ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
জন্ম | ডর্কিং, সারে | ১৯ নভেম্বর ১৮৪১|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ৮ এপ্রিল ১৮৮৯ বার্মন্ডসে, লন্ডন | (বয়স ৪৭)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান, উইকেট-রক্ষক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৬) | ১৫ মার্চ ১৮৭৭ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ৪ এপ্রিল ১৮৭৭ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৯ ডিসেম্বর ২০১৭ |
হেনরি হ্যারি জাপ (ইংরেজি: Harry Jupp; জন্ম: ১৯ নভেম্বর, ১৮৪১ - মৃত্যু: ৮ এপ্রিল, ১৮৮৯) সারের ডর্কিং এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত পেশাদার ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ১৮৬২ থেকে ১৮৮১ সময়কালে সারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানরূপে মাঠে নামতেন।
রক্ষণাত্মক কৌশল অবলম্বনের কারণে ব্যাপক পরিচিতি পান। পুরনো পাথরপ্রাচীর নামে পরিচিত উইল মর্টলকের অনুসরণে হ্যারি জাপ তরুণ পাথরপ্রাচীর ডাকনামে পরিচিত হন।[১] অনেকসময় বাজে বল থেকে রান না উঠানোর জন্যও ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন।[২] তবে অনুপযোগী পিচে খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুর দিকে তার এ কৌশল গ্রহণ বেশ কার্যকর ছিল। সময় যতোই গড়াতে থাকে, ততোই তার কাট ও ড্রাইভ শক্তিশালী হতে থাকে।[৩] সীমানা বরাবর ফিল্ডিং করতেন তিনি। এছাড়াও মাঝে-মধ্যে টেড পুলি’র অনুপস্থিতিতে উইকেট-রক্ষকের দায়িত্বে থাকতেন।
সারের ডর্কিং এলাকায় হ্যারি জাপের জন্ম। টুইংক্যানহামের ওয়েলেসলি হাউজ ক্লাবে শুরুরদিকের ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।[৪] প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলার পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকা স্বত্ত্বেও শক্তিশালী সারে একাদশের পক্ষে খেলার সুযোগ হয় তার। এ দলটিই ১৮৬৪ সালে বাদ-বাকী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে নয় উইকেটের ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছিল।[৫] টমাস হামফ্রেকে সাথে নিয়ে প্রথমবারের মতো সারের শক্তিশালী উদ্বোধনী জুটি গড়েন। [৬]
১৮৬০-এর দশকে শিরোপাধারী দল হওয়া স্বত্ত্বেও ১৮৭১ সালে সারে দলটি দূর্বলতম দলে রূপান্তরিত হয়। তেরোটি কাউন্টি খেলার একটিতেও জয়ের সন্ধান পেতে ব্যর্থ হয়।[৫] দলের ব্যাটিং মানদণ্ড প্রায় সবটুকুই জাপ, অস্থির প্রকৃতির হামফ্রে ভ্রাতৃদ্বয় ও টেড পুলির উপর বহুলাংশে নির্ভরশীল ছিল।[৭] তবে তাদের প্রভাব জাপের ক্রীড়াশৈলীতে তেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি। ১৮৬৬ সালে প্রথমবারের মতো সহস্রাধিক রান তুলেন হ্যারি জাপ। এ বছরেই ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে ১৬৫ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
১৮৬৮ সালে উত্তর আমেরিকা গমন করেন। ১৮৬৯ থেকে ১৮৭৪ সাল পর্যন্ত প্রতি বৎসরই চার অঙ্কের রান তুলেন তিনি। শেষের বছরটিতে বিস্ময়করভাবে ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে অপরাজিত ছিলেন। এরফলে ইংল্যান্ডে কেবলমাত্র সেপ কিনেইর, সেসিল উড, বিজয় মার্চেন্ট[৮] ও জিমি কুকের কৃতিত্বের সমকক্ষ হন। পূর্বের শীত মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া দলের প্রথম ইংল্যান্ড সফরে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
মার্চ থেকে এপ্রিল, ১৮৭৭ সাল পর্যন্ত ইতিহাসের প্রথম টেস্ট সিরিজে হ্যারি জাপ ইংল্যান্ডের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছেন। টসে ইংল্যান্ড হেরে ফিল্ডিংয়ে নামে। মেলবোর্নের পিচে ইংরেজ অধিনায়ক জেমস লিলিহোয়াইটের পর হ্যারি জাপ মাঠে নামেন। এরফলে দ্বিতীয় টেস্ট খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামেন তিনি।
অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নামা জেমস লিলিহোয়াইটের ৩৫ বছর ১১৬ বয়সের তুলনায় তিনি ৯৬ দিনের বড় ছিলেন। এরপর দলের বাকী সদস্যরা মাঠে নাতেন। ৮ নম্বরে টম এমেট ও ১১ নম্বরে জেমস সাউদার্টন বয়সের দিক দিয়ে জ্যেষ্ঠতম হন।
১ম টেস্টে হ্যারি প্রায় দেড়দিন ফিল্ডিং করেন। এরপর ইংল্যান্ডের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী বোলার জন হজেসের প্রথম বল মোকাবেলা করেন তিনি। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ব্যানারম্যানের ১৬৫ রানের পর দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে অর্ধ-শতক লাভ করেন। দ্বিতীয় দিনশেষে অপরাজিত ৫৪ রান করার পর ৬৩ রানে ইনিংস শেষ হয় তার। এছাড়াও তার সংগৃহীত ৬৩ রান খেলার দ্বিতীয় সেরা সংগ্রহ ছিল। খেলাশেষে তার সংগৃহীত ৬৭ রান যে-কোন টেস্ট ব্যাটসম্যানের দ্বিতীয় সেরা সংগ্রহ।
ক্রিকেটের বাইরে হ্যারি জাপ মূলতঃ রাজমিস্ত্রি ছিলেন। ১৮৭৫ সালে মদের দোকান পরিচালনা করতেন তিনি। ঐ একই বছরে তার প্রথম স্ত্রী দেহাবসানের পর রোজ নাম্নী এক রমণীকে বিয়ে করেন। তবে ব্যাটসম্যান হিসেবে ১৮৭৪ সালের তুলনায় অর্ধেক রান তুলতে সক্ষম হন।
ইতিহাসের প্রথম দুই টেস্টে অংশ নেয়া স্বত্ত্বেও তার ব্যাটিং ১৮৭৪ সালের ন্যায় সমকক্ষ হয়নি। ১৮৮১ সালে ওভালে নর্থ বনাম সাউথের মধ্যকার খেলায় আর্থিক সুবিধা গ্রহণের জন্য মনোনীত হন। তবে চৌদ্দ ইনিংসে মাত্র বিশ রান তুলেন তিনি। ফলশ্রুতিতে আগস্ট ব্যাংক হলিডের পর সারে প্রথম একাদশ থেকে বাদ পড়েন। এ ঘটনার পর ডর্কিংয়ে প্রতিবছর আর্থিক সুবিধার খেলার আয়োজন করা হয়।[৯]
খেলোয়াড় হিসেবে অবসর নেয়ার পর ১৮৮৮ সাল পর্যন্ত আম্পায়ার ও ১৮৮৩ সালে পর্যন্ত লিমিংটন ক্রিকেট ক্লাবে খেলেন।[১০] লন্ডনের বার্মন্ডসে এলাকায় জাপের দেহাবসান ঘটে। নানহেডে তাকে সমাহিত করা হয়।