ধরন | বেসরকারী |
---|---|
NYSE: HPQ Dow Jones Industrial Average Component S&P 500 Component | |
আইএসআইএন | US4282361033 |
শিল্প | কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কম্পিউটার সফটওয়্যার আইটি সেবা আইটি পরামর্শ |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১লা জানুয়ারি, ১৯৩৯ |
প্রতিষ্ঠাতা | Bill Hewlett, ডেভিড প্যাকার্ড |
বিলুপ্তিকাল | ১ নভেম্বর ২০১৫ |
সদরদপ্তর | পালো অ্যালটো, ক্যালিফোর্নিয়া , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
বাণিজ্য অঞ্চল | বিশ্বব্যাপী |
প্রধান ব্যক্তি | Ralph Whitworth (অন্তর্বর্তী চেয়ারম্যান) Meg Whitman (সভাপতি ও সিইও) |
পণ্যসমূহ | এইচপি পণ্যের তালিকা দেখুন। |
আয় | ইউএস$ 138.854 বিলিয়ন (২০১৫)[১] |
US$ 9.185 billion (2015)[১] | |
US$ 7.013 billion (2015)[১] | |
মোট সম্পদ | US$ 152.406 billion (2015)[১] |
মোট ইকুইটি | US$ 28.731 billion (2014)[১] |
কর্মীসংখ্যা | ৫৫,০০০ (October, 2019)[২] |
বিভাগসমূহ | ফাইন্যান্সিং, হার্ডওয়্যার, সেবা, সফটওয়্যার |
অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান | সম্পূরক তালিকা |
ওয়েবসাইট | HP.com |
হিউলেট-প্যাকার্ড কোম্পানি বা এইচপি (ইংরেজি: Hewlett-Packard বা HP) একটি আমেরিকান ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। এটি মূলত কম্পিউটার, কম্পিউটারের বিভিন্ন যণ্ত্রাংশ প্রস্তুতকারক। এর সদর দপ্তর ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের পালো অ্যালটো নামক স্থানে। কোম্পানিটির যাত্রা শুরু হয় একটি গাড়ির গ্যারেজে। বর্তমানে হিউলেট প্যাকার্ড বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কম্পিউটার নির্মাতা।
১৯৩৯ সালের ১লা জানুয়ারি তারিখে উইলিয়াম হিউলেট এবং ডেভিড প্যাকার্ড'র হাতে হিউলেট-প্যাকার্ড কোম্পানির যাত্রা শুরু হয়। তারা দুজনই স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তড়িৎ প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রীপ্রাপ্ত। তারা স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফ্রেডরিক টারম্যান'র কাছ থেকে অনেক সহযোগিতা পান। কোম্পানিটি সূক্ষ্ম যণ্ত্রপাতি তৈরি করে জনপ্রিয়তা লাভ করে। ওয়াল্ট ডিজনি প্রোডাকশন্স ১৯৪০ সালে হিউলেট-প্যাকার্ডের কাছ থেকে ৮ টি অডিও অসিলেটর কিনে যা দ্বারা নির্মিত হয় ফ্যান্টাসিয়া নামক বিখ্যাত অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র। এটি ছিল কোম্পানির প্রথম বড় ধরনের বিক্রয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ'র সময় হিউলেট-প্যাকার্ড সামরিক অস্ত্র তৈরি করে সেনাবাহানীর সিগনাল বিভাগে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এ সময় তারা নৌবাহিনীর গবেষণাগারের সাথে কাজ করে কাউন্টার রাডার প্রযুক্তির বিকাশ সাধন করে। ১৯৫১ সালে উচ্চ দ্রুতিসম্পন্ন কম্পাঙ্ক মাপক প্রস্তুত করে। যোগাযোগ কমিশন নীতিমালা অনুযায়ী এটি এফ এম বেতার ও টেলিভিশন প্রচারণা কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপকভাবে ব্যবহ্রত হয়। এ সময় হিউলেট ও প্যাকার্ড তাদের কাজ ভাগ করে নেন। হিউলেট গবেষণা ও উন্নয়নের দিক এবং প্যাকার্ড ব্যবসার দিক দেখার দায়িত্ব নেন। প্রথমত গ্রাফিক্স