নীতিশাস্ত্র বলতে ঠিক বেঠিক আচরণকে সংরক্ষণ করা, সঠিক সুপারিশ প্রদান ও সেগুলোকে প্রণালীবদ্ধকরন বুঝায়।[১] নীতির একটি মূল বিষয় হল 'সুন্দর জীবন', যা মানুষ অল্পতে তুষ্ট থেকে সুন্দর করে যাপন করবে। অনেক দার্শনিক প্রথাগত নৈতিক আচরণের চেয়ে এভাবে সুন্দর জীবনযাপনকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন।[২]
অধিকাংশ ধর্মেরই একটা নৈতিক উপাদান থাকে যা(দাবিকৃত) অতিপ্রাকৃতিক কোন প্রকাশ বা অনুশাসন থেকে সৃষ্টি হয়। অনেকে দৃঢ়তার সাথে বলে থাকেন যে নৈতিক জীবনযাপনের জন্য ধর্মের প্রয়োজন। ব্লাকবার্ন বলেন যে, অনেক লোক আছে যারা মনে করে তারা যদি ধর্মের অনুশাসনযুক্ত কঠিন সামাজিক নিয়মের ভিতর থাকে তো ভাল থাকতে পারে।[৩]
বৌদ্ধ ধর্মের নীতি নৈতিকতা ধর্মীয়ভাবে গৌতম বুদ্ধের বোধিচিত্ত বা তাকে অনুসরণকারী অন্যান্য বোধিচিত্তের বুদ্ধত্বের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। বৌদ্ধদের ধর্মগ্রন্থগুলোতে নৈতিক শিক্ষার আলোকপাত করা হয়েছে। তাছাড়াও গৌতম বুদ্ধ থেকে অন্যান্য বোধিচিত্তের মাধ্যমে বৌদ্ধরা নৈতিক শিক্ষা লাভ করেছে। তাই অনেক বৌদ্ধ বিদ্বানকে তাদের নীতিশাস্ত্রের সঠিকতা নিরূপণে ধর্মীয় গ্রন্থগুলোর পর্যালোচনা ও বৌদ্ধ সমাজের নৃতাত্ত্বিক প্রমাণাদির উপর নির্ভর করতে হয়।[৪]
বৌদ্ধ ধর্ম অনুসারে সাধারণ মানুষকে পঞ্চশীল নীতি মেনে চলতে হয়। সাধারণ মানুষের জন্য এ পঞ্চশীল নীতি হল বৌদ্ধ নীতিশাস্ত্রের মূল্ভিত্তি। পঞ্চশীলে বলা হয়েছে -প্রাণী হত্যা করা হতে বিরত থাকতে, কোন চৌর্যবৃওি না করতে, মিথ্যা কথা না বলতে, অবৈধ কামাচার হতে বিরত থাকতে, কোন ধরনের নেশা দ্রব্য সেবন না করতে। কোন সাধারণ মানুষ বুদ্ধ বা বোধিসত্ত্ব হতে চাইলে তাকে এ সকল খারাপ কাজ হতে বিরত থাকার অঙ্গীকার করাকে উৎসাহিত করা হয়(বিনয় পিটক দেখুন)।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
আধুনিক বিশ্বের পশ্চিমা বৌদ্ধ- যারা সকল নৈতিক সমস্যার বাস্তবানুগ সমাধান পছন্দ করেন, তারা বৌদ্ধদের প্রচলিত নীতিশাস্ত্রের যৌক্তিকতা বাজিয়ে দেখতে চাইবেন, কেননা এ নীতিশাস্ত্রগুলো শুধু মাত্র আচার সর্বস্ব ও পুরুষানুক্রমিক। এ সমস্যার একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজতে শুধু প্রচলিত হিতোপদেশ বা বিনয় পিটকের উপর নির্ভর করলে চলবে না। মধ্যপন্থার মত অন্যান্য মৌলিক শিক্ষণগুলোর সাহায্যে হিতোপদেশ বা অনুশাসনগুলোর যৌক্তিক ব্যাখ্যা খুঁজতে হবে ও মানুষের জীবনে সেগুলোর প্রয়োজনীয়তাও বিচার করে দেখতে হবে। এ প্রক্রিয়া দিয়ে এগোলে বৌদ্ধদের নীতিশাস্ত্রকে শুধু তাদের বিশ্বাস, ঐতিহ্য, প্রথা বা বোধি চিত্তের উপর নির্ভর করতে হবে না। যা বিশ্বব্যাপী অবৌদ্ধদেরকেও বৌদ্ধ ধর্মের নীতিশাস্ত্রের গভীরে প্রবেশের সুযোগ দেবে।[৫]
Going for Refuge & Taking the Precepts (The Wheel Publication No. 282/284). Kandy, Sri Lanka: Buddhist Publication Society. (Originally published 1981 and transcribed for Internet publication in 1994.) Retrieved 2007-11-12 from "Access to Insight" at http://www.accesstoinsight.org/lib/authors/bodhi/wheel282.html.