"হেনি পেনি", মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যা সাধারণত "চিকেন লিটল" এবং কখনও কখনও "চিকেন লিকেন" নামে পরিচিত, একটি ইউরোপীয় লোককাহিনী। এটি একটি মুরগির গল্প যে বিশ্বাস করে যে এই পৃথিবীর অন্তিম সময় নিকিট। এই গল্পে ব্যবহৃত একটি বাক্যাংশ "দ্যি স্কাই ইজ্ ফলিং" এই গল্পের এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য এবং এটি একটি সাধারণ বাগধারা হিসাবে ইংরেজি ভাষায় বহুদিন হল ব্যবহার হয়ে আসছে। এই বাক্যাংশ বা বাগধারা একটি আসন্ন বিপর্যয়ের আবেগোন্মত্ততা বা ভুল বিশ্বাসকে নির্দেশ করে। এই ধরণের গল্পগুলি ২৫ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে প্রচলিত।[১] এবং বিভিন্ন মাধ্যমে "হেনি পেনি" -এর উল্লেখ দেখা যায়।
এই গল্পটি রূপকথার গল্প শ্রেনিবিন্যাসকারী আরনে-থম্পসন-উথার ইনডেক্স অনুসারে ২০সি বিভাগে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এতে এমন লোককথার আন্তর্জাতিক উদাহরণ রয়েছে যা মস্তিষ্কবিকৃতি এবং গণ মৃগীরোগের আলোকে লেখা।[২] গল্পটির বেশ কয়েকটি পশ্চিমী সংস্করণ রয়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক পরিচিত সংস্করনটিতে একটি মুরগী ছানার উল্লেখ করা হয়েছে, যার মাথায় একটি অ্যাকর্ন (ওক গাছের ফল) পড়লে সে বিশ্বাস করে যে আকাশ ভেঙে পড়েছে। ছানাটি রাজাকে এই কথা বলার সিদ্ধান্ত নেয় এবং তার যাত্রায় অন্যান্য প্রাণীদের সাথে দেখা করে যারা তার সাথে অনুসন্ধানে যোগ দেয়। এই গল্পের বিভিন্ন সংস্করনে অনেক সমাপ্তি দেখা যায়। সবচেয়ে পরিচিত সমাপ্তি হল একটি শিয়াল এই সমস্ত প্রানীদের আমন্ত্রণ জানায় এবং তারপরে তাদের খেয়ে ফেলে।
গল্পের বেশিরভাগ পুনঃসংস্করনে, প্রাণীদের ছন্দময় নাম রয়েছে। সাধারণত চিকেন লিকেন বা চিকেন লিটল, হেনি পেনি বা হেন-লেন, ককি লকি, ডাকি লাকি বা ডাকি ড্যাডলস, ড্রেকি লেকি, গুজি লুসি বা গুজি পুসি, গ্যান্ডার ল্যান্ডার, টার্কি লুরকি এবং ফক্সি এই কাব্যিক নামগুলি বেশ জনপ্রিয়। লক্সি বা ফক্সি ওয়াক্সি নামটিও বহুল প্রচলিত।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই গল্পের সবচেয়ে প্রচলিত নাম হল "চিকেন লিটল", যা ১৯ শতকের প্রথম দিকে শিশুদের জন্য সচিত্র বই দ্বারা প্রকাশিত হয়। ব্রিটেনে, এটি "হেনি পেনি" এবং "চিকেন লিকেন" নামে বেশি পরিচিত।
এই গল্পটি মূলত মৌখিক লোক ঐতিহ্যের অংশ ছিল এবং ১৯ শতকের প্রথম দিকে গ্রিম ভাইয়েরা তাদের জার্মান গল্পের সংগ্রহের মধ্যে একটি বিশেষ ধাঁচের ইউরোপীয় গল্পের উদাহরণ স্থাপন করার উদ্দেশ্যেই এটি মুদ্রিত করতে শুরু করে। প্রথম দিকে, স্ক্যান্ডিনেভিয়ান সাহিত্য থেকে গল্প সংগ্রহের একজন বিশেষজ্ঞ ছিলেন জাস্ট ম্যাথিয়াস থিলি, যিনি ১৮২৩ সালে ডেনিশ ভাষায় হেনি পেনির গল্পের একটি প্রাথমিক সংস্করণ প্রকাশ করেছিলেন।[৩] সেখানে চরিত্রগুলোর নাম হল কাইলিং ক্লুক,[note ১] হোনে পোনে,[note ২] হানে পেনে,[note ৩] সেভান্দ,[note ৪] গাসে পাসে,[note ৫] এবং রেভ্ স্কারেভ।[note ৬] এই গল্পের থিয়েলের লিখিত শিরোনামহীন সংস্করনে একটি বাদাম এই গল্পের মুখ্য চরিত্র কাইলিং ক্লুকের পিঠে পড়ে এবং তাকে আঘাত দেয়। তারপরে তিনি গল্পের অন্য প্রতিটি চরিত্রের কাছে যান এবং ঘোষণা করেন যে "আমি মনে করি সমস্ত বিশ্ব পতনশীল" এবং তার ফলে গল্পের অন্যনায় চরিত্ররা ভয়ে ছোটাছুটি শুরু করে। শিয়াল এই আতংকগ্রস্ত প্রানীদের দলে যোগ দেয় এবং যখন তারা কাঠের কাছে পৌঁছায়, তাদের পিছন থেকে একে একে খেয়ে ফেলে।অন্যান্য সংস্করণ প্রকাশিত হওয়ার পর বেঞ্জামিন থর্পে এই গল্পটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন।