলে জানা যায়।[৪] মনে করা হয় এই রেড-হর্স ব্রেড ১৯২৭ সালের দিকে জর্জিয়াতে হাশপাপি নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। তারপর ১৯৪৩ সালের দিকে ফ্লোরিডায় এটি জাতীয় আকর্ষণ হয়ে ওঠে।[৫]
হাশপাপির সাধারণ উপাদানগুলির মধ্যে রয়েছে কর্নমিল (ভুট্টা গুড়ো), গমের আটা, ডিম, লবণ, বেকিং সোডা, দুধ বা বাটারমিল্ক এবং জল। এতে পেঁয়াজ, পেঁয়াজ শাক (স্ক্যালিয়ন), রসুন, একটি গোটা ভুট্টা এবং মরিচ ব্যবহার করা যেতে পারে। কখনও কখনও এটি তৈরিতে প্যানকেক গোলাও ব্যবহার করা হয়। সমস্ত উপাদানগুলির মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে তাদের ভালভাবে মিশ্রিত করে ঘন গোলাটি প্রস্তুত করা হয় এবং গরম তেলে একবার এক চামচ ফেলে গোলার গুনমান পরীক্ষা করা হয়। অনেক পুরানো রন্ধন প্রণালীতে মাছের সাথে একই তেলে এই হাশপাপির ব্যাটার ভাজার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ছোট গোল বলগুলি খাস্তা সোনালি বাদামী হওয়া পর্যন্ত ভাজা হয় এবং পরে ঠান্ডা করা হয়।[৬] হাশপাপি প্রায়ই সামুদ্রিক খাবার বা বারবিকিউ করা খাবারের সাথে পরিবেশন করা হয়। এগুলি সাধারণত বাড়িতে তৈরি করা হয় বা রেস্তোঁরাতে খাবার হিসাবে পরিবেশন করা হয়।