রেকর্ডার প্রস্তুতকারক এফ এল মোসলে কোম্পানিকে কিনে নেয়। পরবর্তীতে ১৯৬১ সালে চিকিৎসা-যণ্ত্র প্রস্তুতকারক স্যানবর্ন কোম্পানিকে কিনে নেয়। ১৯৬৪ সালে কোমাপানির যণ্ত্রপাতি আন্তর্জাতিক মান লাভ করে। মূলত সিজিয়াম বিম এইচপি ৫০৬০এ নামক যণ্ত্রের জন্য এটি সম্ভব হয়। ১৯৬৯ যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রিচার্ড নিক্সন প্যাকার্ডকে প্রতিরক্ষা বিষয়ক ডেপুটি সেক্রেটারি পদে মনোনয়ন দেন। এ সময় তিনি এফ ১৬ ও এ ১০, এ দুটি যুদ্ধবিমানের উপর সফল সমীক্ষা চালান। ১৯৭২ সালে সমন্বিত সার্কিট তত্তের সাহায্যে পকেট ক্যালকুলেটর প্রস্তুত করে তা বাজারজাত করে। এই সামগ্রীটি অভূতপূর্ব জনপ্রিয়তা লাভ করে।
হিউলেট-প্যাকার্ডের প্রস্তুতকৃত প্রথম কম্পিউটার ছিল এইচপি ২১১৬এ। তারা ১৯৬৬ সালে এটি তৈরি করে। ১৯৭২ সালে এইচপি ৩০০০ নামক ক্ষুদ্র কম্পিউটার প্রস্তুত করে যা ব্যবসায়িক কাজে এখনও ব্যবহৃত হয়। ১৯৭৬ সালে কোম্পানির একজন প্রকৌশলী, স্টিফেন ভোজনিয়াক একটি ব্যক্তিগত কম্পিউটার 'র নমুনা তৈরি করে তা পেশ করেন। হিউলেট-প্যাকার্ড সমস্ত সত্ব ত্যাগ করে ভোজনিয়াকে যে কোন পরিকল্পনার অধিকার দান করে। ভোজনিয়াক পরবর্তীতে স্টিভ জবস'র সাথে মিলে অ্যাপ্ল ইনকর্পোরেটেড নামক কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮০ সালে প্রথম ডেস্কটপ কম্পিউটার এইচপি-৮৫ তৈরি করে। কিন্তু আইবিএম কম্পিউটারের সাথে প্রতিযোগিতায় হেরে যাওয়ায় তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। আইবিএম কম্পিউটারের সাথে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম এমন একটি কম্পিউটার বাজারজাত করে যা এইচপি-১৫০ নামে পরিচিত। কিন্তু তাও বাজার হারায়। হিউলেট-প্যাকার্ডের প্রস্তুতকৃত প্রথম সফল উৎপাদন সামগ্রী ছিল একটি প্রিন্টার। প্রিন্টারটি এইচপি লেসারজেট নামে পরিচিত যা ১৯৮৪ সালে বাজারজাত করা হয়। কিন্তু এর পরপরই হিউলেট-প্যাকার্ড অন্যান্য কোম্পানি যেমন সান মাইক্রোসিস্টেম্স, সিলিকন গ্রাফিক্স ও অ্যাপোলো কম্পিউটার'র কারণে বাজার হারাতে শুরু করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮৯ সালে হিউলেট-প্যাকার্ড অ্যাপোলো কোম্পানিকে কিনে নেয়। ১৯৯০ সালের পর হিউলেট-প্যাকার্ডকে প্রচুর রাজস্ব হারাতে হয় এবং ব্যবসাতেও মন্দা দেখা দেয়। এ অবস্থা থেকে কোম্পানির উত্তরণের জন্য প্যাকার্ড অবসর ত্যাগ করে আবার ব্যবস্থাপনায় ফিরে আসেন। তার চালনায় কোম্পানি আবার গতিশীলতা লাভ করে এবং স্বল্প মূল্যে কম্পিউটার, প্রিন্টার ও অন্যান্য কম্পিউটার সামগ্রী বাজারজাত করে আবার জনপ্রিয়তা লাভ করে। এরই সাথে হিউলেট-প্যাকার্ড বিশ্বের শীর্ষ তিন ব্যক্তিগত কম্পিউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় উঠে আসে। ১৯৯৩ সালে কোম্পানি যখন সম্পূর্ণ ঘুরে দাড়াতে সক্ষম হয় তখন প্যাকার্ড অবসর নেন।
হিউলেট প্যাকার্ড কোম্পানি ব্যবসার জগতে একটি নতুন ধারার জন্ম দেয়। সহযোগিতা ও সাধারণ স্বার্থই এ ধারার মূলমণ্ত্র। হিউলেট প্যাকার্ড কোম্পানিতে কর্মরত সকল কর্মচারী ও কর্মকর্তাকে শেয়ারগ্রাহকদের মতই কোম্পানির অংশ মনে করা হয়। তারা সবাই কোম্পানির স্বার্থর সাথে সমান ভাবে জড়িত বলে ধরা হয়। এ ধরনের মানসিকতার কারণে হিউলেট প্যাকার্ড সমাজের নারী ও সংখ্যালঘুদের কাজের প্রতি আকৃষ্ট করতে সমর্থ হয়।