হৃত্বিক রোশন | |
---|---|
ਰਿਤੀਕ ਰੋਸ਼ਨ | |
জন্ম | মুম্বই, মহারাষ্ট্র, ভারত | ১০ জানুয়ারি ১৯৭৪
পেশা | অভিনেতা |
কর্মজীবন | ১৯৮৬–বর্তমান |
দাম্পত্য সঙ্গী | সুজান খান (বি. ২০০০; বিবাহবিচ্ছেদ ২০১৪) |
সন্তান | ২ |
পিতা-মাতা | রাকেশ রোশন পিঙ্কি রোশন |
আত্মীয় | রোশন পরিবার দেখুন |
পুরস্কার | পূর্ণাঙ্গ তালিকা |
হৃত্বিক রোশন (পাঞ্জাবি: ਰਿਤੀਕ ਰੋਸ਼ਨ, হিন্দী: हृतिक रोशन, জন্ম: ১০ জানুয়ারি, ১৯৭৪) হলেন একজন ভারতীয় অভিনেতা। তিনি বলিউড চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্র পরিচালক রাকেশ রোশনের পুত্র ঋত্বিক বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন এবং এক দক্ষ নৃত্যশিল্পী হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছেন। তিনি ভারতের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক-প্রাপ্ত অভিনেতাদের অন্যতম। ছ’টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার জয় করেছেন ঋত্বিক। হৃতিক সর্বাধিক জনপ্রিয় ভারতীয় সেলিব্রিটিদের মধ্যে অন্যতম এবং ২০১২ সালে তার আয় ও জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে ফোর্বস সাময়িকীর ১০০ ভারতীয় তারকার তালিকায় তার নাম ওঠে আসে। এছাড়া ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি এজেন্সির জরিপে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে হ্যান্ডসাম পুরুষ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।[১]
হৃতিক প্রায়শই তার বাবা রাকেশ রোশনের সঙ্গে কাজ করে থাকেন। ১৯৮০-এর দশকে বেশ কয়েকটি ছবিতে হৃতিক শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছিলেন। পরে রাকেশ রোশন পরিচালিত চারটি ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবেও কাজ করেন তিনি। কাহো না... প্যায়ার হ্যায় (২০০০) ছবিতে তিনি প্রথম বার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। এই ছবিটি বক্স-অফিসে সাফল্য অর্জন করেছিল এবং এতে অভিনয় করে হৃতিক বেশ কয়েকটি পুরস্কারও অর্জন করেছিলেন। ২০০০ সালে সন্ত্রাসবাদ নাট্যধর্মী ফিজা এবং ২০০১ সালে একাধিক তারকাসম্বলিত প্রণয়মূলক নাট্যধর্মী কভি খুশি কভি গম... ছবি দু’টি তাকে বিশেষ খ্যাতি অর্জনে সাহায্য করে। কিন্ত তার অভিনীত পরবর্তী কয়েকটি ছবি সাফল্য অর্জনে ব্যর্থ হয়।
২০০৩ সালে বিজ্ঞান কল্পকাহিনিনির্ভর কোই... মিল গয়া চলচ্চিত্রে অভিনয় করে হৃতিক দু’টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার (শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও সমালোচকদের বিচারে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা) পান। এই ছবিটি তার অভিনয় জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এই ছবিটির দু’টি অনুবর্তী পর্ব নির্মিত হয়: কৃষ (২০০৬) ও কৃষ ৩। এই দু’টি ছবিতেও নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন হৃতিক এবং ছবি দু’টিও প্রভূত সাফল্য অর্জন করেছিল। ২০০৬ সালে রোমাঞ্চকর চলচ্চিত্র ধুম ২-এ তিনি এক চোরের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। ২০০৮ সালে ঐতিহাসিক প্রণয়ধর্মী জোধা আকবর ছবিতে মুঘল সম্রাট আকবরের ভূমিকায় এবং ২০১০ সালে নাট্যধর্মী গুজারিশ চলচ্চিত্রে একজন কোয়াড্রিপ্লেজিক চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি সর্বত্র প্রশংসা অর্জন করেন। এরপর তার অভিনীত নাট্যধর্মী চলচ্চিত্র জিন্দগি না মিলেগি দোবারা (২০১১), প্রতিশোধমূলক চলচ্চিত্র অগ্নিপথ (২০১২) ও মারপিটধর্মী হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র ব্যাং ব্যাং! (২০১৪, তার অভিনীত সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র) এবং জীবনীমূলক সুপার থার্টি (২০১৯) সাফল্য অর্জন করে।
