![]() | এই নিবন্ধটি ইংরেজি উইকিপিডিয়া হতে অনুবাদের মাধ্যমে অমর একুশে নিবন্ধ প্রতিযোগিতা ২০২৫ উপলক্ষ্যে মানোন্নয়ন করা হচ্ছে। নিবন্ধটিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই নিবন্ধকার কর্তৃক সম্প্রসারণ করে অনুবাদ শেষ করা হবে; আপনার যেকোন প্রয়োজনে এই নিবন্ধের আলাপ পাতাটি ব্যবহার করুন।
আপনার আগ্রহের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। |
লেখক | আগাথা ক্রিস্টি |
---|---|
প্রকাশনার স্থান | যুক্তরাজ্য |
ভাষা | ইংরেজি |
ধারাবাহিক | হারকিউল পোয়ারো |
ধরন | রহস্য-রোমাঞ্চ ও অপরাধ্মূলক বই |
প্রকাশক | কলিন্স ক্রাইম ক্লাব |
প্রকাশনার তারিখ | ১ জানুয়ারি ১৯৩৪ |
মিডিয়া ধরন | মুদ্রণ |
পৃষ্ঠাসংখ্যা | ২৫৬ (first edition, hardcover) |
পূর্ববর্তী বই | লর্ড এডোয়ার্গ ডাইস |
পরবর্তী বই | থ্রী অ্যাক্ট ট্র্যাজেডি |
মার্ডার অন দি ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস হল ইংরেজ লেখিকা আগাথা ক্রিস্টির একটি গোয়েন্দা কল্পকাহিনী যেখানে বেলজিয়ান গোয়েন্দা হারকিউল পোয়ারোকে মুখ্য চরিত্র হিসাবে দেখানো হয়েছে। উপন্যাসটি প্রথম যুক্তরাজ্যে কলিন্স ক্রাইম ক্লাব কর্তৃক ১ জানুয়ারী ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত হয়। এই উপন্যাসটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, ১৯৩৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী তারিখে [১][২] ডড, মিড অ্যান্ড কোম্পানি কর্তৃক "মার্ডার ইন দ্য ক্যালাইস কোচ" শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিল। [৩][৪] যুক্তরাজ্যে বইটির সংস্করণের খুচরা মূল্য ছিল সাত শিলিং এবং ছয় পেন্স (৭/৬) [৫] এবং মার্কিন সংস্করণের দাম ছিল ২ ডলার। [৪]
১৯৩০-এর দশকে ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস ভারী তুষারপাতের কারণে বন্ধ হয়ে যায়। একটি খুনের ঘটনা ধরা পড়ে এবং মামলাটি সমাধানের জন্য পোয়ারোর মধ্যপ্রাচ্য থেকে লন্ডনের বাড়ির যাত্রা বাধাপ্রাপ্ত হয়। উপন্যাসের শুরুর অধ্যায়ে গল্পের ঘটনা মূলত ইস্তাম্বুলে সংঘটিত হয়। উপন্যাসের বাকি অংশের ঘটনা যুগোস্লাভিয়াতে ঘটে, যেখানে ট্রেনটি ভিনকোভসি এবং ব্রডের মধ্যে আটকা পড়ে। এই অঞ্চল বর্তমানে উত্তর-পূর্ব ক্রোয়েশিয়ার অন্তর্গত।
১৯৩২ সালের গ্রাহাম গ্রীনের স্ট্যাম্বুল ট্রেন শীর্ষক উপন্যাসের সাথে নামের বিভ্রান্তি এড়াতে আমেরিকাতে এই উপন্যাসটি মার্ডার ইন দ্য ক্যালাইস কোচের শিরোনামে প্রকাশ করা হয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উপন্যাসটি ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস নামে প্রকাশিত হয়েছিল। [৬]
আলেপ্পো থেকে ইস্তাম্বুল পর্যন্ত টরাস এক্সপ্রেস ট্রেনে ভ্রমণ করার পর, বিখ্যাত ব্যক্তিগত গোয়েন্দা হারকিউল পোয়ারো টোকাটলিয়ান হোটেলে পৌঁছান, যেখানে তিনি লন্ডনে ফিরে আসার জন্য একটি জরুরি টেলিগ্রাম পান। তিনি হোটেলের অতিথি সহায়ককে নির্দেশ দেন, যেন তাকে সিম্পলন-রুট ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি প্রথম শ্রেণির কামরা বুক করে দেওয়া হয়, যা সেদিন রাতেই ছাড়বে।
যদিও ট্রেনটি সম্পূর্ণরূপে সংরক্ষিত ছিল, পোয়ারো তার বন্ধু এবং সহযাত্রী মঁসিয়ে বাউকের সহায়তায় একটি দ্বিতীয় শ্রেণির কামরা পান। বাউক ছিলেন আন্তর্জাতিক দে ওয়াগন-লিটস কোম্পানির পরিচালক, যারা ট্রেন পরিচালনা করত।
এই ট্রেনের অন্যান্য যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন—আমেরিকান বিধবা ক্যারোলিন হাবার্ড, ইংরেজ পরিচারিকা মেরি ডেবেনহাম, সুইডিশ মিশনারি গ্রেটা ওলসন, আমেরিকান ব্যবসায়ী স্যামুয়েল র্যাচেট, তার সহকারী হেক্টর ম্যাককুইন এবং তার ইংরেজ পরিচারক এডওয়ার্ড হেনরি মাস্টারম্যান, ইতালিয়ান-আমেরিকান গাড়ি বিক্রেতা আন্তোনিও ফস্কারেলি, রাশিয়ান রাজকুমারী নাটালিয়া দ্রাগোমিরফ এবং তার জার্মান পরিচারিকা হিল্ডেগার্ড শ্মিট, হাঙ্গেরিয়ান কাউন্ট রুডলফ আন্দ্রেনি এবং তার স্ত্রী হেলেনা, ইংরেজ কর্নেল জন আরবাথনট, আমেরিকান বিক্রেতা সাইরাস বি. হার্ডম্যান এবং গ্রিক চিকিৎসক স্তাভরোস কনস্টানটাইন।
আমেরিকান ব্যবসায়ী র্যাচেট মৃত্যুর হুমকি পাচ্ছিলেন। পোয়ারোকে চিনতে পেরে তিনি তাকে নিজের নিরাপত্তার জন্য নিয়োগ করতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু পোয়ারো তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেন, "আমি তোমার মামলা গ্রহণ করব না, কারণ আমি তোমার মুখটা পছন্দ করি না।"
পোয়ারোর সহযাত্রী মঁসিয়ে বাউক, যিনি পোয়ারোকে ট্রেনে জায়গা পেতে সাহায্য করেছিলেন, তিনি প্রথম শ্রেণীর শেষ কামরাটি নিয়েছিলেন। পরদিন সকালে তিনি অন্য কামরায় চলে যান এবং তার প্রথম শ্রেণীর কামরাটি পোয়ারোকে থাকার জন্য ছেড়ে দেন।
