এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |
| |
মোট জনসংখ্যা | |
---|---|
আনুমানিক ৩,৫০০,০০ থেকে ৪,০০০,০০জন | |
প্রতিষ্ঠাতা | |
হামজা ইবনে আলী ইবনে আহমাদ এবং আল হাকিম | |
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল | |
সিরিয়া | ৯৮১,০০০[১] |
লেবানন | ৩৭৫,০০০[১] |
ইসরায়েল | ১২৫,৩০০[২] |
জর্ডান | ৩২,০০০[৩] |
মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে | >৩১০,০০০[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] |
ভেনেজুয়েলা | ১২৫,০০০[৪] |
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | ৪৩,০০০[৫] |
কানাডা | ২৩,০০০[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] |
অস্ট্রেলিয়া | ১৯,০০০[৬] |
কলম্বিয়া | ৬৫,০০০[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] |
যুক্তরাজ্য | ৮,০০০[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] |
মরক্কো | ৫,৫০০[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] |
পাকিস্তান | অজানা |
লিবিয়া | অজানা |
ফিলিস্তিন | অজানা |
ধর্ম | |
ইউনিটারিয়ান দ্রুজ | |
ধর্মগ্রন্থ | |
রাসাইল আল-হিকাম | |
ভাষা | |
আরবী হিব্রু (ইসরায়েল) |
দ্রুজ (আরবি: درزي, দারজি বা দুরজি, বহুবচন: دروز, দুরুজ; হিব্রু: דרוזים, "দ্রুজিম") একটি একেশ্বরবাদী ধর্ম ও সামাজিক সম্প্রদায়।[৭] দ্রুজদের মূল আবাসভূমি সিরিয়া-লেবানন। ইসরাইল ও জর্দানে দ্রুজ ধর্মকে আলাদা ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয় না। কারণ এই ধর্মের ভিত্তিমূল মূলত ইসলাম। দ্রুজ ধর্ম মূলত শিয়া ইসলামের একটি শাখা। দ্রুজদের ধর্ম বিধানে ইব্রাহিমীর ধর্মসমূহের পাশাপাশি নিওপ্লাতিনিক ও পিথাগোরীয় মতবাদের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। দ্রুজগণ নিজেদেরকে “আহলে তাওহীদ” (একেশ্ববাদী মানুষ বা একতাবদ্ধ মানুষ) বা “আল-মুয়াহিদুন” বলে পরিচয় দেয়। ঐতিহাসিক পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল, বিশেষ করে লেবাননের ইতিহাস গঠনে দ্রুজদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুজদের সামাজিক রীতিনীতি মুসলিম, ইহুদি ও খ্রিস্টানদের থেকে ভিন্ন।
দ্রুজ অনুসারীগণ প্রধানত সিরিয়া, লেবানন, জর্দান এবং ইসরাইলে বসবাস করে।[৮][৯] ‘‘ইনস্টিটিউট অফ দ্রুজ’’ এর গবেষণা থেকে জানা যায় ৫০-৫৫% দ্রুজ সিরিয়ায়, ৪০% লেবাননে, ৬-৭% ইসরাইলে এবং ১-২% জর্দানে বাস করে।[৮][১০]
মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ আফ্রিকায় দ্রুজ অনুসারীগণ উল্লেখযোগ্য হারে বাস করে। দ্রুজগণ আরবিতে কথা বলে ও প্রাচ্যীয় ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের সামাজিক রীতিনীতি অনুসরণ করেন।[১১] পৃথিবীতে দ্রুজ অনুসারীগণের সংখ্যা দশ লাখেরও বেশি।[১২]
দ্রুজ নামটি এসেছে মুহাম্মাদ বিন ইসমাইল নাশতাকিন আদ-দারাজীর নাম থেকে। দারাজী শব্দটি ফারসি। আদ-দারাজী ছিলেন প্রাক দ্রুজ যুগের একজন সাধু ও প্রচারক। দ্রুজগণ আদ-দারাজীকে ধর্মগুরু মানে এবং নিজেদেরকে দ্রুজ বলে পরিচয় দেয়।[১৩]
