তারিখ | ৯ ফেব্রুয়ারি – ২৪ মার্চ |
---|---|
তত্ত্বাবধায়ক | আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল |
ক্রিকেটের ধরন | একদিনের আন্তর্জাতিক |
প্রতিযোগিতার ধরন | রাউন্ড-রবিন ও নকআউট |
আয়োজক | দক্ষিণ আফ্রিকা জিম্বাবুয়ে কেনিয়া |
বিজয়ী | অস্ট্রেলিয়া (৩য়তম শিরোপা) |
অংশগ্রহণকারী দলসংখ্যা | ১৪ |
খেলার সংখ্যা | ৫৪ |
দর্শক সংখ্যা | ৬,২৬,৮৪৫ জন (ম্যাচ প্রতি ১১,৬০৮ জন) |
প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় | শচীন তেন্ডুলকর |
সর্বাধিক রান সংগ্রহকারী | শচীন তেন্ডুলকর (৬৭৩) |
সর্বাধিক উইকেটধারী | চামিন্দা ভাস (২৩) |
২০০৩ আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ (আনুষ্ঠানিকভাবে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০০৩) হচ্ছে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের ৮ম অষ্টম প্রতিযোগিতা। ৯-২৪ মার্চ, ২০০৩ তারিখে এ ক্রিকেট প্রতিযোগিতাটি দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে এবং কেনিয়ায় যৌথভাবে অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বের ১৪টি দেশের জাতীয় ক্রিকেট দল এতে অংশ নেয় ও ৫৪টি খেলায় অংশগ্রহণ করে যা বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। প্রতিযোগিতার রূপরেখাটি ১৯৯৯ সালের আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের অনুরূপে ২টি বিভাগে বিভক্ত করা হয়। প্রতি বিভাগের শীর্ষস্থানীয় তিনটি করে মোট ছয়টি দল সুপার সিক্স পর্বে উত্তীর্ণ হয়।
প্রতিযোগিতার অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ও সহ-স্বাগতিক দেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ইংল্যান্ড প্রথম পর্বেই বিদায় নেয়। দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে ইংল্যান্ড জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে খেলতে অস্বীকৃতি জানায়। এ সুবিধা নিয়ে জিম্বাবুয়ে সুপার সিক্স পর্বে চলে যায়। অন্যদিকে টেস্টখেলুড়ে দেশের বাইরে কেনিয়া প্রতিযোগিতার সেমি-ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়।
গতবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া এবারের বিশ্বকাপেও বিজয়ী হয়। চূড়ান্ত খেলায় তারা ভারতীয় ক্রিকেট দলকে পরাজিত করে।[১] এরফলে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে ১৯৭৫ সালের পরপর দুইবারের পর একাধারে তিনটি বিশ্বকাপ জয়ের সৌভাগ্য অর্জন করে।
সর্বমোট ১৪টি দল বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করে যা সংখ্যার বিচারে একটি বিশ্বকাপে সর্ববৃহৎ। তন্মধ্যে - ১০টি টেস্টখেলুড়ে দেশ এবং টেস্ট মর্যাদা না থাকা স্বত্ত্বেও একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পূর্ণ মর্যাদা থাকায় কেনিয়া স্বয়ংক্রীয়ভাবে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। বাদ-বাকী ৩টি দল ২০০১ সালে কানাডায় অনুষ্ঠিত ২০০১ সালের আইসিসি ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে - নেদারল্যান্ডস, রানার-আপ নামিবিয়া এবং কানাডা তৃতীয় স্থান দখল করে এ বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা লাভ করে। এরপূর্বে নেদারল্যান্ডস ১৯৯৬ সালে ও কানাডা ১৯৭৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিল।
