গুগল পিক্সেল(ইংরেজি: Google Pixel) গুগলের ইলেকট্রনিক পণ্যের একটি সিরিজ যেগুলো ক্রোম ওএস বা অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলে। পিক্সেল ব্র্যান্ড সর্বপ্রথম ২০১৩ সালে প্রথম প্রজন্মের ক্রোমবুক পিক্সেলের সাথে উন্মুক্ত করা হয়। পিক্সেল সিরিজে রয়েছে ল্যাপটপ, স্মার্টফোন ও অন্যান্য এক্সেসরিজের সাথে একটি স্থগিত পিক্সেল সি ট্যাবলেট । গুগল স্টোর অথবা অন্যান্য রিটেইল স্টোর থেকে এ ডিভাইসগুলো কেনা যায়।
৪ অক্টোবর, ২০১৬ #MadeByGoogle(মেড বাই গুগল) ইভেন্টের মাধ্যমে গুগল তাদের প্রথম প্রজন্মের পিক্সেল স্মার্টফোন, পিক্সেল এবং পিক্সেল এক্সেল উন্মোচন করে।[১] ফোন দুটিতে গুগল, ক্যামেরার উপর বেশি জোর দেয়, যা ছিল ৯০ পয়েন্ট নিয়ে ঐ সময়ে DxOMarkMobile (ডি এক্স ও মার্ক মোবাইল) র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে; যদিও পরবর্তীতে এইচ টি সি তাদের ইউ ১১ নিয়ে স্থানটিতে ভাগ বসায়।[২] এই সাফল্যের মূলে ছিল HDR+(এইচ ডি আর প্লাস) এর মত সফটওয়্যার অপ্টিমাইজেশন। এছাড়াও পিক্সেল ফোনগুলো গুগল ফটোজের মাধ্যমে আনলিমিটেড ছবি সংরক্ষণের ক্লাউড পরিষেবা[৩] এবং সরাসরি গুগলের কাছ থেকে ক্রয়ের ক্ষেত্রে আনলকযোগ্য বুটলোডারের সুবিধাযুক্ত ছিল।[৪]
ক্যামেরাঃ পিছনের ক্যামেরা ১২.৩ মেগাপিক্সেলের এফ/২.০ লেন্স এবং আইআর লেসার-সহায়ক অটোফোকাস যুক্ত;উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগের ক্ষেত্রে </ref> ট্যাগ যোগ করা হয়নি সামনের ক্যামেরা এফ/২.৪ এর ৮ মেগাপিক্সেল লেন্স
ক্যামেরাঃ পিছনের ক্যামেরা ১২.২ মেগাপিক্সেলের এফ/১.৮ লেন্স এবং আইআর লেসার-সহায়ক অটোফোকাস, অপটিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন যুক্ত। সামনের ক্যামেরা এফ/১.৮, স্থির ফোকাস ও ৭৫° এর ৮ মেগাপিক্সেল লেন্স, ২য় সামনের ক্যামেরা এফ/২.২, স্থির ফোকাস ও ৯৭° এর ৮ মেগাপিক্সেল লেন্স
ব্যাটারিঃ ২,৯১৫ এমএএইচ (পিক্সেল ৩); ৩৪৩০ এমএএইচ (পিক্সেল ৩ এক্সেল); উভয়টি অনঅপসারণযোগ্য এবং ফাস্ট চার্জিং ও ওয়্যারলেস চার্জিং বিদ্যমান
উপাদানঃ অ্যালুমিনিয়াম কাঠামো, অনুজ্জ্বল কাচ পৃষ্ঠ ; আইপি৬৮ পানি ও ধুলা প্রতিরোধশক্তি
রংঃ কেবল কালো, সফেদ সাদা ও নয় গোলাপি
অপারেটিং সিস্টেমঃ অ্যান্ড্রয়েড ৯.০ পাই; অ্যান্ড্রয়েড ১১ এ উন্নীতকরণযোগ্য
গুগল ২০২০ সালের ৩ আগস্ট পিক্সেল ৪এ এবং ৩০ সেপ্টেম্বর পিক্সেল ৪এ ৫জি, মূল পিক্সেল ৪ এর বাজেট বিকল্প বাজারে আনে
ডিসপ্লেঃ ২৩৪০x১০৮০ {১৯.৫ঃ৯} রেজুলশনের ৫.৮১" ওলেড স্ক্রিন (পিক্সেল ৪এ); ২৩৪০x১৪৪০ {১৯.৫ঃ৯} রেজুলশনের ৬.২" ওলেড স্ক্রিন (পিক্সেল ৪এ ৫ জি); দুটি ডিসপ্লেতেই করনিং গরিলা গ্লাস ৩ এবং সামনের ক্যামেরার জন্য গোল ছিদ্র রয়েছে
