তারিখ | ১ জানুয়ারি ১৯৮০ |
---|---|
Origin time | ১৫:৪৩:৩৯ UTC-১ |
মাত্রা | ৭.২ Mw |
ভূ-গভীরতা | ১০ কিলোমিটার (৬ মাইল) |
উপকেন্দ্রের অবস্থান | ৩৮°৪৯′ উত্তর ২৭°৪৭′ পশ্চিম / ৩৮.৮১° উত্তর ২৭.৭৮° পশ্চিম |
প্রকার | Strike-slip |
দেশ/ আক্রান্ত অঞ্চল |
পর্তুগাল এজোরেস |
সুনামি | আংরা ডো হিরোইস্মোতে একটি ছোট সুনামি হয়েছিল |
হতাহতের পরিমাণ |
৬১ জনের নিশ্চিত মৃত্যু, ৪০০ জন আহত হয়েছিল |
১লা জানুয়ারিতে এজোরেস স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চলে সংগঠিত, ১৯৮০ এজোরেস দ্বীপ ভূমিকম্পে ৬১ জনের মৃত্যু ঘটে, আহত হয়েছিল চারশতাধিক এছাড়া তের্সেইরা এবং সাও জর্জ দ্বীপপুঞ্জের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটেছিল। রিখটার স্কেলে ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পটি পিকো ও ফায়াল দ্বীপপুঞ্জকেও নাড়িয়ে তুলেছিল। এটি ঐতিহাসিক আজোরিয়ান ভূমিকম্পে একটি স্ট্রাইক স্লিপের ফাটলের দরুন ঘটেছিল।
ভূমিকম্পের পরে, পর্তুগীজ প্রেসিডেন্ট অ্যান্টোনিও রামালহোকে এঅনেস তিনদিনে শোক দিবস ঘোষণা করেছিল, স্থানীয় বিমান বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালিত করেছিল, অল্পকালের মধ্যেই সরকার সমর্থিত এজেন্সিগুলো এতে যোগদান করে।
১৯৫০ সালে, আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প এজোরেস দ্বীপপুঞ্জ অঞ্চল নাড়িয়ে ছিল, এবং সে পর্যন্ত সেটিই ছিল বৃহত্তম ভূমিকম্প।[১]
আগ্নেয়গিরির মূলবিন্দুতে, এজোরেস একটি ভূ-গাঠনিক জটিল এলাকা মধ্যে, আটলান্টিকের দাঁড়ার উভয় দিক, ইউরোপীয়, ইউরেশীয় এবং আফ্রিকান প্লেটের সাথে তার নিজস্ব মাইক্রোপ্লেট গঠন করেছিল।[২] ১৯৮০-র ভূমিকম্পটি দক্ষিণ-পূর্ব থেকে উত্তর-পশ্চিমে বরাবর আন্দোলনের ফলে স্ট্রাইক-স্লিপ ফাটলের ফলে ঘটেছিল।[২]
ভূমিকম্প থেকে পুনর্বাসনের পর, পরীক্ষা করে এই ছোট ঘটানার মুখ্য সমাধান বের করা হয়। এর ক্ষতির পরিমাণ প্রায় আগের ভূমিকম্পের অনুরূপ ছিল। বিজ্ঞানীরা ডান-পাক্ষিক অংশের (দক্ষিণাবর্তে) বিভক্তি দেখে, এই ভূমিকম্পের জন্য অনুবন্ধী সংযোগস্থলসংক্রান্ত সমতলকে দায়ী করেছিলেন।[৩] কারণ এই গবেষণার তথ্য ইঙ্গিত করেছিল, এজোরেস আগ্নেয়ক্রিয়া, ভূমিকম্প দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।[৩]
যে ভূমিকম্পটি এজোরেস দ্বীপপুঞ্জে ঘটেছিল তা রিখটার স্কেলে ৭.২ মাত্রার।[৪] এটি তিনটি পৃথক দ্বীপপুঞ্জ উপর যথেষ্ট ক্ষতি সাধিত করেছিল (তের্সেইরা, সাও জর্জ ও গ্রাচীয়সা)[৪] বিভিন্ন ভবন ধ্বংস করেরেছিল।[৫] স্থানীয় প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঐতিহাসিক দ্বীপ রাজধানী আংরা ডো হিরোইযমো র এক-চতুর্থাংশ সহ তের্সেইরার প্রায় ৭০% এর উপর ঘরসম্পূর্ণ ধ্বংস করেছিল, সর্বসাধারণের ভবনসমূহ যেমন গীর্জা, বিভিন্ন ভবনে গর্ত সৃষ্টি করেছিল। অনেক স্থানের বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছিল।[১]
