ছাং-ও ৬ | |||||
---|---|---|---|---|---|
অভিযানের ধরন | পৃষ্ঠের নমুনা প্রত্যানয়ন | ||||
পরিচালক | চীনের জাতীয় মহাকাশ প্রশাসন | ||||
মহাকাশযানের বৈশিষ্ট্য | |||||
প্রস্তুতকারক | চীনের মহাকাশ প্রযুক্তি অ্যাকাডেমি | ||||
উৎক্ষেপণ ভর | ৮,২০০ কেজি (১৮,১০০ পা)[১] | ||||
অভিযানের শুরু | |||||
উৎক্ষেপণ তারিখ | ২০২৪[২][৩] | ||||
উৎক্ষেপণ রকেট | দীর্ঘ অভিযাত্রা ৫ (ছাং চেং ৫) | ||||
উৎক্ষেপণ স্থান | ওয়েনছাং | ||||
চন্দ্র অবতরক | |||||
----
|
ছাং-ও ৬ (চীনা: 嫦娥六号; ফিনিন: Cháng'é liùhào) চীনা মহাকাশ প্রশাসনের অধীনে ষষ্ঠ চন্দ্রানুসন্ধান ও দ্বিতীয় চান্দ্র নমুনা প্রত্যানয়ন অভিযান (ছাং-ও ৫-এর পরে)।[২] পূর্বসূরীগুলির মতো এই মহাকাশযানটিকেও চীনের চন্দ্র দেবী ছাং-ও-র নামে নামকরণ করা হয়। এটি ছিল মানবজাতির প্রথম চন্দ্র অভিযান যাতে চাঁদের দূরপৃষ্ঠ থেকে প্রথমবারের মতো নমুনা প্রত্যানয়ন করা হয়। এর আগের সব চান্দ্র নমুনা প্রত্যানয়ন অভিযানগুলি চাঁদের নিকটপৃষ্ঠে সম্পাদিত হয়েছিল।[৪]
২০২৪ সালের ৩রা মে তারিখে চীনের হাইনান দ্বীপের ওয়েনছাং মহাকাশ উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে মহাকাশযানটিকে উৎক্ষেপণ করা হয়। এর চন্দ্র অবতরণ যান ও চন্দ্র বিচরণ যানটি ২০২৪-এর ১লা জুন চাঁদের দূরপৃষ্ঠে অবতরণ করে।[৫][৬] অবতরণ যানের স্বয়ংক্রিয় তুরপুন (ছিদ্র করার যন্ত্র) ও হাতা (নমুনা সংগ্রহ করার যন্ত্র) চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৯৩৫.৩ গ্রাম ভরের নমুনা সংগ্রহ করে। এরপর এর আরোহী যানটি (অ্যাসেন্ডার) নমুনাগুলিকে ৩রা জুন চান্দ্র কক্ষপথে পরিবহন করে নিয়ে যায়।[৭] [৮] আরোহণ যানটি এরপর চান্দ্র কক্ষপথে আবর্তনশীল আবর্তন যানটির সাথে সংযুক্ত হয় এবং সেখানে বায়ুমণ্ডলীয় পুনর্প্রবেশকারী উপাংশটিতে নমুনাগুলিকে হস্তান্তর করে। শেষোক্ত উপাংশটি এরপর পৃথিবীতে ফেরত আসে। নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি অভিযানের অবতরণ যান ও বিচরণ যান চন্দ্রপৃষ্ঠে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পাদন করে।
সমগ্র অভিযানটি প্রায় ৫৩ দিন ধরে স্থায়ী ছিল। ২০২৪ সালের ২৫শে জুন প্রত্যাবর্তন প্রকোষ্ঠটি (রিটার্ন ক্যাপসুল) নমুনাসহ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশ করে এবং অন্তর্দেশীয় মঙ্গোলিয়াতে একটি অবতরণ ছত্রের (প্যারাশুট) মাধ্যমে অবতরণ করে।[৯]
চীনা চন্দ্র অভিযান কর্মসূচিটিকে ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তিগত উন্নতির চারটি দশায় ভাগ করে নকশা করা হয়েছে।