লেখক | আহমদ জাররুক |
---|---|
মূল শিরোনাম | سَفِينَةُ النَّجَا لِمَنْ إِلَى اللَهِ اِلْتَجَا |
কাজের শিরোনাম | الوظيفة الزروقية |
দেশ | মাগরেব |
ভাষা | আরবি |
বিষয় | যিকির, দোয়া, ওয়াইরিদ |
ধরন | ওয়াজিফা |
সুফিবাদ এবং তরিকা |
---|
প্রবেশদ্বার |
সুফিবাদে ওয়াজিফা জাররুকিয়া ( আরবি: الْوَظِيفَةُ الزَّرُّوقِيَّةُ ) হল একটি নিয়মিত আরতিমূলক প্রার্থনা ( ওয়াজিফা ) যা অনুসারীরা শাদিলি ধারায় অনুশীলন করেন এবং যার প্রাথমিক শিরোনাম হল "পরিত্রাণের তরী তাদের জন্য যারা স্রষ্টার পথকে অবলম্বন করে" ( আরবি: سَفِينَةُ النَّجَا لِمَنْ إِلَى اللَهِ اِلْتَجَا )[১][২]
এই ওয়াজিফাটি মালিকি এবং সুফি ধর্মতাত্ত্বিক আহমদ জাররুক (১৮৮২-১৪৯৩ খ্রিস্টাব্দ) তাঁর অনুসারীদের ( মুরিদদের ) শিক্ষাদান করতে প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যার প্রার্থনায় তেলাওয়াত করার জন্য সূচনা ও সংকলন করেছিলেন।[৩]
এ সুন্নি আশআরী মুসলিম পন্ডিত এবং সুফি শায়েখ সকাল ও রাতের প্রার্থনায় বাধ্যতামূলকভাবে কুরআনের আয়াত এবং দোয়ামূলক হাদিসের সাথে এটি তিলাওয়াতের জন্য তার মুরিদগনকে একত্রিত হয়ে নিষ্ঠার সাথে পাঠ করার দায়িত্ব অর্পন করেছেন।[৪]
এই ওয়াজিফার উপাদানগুলো ইমাম আল-নওয়াবী (১২৩৩-১২৭৭ খ্রিস্টাব্দ) রচিত বইয়ের " Adhkar Nawawiyya শিরোনামে "সকাল ও সন্ধ্যার অধ্যায়" থেকে নেওয়া হয়েছে।[৫]
এই ওয়াজিফা ইমাম আহমদ জাররুকের ধর্মতাত্ত্বিক কাজের অংশ যিনি মালিকি ফিকহ মাদ্রাসার অন্যতম বিশিষ্ট পণ্ডিত তবে তিনি একজন শাদিলি সুফি শেখ এবং শাদিলিয় সুফি তরিকা জাররুকিয়া শাখার প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে বেশি পরিচিত।[৬]
বেজাইয়াতে পড়াশুনা করা এই উল্লেখযোগ্য সুফি মুসলিম বিশ্বে সুপরিচিত ছিলেন কারণ তাঁর তালিম/শিক্ষাদানে জাররুকিয়ার সুফি ধারার জন্ম হয়েছিল।[৭]
এই পণ্ডিত এ ওয়াজিফাটিতে ফিকহ এবং সুফিবাদের সংশ্লেষণ ব্যবহার করে মাগরেব অঞ্চলে একটি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ প্রার্থনা রীতি হিসাবে প্রচলন করতে সফল হয়েছিলেন এবং তাঁর একটি সুপরিচিত উদ্ধৃতি রয়েছে যাতে বলা হয়েছে যে:[৮]
ফিকহ ছাড়া কোনো সুফিবাদ নেই এবং সুফিবাদ ছাড়া কোনো ফিকহ নেই। [৯]
সকালে ফজরের নামাযের পর এবং বিকেলে আছরের নামাযের পর ব্যক্তিগতভাবে বা সম্মিলিতভাবে এই ওয়াজিফা পাঠ করা হয়। [১০] প্রথমে তাআউজ ও বিসমিল্লাহ্ পাঠের পর সূরা আল-বাকারার ১৬৩ নম্বর আয়াত তেলাওয়াতের মাধ্যমে এ ওয়াজিফা পাঠ শুরু হয়।[১১]
এরপর পর্যায়ক্রমে সূরা আল ইমরান’র ১ নম্বর আয়াত পাঠের পর সূরা তা-হা’র ১১১ নম্বর আয়াত এবং আয়াতুল কুরসি পাঠ করা হয়।[১২]
তেলাওয়াতের সময় বেশ কয়েকটি আয়াত নির্দিষ্ট পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে একটির সাথে অন্যটি মিলিয়ে পড়া হয় । অতঃপর মুরিদগণ মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের উপর দরুদ ও দোয়া পাঠ করেন এবং সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ের জন্য ব্যক্তিগত ও সম্মিলিত সকলের সার্বিক মঙ্গল কামনা করে দোয়া করেন।[১৩]
সূরা সাফফাতের শেষ তিন অর্থাৎ ১৮০ থেকে ১৮২ নম্বর আয়াত তেলাওয়াতের মাধ্যমে ওয়াজিফাটির সকল বিষয়বস্তু পাঠ তথা সম্পূর্ণ ওয়াজিফা পাঠ সম্পন্ন হয়।[১৪]