সেই রাতেই পোয়ারো কিছু অদ্ভুত ঘটনা লক্ষ্য করেন। গভীর রাতে তিনি র্যাচেটের কামরা থেকে একটি চিৎকার শুনতে পান। ট্রেনের টিকেট পরীক্ষক পিয়েরে মিশেল র্যাচেটের দরজা খটখট করেন, কিন্তু ভেতর থেকে একটি কণ্ঠস্বর ফরাসী ভাষায় কিছু বলে ওঠেন।
আমেরিকান বিধবা যাত্রী ক্যারোলিন হাবার্ড তার ঘণ্টা বাজিয়ে মিশেলকে জানান যে তার কামরায় একজন লোক গেছে। পোয়ারোও তার বেল বাজিয়ে মিশেলকে ডাকেন এবং জল চান। তখন মিশেল তাকে জানান যে ট্রেনটি ভিনকোভসি এবং ব্রডের মাঝখানে তুষারে আটকে গেছে। কিছুক্ষণ পর, পোয়ারো পাশের কামরায় ভারী কোনো বস্তুর পতনের শব্দ শুনতে পান। তিনি লাল কিমোনো পরা এক মহিলাকে ওয়াশরুমের দিকে যেতে দেখেন, তারপর তিনি ঘুমিয়ে পড়েন।
পরদিন সকালে, ট্রেন তখনো তুষারে আটকে ছিল। বাউক পোয়ারোকে জানান যে র্যাচেট খুন হয়েছেন এবং খুনি এখনো ট্রেনেই রয়েছে, কারণ সে পালানোর কোনো উপায় পায়নি। যেহেতু ট্রেনে কোনো পুলিশ ছিল না তাই পোয়ারো এই খুনের মাম্লার রহস্য নির্ধারণ করে অপরাধীকে ধরার দারিত্ব গ্রহণ করেন।
ড. কনস্টানটাইনের সহায়তায় পোয়ারো র্যাচেটের মৃতদেহ এবং তার কামরা পরীক্ষা করেন। তারা কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ আবিষ্কার করেন:
দেহে বারোটি ছুরির আঘাত ছিল, যার প্রতিটি ভিন্ন শক্তিতে আঘাত করা হয়েছে। কামরার জানালা ইচ্ছাকৃতভাবে খোলা রাখা হয়েছিল। এইচ অক্ষর চিহ্নিত একটি রুমাল পাওয়া যায়, যা একজন সম্ভাব্য সন্দেহভাজনের। একটি পাইপ পরিস্কার করার যন্ত্র পাওয়া যায়, যা সম্ভবত কোনো ধূমপায়ী ব্যক্তির। র্যাচেটের ব্যবহৃত দেশলাইয়ের থেকে আলাদা একটি চ্যাপ্টা আকৃতির দেশলাই পাওয়া যায়। পোড়ানো কাগজের একটি অংশ উদ্ধার করা হয়, যেখানে লেখা ছিল মেম্বার লিটল ডেইজি আর্মস্ট্রং।
কাগজের টুকরোটি পোয়ারোকে খুনির উদ্দেশ্য বুঝতে সাহায্য করে। পোয়ারো বুঝতে পারেন যে এই হত্যাকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য ডেইজি আর্মস্ট্রং অপহরণ-কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। অনেক বছর আগে, একজন আমেরিকান দুষ্কৃতি ক্যাসেটি তিন বছর বয়সী ডেইজি আর্মস্ট্রংকে অপহরণ করেছিল। ক্যাসেটি ধনী আর্মস্ট্রং পরিবার থেকে বিশাল মুক্তিপণ আদায় করে, কিন্তু পরে জানা যায় যে সে শিশুটিকে আগেই হত্যা করেছে ডেইজির মা সোনিয়া আর্মস্ট্রং, যিনি গর্ভবতী ছিলেন, এই দুঃসংবাদ শুনে অকাল প্রসবের কারণে মারা যান। তার স্বামী কর্নেল আর্মস্ট্রং আত্মহত্যা করেন। ডেইজির ফরাসি নার্স সুজান, যাকে অপহরণে সহায়তার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয় তিনি পরে আত্মহত্যা করেন। কিন্তু মৃত্যুর পর প্রমাণিত হয় যে তিনি নির্দোষ ছিলেন।
ক্যাসেটি বিচার ব্যবস্থার দুর্নীতি ও আইনি ফাঁকফোকরের সুযোগ নিয়ে পালিয়ে যান। পোয়ারো নিশ্চিত হন যে র্যাচেট আসলে ক্যাসেটিই ছিল এবং হত্যাকারী প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল।যে কন্ডাক্টরের কথার উত্তর দিয়েছিল সে র্যাচেট ছিল না, কারণ র্যাচেট ফরাসি বলতে পারত না।
যখন পোয়ারো ট্রেনে যাত্রীদের সাক্ষাৎকার নিতে শুরু করেন, তখন তিনি আবিষ্কার করেন যে র্যাচেটের সহকারী ম্যাককুইন ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত, কারণ তিনি আর্মস্ট্রং পরিবারের ঘটনা সম্পর্কে জানতেন। অন্যদিকে, বিধবা ক্যারোলিন হাবার্ড বলেন যে তার বিশ্বাস খুনি তার কেবিনে ছিল যেহেতু তিনি সেখানে অন্য কোন ব্যাক্তির উপস্থিতি টের পান। যাত্রীরা এবং টিকিট পরীক্ষক পিয়েরে একে অপরের জন্য উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রদান করেন। পোয়ারো লক্ষ্য করেন যে কিছু যাত্রী হত্যার রাতে করিডোর দিয়ে লাল কিমোনো পরা এক মহিলাকে হেঁটে যেতে দেখেছেন। তবে, কেউই সেই কিমোনোর মালিকানা স্বীকার করলেননা।
বিধবা হাবার্ড ওলসনকে বলেছিলেন তার ও ক্যাসেটির কামরার মধ্যে থাকা সংযোগকারী দরজাটি তালাবদ্ধ করতে, কিন্তু পরে তার এই দাবির অসঙ্গতি ধরা পরে। অন্যদিকে রাশিয়ান রাজকুমারী নাটালিয়া দ্রাগোমিরফ জার্মান পরিচারিকা শ্মিট কামরার মধ্যে ট্রেন পরিচালন সংস্থা ওয়াগন লিটলের পোশাক পরিহিত একজন অপিরিচিত সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছিলেন। মিস ডেবেনহ্যাম অসাবধানতাবশত প্রকাশ করেন যে তিনি আমেরিকায় গিয়েছিলেন, যা তার পূর্বের বক্তব্যের বিপরীত। একই সময়ে, ডেইজির প্রসঙ্গ উঠলে ওলসন অত্যন্ত আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন, যা তাকে সম্ভাব্য অপরাধীদের তালিকায় আরও বেশি সন্দেহভাজন করে তোলে। আরবুথনট মন্তব্য করেন যে ক্যাসেটির দ্বিতীয়বার বিচার হওয়া উচিত ছিল, তাকে হত্যা করা ঠিক হয়নি। অন্যদিকে, হার্ডম্যান স্বীকার করেন যে তিনি আসলে ম্যাকনিল এজেন্সির একজন গোয়েন্দা, যাকে ক্যাসেটির ওপর নজর রাখতে বলা হয়েছিল, কারণ তিনি মনে করছিলেন কেউ তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করছে।
