দ্য ফরগটেন | |
---|---|
![]() থিয়েট্রিক্যাল রিলিজ পোস্টার | |
পরিচালক | জোসেফ রুবেন |
প্রযোজক | ব্রুস কোহেন ড্যান জিংকস জো রথ |
রচয়িতা | গেরাল্ড ডি পেগো |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | জেমস হর্নার |
চিত্রগ্রাহক | অ্যানাস্টাস এন. মাইকোস |
সম্পাদক | রিচার্ড ফ্র্যান্সিস-ব্রুস |
প্রযোজনা কোম্পানি | |
পরিবেশক | কলম্বিয়া পিকচার্স |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ৯১ মিনিট (মূল) ৯৪ মিনিট(আনরেটেড কাট) |
দেশ | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
ভাষা | ইংরেজি |
নির্মাণব্যয় | ৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার[১] |
আয় | ১১৭.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার[১] |
দ্য ফরগটেন (ইংরেজি: The Forgotten) হল ২০০৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি মার্কিন কল্পবিজ্ঞান মনস্তাত্ত্বিক হরর থ্রিলার চলচ্চিত্র। ছবিটি পরিচালনা করেন জোসেফ রুবেন। ছবিটিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেন জুলিঅ্যান মুর, ডমিনিক ওয়েস্ট, গ্যারি সিনিসে, আলফ্রে উডার্ড, লিনাস রচ ও অ্যান্টনি এডওয়ার্ডস। ছবির কাহিনি এমন এক নারীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে, যিনি বিশ্বাস করেন ১৪ মাস আগে একটি বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর পুত্রের মৃত্যু ঘটেছে, শুধু এক সকালে তাঁর নিদ্রাভঙ্গ ঘটবে এবং তাঁকে বলা হবে যে কোনওদিনই তাঁর পুত্রসন্তান ছিল না। তাঁর আর সকল স্মৃতিই ঠিক আছে, কিন্তু তাঁর স্বামী ও তাঁর মনঃচিকিৎসকের দাবির বিরুদ্ধে কোনও প্রত্যক্ষ প্রমাণ নেই। তিনি নিজের পুত্রের অস্তিত্বের প্রমাণের অনুসন্ধানে বের হলেন।
কলম্বিয়া পিকচার্সের পক্ষে রেভোলিউশন স্টুডিওজ ছবিটি প্রযোজনা করে এবং ২০০৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় মুক্তিলাভ করে।
টেলি প্যারেটা (জুলিঅ্যান মুর) বিশ্বাস করেন যে, তাঁর পুত্র স্যাম (ক্রিস্টোফার কোভালেস্কি) ১৪ মাস আগে একটি বিমান দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে। কিন্তু তাঁর স্বামী জিম (অ্যান্টনি এডওয়ার্ডস) তাঁকে বলেন যে তাঁর মতিভ্রম ঘটেছে। কারণ, কোনওদিনই তাঁদের পুত্রসন্তান ছিল না। টেলির বন্ধু এলিয়ট (জেসিকা হেচ) স্যামের প্রতি টেলির নৈকট্য সত্ত্বেও স্যামের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন না বলেই মনে হয়। ড. মুন্স (গ্যারি সিনিসে) টেলিকে বললেন যে, স্যাম তাঁর কল্পনা মাত্র এবং নিজের জীবন সম্পর্কে তাঁর আকাঙ্ক্ষাই এই কল্পনার রূপ নিয়েছে। ড. মুন্স টেলিকে হাসপাতালে পাঠাবার সুপারিশ করলেন। কিন্তু টেলি পালিয়ে গেলেন। তাঁর সঙ্গে অ্যাশ (ডোমিনিক