হৃতিক মঞ্চেও কাজ করে থাকেন এবং জাস্ট ড্যান্স (২০১১) অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি প্রথম টেলিভিশনে উপস্থিত হন। এই অনুষ্ঠানের বিচারক হিসেবে তিনিই ভারতীয় টেলিভিশনের সর্বাধিক পারিশ্রমিক-প্রাপ্ত চলচ্চিত্র তারকা হয়ে ওঠেন। অভিনয়ের পাশাপাশি হৃতিক একাধিক দাতব্য ক্রিয়াকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত রয়েছেন। সেই সঙ্গে একাধিক ব্র্যান্ড ও উৎপাদিত সামগ্রীর হয়ে বিজ্ঞাপন করেছেন এবং নিজস্ব পোশাক লাইনও সর্বসমক্ষে এনেছেন। হৃতিক ২০০০ সালে সুজান খানকে বিবাহ করেছিলেন। তাদের দুই পুত্রসন্তান রয়েছে। ২০১৪ সালে তাদের চৌদ্দ বছরের বৈবাহিক সম্পর্কের ইতি ঘটে।
রোশান ১৯৭৪ সালের ১০ই জানুয়ারি বোম্বে শহরে বলিউডের এক প্রখ্যাত পাঞ্জাবি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[২] তার পিতা চলচ্চিত্র পরিচালক রাকেশ রোশন[৩] ও মাতা পিঙ্কি রোশন। তার পিতামহ সঙ্গীত পরিচালক রোশনলাল নাগরথ ও মাতামহ পরিচালক জে. ওম প্রকাশ। তার চাচা রাজেশ রোশন একজন সুরকার।[২] তার বড় বোন সুনয়না। হৃতিক বোম্বে স্কটিশ স্কুলে পড়াশোনা করেছেন।[৪] তিনি তার পিতামহীর দিক থেকে বাঙালি বংশোদ্ভূত।[৫] যদিও রোশন হিন্দুধর্ম পালন করেন, তিনি বলেন "আমি ধার্মিক নই। কখনো মন্দিরে যাই না। কিন্তু মনে করি অতিপ্রাকৃত শক্তি রয়েছে।"[৬]
রোশন মূলত প্রীতি জিন্টার বিপরীতে শেখর কাপুরের বাতিলকৃত তারা রাম পাম পাম ছবির মাধ্যমে পর্দায় অভিষিক্ত হওয়ার কথা ছিল।[৭] এর পরিবর্তে তিনি তার পিতা রাকেশ রোশনের প্রণয়ধর্মী নাট্য চলচ্চিত্র কাহো না... প্যায়ার হ্যায় (২০০০) ছবিতে আরেক অভিষিক্ত অমীশা প্যাটেলের বিপরীতে তার অভিষেক ঘটে। রোশন দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেন, যেখানে রোহিত একজন উদীয়মান গায়ক যাকে একটি হত্যাকাণ্ডের চাক্ষুষ সাক্ষী হওয়ায় নিষ্ঠুরভাবে খুন করা হয় এবং রাজ একজন প্রবাসী ভারতীয় যে পটেলের চরিত্রের প্রেমে পড়ে।[৮] এই চলচ্চিত্রের প্রস্তুতি হিসেবে তিনি অভিনেতা সালমান খানের সাথে শারীরিক প্রশিক্ষণ নেন,[৯] তার শব্দচয়নের উন্নতি সাধনের জন্য কাজ করেন, অভিনয়, গান, নাচ, ও ঘোড় দৌড়ের পাঠ গ্রহণ করেন।[১০] বিশ্বব্যাপী ₹৬২০ মিলিয়ন আয়কারী[১১] কাহো না... প্যায়ার হ্যায় চলচ্চিত্রটি ২০০০ সালের সর্বোচ্চ আয়কারী ভারতীয় চলচ্চিত্র।[১২] সমালোচকগণ রোশনের অভিনয়ের প্রশংসা করেন;[১৩][১৪] রেডিফ.কমের সুজ্ঞু কাঞ্চনা লিখেন, [রোশন] ভালো। তার নৃত্য, অঙ্গভঙ্গি, মারপিটে তার সহজাত ভঙ্গি ও ধরন কাউকে বুঝতে দিবে না যে এটি তার অভিষেক চলচ্চিত্র... তিনি সাম্প্রতিক কালে তারকাদের সন্তানদের মধ্যে সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল।"[৮] এই কাজের জন্য রোশন শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার এবং শ্রেষ্ঠ নবাগত অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, আইফা পুরস্কার, ও জি সিনে পুরস্কার অর্জন করেন।[১৫] তিনিই প্রথম অভিনেতা হিসেবে একই বছর শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও শ্রেষ্ঠ নবাগত অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন।[১৬] চলচ্চিত্রটি রোশনকে বলিউডের প্রসিদ্ধ অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা অর্জন করতে সাহায্য করে।[১৭]
