হিনোকিটিওল (β-থুযাপ্লিসিন) একটি প্রাকৃতিক মোনোটারপেনোইড, এটি কাপ্রেসেসিয়াই পরিবারের অন্তর্গত গাছের কাঠে পাওয়া যায়। এটি একধরনের থুযাপ্লিসিন [২] এবং ট্রোপোলোন ডেরিভেটিভ। হিনোকিটিওল তার বিস্তৃত অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামাটোরি বৈশিষ্টের কারণে মুখের আভ্যন্তরিন যত্ন এবং অন্যান্য চিকিৎসা পন্যে ব্যবহ্রত হয়। এছাড়া জাপানে খাদ্য সংরক্ষণের জন্য একে খাদ্য সংযোজক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
এটাকে প্রথম ১৯৩৬ সালে তাইওয়ানের হিনোকি গাছ থেকে সংগ্রহ করা সম্ভব হয়, এজন্যেই একে হিনোকিটিওল নাম দেয়া হয়েছে। [৩] জাপানের হিনোকিতে হিনোকিটিওল প্রায় পাওয়াই যায় না অথচ জুনিপারাস সিডার, হিবা সিডার (থুযোপ্সিস ডোলাব্রাটা) এবং অয়েস্টার্ন রেড সিডার (থুযা প্লাইকেটা) তে এটি বিপুল মাত্রায় পাওয়া যায়। সল্ভেন্ট এবং আল্ট্রাসোনিকের সাহায্যে খুব সহজেই সিডার কাঠ থেকে এটি সংগ্রহ করা যায়।[৪]
হিনোকিটিওল গঠনগত দিক থেকে ট্রোপোলোনের মত, এতে আইসোপ্রোপাইলের কোন বিকল্প নেই। ট্রোপোলোন খুবই পরিচিত কিলেটিং এজেন্ট।
হিনোকিটিওলের জৈবিক বৈশিষ্ট্যের বিস্তর পরিসর রয়েছে। সাহিত্যে এর ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। প্রথমত বিভিন্ন ধরনের ব্যাক্টেরিয়া ও ফাঙ্গি প্রতিরোধ করার জন্য এর রয়েছে অত্যন্ত শক্তিশালী অ্যান্টিমাইক্রবিয়াল বৈশিষ্ট্য।[৫][৬] বিশেষভাবে মানুষের সাধারণ জীবাণু যেমন, স্ট্রেপ্টোকোকাস নিউমোনিয়া, স্ট্রেপ্টোকোকাস মিউট্যান্ট এবং স্টাফাইলোকোকাস অরিয়াস ইত্যাদি জীবাণুর বিরুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকর।[৭][৮] উপরন্তু ক্লামাইডিয়া ট্রাকোমাটিস জীবাণু ছড়ানোতে বাধা দেয়া এবং ট্রপিকাল ড্রাগ হিসেবে এর ব্যবহার রয়েছে।[৯][১০] এছাড়াও সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে হিনোটিকিওয়লের সাথে জিংক মিশিয়ে বিভিন্ন ভাইরাস যেমন রিনোভাইরাস, কোক্সাকিভাইরাস এবং ম্যাঙ্গোভাইরাস সহ আরো বিভিন্ন ভাইরাস দমনে কার্যকর ভুমিকা রেখেছে।[১১]
বিস্তৃত অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যের সাথে হিনোকিটিওলের রেয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লামাটোরি এবং অ্যান্টি-টিউমার বৈশিষ্ট্য, যা বিভিন্ন কোষ এবং প্রাণীর উপর গবেষণায় দেখা গেছে। হিনোকিটিওল বিভিন্ন ধরনের প্রদাহজনিত বৈশিষ্ট যেমন টিএনএফ-এ এবং এনএফ-কেবি ইত্যাদিকে বাধা প্রদান করে, বর্তমানে ক্রোনিক ইনফ্লামাটোরি ও অটোইমিউন জাতীয় বৈশিষ্ট্যে এর আছে কিনা তা যাচাই করা হচ্ছে। অটোফেজিক প্রকৃয়া প্রয়োগ করে দেখা গেছে যে হিনোকিটিওল বিভিন্ন ক্যান্সার কোষে সাইটোটোক্সিসিটি প্রদর্শন করে।[১২][১৩]
