ওয়াটার | |
---|---|
পরিচালক | দীপা মেহতা |
প্রযোজক | ড্যাভিড হ্যামিল্টন |
চিত্রনাট্যকার | অনুরাগ কশ্যাপ |
কাহিনিকার | দীপা মেহতা |
শ্রেষ্ঠাংশে | সীমা বিশ্বাস লিসা রে জন আব্রাহাম |
সুরকার | গান: এ আর রহমান আবহ সঙ্গীত: মাইকেল ডানা |
চিত্রগ্রাহক | গিলেস নাটগেন্স |
সম্পাদক | কলিন মনি |
প্রযোজনা কোম্পানি | ড্যাভিড হ্যামিল্টন প্রোডাকশন্স |
পরিবেশক | ফক্স সার্চলাইট পিকচার্স (যুক্তরাষ্ট্র) মংগ্রেল মিডিয়া (কানাডা) বি আর ফিল্মস (ভারত) |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১১৪ মিনিট |
দেশ | কানাডা যুক্তরাষ্ট্র[১] ভারত[২] |
ভাষা | হিন্দি[৩] ইংরেজি |
আয় | $10,422,387[৪] |
ওয়াটার (ইংরেজি: Water; বাংলা: পানি) হচ্ছে ২০০৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি হিন্দি নাট্য চলচ্চিত্র যেটির রচয়িতা এবং পরিচালক ছিলেন দীপা মেহতা, চিত্রনাট্য লিখেছিলেন অনুরাগ কশ্যাপ।[৫] চলচ্চিত্রটি ১৯৩৮ সালের ভারতীয় সমাজ নিয়ে নির্মিত, মূলত বিধবাদের আশ্রমজীবনের উপর আলোকপাত নিয়ে নির্মিত ছিলো এই চলচ্চিত্রটি। পরিচালক দীপা এর আগেও ফায়ার এবং আর্থ নামের দুটি চলচ্চিত্র বানিয়েছিলেন যেগুলো সামাজিক সমস্যার ওপর আধারিত ছিলো। ঔপন্যাসিক ভাপসি সিদ্ধওয়া এই চলচ্চিত্রটির ওপর ভিত্তি করে ওয়াটারঃ এ নোভেল নামের একটি উপন্যাস লিখেছিলেন যেটা মিল্কউইড প্রেস প্রকাশ করেছিলো। সিদ্ধওয়ার আগের উপন্যাস ক্র্যাকিং ইন্ডিয়া দীপার আর্থ চলচ্চিত্রের কাহিনী দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলো। ওয়াটার চলচ্চিত্র ভারতের ব্রিটিশ আমলের নারীসমাজের দুঃখদূর্দশা এবং নারীবিদ্বেষ ফুটিয়ে তুলেছে, চলচ্চিত্রটিতে দেখানো হয়েছে যে রক্ষণশীল পিতৃতন্ত্রবাদী সমাজে নারীদের কত অশান্তি থাকে। বারাণসীর এক বিধবা আশ্রমে মানবেতর জীবন যাপনকারী নারীদের জীবনে কোনো আলো আসেনা, যদিও এক নারী এক প্রেমিক পুরুষের দেখা পান কিন্তু পরে তিনি নিজেও সমাজের কারণে তার প্রেমিককে বিয়ে করতে পারেননা। চলচ্চিত্রটির শুটিং হয়েছিলো শ্রীলঙ্কাতে।[৬] ২০০৫ এর টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এই ওয়াটার প্রদর্শিত হয়েছিলো, কানাডাতে ঐ বছরের নভেম্বরে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেয়েছিলো[৭] এবং ভারতে মুক্তি পেয়েছিলো ২০০৭ সালের ৯ মার্চ।[৮]
