হোলোঙাপার গিবন অভয়ারণ্য[১][২] Hoollongapar Gibbon Sanctuary | |
---|---|
আইইউসিএন বিষয়শ্রেণী IV (বাসস্থান/প্রজাতি ব্যবস্থাপনা অঞ্চল) | |
![]() উল্লুক (Hoolock hoolock) | |
অবস্থান | যোরহাট, অসম, ভারত |
নিকটবর্তী শহর | যোরহাট |
স্থানাঙ্ক | ২৬°৪৩′০০″ উত্তর ৯৪°২৩′০০″ পূর্ব / ২৬.৭১৬৬৬৭° উত্তর ৯৪.৩৮৩৩৩৩° পূর্ব |
আয়তন | ২,০৯৮.৬২ ha (৮.১ মা২) |
স্থাপিত | ১৯৯৭ |
হোলোঙাপার গিবন অভয়ারণ্য (অসমীয়া: হোলোঙাপাৰ গিবন অভয়াৰণ্য; ইংরেজি: Hoollongapar Gibbon Sanctuary) ভারতের আসাম রাজ্যে অবস্থিত চিরসবুজ অরণ্যের একটি সংরক্ষীত বনাঞ্চল। ১৯৯৭ সালে অরণ্যটি অভয়ারণ্যের মর্যদা লাভ করে। ১৮৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই অভয়ারন্যটির সীমানা পাটকাই পর্বতের পাদদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। পরবর্ত্তী সময়ে অরণ্যটির বহুঅংশ ছোট ছোট গ্রাম ও চা-বাগান দখল করে। ১৯ শতিকার প্রথম ভাগে অরণ্যের বিকাশের জন্য বৃক্ষ রোপণ করা হয় ফলে এখানে জৈববৈচিত্রের বৃদ্ধি পায়। হোলাঙাপার গিবন অভয়ারণ্যে ভারতের একমাত্র গিবন উল্লুক ও উত্তর-পূর্ব ভারতের একমাত্র নিশাচর প্রাইমেট বাংলা লজ্জাবতী বানর দেখা যায়। এখানে পাওয়া দীর্ঘ গাছের মধ্যে হোলং গাছ, মাঝারি গাছের মধ্যে নাহর ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। ছোট ছোট গুল্মজাতীয় গাছ দ্বারা অভয়ারণ্যটি আবৃত হয়ে আছে। কিন্তু গোপনে গাছ কাটা ও বসতি স্থাপন ইত্যাদি অরণ্যটির বিপদের অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
১৮৮১ সনে ৭ আগস্ট স্বীকৃতি প্রাপ্ত অসমের যোরহাট জেলার হোলাঙাপার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের অংশ থেকে হোলাঙাপার অভয়ারণ্যের সৃষ্টি হয়েছে। [৩] এখানে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া হোলং গাছ থেকে নামটির উৎপত্তি হয়েছে।[৪] পূর্বে এটি পাটকাই পর্বতমালার পাদদেশের অরণ্য হিসেবে গন্য করা হত।[৩] এখন অভয়ারণ্যটি ছোট ছোট গ্রাম ও চা বাগান দ্বারা আবৃত হলেও একসময় এটি নাগাল্যান্ডের অরণ্যের সহিত সংযুক্ত ছিল। সংরক্ষিত অঞ্চলটি ২০৬ হেক্টর জমিতে আরম্ভ করা হয়েছিল কিন্তু ১৮৯৬ সালে কিছু অংশ অসংরক্ষিত করার ফলে অঞ্চলটি আয়তনে কমে আসে।[৩][৪] ১৮৮০ সন থেকে ১৯২০ সন পর্যন্ত চা-বাগান স্থাপন ও মাজুলী তথা এর নিকটবর্ত্তী অঞ্চল বন্যায় সর্বশ্রান্ত জনসাধারনকে পুনঃস্থাপন দেওয়ার ফলে অভয়ারণ্যটি খণ্ড বিখণ্ড হয়ে যায়। তারপর ক্রমান্বয়ে অরণ্যটি পর্বতের পাদদেশ থেকে পৃথক হয়ে পরে।[৩]