হিনোকিটিওল অ্যান্টি-ভাইরাল হিসেবে কাজ করে এর জিংক আয়োনোফোর বৈশিষ্ট্যের কারণে। এটি কোষের মধ্যে জিংক আয়নের অন্তঃপ্রবাহ সক্রিয় করে, ফলে আরএনএ জাতীয় ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরির কার্যকারীতা ব্যাহত করে ফলে ভাইরাস আর প্রতিলিপি তৈরী করতে পারেনা।[১১] এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু ভাইরাস হলো মানুষের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, শার্শ, এবং নোভেল করোনা ভাইরাস।[১৪] একটি গবেষণায় দেখা গেছে জিংক আয়ন শার্শ ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরীতে বাধা দেয়, শার্শ এক ধরনের করোনা ভাইরাস যার নোভেল করোনা ভাইরাসের সাথে অনেক বৈশিষ্ট্যের মিল রয়েছে। দেখা গেছে যে কোষের মধ্যে জিংক আয়নের প্রবাহের কারণে ভাইরাসের প্রতিলিপি প্রকৃয়া ব্যাহত হচ্ছে। এই গবেষণাটি করা হয় জিংক আয়োনোফোর পিরিথাইরোনি ব্যবহার করে, যা হিনোকিটিওলের মতই কাজ করে।
“পাইকরোনাভাইস সংক্রমনের বিরুদ্ধে হিনোকিটিওল ও জিংক আয়োনোফোর পিরিথাইরোনির ভুমিকা”
২০০৮ সালে ভিয়েনার মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি এবং রেডবাউন্ড ইউনিভার্সিটি নিজমেগেন মেডিক্যাল সেন্টারের মাইক্রবায়োলোজি বিভাগের সংযুক্ত একটি গবেষণা প্রকাশ হলে তাতে দেখা যায় যে হিনোকিটিওল রিনোভাইরাস, কোক্সাকিভাইরাস এবং ম্যাঙ্গোভাইরাসের প্রতিলিপি প্রকৃয়ার বাধা দেয়। আরো দেখা যায় ভাইরাসের পলিপ্রোটিন প্রকৃয়ায় বাধা দেয়ায় পাইকরোনা ভাইরাস নিজের প্রতিলিপি করবে পারে না। এই গবেষণায় আরো দেখা যায় যে হিনোকিটিওল কোষের বাহির থেকে জিংক কোষের ভেতরে আনতে সাহায্য করে যদিও গঠনগত দিক থেকে তারা অসদৃশ যৌগ। এই গবেষণা প্রমাণ করে যে ভাইরাসে পলিপ্রোটিন প্রকৃয়ায় বাধা প্রদান করে হিনোকিটিওল পাইকরোনাভাইরাসের প্রতিলিপি প্রকৃয়া ব্যাহত করে এবং এটাও প্রমাণ করে যে হিনোকিটিওল জিংক আয়নের উপর নির্ভরশীল।[১৫]
মেডিকেল জার্নাল "ফাংশন ম্যাগাজিন" এর অধীনে অক্সফোর্ড একাডেমিকের দ্বারা অধ্যয়ন প্রকাশিত। বিমূর্ত থেকে আহরণ করুন: " উদীয়মান অধ্যয়নগুলি ক্রমবর্ধমান COVID-19 রোগে ভাইরাস প্রতিলিপি এবং সংক্রমণ স্থান হিসাবে গলা এবং লালা গ্রন্থির গুরুত্ব প্রদর্শন করে।SARS-CoV-2 একটি খামযুক্ত ভাইরাস, এটি হোস্ট সেল থেকে উদ্ভূত একটি বাহ্যিক লিপিড ঝিল্লি দ্বারা চিহ্নিত করা হয় যা এটি কুঁকড়ে যায়।লিপিড বায়োম্যামব্রেনগুলিকে ব্যাহতকারী এজেন্টদের পক্ষে এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল হলেও সংক্রমণ রোধে মৌখিক ধোয়ার সম্ভাব্য ভূমিকা সম্পর্কে কোনও আলোচনা হয়নি। " [১৬]