প্রাথমিকভাবে, নিহত সংখ্যা ৫২ ধরা হলেও পরবর্তীকালে তা গিয়ে দাঁড়ায় ৬১তে।[২] এবং আহতের সংখ্যা ৩০০ ধরা হলেও, তা ৪০০-এর বেশিতে সংশোধিত হয়েছিল।[৪] অন্তত ২০,০০০ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছিল।[৬] পিকো এবং ফায়াল দ্বীপপুঞ্জে অল্প পরিমাণ ক্ষতি হয়েছিল।[১]
লাজেস ফিল্ড এ বড় কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।[১]
লাজেস-সংস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নৌ ও বিমান বাহিনীর সৈন্যরা দুর্যোগ ত্রাণকর্মী হিসেবে কাজ করেছিল, ১৫০-র মত পরিবারকে আশ্রয় দান করেছিল।[৭] যখন জোয়া কুতিনহ ক্লাস কর্ভেত্তি নামক রণতরী চিকিৎসা সরঞ্জামাদি নিয়ে এসেছিল, পর্তুগিজ বিমান বাহিনীর সদস্যদরা ভূমিকম্প ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে তা সরবরাহ করেছিল। পর্তুগিজ প্রেসিডেন্ট অ্যান্টোনিও রামালহোকে এঅনেস, স্বাস্থ্যকর্মীসহ একটি প্লেনে করে এসেছিল। পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক,ফায়ারম্যানসহ স্থানীয় কর্মকর্তারা ত্রাণ সরবরাহ এবং পরিবহন জন্য রাস্তাঘাট পরিষ্কার ও ধ্বংসস্তুপের মধ্যে জীবিতদের উদ্ধারের কাজের সাথে জড়িত ছিল।[১] এর কিছু পরেই,২০০-র মত পরিবারের, ধ্বংস বা অনিরাপদ ঘরবাড়ি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। প্রায় ১০০ বাড়ীর নির্মাণ করার কাজ করেছিল পিপল টু পিপল ইন্টারন্যাশনাল প্রকল্পের তহবিল।[৭]
এনিসে তিন দিনের শোক দিবস ঘোষণা করা হয়েছিল,[১] ভূকম্পীয় অবস্থা নিরীক্ষণের জন্য ১৯টি ভূকম্পলিক স্টেশন বসানো হয়েছিল। এর মধ্যে ১১টি ভূমিকম্প পরিমাপের জন্য, এবং অন্য ৮টি দ্বীপের ভূক্ষেত্রগুলিতে তথ্য পরিমাপের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল।[৮]
ভূমিকম্পটি, শত শত মানুষকে দেশ ছেড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেতে বাধ্য করেছিল। বেশ কয়েকটি প্রধান প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় দ্বীপের অনেক বাসিন্দা দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছে। ১৯৭৫ সালে,৮০০০ জন বাসিন্দা দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছে। ১৯৮১ সালে, ২৫০০ঞ্জন বাসিন্দা দ্বীপ ছেড়ে চলে যায়।[৬]
দিনো মেয়র,একজন পর্তুগজ-মার্কিন-গায়ক গান গেয়ে, ৪৫ টি সিঙ্গেল "Acores 20 para as 4" বিক্রি করে, প্রাপ্ত আয় ভূমিকম্পের ত্রাণ হিসাবে দান করা।
পরবর্তী গবেষণায় দেখা গেছে, ক্ষতির পরিমাণ বাড়াতে অনেকগুলো বিষয় দায়ী । এই ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার পেছনে পাঁচটি প্রধান কারণ জড়িত। ভূমিকম্পে সেসব ভবনগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় যেগুলো ভু-চ্যুতি রেখার কাছাকাছি ছিল।তাছাড়া, তারা দুর্বল ভবন নির্মাণ প্রতি বেশি ঝুকে ছিল, সঠিক বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ভবন নির্মাণ করেনি, পর্যাপ্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করেনি।[৯]
এজোরেসের এলাকাগুলোতে এ অবস্থা এখনো বজায় আছে। তারা এখনো ভূমিকম্প ও ভূমিধস হুমকির মধ্যে আছে।[৯]