অঞ্চলটি বিভিন্ন চিরসবুজ গাছ ও বাঁশ গাছ দ্বারা পরিপূর্ণ। ১৯২৪ সনে অরণ্যটির বিকাশের জন্য বৃক্ষরোপন করা হয়। প্রাকৃতিক বৃক্ষরোপনের ফলে এখানে জৈববৈচিত্রের এক পরিপূর্ণ অরণ্যের সৃষ্টি করে। ১৯ শতিকায় এখানে আরও বনাঞ্চল সংযুক্ত হওয়ার ফলে ১৯৯৭ সনে এর আয়তন প্রায় ২০৯৮.৬২ হয়।[৩][৪] তথাপিও অরণ্যটি পাঁচটি ভাগে বিভক্ত।[৪] ১৯৯৭ সনের ৩০ জুলাই তারিখে বিজ্ঞাপন নং FRS 37/97/31-এর মাধ্যমে যোরহাট জেলায় অভয়ারণ্য প্রতিষ্ঠা করে গিবন অভয়ারণ্য নাম দেওয়া হয়। এই বনাঞ্চলে ভারতের একমাত্র উল্লুক নামক গিবন প্রজাতির বানর দেখা যায়। উল্লুক প্রজাতির বানর অসমীয়া নাম হলৌ । এই গিবন প্রজাতির হলৌ বানর থকে হোলাঙাপার গিবন অভয়ারন্য নামের উৎপত্তি । বানরের নামে নামকরণ করা এটিই ভারতের একমাত্র অভয়ারণ্য।[১][৩] ২০০৪ সনে ২৫মে তারিখে অসম সরকার বিজ্ঞাপন নং FRP 37/97/20-এর মাধ্যমে এটি হোলাঙাপার গিবন অভয়ারণ্য নামে পুনঃনামকরণ করে।[১]
হোলাঙাপার গিবন অভয়ারণ্যটি অসমের সমতলীয় অর্ধ চিরসবুজ অরণ্য হিসেবে শ্রেণিবিভাজন করা হয়েছে।[৩] এখানে প্রতিবছর ২৪৯ সেঃমিঃ বৃষ্টিপাত হয়। সাগরপৃষ্ঠ থেকে ১০০-১২০ ফূট উচ্চতায় অবস্থিত। বনাঞ্চলটির দক্ষিণ-পূর্ব দিকতি উচু। উত্তর-পশ্চিম দিকের উচ্চতা ক্রমস হ্রাস পেয়ে আসছে। মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া ভোগদৈ নদী অরণ্যে জলমগ্ন অঞ্চলের সৃষ্টি করেছে। অরণ্যের সিমানায় বিস্তৃত এই অংশে বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদ দেখা যায়। এই জলমগ্ন অঞ্চল অরণ্যটিকে তিনতি খুদ্র শ্রেণীতে বিভক্ত করেছে।[১]
জৈববৈচিত্রে ভরপুর এই অরণ্যে ভারতের একমাত্র গিবন হলৌ বান্দর[১][৩] ও উত্তর-পূর্ব ভারতের একমাত্র নিশাচর প্রাইমেট বাংলা লজ্জাবতী বানর ইংরেজি: Bengal slow loris[১][৫] দেখা যায়। এখানে পাওয়া আরেক শ্রেণীর প্রাইমেট হচ্ছে খাটোলেজি বানর (ইংরেজি: Stump-tailed Macaque), আসামি বানর (ইংরেজি: Assamese macaque), লাল বান্দর ইত্যাদি।[১] অভয়ারন্যটিতে ভারতীয় বাঘ, ভারতীয় হাতি ও চিতাবাঘ, দেশি বুনো শুয়োর ও অনেক প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী দেখা যায়। অভয়ারণ্যটিতে কমেও ২১৯ প্রজাতির পাখি ও কয়েক ধরনের সাপ দেখা যায়।[১]
|সাময়িকী=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)