হিনোকিতলকে প্রাণীতে হিমোগ্লোবিন উৎপাদন পুনরুদ্ধার করার একটি অনন্য ক্ষমতা প্রকাশ করার জন্য দেখানো হয়েছে। হিনোকিটিওল আপনার কোষগুলিতে লোহা চ্যানেল করার জন্য একটি আয়রন আয়নোফোর হিসাবে কাজ করে,[১৭][১৮] অন্তঃকোষীয় আয়রনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। আপনার দেহের প্রায় 70০% আয়রন রক্তের রক্তকণিকার মধ্যে রয়েছে, বিশেষত একটি লাল রক্তকণিকার হিমোগ্লোবিন প্রোটিন। আয়রন প্রায় সমস্ত জীবের জন্য অপরিহার্য এবং এটি বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপগুলির যেমন অক্সিজেন ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম, ডিওক্সাইরিবোনুক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) সংশ্লেষণ এবং ইলেক্ট্রন পরিবহন এবং একটি আয়রনের ঘাটতি রক্তাল্পতার কারণ যেমন রক্তাল্পতা ঘটাতে পারে তার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান can উভয় শারীরিক এবং মানসিক কর্মক্ষমতা জন্য উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিকারক হতে হবে। [১৯]
হিনোকিটিওল বিভিন্ন ধরনের পন্যে ব্যাপক হারে ব্যবহার করা হয়, তার মধ্যে রয়েছে প্রসাধনী, টুথপেষ্ট, অরাল স্প্রে, অতিবেগুনী রশ্মি নিরোধক আর চুলের স্বাস্থ্য বর্ধক। হিনোকিটিওল পণ্য উৎপাদনকারী অন্যতম প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি হল হিনোকি ক্লিনিকাল। ১৯৫৫ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে হিনোকিটিওল সংগ্রহ করা শুরুর পরপরই হিনোকি ক্লিনিকাল প্রতিষ্ঠিত (প্রতিষ্ঠিত ১৯৫৬) হয়।[২০]] হিনোকি ক্লিনিকালের প্রায় ১৮ টি হিনোকিটিওলযুক্ত পণ্য রয়েছে। অন্য আরো একটি প্রতিষ্ঠান, রিলিফ লাইফ[২১] তাদের হিনোকিটিওলযুক্ত টুথপেষ্টের বিক্রি ১০ লক্ষ ছাড়িয়েছে।[২২] এছাড়াও আরো উল্লেখযোগ্য কিছু প্রতিষ্ঠান যেমন অটসুকা ফার্মাসিউটিকালস, কোবায়াসি ফার্মাসিউটিকালস, তাইসো ফার্মাসিউটিকালস, এসএস ফার্মাসিউটিকালস হিনোকিটিওলযুক্ত পণ্য তৈরি করছে। এশিয়ার বাইরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন সোয়ান্সন ভিটামিনস আমেরিকা [২৩] ও অস্ট্রেলিয়ায় [২৪] হিনোকিটিওলযুক্ত আন্টি-অক্সিড্যান্ট সেরাম ও অন্যান্য পণ্য তৈরি করতে আগ্রহী।
অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত জিংক অক্সাইড প্রস্তুতকারী একটি প্রতিষ্ঠান অ্যাডভান্স ন্যানোটেক [২৫]] ও আস্তিভিটা লিমিটেড [২৬] সংযুক্তভাবে একটি পেটেন্ট আবেদন করে, এতে মুখের অভ্যন্তরীণ যত্নের [২৭] জন্য সংক্রমণ বিরোধী একটি মিশ্রনের উল্লেখ করা হয় যেখানে হিনোটিকিওল উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখবে। Dr ZinX নামে যে পণ্যগুলো বাজারে রয়েছে তার সাথে হিনোকিটিওল মিলিয়ে নতুন পণ্য হয়ত ২০২০ সালের মধ্যেই বাজারে আসবে।[২৮][২৯] ১৮ই মে ২০২০ এ Dr ZinX “চিকিৎসা ক্ষেত্রে ভাইরাসজনিত ক্রিয়াকলাপ মুল্যায়নের জন্য একটি সাসপেনসন পরিক্ষার”[৩০][৩১] ফল প্রকাশ করে, যেখানে ৫ মিনিটে “৩.২৫ লগ” হ্রাস (৯৯.৯% হ্রাস) লক্ষ করা যায় কোভিট-১৯ ফিলাইন করোনা ভাইরাসে।[৩২] জিংক আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি খাদ্য সম্পুরক। পৃথিবীতে প্রায় ১৭.৩% মানুষ জিংক এর অভাবে ভুগছে।[৩৩][৩৪]
