তারিখ | ৭ জুন – ২১ জুন |
---|---|
তত্ত্বাবধায়ক | আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল |
ক্রিকেটের ধরন | একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট |
প্রতিযোগিতার ধরন | রাউন্ড-রবিন ও নক-আউট |
আয়োজক | ইংল্যান্ড |
বিজয়ী | ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১ম শিরোপা) |
রানার-আপ | অস্ট্রেলিয়া |
অংশগ্রহণকারী দলসংখ্যা | ৮ |
খেলার সংখ্যা | ১৫ |
দর্শক সংখ্যা | ১,৫৮,০০০ জন (ম্যাচ প্রতি ১০,৫৩৩ জন) |
প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় | প্রদান করা হয়নি |
সর্বাধিক রান সংগ্রহকারী | গ্লেন টার্নার (৩৩৩) |
সর্বাধিক উইকেটধারী | গ্যারি গিলমোর (১১) |
১৯৭৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল বা আইসিসি কর্তৃক বিশ্বকাপ ক্রিকেটের প্রথমবারের মতো আয়োজিত প্রতিযোগিতা। স্বাগতিক দেশ হিসেবে ১৯৭৫ সালের ৭ থেকে ২১ জুন তারিখ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের ৫টি শহরের ৬টি মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় সর্বমোট ৮টি দেশ অংশগ্রহণ করে। তন্মধ্যে ঐ সময়কালের ৬টি টেস্টখেলুড়ে দেশ - অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছাড়াও আইসিসির সহযোগী দেশ - শ্রীলঙ্কা ও পূর্ব আফ্রিকা অংশগ্রহণ করেছিল। প্রাথমিকভাবে দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে চারটি দেশ রাউন্ড-রবিন লীগ পদ্ধতিতে একে-অপরের সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। প্রতি গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় দুই দলসহ সর্বমোট চারটি দল নক-আউট পদ্ধতিতে মোকাবেলা করে সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালে অংশগ্রহণ করে। প্রুডেনশিয়াল অ্যাসুরেন্স কোম্পানী প্রতিযোগিতার যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করে। ফলে সম্প্রচারসত্বজনিত কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিশ্বকাপের নামকরণ করা হয় প্রুডেনশিয়াল কাপ নামে।
প্রতিটি খেলায় এক ইনিংসে ৬০ ওভার খেলা হয়। খেলোয়াড়েরা সনাতনী ধাঁচের সাদা পোষাকে মাঠে নামেন। বোলারগণ লাল বল ব্যবহার করেন। সকল খেলাই দিনের বেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রাথমিকভাবে প্রথম বিশ্বকাপে দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে চারটি দেশ রাউন্ড-রবিন লীগ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করে। দলগুলো একে-অপরের সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। প্রতি গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় দুই দলসহ সর্বমোট চারটি দল নক-আউট পদ্ধতিতে মোকাবেলা করে সেমি-ফাইনাল খেলে। সেমি-ফাইনালের বিজয়ী দল ফাইনালে অংশগ্রহণ করবে ও বিজয়ী দল চ্যাম্পিয়ন হবে।
৬টি পৃথক মাঠে সর্বমোট ১৫টি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। তন্মধ্যে ২টি সেমি-ফাইনাল এবং একটি ফাইনাল খেলা অন্তর্ভুক্ত।[১]
ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার প্রথম তিনটিতেই স্বাগতিক দেশের মর্যাদা লাভ করেছিল। আইসিসি সিদ্ধান্ত নেয় যে, ইংল্যান্ডেই প্রথম প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এর প্রধান কারণ ছিল সেখানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবার মতো প্রয়োজনীয় উপকরণ ও সাংগঠনিক বিষয়াদি বিরাজমান। ভারত বিশ্বকাপ ক্রিকেটের তৃতীয় আসরের দায়িত্ব পালনের কথা জানালেও অধিকাংশ আইসিসি সদস্যরা বিশ্বাস করেন যে, ইংল্যান্ডে পর্যাপ্ত ও দীর্ঘস্থায়ী দিনের আলো জুন মাসে থাকে; যা ভারতে নেই। এর মানে হলো একটি খেলা সম্পূর্ণভাবে শেষ হতে এক দিনই যথেষ্ট।[২]
নিম্নবর্ণিত ৮টি দল এ প্রতিযোগিতার মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। তন্মধ্যে শ্রীলঙ্কা ও পূর্ব আফ্রিকা - এ দু'টি দল টেস্ট মর্যাদাবিহীন ছিল।
|
|
|
|
|
লন্ডন | লন্ডন | |
---|---|---|
লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ড | দি ওভাল | |
ধারণ ক্ষমতা: ৩০,০০০ | ধারণ ক্ষমতা: ২৩,৫০০ | |
বার্মিংহাম | ম্যানচেস্টার | |
এজবাস্টন ক্রিকেট গ্রাউন্ড | ওল্ড ট্রাফোর্ড ক্রিকেট গ্রাউন্ড | |
ধারণ ক্ষমতা: ২১,০০০ | ধারণ ক্ষমতা: ১৯,০০০ | |
নটিংহাম | লিডস | |
ট্রেন্ট ব্রিজ | হেডিংলি স্টেডিয়াম | |