যাত্রীদের জিনিষপত্র পরীক্ষা করার সময়, পোয়ারো লক্ষ্য করেন যে কাউন্টেস আন্দ্রেনির জিনিষপত্রে তার নাম লেখা জায়গাটি ভেজা এবং তার পাসপোর্টে দাগ রয়েছে। শ্মিটের ব্যাগ থেকে সন্দেহজনক পোশাক পাওয়া যায় এবং পোয়ারোর নিজের লাগেজে লাল কিমোনো লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। হাবার্ড নিজেই তার স্পঞ্জ ব্যাগের ভেতরে লুকানো হত্যার অস্ত্রটি খুঁজে পান। পরে পোয়ারো ড. কনস্টানটাইন এবং বাউকের সঙ্গে বসে মামলাটি পর্যালোচনা করেন এবং সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রমাণ বিশ্লেষণ করে একটি সমাধানে পৌঁছান।
এরপর পোয়ারো যাত্রীদের সামনে তাদের আসল পরিচয় প্রকাশ করেন এবং দেখান কিভাবে তারা প্রত্যেকে আর্মস্ট্রং পরিবার ও ডেইজির ঘটনার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত ছিলেন। কাউন্টেস আন্দ্রেনি (পূর্বনাম গোল্ডেনবার্গ) আসলে হেলেনা, ডেইজির খালা। তার স্বামী রুডলফ তার পরিচয় গোপন করার জন্য জিনিষপত্রে লেখা নাম ও পাসপোর্টের নাম গোপন করতে চেয়েছিলেন। ডেবেনহ্যাম ছিলেন ডেইজি ও হেলেনার পরিচারিকা। ফসকারেলি ছিলেন আর্মস্ট্রং পরিবারের গাড়িচালক এবং অপহরণের সন্দেহভাজনদের একজন। এডওয়ার্ড হেনরি মাস্টারম্যান ছিলেন কর্নেল আর্মস্ট্রংয়ের পরিচারক। মিশেল ছিলেন সুজানের বাবা, যিনি হত্যার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ট্রেন পরিচালন সংস্থার একটি পোশাক জোগাড় করেছিলেন। হাবার্ড আসলে বিখ্যাত অভিনেত্রী লিন্ডা আরডেন, যিনি ডেইজির মাতামহী এবং সোনিয়া ও হেলেনার মা। শ্মিট ছিলেন আর্মস্ট্রং পরিবারের রাঁধুনি এবং ওলসন ছিলেন ডেইজির সেবিকা। রাজকুমারী ড্রাগোমিরফ, যিনি সোনিয়ার ধর্মমাতা, তিনি স্বীকার করেন যে হত্যার স্থানে পাওয়া রুমালটি আসলে তার এবং তাতে সম্বলিত "এইচ" অক্ষরটি আসলে সিরিলিক বর্ণমালার "এন" অক্ষরকে নির্দেশ করে। আরবুথনট কর্নেল আর্মস্ট্রংয়ের বন্ধু ছিলেন। হার্ডম্যান, একজন প্রাক্তন পুলিশ সদস্য, স্বীকার করেন যে তিনি সুজানের প্রেমে পড়েছিলেন। ম্যাককুইন, যার সোনিয়ার প্রতি গভীর অনুরাগ ছিল, তিনি ছিলেন সেই আইনজীবীর ছেলে যিনি আর্মস্ট্রং পরিবারের হয়ে কাজ করেছিলেন।
এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন একমাত্র বাউক ও ড. কনস্টানটাইন, কারণ তারা অন্য তালাবদ্ধ কামরায় ছিল।
পোয়ারো দুটি সম্ভাব্য সমাধান দেন। প্রথমটি হলো—একজন অপরিচিত ব্যক্তি, যিনি টিকিট পরীক্ষকের ছদ্মবেশে ছিলেন, সে ভিনকোভিতে ট্রেনে উঠে ক্যাসেটিকে হত্যা করেন এবং ট্রেন ছাড়ার আগেই নেমে যান। দ্বিতীয় সমাধানটি হলো—ডেইজি আর্মস্ট্রং-এর সঙ্গে সম্পর্কিত পোড়া চিরকুটটি বাদে বাকি সব প্রমাণ ইচ্ছাকৃতভাবে সাজানো হয়েছিল এবং মিশেলসহ বাকি যাত্রীরা (হেলেনা ব্যতীত), ক্যাসেটিকে ছুরিকাঘাত করেন।
লিন্ডা আরডেন (হাবার্ড) সবকিছু স্বীকার করেন এবং হত্যার সম্পূর্ণ দায় নিজের কাঁধে নেওয়ার প্রস্তাব দেন, কারণ তিনিই মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন। তবে, বাউক ও ড. কনস্টানটাইন সিদ্ধান্ত নেন যে প্রথম সমাধানটি পুলিশের কাছে জানানো হবে। পোয়ারো এরপর নিজেকে এই মামলা থেকে সরিয়ে নেন।
হারকিউল পোয়ারো: বেলজিয়ামের বিশ্বখ্যাত গোয়েন্দা।
মন্সেইনর বাউক: পোয়রোটের বেলজিয়ান বন্ধু এবং ইন্টারন্যাশনাল ডেস ওয়াগনস-লিটস সংস্থার একজন পরিচালক।
স্যামুয়েল র্যাচেট/ক্যাসেটি: একজন আমেরিকান দুষ্কৃতি যে তিন বছর বয়সী ডেইজি আর্মস্ট্রংকে অপহরণ করে হত্যা করেছিল।
ডাঃ স্ট্যাভ্রোস কনস্টানটাইন: একজন গ্রীক চিকিৎসক, যিনি হত্যার পর র্যাচেটের মৃত্যুর সময় নির্ধারণ করেন।
মিসেস ক্যারোলিন হাবার্ড: আমেরিকান অভিনেত্রী লিন্ডা আরডেন, যিনি ডেইজি আর্মস্ট্রংয়ের মাতামহী বলেও জানা গেছে।
মেরি ডেবেনহ্যাম: বাগদাদ থেকে আগত একজন ইংরেজ পরিচারিকা যিনি পূর্বে ডেইজি আর্মস্ট্রংয়ের গভর্নেস ছিলেন।
কর্নেল জন আরবুথনট: কর্নেল আর্মস্ট্রংয়ের ইংরেজ বন্ধু যিনি মেরি ডেবেনহ্যামের প্রেমে পড়েছেন।
রাজকুমারী নাতালিয়া ড্রাগোমিরফ: একজন রাশিয়ান রাজকুমারী যিনি শেষ পর্যন্ত সোনিয়া আর্মস্ট্রংয়ের ধর্মমাত হিসেবে প্রকাশিত হন।
হেক্টর ম্যাককুইন: র্যাচেটের আমেরিকান সচিব এবং অনুবাদক, যার বাবা ছিলেন আর্মস্ট্রংদের আইনজীবী।
কাউন্টেস হেলেনা আন্দ্রেনি: সোনিয়া আর্মস্ট্রংয়ের বোন, তেরোজন সন্দেহভাজনের মধ্যে একমাত্র যিনি খুনে অংশগ্রহণ করেননি।