বছর | চলচ্চিত্রের নাম | চরিত্র | টীকা |
---|---|---|---|
১৯৮০ | আশা | "জানে হাম সাদাক কে লগন সে" গানে বিশেষ উপস্থিতি | |
আপ কে দিওয়ানে | "রাম কারে" গানে বিশেষ উপস্থিতি | ||
১৯৮১ | আস পাস | "সেহার মে চার্চি হ্যায়" গানে বিশেষ উপস্থিতি | |
১৯৮৬ | ভগবান দাদা | গোবিন্দ | শিশু শিল্পী |
২০০০ | কাহো না...পেয়ার হ্যায় | রোহিত/রাজ চোপড়া | ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেতা পুরস্কার ফিল্মফেয়ার সেরা নবাগত অভিনেতা পুরস্কার |
ফিজা | আমান ইকরামুল্লাহ | মনোনীত, ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেতা পুরস্কার | |
মিশন কাশ্মীর | আলতাফ খান | ||
২০০১ | ইয়াদে | রনিত মালহোত্রা | |
কাভি খুশি কাভি গাম... | রোহান রায়চাঁদ | মনোনীত, ফিল্মফেয়ার সেরা পার্শ্ব অভিনেতা পুরস্কার | |
২০০২ | আপ মুঝে আচ্ছে লাগনে লাগে | রোহিত | |
না তুম জানো না হাম | রাহুল শর্মা | ||
মুঝসে দোস্তি কারোগি! | রাজ খান্না | ||
২০০৩ | ম্যায় প্রেম কি দিওয়ানি হুঁ | প্রেম কিষাণ মাথুর | |
কোই... মিল গেয়া | রোহিত মেহরা | ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেতা পুরস্কার ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেতা পুরস্কার (সমালোচক) | |
২০০৪ | লক্ষ্য | করণ শেরগিল | মনোনীত, ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেতা পুরস্কার |
২০০৬ | কৃষ | কৃষ্ণা "কৃষ" মেহরা/ রোহিত মেহরা |
মনোনীত, ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেতা পুরস্কার |
ধুম ২ | আরিয়ান/মি. এ | ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেতা পুরস্কার | |
আই সি ইউ | "সুবাহ সুবাহ" গানে বিশেষ উপস্থিতি | ||
২০০৭ | ওম শান্তি ওম | নিজ | বিশেষ উপস্থিতি |
২০০৮ | যোধা আকবর | জালালউদ্দিন মোহাম্মদ আকবর | ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেতা পুরস্কার |
ক্রেজি ৪ | "ক্রেজি ৪" গানে বিশেষ উপস্থিতি | ||
২০০৯ | লাক বাই চান্স | আলি জাফর খান | |
২০১০ | কাইটস | জয় সিংহানিয়া | |
গুজারিশ | ইথান ম্যাসকারেনহাস | মনোনীত, ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেতা পুরস্কার | |
২০১১ | জিন্দেগী না মিলেগী দোবারা | অর্জুন সালুজা | মনোনীত, ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেতা পুরস্কার |
ডন ২ | ডন | বিশেষ উপস্থিতি | |
২০১২ | অগ্নিপথ | বিজয় দীননাথ চৌহান | মনোনীত, ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেতা পুরস্কার |
২০১৩ | ম্যায় কৃষ্ণা হুঁ | রাহুল | বিশেষ উপস্থিতি |
কৃষ ৩ | কৃষ্ণা "কৃশ" মেহরা/ রোহিত মেহরা |
||
২০১৪ | ব্যাং ব্যাং! | রাজবীর/ জয় নন্দা | মনোনীত, ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেতা পুরস্কার |
২০১৬ | মহেঞ্জো দাড়ো | সারমান | - |
২০১৭ | কাবিল | রোহন ভটনাগর | |
২০১৯ | সুপার ৩০ | আনন্দ কুমার | বক্স-অফিসে হিট হয়েছে |
২০১৯ | ওয়ার | কবীর লুথরা | ২০১৯ সালের সর্বোচ্চ আয়কারী বলিউড মুভি |
২০২২ | বিক্রম বেদ | বেদ | সম্পূর্ণ |
|- | ২০২৪ | ফাইটার | প্যাটি | আসিতেছে |}