ক্যামেরাঃ পিছনের ক্যামেরা ১২.২ মেগাপিক্সেলের এফ/১.৭ অটোফোকাস,ডুয়াল-পিক্সেল ফেজ ডিটেকশন, অপটিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন যুক্ত। এর পাশাপাশি পিক্সেল ৫ এ এফ/২.২ -এর ১৬ মেগাপিক্সেল আলট্রাওয়াইড লেন্স বিদ্যমান। এছাড়াও, সামনের ক্যামেরা ৮ মেগাপিক্সেল এফ/২.০ লেন্স
ব্যাটারিঃ ৪০৮০ এমএএইচ; অনঅপসারণযোগ্য এবং ফাস্ট চার্জিং, ওয়্যারলেস চার্জিং, পুরো দিনের ব্যাটারি এবং ব্যাটারি শেয়ার সুবিধা বিদ্যমান
উপাদানঃ মসৃণ অ্যালুমিনিয়াম কাঠামো; আইপি৬৮ পানি ও ধুলা প্রতিরোধশক্তি
সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৫ তে একটি ইভেন্টের মাধ্যমে গুগল পিক্সেল সি বাজারে বের করে,[১৩] অন্যান্য পণ্যের মধ্যে ছিল নেক্সাস ৫এক্স ও নেক্সাস ৬পি। পিক্সেল সি-তে একটি ইউএসবি-সি পোর্ট এবং ৩.৫ মি,মি, হেডফোন জ্যাক আছে।[১৪] ডিভাইসটি অ্যান্ড্রয়েড ৬.০.১ মার্শমেলোসহ বাজারে আসে এবং পরবর্তীতে অ্যান্ড্রয়েড ৭.এক্স নোউগাট ও অ্যান্ড্রয়েড ৮.এক্স অরিও লাভ করে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে গুগল পিক্সেল সি বিক্রয় বন্ধ করে দেয়।[১৫]
ডিসপ্লেঃ ২৫৬০x১৮০০ রেজুলশনের ১০.২" স্ক্রিন
প্রসেসরঃ এনভিডিয়া টেগরা এক্স১
স্টোরেজঃ ৩২ অথবা ৬৪ জিবি
র্যামঃ ৩ জিবি
ক্যামেরাঃ ৮ মেগাপিক্সেলের পিছনের ক্যামেরা; ২ মেগাপিক্সেলের সামনের ক্যামেরা
পিক্সেল স্লেট ১২.৩ ইঞ্চি (৩১ সেমি) -এর একটি টু-ইন-১ ট্যাবলেট ও ল্যাপটপ, ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর গুগল কর্তৃক উন্মোচিত হয়,[১৬] পিক্সেল ৩ এবং পিক্সেল ৩ এক্সেল -এর সাথেই। পিক্সেল স্লেটে ২ টি ইউএসবি-সি পোর্ট থাকলেও কোনো হেডফোন জ্যাক নেই।
স্টোরেজঃ ৩২ অথবা ৬৪ জিবি অথবা ১২৮ জিবই অথবা ২৫৬ জিবি
র্যামঃ ৮ জিবি অথবা ১৬ জিবি
ক্যামেরাঃ ৮ মেগাপিক্সেলের সামনের ও পিছনের ক্যামেরা, সামনেরটিতে বেশি চওড়া দৃশ্য পাওয়া যায়
ব্যাটারিঃ ৪৮ ওয়াট আওয়ার, এক চার্জে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যবহারের সুবিধা
ডিভাইসটি ইন্টেল ক্যাবি লেক প্রসেসরগুলিতে ক্রোম ওএস চালায় যার সাথে নিম্ন প্রান্তে সেলেরন থেকে উচ্চ প্রান্তে একটি আই ৭ পর্যন্ত বিকল্প রয়েছে । ২০১৯ সালের জুন মাসে গুগল ঘোষণা করে যে এটি পণ্য লাইনটি আর বিকাশ করবে না এবং দুটি মডেল বাতিল করে দেয় যা উন্নয়নের অধীনে ছিল।[১৭]