কাউন্ট রুডলফ আন্দ্রেনি: কাউন্টেস আন্দ্রেনির হাঙ্গেরিয়ান স্বামী, যিনি দ্বাদশ খুনি হিসেবে তার স্ত্রীর স্থান নিয়েছিলেন।
আন্তোনিও ফসকারেলি: একজন ইতালীয়-আমেরিকান গাড়ি বিক্রেতা যিনি পূর্বে আর্মস্ট্রংদের চালক ছিলেন এবং ছোট্ট ডেইজিকে ভালোবাসতেন।
গ্রেটা ওলসন: একজন সুইডিশ মিশনারি যিনি পূর্বে ডেইজি আর্মস্ট্রংয়ের সেবিকা ছিলেন।
হিলডেগার্ড শ্মিট: রাজকুমারী ড্রাগোমিরফের জার্মান পরিচারিকা যিনি পূর্বে আর্মস্ট্রংদের রাঁধুনি ছিলেন
এডওয়ার্ড হেনরি মাস্টারম্যান: র্যাচেটের ইংরেজ পরিচারক, একজন উদ্ধত ব্যক্তি, যিনি যুদ্ধে কর্নেল আর্মস্ট্রংয়ের সাথে ছিলেন এবং নিউ ইয়র্কে তার পরিচারকের কাজ করতেন।
সাইরাস হার্ডম্যান: একজন আমেরিকান প্রাক্তন পুলিশ সদস্য যিনি ডেইজি আর্মস্ট্রংয়ের ফরাসি বাগান পরিচারিকা সুজানের প্রেমে পড়েছিলেন, সুজান ক্যাসেটিকে সহায়তা করার মিথ্যা অভিযোগে আত্মহত্যা করেছিলেন।
পিয়েরে মিশেল: ফরাসি ট্রেনের টিকেট পরীক্ষিক এবং ডেইজি আর্মস্ট্রংয়ের আত্মহননকারী বাগন পরিচারিকা সুজানের বাবা।
১৯৩২ সালে চার্লস লিন্ডবার্গের ছেলের অপহরণ ও হত্যার ঘটনা আগাথা ক্রিস্টির উপন্যাসকে অনুপ্রাণিত করেছিল। উপন্যাসটিতে বাস্তব জীবনের বহু উপাদান ব্যবহৃত হয়েছে। পরিবারের প্রথম সন্তান, এক ছোট শিশুকে মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করা হয়েছিল। শিশুর বাবা-মা সমাজে সুপরিচিত ছিলেন। বাবা একজন বিমানচালক ছিলেন। শিশুটির মা অপহরনের সময় গর্ভবতী ছিলেন। মুক্তিপণ দেওয়া হলেও কিছুদিন পর শিশুটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। লিন্ডবার্গের বাবা-মায়ের সেবায় নিয়োগ করা এক দাসীকে এই অপরাধের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পুলিশের কঠোর জিজ্ঞাসাবাদের পর সেই দাসী আত্মহত্যা করে।[৭]
১৯৩১ সালের ডিসেম্বরে, বৃষ্টিপাতের কারণে রেলপথের কিছু অংশ প্লাবিত হয়ে যায়। ক্রিস্টির স্বামী নাইনভেহ তার প্রত্নতাত্ত্বিক খননকাজ সেরে ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসে বাড়ি ফিরছিলেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে রেল পরিষেবা ২৪ ঘন্টার জন্য বন্ধ হয়ে যায়। তার অনুমোদিত জীবনীতে, স্বামীর কাছে লেখা এক চিঠির সম্পূর্ণ উদ্ধৃতির মাধ্যমে সেই ঘটনাটি বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। সেখানে তার ট্রেনের কিছু সহযাত্রীর বিবরণ রয়েছে, যারা তার উপন্যাসের গল্প ও চরিত্র গঠনে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন আমেরিকান মহিলা সহযাত্রিনী মিসেস হিলটন,যার অনুপ্রেরনায় লেখিকা পরবর্তী সময়ে উপন্যাসে মিসেস হাবার্ডের চরিত্র গঠন করেন। [৮]
১৯৩৪ সালের ১১ জানুয়ারি, টাইমস লিটারারি সাপ্লিমেন্ট-এ মার্ডার অন দি ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস কাহিনির সারসংক্ষেপ প্রকাশিত হয়। প্রসংশা স্বরূপ প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়েছিল, "ছোট ধূসর কোষগুলি আবারও আপাতদৃষ্টিতে দুরূহ রহস্যের সমাধান করতে সক্ষম হল। মিসেস ক্রিস্টি একটি অসম্ভব গল্পকে অত্যন্ত বাস্তবসম্মত করে তোলেন এবং তার পাঠকদের শেষ পর্যন্ত মুগ্ধ রাখেন ও অনুমানের খেলায় ব্যস্ত রাখেন।" [৯]
১৯৩৪ সালের ৪ মার্চ, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস বুক রিভিউ-তে আইজ্যাক অ্যান্ডারসন লিখেছিলেন, "মহান বেলজিয়ান গোয়েন্দার অনুমান শুধু ধূর্ততাপূর্ণ নয়; সেগুলো প্রায় অলৌকিক। যদিও হত্যার ষড়যন্ত্র ও তার সমাধান অবাস্তবতার সীমার কাছাকাছি, আগাথা ক্রিস্টি কৌশল করে এটিকে যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছেন। একজন রহস্যপ্রেমী পাঠকের আর কীই-বা চাওয়ার থাকতে পারে?" [১০]
১৯৩৪ সালের ১২ জানুয়ারী দ্য গার্ডিয়ানের এর এক সমালোচক মন্তব্য করেন যে, এই হত্যাকাণ্ড নিখুঁত হতো (অর্থাৎ এটি একটি নিখুঁত অপরাধ বলে বিবেচিত হতে পারত) যদি পোয়ারো ট্রেনে না থাকতেন এবং মিস ডেবেনহ্যাম ও কর্নেল আরবুথনটের কথোপকথন না শুনতেন—যা তিনি ট্রেনে ওঠার আগেই শুনেছিলেন। তবে, পোয়ারোর "ছোট ধূসর কোষগুলি" অসাধারণভাবে কাজ করেছে, এবং রহস্যের শেষ সমাধানটি তার নিজের কাছেও ঠিক ততটাই চমকপ্রদ ছিল, যতটা পাঠকদের জন্য। রহস্যটি চমৎকারভাবে গোপন রাখা হয়েছে এবং মিসেস ক্রিস্টি কাহিনিটি অতন্ত্য প্রশংসনীয় শৈলীতেই লিখেছেন।[১১]
রবার্ট বার্নার্ড এই উপন্যাসটিকে "রেলযাত্রার পটভূমিতে রচিত রহস্য কাহিনিগুলোর মধ্যে সেরা" বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, যুগোস্লাভিয়ার তুষারপাতের কারণে ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস আটকে যাওয়ার ঘটনাটি রহস্য উদঘাটনের জন্য আদর্শ এক দমবন্ধ পরিবেশ তৈরি করেছে। পাশাপাশি নানা দেশের নানা চরিত্রকে যুক্ত করার জন্যও গল্পে উপযুক্ত প্রেক্ষাপট প্রদান করা হয়েছে।