এ বিশ্বকাপে পূর্ববর্তী ১৯৯৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের ধরনটি বলবৎ রাখা হয়। প্রথম রাউন্ডে দুই গ্রুপে ৭টি দেশ একে-অপরের বিরুদ্ধে অবতীর্ণ হবে। প্রতি গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় ৩ দল সুপার সিক্সে খেলবে। অতঃপর শীর্ষস্থানীয় চার দল সেমি-ফাইনালে এবং বিজয়ী দুই দল ফাইনালে খেলবে।
পূর্ণ সদস্য | |
---|---|
অস্ট্রেলিয়া | বাংলাদেশ |
ইংল্যান্ড | ভারত |
নিউজিল্যান্ড | পাকিস্তান |
দক্ষিণ আফ্রিকা | শ্রীলঙ্কা |
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | জিম্বাবুয়ে |
সহযোগী সদস্য | |
কেনিয়া | কানাডা |
নামিবিয়া | নেদারল্যান্ডস |
শহর | মাঠ | ধারণ ক্ষমতা | খেলার সংখ্যা |
---|---|---|---|
জোহানেসবার্গ | ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়াম | ৩৪,০০০ | ৫ |
ডারবান | কিংসমিড ক্রিকেট গ্রাউন্ড | ২৫,০০০ | ৫ |
কেপ টাউন | নিউল্যান্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ড | ২৫,০০০ | ৫ |
সেঞ্চুরিয়ন | সেঞ্চুরিয়ন পার্ক | ২৩,০০০ | ৫ |
ব্লুমফন্টেইন | গুডইয়ার পার্ক | ২০,০০০ | ৫ |
পোর্ট এলিজাবেথ | সেন্ট জর্জেস ওভাল | ১৯,০০০ | ৫ |
পচেফস্ট্রুম | নর্থ ওয়েস্ট ক্রিকেট স্টেডিয়াম | ১৮,০০০ | ৩ |
পূর্ব লন্ডন | বাফেলো পার্ক | ১৬,০০০ | ৩ |
কিমবার্লি | ডি বিয়ার্স ডায়মন্ড ওভাল | ১১,০০০ | ৩ |
পার্ল | বোল্যান্ড পার্ক | ১০,০০০ | ৩ |
বেনোনি | উইলোমুর পার্ক | ২০,০০০ | ২ |
পিটারমারিৎজবার্গ | সিটি ওভাল | ১২,০০০ | ২ |
হারারে | হারারে স্পোর্টস ক্লাব | ১০,০০০ | ৩ |
বুলাওয়েও | কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব | ৯,০০০ | ৩ |
নাইরোবি | নাইরোবি জিমখানা ক্লাব | ৮,০০০ | ২ |
প্রতি গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় ৩টি দল পরবর্তী পর্বে উত্তরণ ঘটবে।[২]
দলের নাম | খেলা | জয় | পরাজয় | নো রেজাল্ট | টাই | রানের গড় | পয়েন্ট | পিসিএফ |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|
অস্ট্রেলিয়া | ৬ | ৬ | ০ | ০ | ০ | ২.০৫ | ২৪ | ১২ |
ভারত | ৬ | ৫ | ১ | ০ | ০ | ১.১১ | ২০ | ৮ |
জিম্বাবুয়ে | ৬ | ৩ | ২ | ১ | ০ | ০.৫০ | ১৪ | ৩.৫ |
ইংল্যান্ড | ৬ | ৩ | ৩ | ০ | ০ | ০.৮২ | ১২ | – |
পাকিস্তান | ৬ | ২ | ৩ | ১ | ০ | ০.২৩ | ১০ | – |
নেদারল্যান্ডস | ৬ | ১ | ৫ | ০ | ০ | −১.৪৫ | ৪ | – |
নামিবিয়া | ৬ | ০ | ৬ | ০ | ০ | −২.৯৬ | ০ | – |
দলের নাম | খেলা | জয় | পরাজয় | নো রেজাল্ট | টাই | রানের গড় | পয়েন্ট | পিসিএফ |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|
শ্রীলঙ্কা | ৬ | ৪ | ১ | ০ | ১ | ১.২০ | ১৮ | ৭.৫ |
কেনিয়া | ৬ | ৪ | ২ | ০ | ০ | −০.৬৯ | ১৬ | ১০ |
নিউজিল্যান্ড | ৬ | ৪ | ২ | ০ | ০ | ০.৯৯ | ১৬ | ৪ |
দক্ষিণ আফ্রিকা | ৬ | ৩ | ২ | ০ | ১ | ১.৭৩ | ১৪ | – |
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ৬ | ৩ | ২ | ১ | ০ | ১.১০ | ১৪ | – |
কানাডা | ৬ | ১ | ৫ | ০ | ০ | −১.৯৯ | ৪ | – |
বাংলাদেশ | ৬ | ০ | ৫ | ১ | ০ | −২.০৫ | ২ | – |
অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জিম্বাবুয়ে, শ্রীলঙ্কা, কেনিয়া এবং নিউজিল্যান্ড সুপার সিক্স পর্যায়ে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। সেমি-ফাইনাল পর্বে উত্তীর্ণ দলগুলোকে নীল রঙে নির্দেশ করা হয়েছে।
