এই নিবন্ধটি মেয়াদোত্তীর্ণ। |
হোজে রামোস হোর্তা জিকলএইচ জিসিএল | |
---|---|
![]() ২০২৩ এ হোর্তা | |
পূর্ব তিমুরের চতুর্থ ও ৭ম রাষ্ট্রপতি | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ১৭ এপ্রিল ২০০৮, ২০ মে ২০২২ | |
প্রধানমন্ত্রী | জানানা গুসামাও |
পূর্বসূরী | ফার্নান্দো ডি আরাউজো (ভারপ্রাপ্ত) |
উত্তরসূরী | তাউর মাতান রুয়াক |
কাজের মেয়াদ ২০ মে ২০০৭ – ১১ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ | |
প্রধানমন্ত্রী | এস্তানিস্লাউ দা সিলভা জানানা গুসামাও |
পূর্বসূরী | জানানা গুসামাও |
উত্তরসূরী | ভিসেন্তে গুতেরেস (ভারপ্রাপ্ত) |
পূর্ব তিমুরের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ২৬ জুন ২০০৬ – ১৯ মে ২০০৭ | |
রাষ্ট্রপতি | জানানা গুসামাও |
পূর্বসূরী | মারি আলকাতিরি |
উত্তরসূরী | এস্তানিস্লাউ দা সিলভা |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | হোসে ম্যানুয়েল রামোস হোর্তা ২৬ ডিসেম্বর ১৯৪৯ দিলি, পর্তুগিজ তিমুর (বর্তমান পূর্ব তিমুর) |
রাজনৈতিক দল | স্বতন্ত্র |
দাম্পত্য সঙ্গী | আনা পেসোয়া (বিবাহ বিচ্ছেদ) |
সন্তান | ১ |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | অ্যান্টিওচ মহাবিদ্যালয় বুসান পররাষ্ট্রবিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয় |
স্বাক্ষর | ![]() |
হোজে ম্যানুয়েল রামোস হোর্তা জিকলএইচ জিসিএল (পর্তুগিজ উচ্চারণ: [ʒuˈzɛ ˈʁɐ̃muz ˈɔɾtɐ]; জন্ম ২৬ ডিসেম্বর ১৯৪৯) হলেন একজন পূর্ব তিমুরীয় রাজনীতিবিদ, যিনি ২০ মে ২০০৭ থেকে ২০ মে ২০১২ ও ২০২২ সাল থেকে আবার দেশটির রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।[১][২] তিনি ২০০২ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ২০০৬ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। "যথাযথভাবে এবং শান্তিপূর্ণভাবে পূর্ব তিমুর সংঘাতের সমাধান" নিয়ে কাজ করার জন্য কার্লোস ফিলিপে জিমেনেস বেলোর সাথে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
ফ্রেতিলিনের প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক সদস্য হিসেবে ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত পূর্ব তিমুরে ইন্দোনেশীয় আগ্রাসনের সময়ে নির্বাসিত পূর্ব তিমুরীয় মুখপাত্র হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৯৮ সালে তিনি ফ্রেতিলিন থেকে পদত্যাগ করেন এবং স্বতন্ত্র রাজনীতিবিদে পরিণত হন।[৩]
২০১২ সালে পূর্ব তিমুর স্বাধীন হলে তিনি সেদেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকটের দরুন ২০০৬ সালের ২৫ জুন পদত্যাগ করেন। মারি আলকাতিরিরির পদত্যাগের পর ২৬ জুন তিনি পূর্ব তিমুরীয় রাষ্ট্রপতি জানানা গুসামাও কর্তৃক সেদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। ২ সপ্তাহ পর, ২০০৬ সালের ১০ জুলাই তিনি পূর্ব তিমুরের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তিনি ২০০৭ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পূর্ব তিমুরের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি এক হত্যাপ্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তিনি গুলিবিদ্ধ হন।
রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদকাল শেষ হবার পর তিনি ২০১২ সালে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি এবং ২০১৩ সালের ২ জানুয়ারিতে গিনিবিসাউয়ে জাতিসংঘ সমন্বিত শান্তিপ্রতিষ্ঠা কার্যক্রমের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি ২০২২ সালে পুনরায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন
মেস্টিজো জাতিসত্তার ১৯৪৯ সালে দিলিতে জন্মগ্রহণ করেন।[৪] তার মা ছিলেন একজন তিমুরীয় এবং বাবা ছিলেন একজন পর্তুগিজ যাকে অ্যান্টনিও ডি অলিভিয়ার সালাজারের শাসন চলাকালে পর্তুগিজ তিমুরে নির্বাসিত করা হয়। রামোস হোর্তা সোইবাদা গ্রামের ক্যাথলিক মিশনে পড়াশোনা করেছেন। পূর্ব তিমুরে ইন্দোনেশীয় আগ্রাসনের সময়ে গ্রামটিতে ফ্রেতিলিনের প্রধান কার্যালয় অবস্থিত ছিল। রামোস হোর্তার ১১ ভাইবোনের মাঝে ৪ জনকে ইন্দোনেশীয় সেনাবাহিনী হত্যা করেছিল।
তিনি ১৯৮৩ সালে গণ আন্তর্জাতিক আইনের উপরে হেগ আন্তর্জাতিক আইন প্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর, ১৯৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওহিওর অ্যান্টিওচ মহাবিদ্যালয় থেকে শান্তিবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।তিনি ১৯৮৩ সালে ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গ থেকে ১৯৮৩ সালে মানবাধিকার আইন বিষয়ে প্রশিক্ষণ লাভ করেন। তিনি ১৯৮৩ সালে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ে নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন, যেটি তার স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত ছিল।[৫][৬] তিনি ১৯৮৭ সাল থেকে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহযোগী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তিনি পর্তুগিজসহ ইংরেজি, ফরাসি, স্পেনীয়, পূর্ব তিমুরে সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা তেতুম—এই পাঁচটি ভাষায় কথা বলতে পারেন।[৭]
তার সাথে আনা পেসোয়া পিন্টোর বিবাহবিচ্ছেদ ঘটেছে, যিনি দেশটির অভ্যন্তরীণ প্রশাসন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তাদের সংসারে লরা হোর্তা নামে এক ছেলের জন্ম হয়েছিল, যিনি তাদের নির্বাসনকালীন সময়ে মোজাম্বিকে জন্মগ্রহণ করেন।[৮]
তিনি পর্তুগিজ তিমুরে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করেছেন। ফলশ্রুতিতে তাকে ১৯৭০ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পর্তুগিজ মোজাম্বিকে নির্বাসন জীবন কাটাতে হয়। তার পূর্বে তার দাদাকে পর্তুগালের মূল ভূখণ্ড থেকে এইজরজ দ্বীপপুঞ্জে এবং পরবর্তীতে কেপ ভার্দে, পর্তুগিজ গিনি ও সর্বশেষে পর্তুগিজ তিমুরে নির্বাসিত করা হয়।
স্বাধীনতার পূর্বে পূর্ব তিমুরের রাজনীতিতে মধ্যপন্থার উত্থানের সময়ে ১৯৭৫ সালের নভেম্বরে তাকে স্বাধীনতাকামী দলগুলো নিয়ে গঠিত পূর্ব তিমুর গণতন্ত্রী প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২৫ বছর। তিনি পূর্ব তিমুরে ইন্দোনেশীয় আগ্রাসন শুরু হবার তিন দিন পূর্বে পূর্ব তিমুর ত্যাগ করেছিলেন।
রামোস হোর্তা নিউইয়র্কে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পূর্ব তিমুরে ইন্দোনেশীয় আগ্রাসন সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি আরো জানান যে, সংস্থাটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে আনুমানিক এক লাখ দুই হাজার মানুষ মারা যেতে পারে।[৯] রামোস হোর্তা পরবর্তী দশ বছরে জাতিসংঘে ফ্রেতিলিনের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছে। তার সে সময়ের বন্ধুরা তার সম্পর্কে বলেছেন যে, তিনি মাত্র ২৫ মার্কিন ডলার পকেটে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। তাকে আর্থিক ক্ষেত্রে কাটছাঁট করে চলতে হত; তিনি আংশিকভাবে মার্কিনিদের দয়ায় বেঁচে ছিলেন যারা তার রাজনীতি এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞার প্রশংসা করত। এছাড়াও, তাকে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যেয়ে তার দলের অবস্থান সম্পর্কে বক্তৃতা প্রদান করা লাগত।