বার্নার্ড আরও বলেন, যে, "এই উপন্যাসে আমার প্রিয় সংলাপটি হল: পুওর ক্রিয়েচার, সী ইজ আ সুইডিশ (বেচারা, সে একজন সুইডিশ)। সিরিলিক লিপির চতুর ব্যবহারের মাধ্যমে এখানে এক দারুণ ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এই গল্পের রহস্য সমাধান প্রক্রিয়া হয়তো মাননীয় রেমন্ড চ্যান্ডলারের অসন্তোষের কারন হয়েছে,তবে, যারা গোয়েন্দা কাহিনিকে বাস্তব জীবনের অপরাধের প্রতিচ্ছবি হিসেবে না দেখে কল্পনার নিখুঁত রূপ হিসেবে উপভোগ করেন, তাদের জন্য এটি কোনো সমস্যা নয়।" [১২]
বার্নার্ড বইটির পর্যালোচনা করার সময় চ্যান্ডলারের উল্লেখ করেছেন কারণ তিনি তার প্রবন্ধ, দ্য সিম্পল আর্ট অফ মার্ডারে ক্রিস্টির সমালোচনা করেছিলেন।
এইচ. আর. এফ. কিটিং তার "১০০টি সেরা অপরাধ ও রহস্য উপন্যাস" তালিকায় এই বইটিকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। [১৩] ১৯৯৫ সালে, উপন্যাসটি আমেরিকার রহস্য লেখকদের সর্বকালের সেরা ১০০ রহস্য উপন্যাসের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। [১৪] ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে, উপন্যাসটি এন্টারটেইনমেন্ট উইকলিতে ক্রিস্টির সেরা উপন্যাস -এর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। [১৫]
মাইকেল বেকওয়েলের উদ্যোগে বিবিসি রেডিও ৪ -এর পক্ষ থেকে মার্ডার অন দি ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস গল্পের একটি পাঁচ পর্বের ধারাভাষ্য রূপান্তর প্রস্তুত করা হয়েছিল। এই রেডিও ধারাভাষ্য রূপান্তরনে জন মফ্যাট পোয়ারোর চরিত্রে কন্ঠদান করেছিলেন। এনিড উইলিয়ামস এই ধারাভাষ্য রূপান্তরনের পরিচালনা করেন এবং মূলত ১৯৯২ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৩ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত এই রেডিও অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হয়। এই রেডিও উপস্থাপনার অন্যান্য কন্ঠ শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন—আন্দ্রে মারান (বাউক চরিত্রে), জস অ্যাকল্যান্ড (র্যাচেট/ক্যাসেট্টি চরিত্রে), সিলভিয়া সিমস (মিসেস হাবার্ড চরিত্রে), সিয়ান ফিলিপস (প্রিন্সেস ড্রাগোমিরফ চরিত্রে), ফ্রান্সেসকা অ্যানিস (মেরি ডেবেনহ্যাম চরিত্রে) এবং পিটার পলিকার্পো (ডক্টর কনস্টানটাইন চরিত্রে)।
২০১৭ সালে, অডিবল নামক অনলাইন সম্প্রচার পরিষেবা আরেকটি এই গল্পের আরেকটি রেডিও রূপান্তর প্রকাশ করে, যেখানে টম কন্টি পোয়ারোর কণ্ঠস্বর প্রদান করেন। অন্যান্য কণ্ঠশিল্পীদের মধ্যে ছিলেন—সোফি ওকোনেডো (মেরি ডেবেনহ্যাম চরিত্রে), এডি মার্সান (র্যাচেট/ক্যাসেট্টি চরিত্রে) এবং আর্ট মালিক (বর্ণনাকারী হিসেবে)। [১৬]
১৯৬৬ সালে সোভিয়েতে এই গল্পের আরেকটি রেডিও নাটক সম্প্রচারিত হয়। এতে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে ছিলেন—ভেসেভোলোদ ইয়াকুত (পোয়ারো চরিত্রে), রোস্টিস্লাভ প্লায়াট (কর্নেল আরবুথনট চরিত্রে), মারিয়া বাবানোভা (হাবার্ড চরিত্রে), ওলেগ ইয়েফ্রেমভ (হেক্টর ম্যাককুইন চরিত্রে), লিওনিড কানেভস্কি (আন্তোনিও ফসকারেলি চরিত্রে), অ্যাঞ্জেলিনা স্টেপানোভা (প্রিন্সেস ড্রাগোমিরফ চরিত্রে) এবং আলেকজান্ডার লাজারেভ (হার্ডম্যান চরিত্রে)। [১৭]
১৯৭৪ সালে সিডনি লুমেটের পরিচালনায় এবং জন ব্র্যাবোর্ন এবং রিচার্ড বি. গুডউইন প্রযোজনায় মার্ডার অন দি ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস উপন্যাসটিঅর একটি চলচ্চিত্র রূপান্তরন হয় যেটি সমালোচকদের প্রভূত প্রশংসা অর্জন করে এবং বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়। ছবিতে পোয়ারোর চরিত্রে অভিনয় করেন অ্যালবার্ট ফিনি, সিগনর বিয়ানচির চরিত্রে মার্টিন বালসাম, ডক্টর কনস্টানটাইনের চরিত্রে জর্জ কুলরিস এবং র্যাচেট/ক্যাসেটির চরিত্রে রিচার্ড উইডমার্ক। বাকি চরিত্রাভিনেতাদের মধ্যে ছিলেন শন কনারি (আরবুথনট), লরেন ব্যাকল (মিসেস হাবার্ড), অ্যান্থনি পারকিন্স (ম্যাককুইন), জন গিলগুড (বেডোস), মাইকেল ইয়র্ক (কাউন্ট আন্দ্রেনি), জিন-পিয়ের ক্যাসেল (পিয়ের মিশেল), জ্যাকলিন বিসেট (কাউন্টেস আন্দ্রেনি), ওয়েন্ডি হিলার (প্রিন্সেস ড্রাগোমিরফ), ভেনেসা রেডগ্রেভ (মেরি ডেবেনহ্যাম), র্যাচেল রবার্টস (হিল্ডেগার্ড শ্মিট), কলিন ব্লেকলি (হার্ডম্যান), ডেনিস কুইলি (ফসকারেলি) এবং ইনগ্রিড বার্গম্যান (গ্রেটা ওলসন)। ইনগ্রিড বার্গম্যান ১৯৭৪ সালে এই চরিত্রের জন্য সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রীর একাডেমি পুরস্কার জিতেছিলেন।