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সালে একটি ব্লগ-পোস্টের মাধ্যমে গুগল ১ম প্রজন্মের ক্রোমবুক পিক্সেলের ঘোষণা দেয়।[১৮] ল্যাপটপটিতে একটি এসডি/মাল্টি-কার্ড রিডার, মিনি ডিসপ্লে পোর্ট, হেডফোন/মাইক্রোফোন জ্যাক কম্বিনেশন, এবং ২ টি ইউএসবি ২.০ পোর্ট রয়েছে। এছাড়া কিছু ডিভাইসে ব্যাকলিট(উজ্জ্বল) কিবোর্ড, "একটি সম্পূর্ণ ক্লিকযুক্ত চিত্রিত কাঁচের ট্র্যাকপ্যাড", সংযুক্ত স্টেরিও স্পিকার, এবং দুইটি অন্তর্নির্মিত মাইক্রোফোন সুবিধাও আছে।[১৯]
২০১৫ সালের মার্চে গুগল ২য় প্রজন্মের ক্রোমবুক পিক্সেল একটি ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে ঘোষণা করে।[২০] ল্যাপটপটিতে একটি এসডি কার্ড স্লট, হেডফোন/মাইক্রোফোন জ্যাক কম্বিনেশন, এবং ২ টি করে ইউএসবি সি ও ইউএসবি ৩.০ পোর্ট রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য বৈশিষ্ট্য-এর মধ্যে ডিভাইসটিতে ব্যাকলিট(উজ্জ্বল) কিবোর্ড, "একটি মাল্টিটাচ কাঁচের ট্র্যাকপ্যাড", সংযুক্ত স্টেরিও স্পিকার, এবং দুইটি অন্তর্নির্মিত মাইক্রোফোন আছে।[২১]
অক্টোবর, ২০১৭ সালের হার্ডওয়্যার ইভেন্টে, পিক্সেল ২ স্মার্টফোনসমূহের সাথে এক সেট ওয়্যারলেস ইয়ারবাডস প্রকাশ করা হয়।[২৫] ইয়ারবাডগুলোঅ্যান্ড্রয়েড মার্শমেলো অথবা এর উপরের ফোন, এবং গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট -এর সহায়তায় কাজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়।[২৬] অডিও প্লেব্যাক এবং ফোনকলের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি ইয়ারবাডগুলো গুগল ট্রান্সলেট -এর মাধ্যমে ৪০ টি ভাষায় অনুবাদের সুবিধা আছে।[২৭] গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং "নেয়ারবাই" এর সাহায্যে ইয়ারবাডগুলো পিক্সেল ২ স্মার্টফোনের সাথে স্বয়ংক্রিয় সংযোগ লাভ করতে পারে।[২৮] পিক্সেল বাডস কেবল কালো, সফেদ সাদা এবং নীল-মত রঙে পাওয়া যায়। ইয়ারবাডগুলোর ব্যাটারি ধারণক্ষমতা ১২০ এমএইচ হলেও পিক্সেল বাডস -এর সাথের চার্জিং কেসটির ব্যাটারি ধারণক্ষমতা ৬২০ এমএইচ।[২৯] ইয়ারবাডগুলোর মূল্য ১৫৯ মার্কিন ডলার।[২৯]
পিক্সেলবুকের সাথে ব্যবহারের জন্য পিক্সেলবুকের সাথেই ২০১৭, অক্টোবর ইভেন্টে পিক্সেলবুক পেন নামের স্টাইলাস বাজারে আনে গুগল। পেনটিতে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট সহায়তার পাশাপাশি চাপ সংবেদনশীলতা রয়েছে। পরিবর্তনযোগ্য এএএএ ব্যাটারিসহ পেনটির দাম ৯৯ মার্কিন ডলার।[৩০]
পিক্সেল ৩ স্মার্টফোনসমূহের সাথে ২০১৮ এর অক্টোবরে গুগল পিক্সেল স্ট্যান্ড প্রকাশ করে।[৩১] প্রমাণ ৫ ওয়াট কিউআই ওয়্যারলেস চার্জিংয়ের পাশাপাশি গুগলের একটি মালিকানাধীন প্রযুক্তির মাধ্যমে ১০ ওয়াট ওয়্যারলেস চার্জিং সুবিধা আছে।[৩২] উপরন্তু পিক্সেল ৩ এ একটি সফটওয়্যার মোডের মাধ্যমে এটি গুগল হোম হাবের অনুরূপ স্মার্ট ডিসপ্লে হিসেবে কাজ করতে পারে।