ধারণ ক্ষমতা: ১৫,৩৫০ | ধারণ ক্ষমতা: ১৪,০০০ | |
দল | পয়েন্ট | খেলা | জয় | পরাজয় | ফলাফল হয়নি | রান রেট |
---|---|---|---|---|---|---|
ইংল্যান্ড | ১২ | ৩ | ৩ | ০ | ০ | ৪.৯৪ |
নিউজিল্যান্ড | ৮ | ৩ | ২ | ১ | ০ | ৪.০৭ |
ভারত | ৪ | ৩ | ১ | ২ | ০ | ৩.২৪ |
পূর্ব আফ্রিকা | ০ | ৩ | ০ | ৩ | ০ | ১.৯০ |
৭ জুন, ১৯৭৫
|
ব
|
||
১১ জুন, ১৯৭৫
|
ব
|
||
১৪ জুন, ১৯৭৫
|
ব
|
||
দল | পয়েন্ট | খেলা | জয় | পরাজয় | ফলাফল হয়নি | রান রেট |
---|---|---|---|---|---|---|
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ১২ | ৩ | ৩ | ০ | ০ | ৪.৩৫ |
অস্ট্রেলিয়া | ৮ | ৩ | ২ | ১ | ০ | ৪.৪৩ |
পাকিস্তান | ৪ | ৩ | ১ | ২ | ০ | ৪.৪৫ |
শ্রীলঙ্কা | ০ | ৩ | ০ | ৩ | ০ | ২.৭৮ |
৭ জুন, ১৯৭৫
|
ব
|
||
৭ জুন, ১৯৭৫
|
ব
|
||
১১ জুন, ১৯৭৫
|
ব
|
||
১১ জুন, ১৯৭৫
|
ব
|
||
১৪ জুন, ১৯৭৫
|
ব
|
||
১৪ জুন, ১৯৭৫
|
ব
|
||
সেমি-ফাইনাল | ফাইনাল | |||||
১৮ জুন - লিডস | ||||||
ইংল্যান্ড | ৯৩ | |||||
২১ জুন - লন্ডন | ||||||
অস্ট্রেলিয়া | ৯৪/৬ | |||||
অস্ট্রেলিয়া | ২৭৪ | |||||
১৮ জুন - লন্ডন | ||||||
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ২৯১/৮ | |||||
নিউজিল্যান্ড | ১৫৮ | |||||
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ১৫৯/৫ | |||||
বোলার হিসেবে গ্যারি গিলমোর বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেরা ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শন করেছেন। তিনি ১৪ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেট লাভ করেন। ফলে, ইংল্যান্ড ৩৬.২ ওভারে মাত্র ৯৩ রানে গুটিয়ে যায়। এক পর্যায়ের তারা ৭ উইকেটের বিনিময়ে ৩৭ রান করেছিল। অস্ট্রেলিয়াও নাটকীয়ভাবে ৬ উইকেটে ৩৯ রান সংগ্রহ করে। কিন্তু গিলমোরের ৫টি চার ও ২৮ বলে ২৮ রান করার মতো অল-রাউন্ড নৈপুণ্যে ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়।
অন্য সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ টসে জয়ী হয়ে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠায়। বোলিং আক্রমণ ঠেকিয়ে নিউজিল্যান্ডের রান এক উইকেটে ৯৮ করে। কিন্তু অধিনায়ক গ্লেন টার্নার এবং জিওফ হাওয়ার্থ সাজঘরে ফিরে গেলে নিউজিল্যান্ডের বাকী ৯ উইকেটে আর মাত্র ৬০ রান সংগ্রহ করতে পারে। ১৫৮ রানের জবাবে আলভিন কালীচরণ ও গর্ডন গ্রীনিজের ২য় উইকেট জুটিতে ১২৫ রান করে সহজ জয় তুলে নেয়।
১৮ জুন, ১৯৭৫
|
ব
|
||
১৮ জুন, ১৯৭৫
|
ব
|
||
ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েডের অধিনায়কোচিত ৮৫ বলে ১০২ রানে করা সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়াকে ১৭ রানে পরাভূত করে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জন করে। এরফলে তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।[৩] অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের উল্লেখযোগ্য দিক ছিল শীর্ষস্তরের ব্যাটসম্যানদের রান আউট হয়ে ফিরে যাওয়া। দলের সর্বমোট পাঁচজন ব্যাটসম্যান এভাবে আউট হন; তন্মধ্যে ভিভ রিচার্ডস একাই তিনটি রান আউট করেন।
অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ইয়ান চ্যাপেল টসে জয়ী হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানদেরকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানান। ৫০ রানের মধ্যেই ৩ উইকেট পতনের পর রোহন কানহাই এবং ক্লাইভ লয়েড ক্রীজে নামেন। ৪র্থ উইকেটে এ জুটি ১৪৯ রান করে দলকে খেলায় ফিরিয়ে আনে। লয়েড আউট হবার সময় দলের রান হয় ৪/১৯৯। এরপর দলের সংগ্রহ এক পর্যায়ে দাড়ায় ৬/২০৯। তারপর নিচের সারির ব্যাটসম্যানদের কল্যাণে দলটি সর্বমোট ২৯১ রান করে। এ রানের প্রত্যুত্তরে অস্ট্রেলিয়ার গ্রেগ চ্যাপেল ও ইয়ান চ্যাপেল ভ্রাতৃদ্বয় দলকে ২/১১৫ নিয়ে যান। কিন্তু ভিভ রিচার্ডসের সহায়তায় লয়েড কর্তৃক ইয়ান চ্যাপেলের রান আউট হলে এবং ডগ ওয়াল্টার্সের উইকেট হারালে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভেঙ্গে পড়ে। এরফলে অস্ট্রেলিয়া ২৭৪ রানে অল-আউট হয়ে যায় ও ১৭ রানে পরাজিত হয়।[৪]
১৯৭৫ সালের বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় কাউকে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার প্রদান করা হয় নাই।
২১ জুন, ১৯৭৫
|
ব
|
||