মূল গল্প থেকে চলচ্চিত্রে সামান্য কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছিল: মেরি ডেবেনহ্যাম, ডেইজির পরিচালিকার পরিবর্তে আর্মস্ট্রংদের সেক্রেটারি হিসেবে দেখানো হয়, মাস্টারম্যানের নাম পরিবর্তন করে বেডোয়েস রাখা হয়, মৃত দাসীর নাম সুজানের পরিবর্তে পাউলেট করা হয়, হেলেনা গোল্ডেনবার্গকে হেলেনা গ্রুনওয়াল্ড করা হয় (যার জার্মান অর্থ "গ্রিনউড"), আন্তোনিও ফসকারেলির নাম পরিবর্তন করে জিনো ফসকারেলি করা হয়, ক্যারোলিন মার্থা হাবার্ডের নাম পরিবর্তন করে হ্যারিয়েট বেলিন্ডা হাবার্ড করা হয় এবং ট্রেন কোম্পানির বেলজিয়ান পরিচালক, মসিউর বাউকের নাম এবং দেশীয়তা পরিবর্তন করে ইতালীয় পরিচালক, সিগনোর বিয়ানচি করা হয়।
১৬ জুন ২০১৫ তারিখে, টোয়েন্টিএথ সেঞ্চুরী ফক্সের পক্ষ থেকে গল্পটির আরেকটি চলচ্চিত্র রূপান্তর তৈরি করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তারা কেনেথ ব্রানাঘকে চলচ্চিত্রের পরিচালনা ও পোয়ারোর চরিত্রে অভিনয়ের জন্য নিয়োগ করেন। [১৮] সিনেমাটি ২০১৭ সালের ৩ রা নভেম্বর তারিখে মুক্তি পায় [১৯] স্টুডিও একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বেশিরভাগ আসন্ন মার্ডার অন দি ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস সিনেমায় নির্বাচিত মূল অভিনয়শিল্পীদের নাম ঘোষণা করে। র্যাচেট চরিত্রে জনি ডেপ, মিসেস হাবার্ড চরিত্রে মিশেল ফাইফার, পিলার এস্ট্রাভাডোস চরিত্রে(গ্রেটা ওলসনের, হারকিউল পোয়ারোর ক্রিসমাস উপন্যাসের একটি চরিত্রের নাম থেকে অনুপ্রাণিত) পেনেলোপ ক্রুজ,[২০] প্রিন্সেস ড্রাগোমিরফ চরিত্রে জুডি ডেঞ্চ, মাস্টারম্যান চরিত্রে ডেরেক জ্যাকোবি, ডক্টর আরবুথনট চরিত্রে লেসলি ওডম জুনিয়র, মেরি ডেবেনহ্যাম চরিত্রে ডেইজি রিডলি, কাউন্টেস আন্দ্রেনি চরিত্রে লুসি বয়ন্টন, মন্সিয়ের বাউক চরিত্রে টম বেটম্যান,[২১] বিনিয়ামিনো মার্কেজের চরিত্রে ম্যানুয়েল গার্সিয়া-রুলফো (আন্তোনিও ফসকারেলির কিউবান সংস্করণ),[২২] হেক্টর ম্যাককুইন চরিত্রে জোশ গ্যাড,[২৩] পিয়েরে মিশেল চরিত্রে মারওয়ান কেনজারি,[২৪] কাউন্ট আন্দ্রেনি চরিত্রে সের্গেই পোলুনিন,[২৫][২৬] সাইরাস হার্ডম্যানের চরিত্রে উইলেম ড্যাফো,[২৭] এবং হিলডেগার্ড শ্মিটের চরিত্রে অলিভিয়া কোলম্যান । [২৮] কিছু চরিত্র সংযুক্ত ও পরিবর্তিত করা হয়েছিল: কর্নেল আরবুথনটের চরিত্রটি ডক্টর কনস্টানটাইন চরিত্রের সাথে একীভূত করে ডক্টর আরবুথনট তৈরি করা হয়, যিনি একজন দূরপাল্লার লক্ষ্যভেদী বন্দুকবাজ(স্নাইপার) ছিলেন এবং যুদ্ধে কর্নেল আর্মস্ট্রংয়ের অধীনে কাজ করেছিলেন। আর্মস্ট্রং তার মেডিকেল স্কুলের খরচ বহন করেছিলেন। ম্যাককুইনের বাবাকে আর্মস্ট্রং পরিবারের আইনজীবীর পরিবর্তে মামলার একজন প্রসিকিউটর হিসেবে দেখানো হয়, যার ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যায় দাসী সুজানের বিরুদ্ধে মামলা করার পর।
মসিউর বাউকের চরিত্রেও পরিবর্তন আনা হয়; তিনি ট্রেন কোম্পানির পরিচালক থেকে পরিচালকের ভাগ্নে হিসেবে উপস্থাপিত হন। ছবিতে পোয়ারোর সাথে আর্মস্ট্রং অপহরণের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক দেখানো হয়—সোনিয়ার মৃত্যুর আগে, জন আর্মস্ট্রং সাহায্যের জন্য পোয়ারোকে একটি চিঠি লিখেছিলেন।
উপন্যাসের কাহিনীর সাথে একটি বড় পার্থক্য হলো, অপহরণটি লং আইল্যান্ডে নয় বরং নিউ জার্সিতে দেখানো হয়, যেখানে বাস্তবে লিন্ডবার্গ অপহরণ হয়েছিল। সুজান মিশেল পিয়েরে মিশেলের মেয়ে থেকে তার বোনে রূপান্তরিত করা হয়। ছবির একটি অংশে সাইরাস হার্ডম্যান নিজেকে গেরহার্ড হার্ডম্যান নামে একজন অস্ট্রিয়ান বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচয় দেন। চলচ্চিতের শেষ দৃশ্যে আসন্ন সিনেমা "ডেথ অন দ্য নাইল" (যা অগাথা ক্রিস্টীর সমনামের আরেকটি গোয়েন্দা উপন্যাস থেকে চিত্রিত) চলচ্চিত্রকে এই চলচ্চিত্রের একটি সরাসরি দ্বিতীয় অংশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়।
১৯৫৫ সালে পশ্চিম জার্মান টেলিভিশন ধারাবাহিক ডাই গ্যালারি ডের গ্রোসেন ডিটেকটিভের একটি পর্ব মার্ডার অন দি ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস উপন্যাসটির উপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়। হেইনি গোবেল পোয়ারোর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।
