হীনা সিধু (জন্ম: ২৯ আগস্ট, ১৯৮৯) একজন ভারতীয় ক্রীড়া শ্যুটার। ৭ এপ্রিল ২০১৪, সালের, সিধু প্রথম ভারতীয় পিস্তল শ্যুটার যিনি আন্তর্জাতিক শুটিং স্পোর্ট ফেডারেশন বিশ্বের এক নম্বর স্থানে পৌঁছান।[২] ২০১৩ সালে সিধু প্রথম ভারতীয় পিস্তল শ্যুটার হন যিনি আইএসএসএফ বিশ্বকাপের ফাইনালে ১০ মিটার এয়ার পিস্তল ইভেন্টে একটি স্বর্ণ পদক জয় করেন। ২০১৪ সালে সিধু ১০ মিটার এয়ার পিস্তল ইভেন্টে ২০৩.৮ পয়েন্ট চূড়ান্ত স্কোর করে, বিশ্ব রেকর্ড ধারক ছিলেন।[৩] সিধু ডান হাতি ও ডান চোখ প্রভাবশালী গোল্ড কোস্ট ২০১৮ বিজয়ী।
২০১৩ সালে সিধু, ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি পাশ করেন। সিধুর বাবা ছিলেন একজন জাতীয় ক্রীড়া শ্যুটার, তার ভাইও ১০ মিটার এয়ার পিস্তল ইভেন্টে একজন শ্যুটার। সিধুর কাকা একজন বন্দুকপ্রস্তুতকারক এবং বন্দুক গ্রাহকীকরণ পেশাদার। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৩, সিধু পিস্তল শ্যুটার রোনক পণ্ডিতের সংগে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সিধু মুম্বাইয়ের গোরেগাওতে বসবাস করেন।[৪]
সিধু ২০০৬ সালে, জাতীয় জুনিয়র ও সিনিয়র দলে অংশগ্রহণ করে শুটিং শুরু করেন। তিনি পাটিয়ালা ক্লাবের একজন সদস্যা।
২০০৯ সালে সিধু বেইজিং এ অনুুুুষ্ঠিত আইএসএসএফ বিশ্বকাপে একটি রৌপ্য পদক লাভ করেন। [৫] তিনি কেরালায় জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে নারীদের ১০ মিটার এয়ার পিস্তল ইভেন্টে প্রথম স্থান লাভ করেন।
২০১০ সালে চীনের কুয়াংচৌতে অন্নু রাজ সিং এবং সোনিয়া রাইয়ের সংগে সিধু, এশিয়ান গেমসে মহিলাদের ১০ মিটার এয়ার পিস্তল দলগত ইভেন্টে একটি রৌপ্য পদক জেতেন। ২০১০ সালে কমনওয়েলথ গেমসে অন্নু রাজ সিং ৩৭৫ পয়েন্ট পেয়ে এবং সিধু ৩৮৪ পয়েন্ট পেয়ে, মহিলা জুটিতে সিধু এবং সিং ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে একটি স্বর্ণ পদক জেতেন।[৬] ব্যক্তিগত ইভেন্টে, সিধু একটি রৌপ্য পদক জেতেন।
সিধু লন্ডনে অনুষ্ঠিত ২০১২ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন।[৭] তিনি মহিলাদের ১০ মিটার এয়ার পিস্তল ইভেন্টে অংশ নেন এবং যোগ্যতা রাউন্ডে দ্বাদশ স্থানে শেষ করেন। সিধু লন্ডন ২০১২ অলিম্পিক গেমসের কাহিনী ভিত্তিক ''ফার্স্ট'' শিরোনামযুক্ত সরকারি লন্ডন ২০১২ অলিম্পিক গেমস ছায়াছবিটির অংশ ছিলেন। ক্যারোলিন রোনাল্ড দ্বারা লিখিত, উৎপাদিত এবং নির্দেশিত ছায়াছবিটি এক ডজন অলিম্পিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের নিয়ে তৈরি যারা তাদের প্রথমবার অলিম্পিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে লন্ডনে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।[৮][৯]
২০১৩ সালে সিধু জার্মানির মিউনিখে আইএসএসএফ এর বিশ্বকাপ ফাইনালে স্বর্ণ পদক জেতেন। [১০] সিধু ২০৩.৮ পয়েন্ট পান, যা তাকে ওই ইভেন্টে ৫ পয়েন্ট এগিয়ে দেয় এবং তিনি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন সার্বিয়ার জোরানা আরুনোভিচ এবং পূর্ববর্তী বিজয়ী ইউক্রেনের ওলেনা কোস্তেভিচকে পরাজিত করেন।[১১]
২০১৪ সালে ভারতীয় জাতীয় শ্যুটিং ট্রায়ালে রহি সার্নাবতকে হারিয়ে মহিলা এয়ার পিস্তল ইভেন্টে ০.১ পয়েন্টে সিধু জেতেন। [১২]
২০১৬ সালে সিধু রিও দি জেনেরিওতে অনুষ্ঠিত ২০১৬ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে নারীদের ১০ মিটার এয়ার পিস্তল এবং মহিলাদের ২৫ মিটার পিস্তল ইভেন্টে যোগ্যতায় উত্তীর্ণ হন। তিনি মহিলাদের ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে চতুর্দশ স্থানে এবং মহিলাদের ২৫ মিটার পিস্তল কোয়ালিফাইং চক্রে বিংশ স্থানে সমাপ্ত করেন।[১৩]
২০১৭ সালে সিধু ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপে মহিলাদের ১০ মিটার এয়ার পিস্তল ইভেন্টে স্বর্ণ পদক জেতেন।[১৪]
২০১৬ সালে সিধু, তেহরানে অনুষ্ঠিত এশিয়ান এয়ার গান চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে বেরিয়ে আসেন কারণ ইরান কর্তৃক মহিলা অংশগ্রহণকারীদের হিজাব পরিধান বাধ্যতামূলক ছিল।[১৫][১৬]
২০১৮ কমনওয়েলথ গেমসে, সিধু মহিলাদের ১০ মিটার এয়ার পিস্তল ইভেন্টে একটি রৌপ্য পদক জেতেন এবং মহিলাদের ২৫ মিটার এয়ার পিস্তল ইভেন্টে ৩৮জন স্বর্ণ পদক বিজয়ীর কমনওয়েলথ গেমস রেকর্ড ভেঙে তিনি স্বর্ণ পদক জেতেন।[১৭]
২৮ আগস্ট ২০১৪ সালে, সিধু অর্জুন পুরস্কার পান।[১৮]