চলচ্চিত্রটিতে মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন সীমা বিশ্বাস, লিসা রে, জন আব্রাহাম এবং সরলা কারিয়াওয়াসাম, এছাড়াও ছিলেন কুলভূষণ খারবান্দা, ওয়াহিদা রেহমান, রঘুবীর যাদব এবং বিনয় পাঠক। চলচ্চিত্রটির সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন খ্যাতিমান সঙ্গীতকার এ আর রহমান এবং আবহ সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন মাইকেল ডানা, গানের কথা সুখবিন্দর সিং এবং রাকিব আলম লিখেছিলেন।
২০০৮ সালে চলচ্চিত্রটি দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে দিলীপ মেহতা 'দ্যা ফরগটেন ওম্যান' নামের একটি তথ্যচিত্র বানিয়েছিলেন, এটাতেও দীপা মেহতা কাহিনী লিখেছিলেন।[৯]
১৯৩৮ সালের ভারত, সমাজ ভীষণ রক্ষণশীল, অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে হয়ে যাওয়া খুবই সাধারণ ঘটনা, বিশেষ করে গ্রামীণ সমাজে মেয়েদেরকে একেবারেই অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে; মেয়েদের বিয়ে হয় আর তাদের স্বামী মারা যায় (বয়স্ক স্বামী), আর মেয়েদেরকে বিধবাশ্রমে ঠাই পাওয়া লাগে সমাজের কারণে, এমনই একটা অল্প বয়স্ক মেয়ে চুইয়া বিধবা আশ্রমে এসেছে যার স্বামী মারা গেছে। এই বিধবা-আশ্রমে আরো থাকেনঃ মধুমতি (বয়স ৭০, মাদকসেবী), গুলাবি (একজন হিজড়া, পতিতাদের দালাল), কল্যাণী (তরুণী সুন্দরী যে একটি কুকুর গোপনে পালে) এবং শকুন্তলা (শিক্ষিত একজন নারী যিনি সমাজের কারণে বিধবা-আশ্রমে থাকেন), এছাড়াও নাম না জানা আরো অনেক বিধবা রয়েছেন।
কল্যাণী একদিন নারায়ণের (ওকালতি পাশ এক তরুণ) এর সাক্ষাৎ পায় চুইয়ার মাধ্যমে, কল্যাণী এবং নারায়ণ দুজনেই একে অপরের প্রেমে পড়ে যায়, তবে বিধবাদের সমাজে প্রেম/বিয়ে নিষেধ, তাই বিধবা-আশ্রমে বয়স্ক মধুমতির কানে এই খবর গেলে সে কল্যাণীকে দরজা বন্ধ করে রাখে, যদিও পরে শকুন্তলা দরজা খুলে দেয় তাকে বাইরে যেয়ে নারায়ণের সঙ্গে দেখা করার জন্য, কল্যাণী যখন জানতে পারে যে নারায়ণের পিতা একজন রক্ষণশীল পিতৃতান্ত্রিক পুরুষ তখন সে বিয়ে করতে চায়না এবং পানিতে ডুব দিয়ে আত্মহত্যা করে।
মধুমতি চুইয়াকে গুলাবির মাধ্যমে এক পতিতা-খদ্দেরের কাছে পাঠায়, যে খবর শুনে শকুন্তলার মন একেবারে ভেঙে পড়ে, সে অনেক কাঁদে; মহাত্মা গান্ধীর বক্তৃতা শোনার জন্য শকুন্তলা একবার চুইয়াকে নিয়ে যায়, মহাত্মা গান্ধীর ভাষণ শেষ হলে তিনি ট্রেনে ওঠেন এবং ট্রেনটিতে অনেক ভিড় থাকে বিধায় শকুন্তলা চুইয়াকে ট্রেনে ওঠাতে যেয়েও পারেনা (সে চুইয়াকে ট্রেনে ওঠাতে চায় কারণ মহাত্মা গান্ধীর সমর্থকদের সঙ্গে চুইয়া যেতে পারলে তার জীবন বদলে যাবে), পরে নারায়ণ ট্রেনে ওঠায় চুইয়াকে কোলে করে এবং ট্রেন যেতে থাকে আর অশ্রুসজল শকুন্তলা দেখতে থাকে।