দলের নাম | খেলা | জয় | পরাজয় | নো রেজাল্ট | টাই | রানের গড় | পয়েন্ট | পিসিএফ |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|
অস্ট্রেলিয়া | ৩ | ৩ | ০ | ০ | ০ | ১.৮৫ | ২৪ | ১২ |
ভারত | ৩ | ৩ | ০ | ০ | ০ | ০.৮৯ | ২০ | ৮ |
কেনিয়া | ৩ | ১ | ২ | ০ | ০ | ০.৩৫ | ১৪ | ১০ |
শ্রীলঙ্কা | ৩ | ১ | ২ | ০ | ০ | −০.৮৪ | ১১.৫ | ৭.৫ |
নিউজিল্যান্ড | ৩ | ১ | ২ | ০ | ০ | −০.৯০ | ৮ | ৪ |
জিম্বাবুয়ে | ৩ | ০ | ৩ | ০ | ০ | −১.২৫ | ৩.৫ | ৩.৫ |
৮ মার্চ, ২০০৩
স্কোরকার্ড |
ব
|
নিউজিল্যান্ড ৬ উইকেটে বিজয়ী
মাঙ্গুঙ্গ ওভাল, ব্লুমফন্টেইন, দক্ষিণ আফ্রিকা umpires = DB Hair (Aus) and RE Koertzen (SA) |
১০ মার্চ, ২০০৩
স্কোরকার্ড |
ব
|
ভারত ১৮৩ রানে বিজয়ী
ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়াম, জোহানেসবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকা umpires = DR Shepherd (Eng) and SJA Taufel (Aus) |
১১ মার্চ, ২০০৩
স্কোরকার্ড |
ব
|
অস্ট্রেলিয়া ৯৬ রানে বিজয়ী
সেন্ট জর্জেস পার্ক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, পোর্ট এলিজাবেথ, দক্ষিণ আফ্রিকা umpires = SA Bucknor (WI) and EAR de Silva (SL) |
সেমি-ফাইনাল | ফাইনাল | |||||
১৮ মার্চ, ২০০৩ - সেন্ট জর্জেস ওভাল, পোর্ট এলিজাবেথ, দক্ষিণ আফ্রিকা | ||||||
১ অস্ট্রেলিয়া | ২১২/৭ | |||||
২৩ মার্চ, ২০০৩ - ওয়ান্ডেরার্স স্টেডিয়াম, জোহানেবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকা | ||||||
৪ শ্রীলঙ্কা | ১২৩/৭ | |||||
অস্ট্রেলিয়া | ৩৫৯/২ | |||||
২০ মার্চ, ২০০৩ - কিংসমিড ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ডারবান, দক্ষিণ আফ্রিকা | ||||||
ভারত | ২৩৪ | |||||
২ ভারত | ২৭০/৪ | |||||
৩ কেনিয়া | ১৭৮ | |||||
ভারতীয় অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী টসে জয়ী হয়ে অস্ট্রেলিয়া দলকে ব্যাটিংয়ের জন্যে আমন্ত্রণ জানান। তিনি পূর্বদিনের বৃষ্টি ও শিশিরস্নাত অবস্থায় পীচের সুবিধা নেবার আশা করেছিলেন। কিন্তু ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে পীচের সুবিধা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদ্বয় ভারতীয় বোলারদের উপর চড়াও হয়ে চমৎকার সূচনা করেন। অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও ম্যাথিউ হেইডেনের ১৪ ওভারে ১০৫ রান উঠায় সৌরভ গাঙ্গুলী অপ্রত্যাশিতভাবে স্পিনারদেরকে ডেকে আনেন। এতে সাফল্যও পান তিনি। হরভজন সিংয়ের বলে সুইপ শট নিতে গিয়ে গিলক্রিস্ট উইকেট হারান। এরপর হেইডেনও আউট হলে দলের রান দাঁড়ায় ২ উইকেটে ১২৫। এরপর অসি অধিনায়ক রিকি পন্টিং এবং ড্যামিয়েন মার্টিন জুটি ৩০.১ ওভারে ২৩৪ করেন যা একদিনের ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ডবিশেষ। শেষ ১০ ওভারে দলটি ১০৯ রান করেছিল।
পন্টিং ১২১ বলে ১৪০ রান করেন, যাতে ৭টি চার ও ৮টি ছয়ের মার ছিল। এ সেঞ্চুরীটি ছিল বিশ্বকাপের ফাইনালে সর্বোচ্চ। প্রতি ওভারে ৭.১৮ রান করে দলটি। অস্ট্রেলিয়ার ওডিআই ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৫৯ রান করে মাত্র ২ উইকেটের বিনিময়ে।