প্রথম দিকে আদ-দারাজী গোপনে তাঁর মতবাদ প্রচার করতেন। তিনি প্রচার করতেন সৃষ্টিকর্তা মানুষের মাঝে বিরাজ করেন। বিশেষ করে আলী ইবনে আবি তালিব ও তার বংশধরদের মাঝে। তৎকালীন খলিফা আল-হাকিম বি-আমর আল্লাহর মাঝেও সৃষ্টিকর্তা আছেন বলে প্রচার করেন। আদ-দারাজী নিজেকে ‘বিশ্বাসের তরবারি’ ঘোষণা করেন।
১০১৬ সালে আদ-দারাজী ও তাঁর অনুসারীগণ প্রকাশ্যে তাদের বিশ্বাস প্রচার করতে শুরু করেন এবং জনসাধারণকে তাদের এই ধর্মমত গ্রহণের ডাক দেন। কায়রোতে তাদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা শুরু হয়। এই কারণে প্রায় বছরখানেক আদ-দারাজীর কার্যক্রম বন্ধ থাকে।[১৪]
১০১৮ সালে আদ-দারাজী আততায়ীর হাতে নিহত হন। কোনো কোনো উৎস দাবী করে যে তিনি আল-হাকিম বি-আমর আল্লাহর হাতে নিহত হন।[১৩][১৫]
আবার কারও কারও মতে দ্রুজ শব্দটি এসেছে আরবী দারেশাহ (যিনি শিক্ষাগ্রহণ করেন) থেকে।[১৬] একমাত্র আরব ঐতিহাসিক খ্রিস্টান মনীষী ‘এন্তিওখ এর ইয়াহিয়া’ খ্রিস্টীয় একাদশ শতাব্দীতে স্পষ্টভাবে মত প্রকাশ করে গেছেন দ্রুজ সম্প্রদায় আদ-দারাজীর হাতেই তৈরি হয়েছে।[১৭] একজন ইহুদি ভ্রমনকারী বেঞ্জামিন টুডেলা প্রথম ইউরোপীয় হিসেবে ১১৬৫ সালে লেবানন অথবা এর আশপাশ অতিক্রম করার সময় দ্রুজদের দেখা পান। তিনি দ্রুজদের দগজিইন নামে সম্বোধন করেন। তিনি বর্ণনা করেন দ্রুজরা পাহাড়চারী একেশ্বরবাদী জাতি, যারা পরমাত্মায় বিশ্বাস করে।[১৮]
দ্রুজ বিশ্বাস শিয়া ইসমাইলি মতবাদের সংস্পর্ষে এসে একটি ধর্মীয় আন্দোলনে রূপ নেয়। শিয়া ইসমাইলি মতবাদ গ্রিক দর্শন দ্বারা প্রভাবিত এবং সেই সময়ের অনেক ধর্মীয় এবং দার্শনিক মতের বিরোধিতা করতো। ইসমাইলি মতের একজন সমর্থক হামজা ইবনে-আলী ইবনে-আহমাদ এই বিশ্বাস প্রচার শুরু করেন। তিনি ১০১৪ সালে ইউরোপে আসেন এবং আল-হাকিম মসজিদের নিকটবর্তী রিদান মসজিদে তিনি মনীষী এবং নেতাদের জমায়েত করেন।[১৯] ১০১৭ সালে হামজা আনুষ্ঠানিকভাবে দ্রুজ বিশ্বাস ও ইউনিটারিয়ান মতবাদ প্রচারণা শুরু করেন। হামজা ফাতিমীয় খলিফা আল-হাকিমের সমর্থন লাভ করেন। তিনি ধর্ম প্রচারের স্বাধীনতা ঘোষণা করে একটি ডিক্রি জারু করেন।[২০]
আল-হাকিম দ্রুজ বিশ্বাসের কেন্দ্রীয় চরিত্রে পরিণত হন। যদিও তাঁর নিজ ধর্মবিশ্বাস নিয়ে শিক্ষাবিদদের মাঝে মতদ্বৈততা আছে। জন এসপোসিতো বলেন, আল-হাকিম বিশ্বাস করতেন, তিনি শুধু মাত্র দৈবভাবে ধর্মীয়-রাজনৈতিক নেতা হিসেবে নিযুক্ত নন, তিনি মহাজাগতিক শক্তি যিনি ঈশ্বরের সাথে যুক্ত।[২১] অনেক দ্রুজ ও অদ্রুজ পণ্ডিত, যেমন: সামি সোয়াদ ও সামি মাকারেম বলেন, ধর্ম প্রচারে প্রাক-দ্রুজ প্রচারক আদ-দারাজীর ভূমিকা ছিলো ধোঁয়াশাপূর্ণ।[২২] আল-হাকিম আদ-দারাজীর দৈবত্বকে প্রত্যাখান করনে।[১৫][২৩] এবং হামজা ইবনে আলীকে সমর্থনের মাধ্যমে তিনি নিজের মত প্রকাশ করেন।[২৪]
একরাতে সান্ধ্যকালীন ভ্রমণে বেরিয়ে আল-হাকিম নিখোঁজ হয়ে যান। ধারণা করা হয় তিনি আততায়ীর হাতে নিহত হন। খুব সম্ভবত তার বড় বোন সিত্তাল-মুলক এই হত্যাকান্ডের পেছনে ছিলেন। হামজা ইবনে আলীর পরে দ্রুজ আন্দোলন আল-মুক্তানা বাহাউদ্দিনের নতুন উদিয়মান নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