১৯৯৩ সালে পূর্ব তিমুরীয় জনগণকে রাফতো পদক প্রদান করা হয়। তিনি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে পূর্ব তিমুরীয় জনগণের পক্ষে রাফতো পদক গ্রহব করেন। ১৯৯৪ সালের মে মাসে ইন্দোনেশীয় সরকারের চাপে সেদেশের রাষ্ট্রপতি ফিদেল রামোসকে ম্যানিলায় পূর্ব তিমুর সংক্রান্ত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন বন্ধ করতে চাপ প্রয়োগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন ও রামোস হোর্তাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল এবং বছরের পরবর্তী সময়ে থাই সরকার তাকে পার্সোনা নন গ্রাটা বলে অভিহিত করে।[১০]
১৯৯৬ সালের ডিসেম্বর মাসে রামোস হোর্তা কার্লোস ফিলিপে জিমেনেস বেলোর সাথে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করেন। নোবেক কমিটি তাদের "একটি ক্ষুদ্র জাতির ব্যক্তিদের উপরে নিপীড়ন প্রতিরোধে টেকসই পদক্ষেপ" এর জন্য নোবেল প্রদান করেছিল এবং আশা প্রকাশ করেছিল যে, "এই পুরস্কার পূর্ব তিমুরের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার লাভ করার ক্ষেত্রে কূটনৈতিক সমাধান খোঁজার ক্ষেত্রে প্রেরণা যোগাবে"। নোবেল কমিটি তাকে "১৯৭৫ সাল থেকে পূর্ব তিমুর ঘটনার প্রধান আন্তর্জাতিক মুখপাত্র" বলে অভিহিত করেছিল।[১১]
রামোস হোর্তা সেদেশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত বিষয়টির প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি দিয়েছিলেন, যা সেদেশের স্বাধীনতা লাভে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তিনি পূর্ব তিমুরের সংকটকালীন সময়ে সেদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘ প্রশাসনের সাথে এক গুরুত্বপূর্ণ যৌথ কর্মশালায় তিমুরীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ২০০০ সালের ১ মার্চ অনুষ্ঠিত সভায় নতুন কৌশল এবং প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। কর্মশালা শেষে কার্যনির্বাহী ক্ষমতাসম্পন্ন যৌথ প্রশাসনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল, যাতে তিমুরীয় পুনর্গঠনকালীন জাতীয় কংগ্রেসের নেতাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছিল। সে বছরের মে মাসে অনুষ্ঠিত সভায় বিষয়টি নিয়ে আরো বিশদ আলোচনা করা হয়েছিল। ২০০০ সালের ২২ জুন ও ২৭ জুনের পূর্ব তিমুরে নিযুক্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূর সের্জিও ভিয়েইরা ডি মেলো লিসবনে দাতাদের এক সম্মেলনে এবং নিরাপত্তা পরিষদে নতুন এই পরিকল্পনার কথা উপস্থাপন করেছিলেন।[১২][১৩] ২০০০ সালের ১২ জুলাই ৪ জন পূর্ব তিমুরীয় এবং ৪ জন জাতিসংঘ প্রতিনিধির মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রীসভার প্রস্তাবটি গৃহীত হয়।[১৪] পুনর্গঠিত যৌথ প্রশাসন দেশটির স্বাধীনতার প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রদান করেছিল এবং ২০০২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর দেশটি জাতিসংঘের যোগদান করেন। রামোস হোর্তা পূর্ব তিমুরের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন।
সেদেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পদত্যাগ করার পর ২০০৬ সালের ৩ জুন তার দায়িত্বের সাথে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে অন্তর্বর্তী প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব যোগ করা হয়।[১৫] তিনি ২০০৬ সালের ২৫ জুন দুইটি পদ থেকেই পদত্যাগ করেন এবং ঘোষণা করেন, "আমার বর্তমান সরকার কিংবা মারি আলকাতিরির সাথে জড়িত কোন সরকারের সাথে কাজ করার ইচ্ছা নাই।"[১৬] প্রধানমন্ত্রী আলকাতিরিকে রাষ্ট্রপতি জানানা গুসামাওয়ের নিকট পদত্যাগপত্র পেশ করতে চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু, ২৫ জুনের সভায় ফ্রেতিলিন দলের নেতারা আলকাতিরিকে প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল রাখতে মত প্রদান করেন এবং এর দরুন তাৎক্ষণিকভাবে পদত্যাগ করেন রামোস হোর্তা।