১৯৩৬ সালে ডাঃ টাটসু নোযোয়ে প্রথম তাইওয়ানের সাইপ্রেস গাছের অপরিহার্য তেলের মাধ্যে হিনোকিটিওল খুজে পান। যৌগটি আবিস্কারের পর দেখা গেল যে এর অভ্যন্তরীণ গঠন হল হেপ্টাগোনাল মলিকিউলার স্ট্রাকচার, বিজ্ঞানীরা মনে করতেন প্রকৃতিতে এই ধরনের কোন গঠন নেই, তাই রসায়ন বিদ্যায় এই আবিষ্কার গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।[৩৫]
টাটসু নোযোয়ের জন্ম হয় ১৬ই মে ১৯০২ সালে, জাপানের সেন্দাইয়ে। ২১ বছর বয়সে তিনি তোহোকু ইম্পেরিয়াল ইউনিভার্সিটিতে রসায়নবিদ্যায় ভর্তি হন।[৩৬] ১৯২৬ সালের মার্চে স্নাতক শেষ করার পর গবেষণায় সহকর্মি হিসেবে থেকে গেলেও জুনের শেষে নোযোয়ে ফরমোসার (বর্তমানে তাইওয়ান) উদ্দেশ্যে সেন্দাই ত্যাগ করেন। [৩৭]
নোযোয়ে মুলত প্রাকৃতিক বিষয়ে গবেষণায় আগ্রহী ছিলেন। ফরমোসায় নোযোয়ে মুলত পাহাড়ি এলাকার তাইওয়ান হিনোকি নিয়ে কাজ করেছেন।[৩৮] আর এখান থেকেই নোযোয়ে খুজে পান সেই যৌগ যা হিনোকিটিওল নামে পরিচিতি পায়। নোযোয়ে ১৯৩৬ সালে জাপানের কেমিক্যাল সোসাইটির একটি বিশেষ বুলেটিনে এই নতুন যৌগটি পাওয়ার দাবি করেন।[৩৯]
১৯৫০ সালের নভেম্বরে লন্ডনের কেমিক্যাল সোসাইটির উদ্যোগে “ট্রপোলোন অ্যান্ড অ্যালাইড কমপাউন্ড” শীর্ষক একটি সম্মেলনে হিনোকিটিওল নিয়ে নোযোয়ের কাজকে ট্রোপোলোন রসায়নের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে উল্লেখ করা হয়, আর এভাবে নোযোয়ের গবেষণা পশ্চিমাদের নজরে আসে।[৪০] হিনোকিটিওল ও এর বিভিন্ন ডেরিভেটিভস নিয়ে নোযোয়ের গবেষণাপত্র ১৯৫১ সালে নেচার প্রত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এক্ষেত্রে সম্মেলনের চেয়ারম্যান জে ডব্লিউ কুক সহায়তা করেন। নোযোয়ের এই গবেষণা যা ১৯৫০ হতে ১৯৬০ পর্যন্ত জাপানে বিকশিত হয়, তা জৈব রসায়নবিদ্যার (যে রসায়নবিদ্যায় নন-বেনজইড অ্যারোম্যাটিক যৌগ নিয়ে আলোচনা করা হয়) এক নতুন দুয়ার উন্মোচন করে।[৪১] জাপানে নোযোয়ের এই গবেষণাকে অত্যন্ত সম্মান দেখানো হয় যার ফলশ্রুতিতে ১৯৫৮ সালে ৫৬ বছর বয়সে নোযোয়ে অর্ডার অব কালচার পুরস্কারে ভূষিত হন, যাকে বলা হয় গবেষক এবং শিল্পীদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান।[৪২]
২০০০ সালের দিকেই গবেষকরা ওষুধ শিল্পে হিনোকিটিওলের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিলেন, বিশেষ করে ক্লামাইডিয়া ট্রাকোমাটিস প্রতিরোধের বিষয়টি লক্ষণীয় ছিল।