ওয়েস্ট) নামে এক ব্যক্তির সাক্ষাৎ ঘটল। টেলি মনে করলেন, অ্যাশ হলেন লরেন (ক্যাথরিন ফগনান) নামে একটি মেয়ের বাবা, সেই মেয়েটি স্যামের বন্ধু এবং সেও একই দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে। প্রথমে অ্যাশ টেলির দাবি অস্বীকার করে বলেন যে, তাঁর কোনও মেয়ে নেই। তারপর অ্যাশ পুলিশ ডাকেন। তাঁকে পুলিশ নিজেদের ধরে নিয়ে গেলে পরে অ্যাশের নিজের মেয়ের কথা মনে পড়ে যায়। তিনি টেলিকে উদ্ধার করেন। তাঁরা দু’জনে পালিয়ে গিয়ে গা ঢাকা দিলেন। ন্যাশানাল সিকিউরিটির এজেন্টরা তাঁদের অনুসন্ধান শুরু করলেন।
টেলি ও অ্যাশ একজন এজেন্টকে (লি টারজেসেন) বন্দী করে ভয় দেখালেন। সেই এজেন্ট অনিচ্ছার সঙ্গেই প্রকাশ করলেন যে, তিনি ও অন্যান্য এজেন্টরা মানবজাতিকে রক্ষা করতে শুধুমাত্র “তাদের” সাহায্য করছেন। কোনও পূর্বসতর্কতা ছাড়াই বাড়ির ছাদটি উড়িয়ে দেওয়া হয় এবং ছাদের সঙ্গে সঙ্গে সেই এজেন্টকেই আকাশে শুষে নেওয়া হয়। সম্ভবত “তারা”ই এই কাজ করল। টেলি ও অ্যাশ পালিয়ে গেলেন। ঘটনাচক্রে টেলি আবার দেখা করতে গেলেন ড. মুন্সের সঙ্গে। তিনি জানালেন যে, সেই অন্তর্ধানের ঘটনাটি “তাদের”ই কাজ। এছাড়া ড. মুন্স আরও বললেন যে, তাদের বিচারের উপর সরকার নজর রাখছে। “তারা” যা চাইছে তা আটকানোর কোনও ক্ষমতা তাদের নেই।
ড. মুন্স টেলিকে বিমানবন্দরে কোয়েস্ট এয়ারলাইন্সের জীর্ণ হ্যাঙ্গারে নিয়ে গেলেন। সেখানে তিনি টেলির সঙ্গে “তাদের” এক এজেন্টের (লিনাস রচ) আলাপ করিয়ে দিলেন। ড. মুন্স সেই এজেন্টকে বললেন যে, সব শেষ হয়ে গিয়েছে এবং তারা যেন পরীক্ষানিরীক্ষা থামায়। কারণ, এর ফলে আরও বেশি ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু এজেন্ট বললেন যে, সব কিছু শেষ হয়নি। তিনি টেলিকে বললেন যে, টেলি একটি পরীক্ষার অংশ। এই পরীক্ষাটির মাধ্যমে দেখা হচ্ছে যে, মা ও সন্তানের মধ্যে বন্ধনকে লঘু করা যায় কিনা। টেলির ক্ষেত্রে তাঁর স্মৃতি পুরোপুরি মুছে দেওয়া যায়নি। টেলির যে পুত্র নেই, সে কথা তিনি স্বীকার করলেন না। এজেন্ট বললেন যে, তিনি যদি তাঁর স্মৃতি সম্পূর্ণ মুছতে না পারেন তাহলে তিনি ব্যর্থ হবেন। এরপর সেই এজেন্ট টেলিকে বশীভূত করেন এবং তাঁকে স্যামের প্রথম স্মৃতিটি চিন্তা করান। টেলি হাসপাতালে স্যামের জন্মের দিনটি চিন্তা করতে থাকেন। এর ফলে এজেন্ট সফলভাবে স্যামের স্মৃতিটির অস্তিত্ব মুছে দিলেন। এজেন্ট যখন নিজেকে সফল মনে করে চলে যাচ্ছেন, সেই সময় টেলির মাতৃত্বের বন্ধন তাঁকে আরও গভীরে চিন্তা করালো। টেলির মনে পড়ল স্যামের জন্মের আগে সে যখন গর্ভবতী ছিল, সেই সময়কার কথা। তাঁর স্মৃতিতে ভেসে উঠল, সত্যিই একটি সময়ে তাঁর মধ্যে জীবন ছিল। স্যামের সব স্মৃতি ফিরে এল। কী ঘটছে সেটা এজেন্ট পুরোপুরি বুঝে ওঠার আগেই হ্যাঙ্গারের ছাদটি হঠাৎ উড়ে গেল। স্মৃতি মুছে দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তাঁকে আকাশে টেনে নেওয়া হল। এর ফলে পরীক্ষাও শেষ হয়ে গেল।