[১৭] অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডাউনার তার পদত্যাগের ঘটনায় ব্যক্তিগত অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।[১৮] আলকাতিরি ২৬ জুন পদত্যাগ করলে রামোস হোর্তা দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন এবং প্রধানমন্ত্রী পদে কেউ আসার পূর্ব পর্যন্ত অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১৯] ২০০৬ সালের ৮ জুলাই তাকে সেদেশের রাষ্ট্রপতি গুসামাও প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ প্রদান করেন।[২০] ১০ জুলাই তিনি শপথ গ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী পদে যোগদানের পূর্বে তাকে জাতিসংঘের মহাসচিব পদে কফি আনানের উত্তরসূরি হিসেবে গণ্য করা হচ্ছিল।[২১] তিনি পূর্ব তিমুরের প্রধানমন্ত্রীত্বের জন্য তিনি জাতিসংঘের মহাসচিব পদে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের তালিকায় তার নাম কাটা যায় কিন্তু তিনি ইঙ্গিত প্রদান করেন যে, অদূর ভবিষ্যতে তিনি এই পদে লড়বেন। তিনি বলেন: "আমি যদি পদটির প্রতি আগ্রহী হই তবে ২০১২ সাল পর্যন্ত আমাকে পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হবে। আমি এতে আগ্রহী।"[২২]
২০০৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আল জাজিরায় প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি ২০০৭ সালের পূর্ব তিমুরীয় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা জানান।[২৩] ২০০৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপতি পদে তার প্রার্থিতা ঘোষণা করেন। তিনি গুসামাওয়ের সমর্থন লাভ করেন, যিনি পুনরায় নির্বাচনে না লড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।[২৪] গ্লোবাল সাউথ ডেভেলপমেন্ট ম্যাগাজিন কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মহাত্মা গান্ধীকে তার আদর্শ বলে অভিহিত করেন।[২৫]
৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রথম দফার নির্বাচনে তিনি ২১.৮১% ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান দখল করেন। তিনি এবং ফ্রেতিলিন দলের প্রতিদ্বন্দ্বী ফ্রান্সিসকো গুতেরেস, যিনি প্রথম দফার নির্বাচনে প্রথম স্থান দখল করেন, মে মাসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।[২৬] ১১ মে দেশটির জাতীয় নির্বাচনী কমিটির মুখপাত্র মারিয়া অ্যাঞ্জেলিনা সারমেন্তো নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা করেন এবং রামোস হোর্তা ৬৯% ভোট পেয়ে বিজয়ী হন।[২৭]
দিলির সংসদ ভবনে ২০০৭ সালের ২০ মে পূর্ব তিমুরের রাষ্ট্রপতি পদে তার অভিষেক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।[২৮] এর আগের দিন তিনি প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন এবং এস্তানিস্লাউ দা সিলভা তার উত্তরসূরি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
২০১২ সালের ১৭ মার্চ অনুষ্ঠিত দেশটির তৃতীয় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রথম দফায় তিনি দ্বিতীয় ও শেষবার নির্বাচিত হবার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে তিনি ১৯.৪৩% ভোট পেয়ে ২৭.২৮% ভোট পাওয়া ফ্রান্সিসকো গুতেরেস এবং ২৪.১৭% ভোট পাওয়া তাউর মাতান রুয়াকের পিছনে থেকে তৃতীয় স্থান দখল করেন। তিনি পরাজয় স্বীকার করে নেন।[২৯] ১৯ মে তাউর মাতান রুয়াক তার উত্তরসূরি হিসেবে শপথ নেবার পর রাষ্ট্রপতি পদে তার মেয়াদকাল শেষ হয়।[৩০][৩১]