উরবানার ইউনিভার্সিটি অব ইলিনোইসের কেমিস্ট মারটিন ব্রুক তার সহকর্মীরা এবং অন্যান্য আরো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চিকিৎসা ব্যবস্থায় হিনোকিটিওলের অবদান লক্ষ্য করেন। ব্রুক প্রাণীদের শরীরে আয়রনের অনিয়মিত পরিবহন নিয়ন্ত্রণের কাজ করছিলেন। বিভিন্ন ধরনের প্রোটিনের অভাবে কোষে আয়রনের ঘাটতি (এনিমিয়া) বা বিপরীত হেমোক্রোমাটোসিস দেখা দেয়।[৪৩] জেন-ডিপ্লেটেড ইস্ট ব্যবহার করে গবেষকেরা একটি লাইব্রেরি তৈরী করেন যেখানে সূক্ষ্ম বায়োমলিকিউলে আয়রন পরিবহন এবং কোষের বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করা হয়। হিনোকিটিওল ব্যবহার করে দেখা গেছে আক্রান্ত কোষ তার পুর্বাবস্থায় ফিরে গেছে। এই দলটি আরো গবেষণা করে দেখেছেন যে হিনোকিটিওল কোষের আয়রনের মাত্রা কমে গেলে বা বেড়ে গেলে সেটাকে সঠিক মাত্রায় ফিরিয়ে আনে।[৪৪] এরপর এটি রোডেন্ট নামক স্তন্যপায়ী প্রাণীর উপর প্রয়োগ করা হয়, এই প্রাণীর আয়রন প্রোটিনের ঘাটতি ছিল, পরে দেখা যায় যে তারা তাদের এই ঘাটতি পুরন করতে সক্ষম হচ্ছে। এই একই ধরনের গবেষণা জেব্রা মাছের উপর করা হলে দেখা যায় তাদের হিমোগ্লোবিন সল্পতা দূর হচ্ছে।[৪৫] ব্রুকের এই কাজ দেখে হিনোকিটিওলকে অনেকেই “লৌহ মানব মলিকিউল” নামে ডাকে। আশ্চর্য ব্যাপার হলো নোযোমের নাম অনুবাদ করলেও তা হয় “লৌহ মানব”।
মুখের অভ্যন্তরে ব্যবহার করা হয় এমন সব পণ্যে হিনোকিটিওলের বিশেষ চাহিদা দেখে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা হয়েছে। এরকম একটি গবেষণাতে জাপানের ৮ টি প্রতিষ্ঠান অংশ গ্রহণ করে, গবেষণার নাম দেয়া হয় “ মুখের অভ্যন্তরীণ যত্নে অ্যান্টিবাওটিক-রেজিস্টান্ট ও সাসেপ্টিবল প্যাথোজেনিক ব্যাক্টেরিয়া দমনে হিনোকিটিওলের ভুমিকা”, এবং গবেষণা শেষে তারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে “ প্যাথোজেনিক ব্যাক্টেরিয়া দমনে হিনোকিটিওল অত্যন্ত কার্যকর এবং মানুষের এপিথেলিয়াল কোষে এর বিষ্ক্রিয়ার পরিমাণ অত্যন্ত কম।”[৮]
↑Chedgy RJ, Lim YW, Breuil C (মে ২০০৯)। "Effects of leaching on fungal growth and decay of western redcedar": 578–86। ডিওআই:10.1139/W08-161। পিএমআইডি19483786।
↑Chedgy RJ, Daniels CR, Kadla J, Breuil C (২০০৭)। "Screening fungi tolerant to Western red cedar (Thuja plicata Donn) extractives. Part 1. Mild extraction by ultrasonication and quantification of extractives by reverse-phase HPLC": 190–194। ডিওআই:10.1515/HF.2007.033।
↑Shih YH, Chang KW, Hsia SM, Yu CC, Fuh LJ, Chi TY, Shieh TM (জুন ২০১৩)। "In vitro antimicrobial and anticancer potential of hinokitiol against oral pathogens and oral cancer cell lines": 254–62। ডিওআই:10.1016/j.micres.2012.12.007। পিএমআইডি23312825।
↑Morita Y, Sakagami Y, Okabe T, Ohe T, Inamori Y, Ishida N (সেপ্টেম্বর ২০০৭)। "The mechanism of the bactericidal activity of hinokitiol": 101–10। ডিওআই:10.4265/bio.12.101। পিএমআইডি17927050।
