আব্দুল কাদের জিলানী (ফার্সি: عبدالقادر گیلانی, আরবি: عبدالقادر الجيلاني, প্রতিবর্ণীকৃত: ʿAbd al-Qādir al-Jīlānī) হলেন একজন সুন্নিমুসলিম ধর্মপ্রচারক, তপস্বী, মরমী, আইনজ্ঞ এবং হাম্বলীমাযহাবের ধর্মতত্ত্ববিদ। তিনি ইসলাম ধর্মে অন্যতম প্রধান আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ইসলামের অন্যতম প্রচারক হিসাবে সুবিদিত। সূফীরা তাকে 'বড়পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী' নামে ব্যক্ত করেন। আধ্যাত্মিকতায় উচ্চমার্গের জন্য বড়পীর, ইরাকের অন্তর্গত 'জিলান' নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করায় জিলানী, সম্মানিত হিসাবে আবু মোহাম্মদ মুহিউদ্দীন প্রভৃতি উপাধি ও নামেও তাকে সম্বোধন করা হয়।[৭]
সম্মানসূচক মুহিউদ্দিন অনেক সুফিদের কাছে "ধর্মের পুনরুজ্জীবক" হিসাবে তার মর্যাদা নির্দেশ করে।[৮] গিলানি (আরবি আল-জিলানী) তার জন্মস্থান, গিলানকে বোঝায়। [৯][১০] যাইহোক, গিলানি বাগদাদীর উপাধিও বহন করেছিলেন, বাগদাদে তার বাসস্থান এবং দাফনের কথা উল্লেখ করে।
আব্দুল কাদের হিজরি ৪৭০ সনের রমজান মাসের ১ তারিখে বাগদাদ নগরের জিলান শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আবু সালেহ মুছা জঙ্গী এবং মাতার নাম সাইয়েদা উম্মুল খায়ের ফাতেমা। তার পিতা ছিলেন ইমাম হাসান ইবনে আলীর বংশধর ও মাতা ছিলেন ইমাম হোসাইন ইবনে আলীর বংশধর।
জিলানী তার জন্মের প্রদেশ গিলানে তার প্রাথমিক জীবন কাটিয়েছেন। ১০৯৫ সালে আঠারো বছর বয়সে তিনি বাগদাদে যান। সেখানে তিনি আবু সাঈদ মুবারক মাখযুমী এবং ইবনে আকিলের অধীনে হাম্বলী মাযহাব অধ্যয়ন করেন।[১১][১২] তিনি আবু মুহাম্মদ জাফর আল-সাররাজের কাছে হাদিস অধ্যয়ন করেন।[১২] শিক্ষা শেষ করে জিলানী বাগদাদ ত্যাগ করেন। তিনি ইরাকের মরুভূমিতে পঁচিশ বছর তপস্যা করেন।[১৩]
শিক্ষা-দীক্ষায় পূর্ণতা অর্জনের পর তিনি নিজেকে পবিত্র ইসলাম ধর্ম প্রচারের কাজে নিয়োজিত করেন। বিভিন্ন মাহফিলে তিনি ইসলামের আদর্শ যুক্তিপূর্ণ ভাষায় বর্ণনা করতেন। তার মহফিলে শুধু মুসলমান নয়, অনেক অমুসলিমও অংশগ্রহণ করতো। তার বক্তব্য শুনে অনেক অমুসলিম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।[৭]
হিজরী ৫৬১ সালের ১১ রবিউসসানী আব্দুল কাদের পরলোক গমন করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। তার ওফাত দিবস সারা বিশ্বের সূফীরা প্রতি বছর অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পালন করে থাকেন এবং তার মৃত্যুবার্ষিকী ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহাম হিসেবে পরিচিত। প্রতি আরবি মাসের ১০ তারিখ দিবাগত রাত গেয়ারভী শরীফ পালন হয়।[৭]
১ রমজান আবদুল কাদের জিলানীর জন্মদিন হিসাবে উদযাপিত হয় এবং তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী ১১ রবিউস সানিতে পালিত হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে, তাঁর ওরশ বা মৃত্যুবার্ষিকীকে গেয়ারভী শরীফ বা সম্মানিত দিবস বলা হয়।[২২]
↑Mihr-e-munīr: biography of Hadrat Syed Pīr Meher Alī Shāh pg 21, Muhammad Fādil Khān, Faid Ahmad. Sajjadah Nashinan of Golra Sharif, Islamabad (1998).
↑Encyclopaedia of religion and ethics: volume 1. (A – Art). Part 1. (A – Algonquins) pg 10. Hastings, James and Selbie, John A. Adamant Media corporation. (2001), "and he was probably of Persian origin."
↑The Sufi orders in Islam, 2nd edition, pg 32. Triingham, J. Spencer and Voll, John O. Oxford University Press US, (1998), "The Hanafi Qadirriya is also included since 'Abd al-Qadir, of Persian origin was contemporary of the other two."
↑Abun-Nasr, Jamil M. "The Special Sufi Paths (Tariqas)". Muslim Communities of Grace: The Sufi Brotherhoods in Islamic Religious Life. New York: Columbia UP, 2007. 86–96.
↑"Sirr-ul-Asrar"। www.nafseislam.com। ২০২০-০৬-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-০৪।