২০০১ সালে সিবিএস -এ মার্ডার অন দি ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসের একটি সম্পূর্ণ আধুনিকীকরণকৃত এবং স্বল্প গ্রহণযোগ্য টিভি সংস্করণ উপস্থাপন করা হয়েছিল। এখানে অভিনেতা আলফ্রেড মোলিনা পোয়ারো চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন । এই সংস্করণে মিসেস হাবার্ডের চরিত্রে মেরেডিথ ব্যাক্সটার এবং সেনোরা আলভারাডোর চরিত্রে লেসলি ক্যারন অভিনয় করেছিলেন (রাজকুমারী ড্রাগোমিরফের উপর ভিত্তি করে এবং একজন দক্ষিণ আমেরিকান স্বৈরশাসকের বিধবা চরিত্রে চিত্রিত)। মূল গল্পে ক্রিস্টির বর্ননা থেকে সামান্য ভিন্নতা রেখে এই সংস্করনে গোয়েন্দা পোয়ারোকে উল্লেখযোগ্যভাবে কম বয়সী এবং কম অভিনব হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। তার একটি প্রেমের সম্পর্কের আভাস এই সংস্করণে দেওয়া হয়েছে। গল্পটি সমসাময়িক প্রেক্ষাপটের উপযোগী করা হয়েছে। মূল গল্পের চার চরিত্র হিলডেগার্ড শ্মিট, সাইরাস হার্ডম্যান, এডওয়ার্ড মাস্টারম্যান এবং গ্রেটা ওহলসন যারা হত্যার সন্দেহভাজনদের মধ্যে ছিলেন, তাদেরকে এই টিভি সংস্করন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ডঃ কনস্টানটাইনও এই সংস্করণে অনুপস্থিত।
২০১০ সালে আইটিভি স্টুডিও এবং ডব্লিউজিবিএইচ-টিভির যৌথ প্রযোজনায় আগাথা ক্রিস্টি'স পোইরোট নামের একটি টেলিভিশন ধারাবাহিক নির্মিত হয় যার একটি পর্ব মার্ডার অন দি ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস গল্পের উপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছিল। এই পর্বের দৈর্ঘ্য ছিল ৯০ মিনিট। স্টুয়ার্ট হারকোর্ট এই টিভি রূপান্তরনটির পরিচালনা করেছিলেন এবং ডেভিড সাচেট হারকিউল পোয়ারোর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই পর্বের মূল সম্প্রচারের তারিখ ছিল ২০১০ সালের ১১ জুলাই এবং এটি যুক্তরাজ্যে ২০১০ সালের বড়দিনের দিনে প্রচারিত হয়েছিল।
এই টিভি সংস্করণে প্রিন্সেস ড্রাগোমিরফের চরিত্রে অভিনয় করেন ডেম আইলিন অ্যাটকিন্স। মাস্টারম্যানের চরিত্রে হিউ বোনেভিল, মেরি ডেবেনহ্যামের চরিত্রে জেসিকা চ্যাস্টেইন, মিসেস হাবার্ডের চরিত্রে বারবারা হার্শে, র্যাচেটের চরিত্রে টবি জোন্স এবং কর্নেল আরবুথনটের চরিত্রে ডেভিড মরিসে অভিনয় করেন।
সাইরাস হার্ডম্যান চরিত্রটি (প্রাক্তন আমেরিকান পুলিশ অফিসার যিনি ব্যক্তিগত গোয়েন্দা হয়েছিলেন) মূলত চালক ফসকারেলির (যারা মৃত দাসীর প্রেমিক ছিলেন) সাথে একীভূত করে দেওয়া হয় এবং ডঃ কনস্টানটাইন (যিনি উপন্যাসে খুনের সাথে সম্পর্কিত নন) একজন সহ-ষড়যন্ত্রকারী হয়ে ওঠেন এবং তাকে এই সংস্করণে আমেরিকায় আর্মস্ট্রং পরিবারের ডাক্তার হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে।
২০১৭ সালের চলচ্চিত্রের মতো এই টিভি সংস্করনে ম্যাককুইনের বাবা আর্মস্ট্রংদের আইনজীবীর পরিবর্তে প্রসিকিউটর ছিলেন। ক্যাসেটিকে মুক্ত কুরার জন্য তাকে হুমকি দেওয়া হয় এবং এরপর তার ভবিষ্যত কর্মজীবন ধ্বংস হয়ে যায়। এই সংস্করনে র্যাচেটের হত্যাকাণ্ডের বর্ননা উপন্যাসের তুলনায় অনেক বেশি হিংসক। খুনিরা তার কেবিনে জড়ো হয় এবং তাকে নেশাগ্রস্ত কিন্তু জাগ্রত অবস্থায় রেখে একে একে ছুরিকাঘাত করে। শেষের দিকে জনতার বিচারের ভয়াবহতা এবং পোয়ারোর ধর্মীয় বিশ্বাস এবং আইনের প্রতি অঙ্গীকারের পরিপ্রেক্ষিতে যে নৈতিক দ্বন্দ্বের সূচনা হয় তার উপর আলোকপাত করা হয় এবং তিনি যুগোস্লাভিয়ান পুলিশকে হত্যার সম্পূর্ণ রহস্য না বলার সিদ্ধান্ত নেন।
ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসের দৃশ্যের চিত্রগ্রহন করা হয় লন্ডনের পাইনউড স্টুডিওর অন্তর্ভাগে। অন্যান্য স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে ফ্রিম্যাসন হল, নেনে ভ্যালি রেলওয়ে এবং মাল্টার একটি রাস্তা (ইস্তাম্বুলের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য চিত্রায়িত)। [২৯]
২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে ফুজি টেলিভিশনে, মার্ডার অন দি ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসের উপর ভিত্তি করে নির্মিত একটি জাপানি রহস্য রোমাঞ্চ অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হয়েছিল। এই টেলিভিশন সংস্করণটি দুই রাত ধরে দেখানো হয়েছিল। [৩০] এই টিভি অনুষ্ঠানটির শিরোনাম ছিল ওরিয়েন্ট কিউকো সাতসুজিন জিকেন। এতে নিনোমিয়া কাজুনারি, মাতসুশিমা নানাকো, তামাকি হিরোশি, কিচিসে মিচিকো, নিশিদা তোশিউকি এবং সাওয়ামুরা ইক্কি সহ বেশ কয়েকজন বিখ্যাত অভিনেতা অভিনয় করেছিলেন। অভিনেতা নোমুরা মানসাই গল্পের মূল চরিত্র, সুগুরো তাকেরুর চরিত্রে অভিনয় করেন—যাকে হারকিউল পোয়ারোের অনুকরণে তৈরি করা হয়েছিল ।
গল্পের প্রথম পর্বের সম্প্রচারণে, মূল কাহিনির সাথে সামঞ্জস্য রেখে গল্প উপস্থাপন করা হয়েছিল, তবে এর প্রেক্ষাপট স্থাপন করা হয় ১৯৩৩ সালের জাপানে । এই সংস্করণে, ওরিয়েন্ট কিউকো ট্রেনটি পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর শিমোনোসেকি থেকে টোকিওর দিকে যাচ্ছিল, কিন্তু গিফুর সেকিগাহারার কাছে একটি ছোট তুষারধসের কারণে ট্রেনটি থেমে যায়।