↑ কখDomon H, Hiyoshi T, Maekawa T, Yonezawa D, Tamura H, Kawabata S, Yanagihara K, Kimura O, Kunitomo E, Terao Y (জুন ২০১৯)। "Antibacterial activity of hinokitiol against both antibiotic-resistant and -susceptible pathogenic bacteria that predominate in the oral cavity and upper airways": 213–222। ডিওআই:10.1111/1348-0421.12688। পিএমআইডি31106894।
↑Chedgy, Russell (২০১০)। Secondary metabolites of Western red cedar (Thuja plicata): their biotechnological applications and role in conferring natural durability.। LAP Lambert Academic Publishing। আইএসবিএন978-3-8383-4661-8।
↑Lee TB, Jun JH (২০১৯-০৬-৩০)। "Can Hinokitiol Kill Cancer Cells? Alternative Therapeutic Anticancer Agent via Autophagy and Apoptosis" (ইংরেজি ভাষায়): 221–234। ডিওআই:10.15324/kjcls.2019.51.2.221।
↑Baosaree J, Rakharn N, Kammee D, Pengpajon P, Sriaphai S, Sittijanda S, Naudom U, Sriprang N, Namahoot J, Mopoung S (২০১৮-০২-০১)। "The Effect of Rice Husk Charcoal and Sintering Temperature on Porosity of Sintered Mixture of Clay and Zeolite": 1–12। আইএসএসএন0974-5645। ডিওআই:10.17485/ijst/2018/v11i8/104310।
↑Murata, Ichiro; Ito, Sho (২০০৪)। "Tesuo Nozoe (1902–1996"। European Chemical Societies Publishing: 899–928।
↑Nozoe, Tetsuo (মার্চ ১৯৩৬)। "Über eie Farbstoffe im Holzteile des "Hinokl"-Baumes. I. Hinokitin Und Hinokitiol (Vorläufige Mitteilung)": 295–298। ডিওআই:10.1246/bcsj.11.295।
↑Fujimori K, Kaneko A, Kitamori Y, Aoki M, Makita M, Masuda N, Hokari K (নভেম্বর ১৯৯৮)। "Hinokitiol (β-Thujaplicin) from the Essential Oil of Hinoki [Chamaecyparis obtusa (Sieb. et Zucc.) Endl.]": 711–712। আইএসএসএন1041-2905। ডিওআই:10.1080/10412905.1998.9701018।
↑Kaji, Masanori (১৭ জানুয়ারি ২০১৮)। "Development of the Natural Products Chemistry by Tetsuo Nozoe in Taiwan"। Igniting the Chemical Ring of Fire। World Scientific। পৃষ্ঠা 357–368। আইএসবিএন978-1-78634-454-0। ডিওআই:10.1142/9781786344557_0012।
↑Arima Y, Hatanaka A, Tsukihara S, Fujimoto K, Fukuda K, Sakurai H (১৯৯৭)। "Acavenging activities of α-, β-, γ-thujaplicins against active oxygen species": 1881–1886। ডিওআই:10.1248/cpb.45.1881।
↑Hiyoshi T, Domon H, Maekawa T, Yonezawa D, Kunitomo E, Tabeta K, Terao Y (এপ্রিল ২০২০)। "Protective effect of hinokitiol against periodontal bone loss in ligature-induced experimental periodontitis in mice": 104679। ডিওআই:10.1016/j.archoralbio.2020.104679। পিএমআইডি32062102|pmid= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)।