২০০৮ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি হোজে রামোস হোর্তাকে হত্যার প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। বন্দুকযুদ্ধে তার এক দেহরক্ষী আহত এবং আলফ্রেডো রেইনাদোসহ দুইজন বিদ্রোহী সৈনিক নিহত হয়।[৩২][৩৩] দিলির নিউজিল্যান্ডীয় সামরিক ছাউনিতে তাকে চিকিৎসা প্রদান করার পর তাকে উন্নততর চিকিৎসা প্রদানের জন্য অস্ট্রেলিয়ার রয়াল ডারউইন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ডাক্তাররা ভেবেছিলেন যে, তাকে দুই বা তিনবার গুলি করা হয়েছে এবং তার বাম ফুসফুস গুরুতর জখম হয়েছে।[৩৪] তার অবস্থা সংকটজনক হলেও স্থিতিশীল ছিল।[৩৫] তিনি সম্পূর্ণ লাইফ সাপোর্টে থাকাকালীন সময়ে সাময়িকভাবে কোমায় চলে যান এবং ২১ ফেব্রুয়ারি চেতনা ফিরে পান।[৩৬][৩৭] ডারউইনেআরোগ্যলাভকালীন সময়ে ১২ মার্চ তার একটি বার্তা গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। বার্তায় তিনি তার সমর্থকদের এবং অস্ট্রেলিয়াকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন যে, তাকে খুব "ভালোভাবে দেখাশোনা করা হচ্ছে।" একজন মুখপাত্র জানান যে, তার অবস্থার উন্নতি ঘটছে এবং তিনি শারীরিক ব্যায়াম হিসেবে অল্প হাঁটাহাঁটি করছেন।[৩৮]
১৯ মার্চ রয়াল ডারউইন হাসপাতালে তার চিকিৎসা কার্যক্রম শেষ হয়। তা সত্ত্বেও, তিনি জানান যে, ফিজিওথেরাপি নেবার জন্য তিনি "আরো কিছু সপ্তাহ" অস্ট্রেলিয়ায় থাকবেন। তিনি আরো জানান যে, তিনি গুলিবিদ্ধ হবার পর সজ্ঞান অবস্থায় ছিলেন এবং তার "সব খুঁটিনাটি মনে আছে (করতে পারেন)"। তিনি এরপর তাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি বর্ণনা করলেন।[৩৯] এপ্রিল মাসের ১৭ তারিখে তিনি দেশে ফিরে আসার পর সংবাদ সম্মেলনে অবশিষ্ট বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণ করার আহবান জানান।[৪০]
২০১২ সালে গিনি বিসাউয়ে সামরিক অভ্যুত্থান সংঘটির হবার পর তাকে সংঘাত নিরসনের জন্য মধ্যস্থতা করার জন্য অনুরোধ করা হয়। তিনি দেশটিতে জাতিসংঘের বিশেষ দূত হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন।[৪১]
তিনি ওয়ার্ডস অব হোম ইন ট্রাবলড টাইমস শিরোনামের একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন।[৪২]
রামোস হোর্তা অন্যান্য নোবেলজয়ী ব্যক্তিদের সাথে পিসজ্যাম সম্মেলনে বক্তৃতা প্রদান করে থাকেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তিনি ২০১০ সাল থেকে শান্তি ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট দ্যকম্যুনিটি.কম এর উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০১ সালে তিনি ৯/১১ ঘটনা পরবর্তী বক্তব্য সংগ্রহ করেছিলেন এবং অন্যান্য নোবেলজয়ী ব্যক্তিদের সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।[৪৩]
রামোস হোর্তা ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের একজন সমর্থক এবং মার্কিন আগ্রাসনের বিরোধাতায়ারীদের মার্কিনবিরোধী মনোভাবকে "ভণ্ডামিপূর্ণ" বলে অভিহিত করেন। নব্বইয়ের দশকে তিনি ইরাকের কুর্দি জনগণের পক্ষে নিজের অবস্থানের কথা ব্যক্ত করেছিলেন।[৪৪]
২০০৯ সালের মে মাসে রামোস হোর্তা বিবৃতি প্রদান করেন যে, মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা যদি নোবেলজয়ী অং সান সু চিকে অন্তরীণ করে রাখে, তবে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে বিষয়টির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার জন্য অনুরোধ করবেন।[৪৫] ২০১০ সালের আগস্ট মাসে মিয়ানমারের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গির কিছুটা পরিবর্তন ঘটে। তিনি দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান উইনকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান এবং মিয়ানমারের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন এবং দেশটির সাথে শক্তিশালী বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে তার আগ্রহের কথা জানান।[৪৬]