আল-হাকিম নিখোঁজ হওয়ার পরে তাঁর অপ্রাপ্তবয়স্ক পুত্র সন্তান আলী আজ-জহির সিংহাসনে উপবেশন করলে ফাতিতীয় খিলাফাতের সমর্থনে চলমান দ্রুজ আন্দোলন আজ-জহিরকে খলিফা হিসেবে মেনে নেয় কিন্তু হামজাকে ইমাম (নেতা) হিসেবে অনুসরণ করা শুরু করে।[১৫] নাবালক খলিফার অভিভাবক সিত্তাল-মুলক ১০২১ সালে সেনাবাহিনীকে এই আন্দোলনকে ধ্বংস করার নির্দেশ দেন।[১৩] একই সময়ে হামজা বিন আলী বাহাউদ্দীন আস-সামুকিকে ইউনিটারিয়ান মুভমেন্টের নেতৃত্ব প্রদান করেন।[১৫] পরবর্তী সাত বছর দ্রুজ অনুসারীগণ চরম নির্যাতন, নিপীড়ন, হত্যার শিকার হন। নতুন খলিফা জহির এই বিশ্বাসকে মুছে ফেলতে চেয়েছেন।[২৫] এটি ছিলো ফাতিতীয় সাম্রাজ্যে ক্ষমতার যুদ্ধের ফলাফল। কারণ দ্রুজ অনুসারীগণ আলী আজ-জহিরকে তাদের ইমাম হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। অনেক গুপ্তচর বিশেষ করে আদ-দারাজীর অনুসারীগণ ইউনিটারিয়ান আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়। গুপ্তচরগণ মূলত বিভিন্ন ঝামেলার সৃষ্টি করে দ্রুজ মতবাদের সম্মানহানীর চেষ্টা করতো। নতুন খলিফা এরই সূত্রধরে দ্রুজ সম্প্রদায়ের উপর সেনা লেলিয়ে দেন। এন্তিওখ থেকে আলেক্সান্দ্রিয়া পর্যন্ত ফাতিমীয় সেনাবাহিনীর হাতে প্রায় দশহাজার দ্রুজ অনুসারী নিহত হয়।[১৩] বৃহত্তম হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয় এন্তিওখে। সেখানে ৫০০০ দ্রুজ ধর্মীয় নেতাকে হত্যা করা হয়।[১৩] এর ফলে দ্রুজ অনুসারীগণ আত্মগোপন করে। যারা ধরা পড়তো তাদেরকে বলপূর্বক ধর্মত্যাগে বাধ্য করা হত অথবা হত্যা করা হত। দক্ষিণ লেবানন এবং সিরিয়াতে কিছু দ্রুজ টিকে থাকতে সমর্থ হয়। আজ-জজিহের মৃত্যুর দুই বছর পরে ১০৩৮ সালে দ্রুজ আন্দোলন আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। [২৫]
লেবানন ও সিরিয়াতে দ্রুজগণ আলাদা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ হিসেবে স্বীকৃত। দেশের প্রতি দ্রুজদের আনুগত্য এবং ভালোবাসা প্রবল[২৬]। নিজ সম্প্রদায়ের প্রতি দ্রুজগণ খুবই সহমর্মী। দেশে বিদেশে যেখানেই হোক দ্রুজগণ একে অন্যের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করে[২৭]। দ্রুজদের ক্ষমতার ইতিহাস আছে। ঐতিহাসিক পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে বসবাসকারী অন্য সম্প্রদায়ের তুলনায় দ্রুজরাই সব থেকে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করেছে।[২৭]।
দ্রুজদের ধর্মগ্রন্থের নাম "কিতাব আল-হিকমাহ" বা "রাসাইল হিকমাহ" (আরবি: رسـائـل الـحـكـمـة, বাংলা: জ্ঞানের বই)।[২৮]
দ্রুজরা মধ্যপ্রাচ্যের একটি বড় উপজাতি। এরা মূলত মধ্যপ্রাচ্যের পাহাড়ী এলাকায় বাস করে।
Around 80,000 Druze live in Israel, including 18,000 in the Golan Heights.
|প্রথমাংশ1=
এর |শেষাংশ1=
নেই (সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য) .