[১০] প্রথম দশাটির উদ্দেশ্য ছিল কেবলমাত্র চান্দ্র কক্ষপথে পৌঁছানো, যে কাজটি ২০০৭ সালে ছাং-ও ১ ও ২০১০ সালে ছাং-ও ২ অভিযান দুইটি সমাপ্ত করে। দ্বিতীয় দশার উদ্দেশ্য ছিল চাঁদে অবতরণ করা ও চন্দ্রপৃষ্ঠে পরিভ্রমণ করা, যে কাজটি ২০১৩ সালে ছাং-ও ৩ ও ২০১৯ সালে ছাং-ও ৪ অভিযান দুইটি সম্পন্ন করে (ছাং-ও ৪-এর পরিভ্রামক যানটি ২০২২ সালের শুরু পর্যন্ত সক্রিয় আছে)। তৃতীয় দশাটির উদ্দেশ্য চাঁদের ভূ-নিকটস্থ পার্শ্ব থেকে চান্দ্র নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে প্রত্যানয়ন করা, যেটি ২০২০/২০২১ সালে ছাং-ও ৫ অভিযানটি সম্পন্ন করেছে এবং ভবিষ্যতে ছাং-ও ৬ অভিযানটিও একই কাজে নিয়োজিত হবে। চতুর্থ দশার উদ্দেশ্য হল চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে একটি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রচালিত গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা।[১০][১১][১২] ছাং-ও কর্মসূচিটির সামগ্রিক উদ্দেশ্য হল ২০৩০-এর দশকে একটি মানব চালকবাহী মহাকাশযানের অবতরণ সহজ করা এবং সম্ভব হলে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে একটি ঘাঁটি স্থাপন করা।[১৩]
ছাং-ও ৬-কে ছাং-ও ৫-এর একটি প্রতিলিপি ও সম্ভাব্য প্রতিস্থাপক (ব্যাক-আপ) হিসেবে নির্মাণ করা হয়।[১৪] মহাকাশযানটি চারটি উপাংশ (মডিউল) দিয়ে গঠিত বলে প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে। একটি অবতরণ যান চান্দ্রপৃষ্ঠের ২ মিটার (৬.৬ ফু) নীচ থেকে আনুমানিক ২ কেজি (৪.৪ পা) নমুনা সংগ্রহ করবে[১৫] ও সেগুলিকে একটি সংযুক্ত আরোহী যানের ভেতরে স্থাপন করবে, যে আরোহী যানটিকে চান্দ্র কক্ষপথে উৎক্ষেপণ করা হবে। আরোহী যানটি এরপর একটি একটি স্বয়ংক্রিয় পূর্বনির্ধারিত সাক্ষাৎ (রঁদেভু Rendez-vous) সম্পন্ন করবে ও একটি আবর্তন যানের সাথে সংযুক্ত (ডক) হবে। আবর্তন যানটি তারপর নমুনাগুলিকে একটি নমুনা-প্রত্যানয়নকারী প্রকোষ্ঠে (ক্যাপসুল) স্থানান্তর করে সেটিকে পৃথিবীতে প্রেরণ করবে।[১৬][১৭] প্রাক্কলিত উৎক্ষেপণ ভর ৮,২০০ কেজি (১৮,১০০ পা)—অবতরণ যানটির ভর ৩,২০০ কেজি (৭,১০০ পা) ও আরোহী যানটির ভর প্রায় ৭০০ কেজি (১,৫০০ পা)।[১][১৬][১৮]
২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে চীনা কর্মকর্তারা ঘোষণা দেন যে তাঁরা অভিযানটিতে অতিরিক্ত প্রায় ১০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত মালামাল প্রস্তাবের জন্য আন্তর্জাতিক অংশীদারদেরকে আহ্বান করবেন।[১৯] যেমন মহাকাশযানটি ডর্ন (ডিটেকশন অভ আউটগ্যাসিং রেডন, অর্থাৎ বহির্গামী রেডন গ্যাস শনাক্তকরণ) নামের একটি ফরাসি সরঞ্জাম বহন করবে, যেটি চান্দ্র আলগা শিলাস্তর (রেগোলিথ) ও চান্দ্র বহির্মণ্ডলের (এক্সোস্ফিয়ার) মধ্যে চান্দ্র ধূলি ও অন্যান্য উদ্বায়ী পদার্থের পরিবহন অধ্যয়ন করব, যার মধ্যে চান্দ্র পানিচক্রও অন্তর্ভুক্ত।[২০]
সন্ধানী মহাকাশযানটিকে ২০২৪ সালে একটি দীর্ঘ অভিযাত্রা ৫ ধরনের রকেটের দ্বারা হাইনান দ্বীপের ওয়েনছাং কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়।[২][৩]
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; xinhua-eng-28June2024
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; :1
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি