'দাসত্ব' অর্থ হল কোনো মানুষকে জোর পূর্বক শ্রম দিতে বাধ্য করা। সাধারণত দাসকে তার মনিবের অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে গণ্য করা হয়। এক্ষেত্রে কাউকে তার ইচ্ছার পরিবর্তেও দাস করা যেতে পারে। এটি হতে পারে তার আটক, জন্ম, ক্রয় করা সময় থেকে। স্থান বা মালিককে ত্যাগ করা, কাজ না করার বা শ্রমের মজুরি পাবার অধিকার দাসদের নেই। [১]ইসলাম ধর্মে দাসত্বের অস্তিত্ব রয়েছে।
মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ কুরআনের সূরা নাহলে দাসদের সম্পর্কে বলা হয়েছে,
আর আল্লাহ্ জীবনোপকরণে তোমাদের মধ্যে কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। যাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়েছে তারা তাদের অধীনস্থ দাসদাসীদেরকে নিজেদের জীবনোপকরণ হতে এমন কিছু দেয় না যাতে ওরা এ বিষয়ে তাদের সমান হয়ে যায়। তবে কি তারা আল্লাহ্র অনুগ্রহ অস্বীকার করছে?16:71[২]
ইসলাম ধর্ম দাসত্বের বাস্তবতাকে সরাসরি অস্বীকার না করে, এর অস্তিত্বকে স্বীকারের মাধ্যমে দাস-দাসীদের তাঁদের প্রাপ্য মানুষের অধিকার প্রদানে উৎসাহ দেয়। এবং তা মানুষকে দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করাকে উত্তম কাজ বলে মনে করে।
আবু হুরাইরা বলেন, নবী মুহাম্মাদ বলেছেন: যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানকে দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করবে, তার প্রতিটি অঙ্গের বিনিময়ে আল্লাহ তার প্রতিটি অঙ্গকে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা করবেন।২৩৫১[৩][৪]
মুহাম্মাদ বলেন, হে আবুজর! তোমাদের মধ্যে বর্বর যুগের ভাবধারা রয়ে গেছে। তারা (দাস) তোমাদের ভাই। আল্লাহ পাক তাঁদের তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। তোমরা যা খাবে, তাঁদেরকে তাই খেতে দেবে। তোমরা যে বস্ত্র পরবে, তাঁদেরকেও তাই পরতে দেবে। তোমরা তাঁদের ওপর এমন কোনো কাজের বোঝা চাপাবে না, যা বহন করতে তারা অপারগ হয়। যদি তোমাদের দেয়া কোনো কাজ করতে তারা অসমর্থ হয়, তাহলে তোমরা তাঁদের কাজে সাহায্য করবে।৪১৬৯[৫]
ইসলাম মূলত অধিকার ভূক্ত অসহায় মানুষদের দাস-দাসী হিসেবে বিবেচনা করতে বাধা প্রদান করে। ইসলাম মনে করে, তাঁদের পরিচয় হবে পোষ্য। সেটা পোষ্য ভাই, পোষ্য সন্তান ইত্যাদি হতে পারে। এ সম্পর্কে সহীহ বুখারীর হাদিসে বলা হয়েছে,
আবু হুরাইরা থেকে বর্ণিত, মুহাম্মাদ বলেন, তোমাদের কেউ যেন না বলে, তোমার প্রভুকে আহার করাও, তোমার প্রভুকে পান করাও। আর যেন অধিকার ভূক্তরা এরূপ না বলে, আমার মনিব, আমার অভিভাবক। তোমাদের কেউ যেন এরূপ না বলে, আমার দাস, আমার দাসী। বরং বলবে, আমার বালক, আমার বালিকা, আমার খাদিম।২৩৮৪[৩]
আর যদি দাস-দাসীর সাথে খারাপ আচরণ করা হয়, তাহলে ইসলাম নির্দেশ প্রদান করে যে, কাফফারা স্বরুপ উক্ত দাস বা দাসীকে মুক্ত করে দিতে হবে। এ সম্পর্কে সহীহ মুসলিম এর হাদিসে বলা হয়েছে,
"ইবনে ওমর বলেন, আমি রাসূল (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি তার ক্রীতদাসকে চড় মারল কিংবা প্রহার করল, তার কাফফারা তাঁকে মুক্ত করে দেয়া।"৪১৫৪[৫]
Habeeb Akande, Illuminating the Darkness: Blacks and North Africans in Islam (Ta Ha 2012)
Al-Hibri, Azizah Y. (২০০৩)। "An Islamic Perspective on Domestic Violence"। 27 Fordham International Law Journal 195।
P.J. Bearman, Th. Bianquis, C.E. Bosworth, E. van Donzel and W.P. Heinrichs (সম্পাদক)। "Abd"। Encyclopaedia of Islam Online। Brill Academic Publishers। ISSN 1573-3912।উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: একাধিক নাম: সম্পাদকগণের তালিকা (link)
Hughes, Thomas Patrick; Patrick (১৯৯৬)। A Dictionary of Islam। Asian Educational Services। আইএসবিএন978-81-206-0672-2।
Ed.: Holt, P. M ; Lambton, Ann; Lewis, Bernard (১৯৭৭)। The Cambridge History of Islam। Cambridge University Press। আইএসবিএন0-521-29137-2।উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: একাধিক নাম: লেখকগণের তালিকা (link)
Pankhurst, Richard (১৯৯৭)। The Ethiopian Borderlands: Essays in Regional History from Ancient Times to the End of the 18th Century। The Red Sea Press। আইএসবিএন0-932415-19-9।
Sachau (১৮৯৭)। Muhammedanisches Recht [cited extensively in Levy,R 'Social Structure of Islam']। Berlin, Germany।
Tucker, Judith E.; Nashat, Guity (১৯৯৯)। Women in the Middle East and North Africa। Indiana University Press। আইএসবিএন0-253-21264-2।উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: একাধিক নাম: লেখকগণের তালিকা (link)
Ahmad A. Sikainga, "Shari'a Courts and the Manumission of Female Slaves in the Sudan 1898-1939", The International Journal of African Historical Studies > Vol. 28, No. 1 (1995), pp. 1–24
↑ কখসহীহ বোখারী শরীফ [১ম হইতে ১০ম খন্ড এক ভলিয়মে সমাপ্ত]। শায়খুল হাদিস মাওলানা মোহাম্মদ আজীজুল হক কর্তৃক অনূদিত। আলহাজ্ব মোঃ সোলায়মান চৌধুরী, একুশে বই মেলা। ২০০৬। পৃষ্ঠা ১১২০।
↑এ সংক্রান্ত আরও হাদিস সমূহ হল সহীহ বোখারী ২৩৭৬, ২৩৫৩, ২৩৫৪, ২৩৫২
↑ কখসহীহ মুসলিম শরীফ [১ম হইতে 8ম খন্ড এক ভলিয়মে সমাপ্ত]। শায়খুল হাদিস মাওলানা মোহাম্মদ আজীজুল হক কর্তৃক অনূদিত। আলহাজ্ব মোঃ সোলায়মান চৌধুরী, একুশে বই মেলা। ২০০৭। পৃষ্ঠা ১১০০।