টেলি দেখলেন যে, তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। যদিও পূর্ব ঘটনার সব স্মৃতিই তার রয়ে গিয়েছিল। পার্কে গিয়ে তিনি স্যামের দেখা পেলেন। অ্যাশও পার্কে ছিলেন। তিনি তাঁর মেয়েকে দেখছিলেন। স্যামের মতো অ্যাশেরও পূর্ব ঘটনার স্মৃতি ছিল না। টেলি নতুন করে নিজের পরিচয় দিলেন। দু’জনে বসে দেখতে লাগলেন বাচ্চার খেলার মাঠে খেলে বেড়াচ্ছে।
ছবির প্রিন্সিপ্যাল ফোটোগ্রাফির বেশিরভাগটিই তোলা হয় নিউ ইয়র্ক সিটিতে।
ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তিলাভ করে ২০০৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর।
২০০৫ সালের ১৮ জানুয়ারি ডিভিডি ও ভিএইচএস ফরম্যাটে ছবিটি মুক্তিলাভ করে।
বেসিক কেবলে ছবিটি সম্প্রচারিত হওয়ার সময় দুর্ঘটনার বিষয়টির মধ্যে পরিবর্তন আনা হয়েছিল। "বিমান" ও "বিমানবন্দর" শব্দ দু’টিটা ডাব করে "বাস" ও "টার্মিনাল" করা হয়েছিল।[২]
ছবিটি সম্পর্কে সমালোচকেরা মূলত নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াই ব্যক্ত করেন। রিভিউ এগ্রিগেটর রটেন টম্যাটোজ গড়ে ৫/১০ রেটিং দেওয়া ১৭২টি সমালোচনার ভিত্তিতে উল্লেখ করে যে, ৩১% সমালোচক ছবিটির সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেন। ওয়েবসাইটটির সমালোচক ঐকমত্য অনুযায়ী "তর্কের ভিত্তিস্বরূপ যে উক্তি সেটিকে গুরুতররূপে নেওয়াটা হাস্যকর।" ("The premise grows too ridiculous to take seriously")[৩] ৩৪টি সমালোচনার ভিত্তিতে মেটাক্রিটিকের হিসাব অনুযায়ী, এই ছবিটিকে ১০০-এর মধ্যে গড়ে ৪৩ দেওয়া হয়েছে এবং সেগুলি "মিশ্র বা গড় সমালোচনা"।[৪] রজার এবার্ট ছবিটিকে ৪-এর মধ্যে ২ দিয়ে বলেন যে, "দ্য ফরগটেন ভালো ছবি নয়, তবে [এতে] অন্ততপক্ষে বিশ্বাসযোগ্য ভুক্তভোগীর চরিত্রায়ন করা হয়েছে।"[৫]
২০০৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ৩,১০৪টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পর প্রথম সপ্তাহান্তে এটি মোট ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে। বক্স অফিসে ছবিটি #১ র্যাঙ্ক অর্জন করে।[৬]
ছবিটি প্রযোজনায় খরচ হয়েছিল ৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। পরে ছবিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় ৬৭.১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং অন্যান্য অঞ্চলেই ৫০.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে। বিশ্বব্যাপী ছবিটির আয় ছিল ১১৭.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।[৭]