তিনি আন্তর্জাতিক সমকালীন নীতি (সিমপল্ল প্রথমদিকে স্বাক্ষর করা ব্যক্তিদের মাঝে অন্যতম। এতে সমকালীন বৈশ্বক অচলাবস্থা সমাধানের কথা বলা হয়েছে। তিনি ২০০৬ সালে এতে স্বাক্ষর করেন।[৪৭]
২০০৯ সালের আগস্ট মাসে তিনি ফিলিপাইনের সাবেক রাষ্ট্রপতি কোরাজন অ্যাকুইনোর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগদান করেন।[৪৮] ২০১০ সালের ৩০ জুন তিনি ফিলপাইনের পঞ্চদশ রাষ্ট্রপতি তৃতীয় বেনিগনো অ্যাকুইনোর অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। তিনি ছিলেন অনুষ্ঠান উপলক্ষে ফিলিপাইনে আগমনকারী প্রথম ব্যক্তি এবং অনুষ্ঠানে যোগদানকারী একমাত্র রাষ্ট্রপ্রধান।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তার এই দুইটি কর্মকাণ্ডের দরুন পূর্ব তিমুর ও ফিলিপাইনের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পায় এবং পূর্ব তিমুরের আসিয়ানে যোগদানের স্বপক্ষে ফিলিপাইনীয় সমর্থন যুক্ত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
তিনি বৈশ্বিক নেতৃত্ব ফাউন্ডেশনের একজন সদস্য। সংস্থাটি গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের পক্ষে এবং মধ্যস্থতা ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, মুক্তবাজার, মানবাধিকার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কোন অঞ্চলে সংঘাত নিরসনের পক্ষে কাজ করে চলেছে। সংস্থাটি প্রাক্তন নেতাদের বুদ্ধিমত্তা, আত্মবিশ্বাস এবং অভিজ্ঞতাকে বর্তমান জাতীয় নেতাদের কাছে উপস্থাপন করার মাধ্যমে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। অলাভজনক এই সংস্থায় সাবেক সরকারপ্রধান, সরকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত সংস্থাটি সরকারপ্রধানদের সাথে শাসন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কাজ করে থাকে।
২০১৬ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির ভূমিকার সমালোচনা করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কাছে একটি খোলা চিঠি প্রেরণ করেন ১৩ জন নোবেলজয়ীসহ মোট ২৩ জন আন্তর্জাতিক ব্যক্তি, যাদের মধ্যে তিনি অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।[৪৯][৫০] ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে তিনিসহ দশজন নোবেল বিজয়ী সৌদি সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেবার অভিযোগে ১৪ জন যুবকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না করার জন্য অনুরোধ করেন।[৫১][৫২]
তিনি এবং পূর্ব তিমুরের রোমান ক্যাথলিক বিশপ জিমেনেস বেলো ১৯৯৬ সালে তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
টম জুব্রিকি পরিচালিত ২০০০ সালের প্রামাণ্যচিত্র দ্য ডিপ্লোম্যাট এর গল্প ১৯৯৮ সালে থেকে ২০০০ সালে তার পূর্ব তিমুরে পুনরায় আগমনের মধ্যবর্তী সময়কালে তার জীবনে সংঘটিত ঘটনাবলি নিয়ে আবর্তিত হয়েছে।[৫৬][৫৭] ২০০৯ সালে বালিভো ফাইভ নামের এক অস্ট্রেলীয় সাংবাদিক দল এবং পূর্ব তিমুরে ইন্দোনেশীয় আগ্রাসনের কাহিনিকে ভিত্তি করে বালিবো শিরোনামের একটি চলচ্চিত্র মুক্তি পায়।[৫৮] চলচ্চিত্রটিতে 'হোজে রামোস হোর্তা' চরিত্রে অভিনয় করেন অস্কার আইজ্যাক।[৫৯]
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৯।
However, Ramos-Horta – who is in Hong Kong to launch his book Words of Hope in Troubled Times – expects greater cooperation in the future.
রাজনৈতিক দপ্তর | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী মারি আলকাতিরি |
পূর্ব তিমুরের প্রধানমন্ত্রী ২০০৬–২০০৭ |
উত্তরসূরী এস্তানিস্লাউ দা সিলভা |
পূর্বসূরী জানানা গুসামাও |
পূর্ব তিমুরের রাষ্ট্রপতি ২০০৭–২০০৮ |
উত্তরসূরী ভিসেন্তে গুতেরেস ভারপ্রাপ্ত |
পূর্বসূরী ফার্নান্দো ডি আরাউজো ভারপ্রাপ্ত |
পূর্ব তিমুরের রাষ্ট্রপতি ২০০৮–২০১২ |
উত্তরসূরী তাউর মাতান রুয়াক |