দ্বিতীয় পর্বের গল্পটি একটি মৌলিক গল্প ছিল।
চেকমেট (মিন গুও দা ঝেন তান) নামের চীনা ধারাবাহিকের প্রথম চারটি পর্ব এই গল্পের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল। অভিনেতা হু ইয়িতিয়ান সি গল্পের মুখ্য চরিত্র তু ইয়ান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ইয়ান পিকিংয়ের একজন তরুণ আইনজীবী। নিজের নীতির প্রতি অটল থাকার কারণে তাকে পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। পরে তিনি গোয়েন্দা হওয়ার লক্ষ্যে হারবিনে আসেন, যেখানে তার স্পষ্টবাদী ও ধনী বন্ধু লুওর সাথে দেখা হয়, যার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ঝাং ইউনলং।[৩১]
আমেরিকান নাট্যকার কেন লুডভিগ উপন্যাসটিকে মার্ডার অন দি ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস নামে একটি নাটকে রূপান্তর করেন, যা ১৪ মার্চ ২০১৭ তারিখে নিউ জার্সির প্রিন্সটনের ম্যাককার্টার নাট্যমঞ্চে প্রথম মঞ্চস্থ হয় করা। নাটকটি পরিচালনা করেছিলেন এমিলি মান। অভিনেতা অ্যালান কর্ডুনার হারকিউল পোয়ারোের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। [৩২]
২০২৪ সালে, ওল্ড গ্লোব নাট্যমঞ্চে আরেকটি নাট্য রূপান্তর অনুষ্ঠিত হয়। তুষারপাতের দৃশ্যপট, ট্রেনের বাইরের অংশ, ট্রেনের ভেতরের খাওয়ার জায়গা, ট্রেনের ভেতরের কামরা ইত্যাদি বিভিন্ন পরিবর্তনশীল দৃশ্যাবলী দেখানোর জন্য মঞ্চের ঘূর্ণায়মান প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহৃত হয়।[৩৩]
২০২৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তারিখে, বব আল-গ্রিন মার্ডার অন দি ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসে -কে একপ্টি গ্রাফিক উপন্যাস বা কমিক্সে রূপান্তরিত করেন যা উইলিয়াম মোরো পেপারব্যাকস দ্বারা প্রকাশিত হয়েছিল। [৩৪]
১৯৮৫ সালে ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস নামে উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে একটি ছক ক্রীড়া প্রকাশিত হয়েছিল।
পয়েন্ট অ্যান্ড ক্লিক নামক কম্পিউটার গেম নির্মাতা সংস্থা মার্ডার অন দি ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসের উপর ভিত্তি করে একটি কম্পিউটার গেম নিরমান করে যার নাম ছিল,আগাথা ক্রিস্টি: মার্ডার অন দি ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস। ২০০৬ সালের নভেম্বরে এই কম্পিউটার গেমটি মুক্তি পায়। আগাথা ক্রিস্টির মূল গল্পের উপর ভিত্তি করে এই কম্পিউটার গেমটির সম্প্রসারন হয়েছিল, যার মুখ্য কেন্দ্রবিন্দু ছিল অ্যান্টোইনেট মার্সো নামক চরিত্র। গেমটিতে হারকিউল পোইরোর চরিত্রের জন্য ডেভিড সুচেতের কণ্ঠস্বর ব্যবহার করা হয়েছিল।
২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর তারিখে, মাইক্রোইডস আগাথা ক্রিস্টি - মার্ডার অন দি ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস নামে একটি নতুন ভিডিও গেম প্রকাশ করেন। এই গেমে উপন্যাসের কাহিনীকে রূপান্তরিত এবং আধুনিকীকরণ করে, প্রধান চরিত্রগুলির আসল নাম ব্যবহার করা হয়েছে। খেলোয়াড়রা পর্যায়ক্রমে পোয়ারো এবং জোয়ানা লক নামক আমেরিকান গোয়েন্দার দ্বৈত ভূমিকা পালন করে। এই গেমটি কম্পিউটার, মোবাইল, প্লেস্টেশন, এক্সবক্স এবং নিন্টেন্ডো সুইচ কনসোলে উপলব্ধ। [৩৫]
যুক্তরাষ্ট্রে গল্পটির প্রথম প্রকৃত প্রকাশনার সময়কাল ছিল ১৯৩৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ নভেম্বর (খণ্ড ২০৬, সংখ্যা ১৪ থেকে ১৯)। স্যাটারডে ইভিনিং পোস্টে ছয়টি কিস্তিতে এটি প্রকাশিত হয় যার শিরোনাম ছিল মার্ডার ইন দ্য ক্যালাইস কোচ এবং যার চিত্রায়ণের কাজ করেছিলেন উইলিয়াম সি. হুপল। [৩৬]
বই প্রকাশের পর যুক্তরাজ্যে ধারাবাহিকভাবে ১৯৩৪ সালের মার্চ, এপ্রিল এবং মে মাসে গ্র্যান্ড ম্যাগাজিনে তিনটি কিস্তিতে এই গল্পের আরেকটি সংস্করণ প্রকাশিত হয় (সংখ্যা ৩৪৯ থেকে ৩৫১)। এই সংস্করণটি মূল বইয়ের সংস্করণ থেকে সংক্ষিপ্ত করা হয়েছিল (পাঠ্যের প্রায় ২৫% হারিয়েছে), এই সংস্করণে অধ্যায় বিভাজন ছিলনা এবং রাশিয়ান রাজকন্যার নামকরণ ড্রাগোমিরফ থেকে পরিবর্তন করে ড্রাগিলফ রাখা হয়। যুক্তরাজ্যের প্রথম সংস্করণ "দ্য লিস্টারডেল মিস্ট্রি", "হোয়াই ডিডন্ট দে আস্ক ইভান্স" এবং "পার্কার পাইন ইনভেস্টিগেটস" -এর পিছনের পৃষ্ঠাগুলিতে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনগুলিতে দাবি করা হয়েছে যে "মার্ডার অন দি ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস" ক্রিস্টির এখন পর্যন্ত সর্বাধিক বিক্রিত বই এবং কলিন্স ক্রাইম ক্লাব শৃংখলার সর্বাধিক বিক্রিত বই।
|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)