মালয়ালম লিপি | |
---|---|
লিপির ধরন | |
সময়কাল | আনুঃ ৮৩০ – বর্তমান[১][২] |
লেখার দিক | বাম-থেকে-ডান |
সম্পর্কিত লিপি | |
উদ্ভবের পদ্ধতি | প্রাক-সিনেটিক লিপি
|
ভগিনী পদ্ধতি | সিংহলি লিপি টিগালারি লিপি |
আইএসও ১৫৯২৪ | |
আইএসও ১৫৯২৪ | Mlym, 347 , মালয়ালম |
ইউনিকোড | |
ইউনিকোড উপনাম | মালয়ালম |
U+0D00–U+0D7F | |
ভারতে সরকারিভাবে ব্যবহৃত লিখন পদ্ধতি |
---|
বিষয়শ্রেণী |
ব্রাহ্মী থেকে প্রাপ্ত লিপি |
আরবি থেকে প্রাপ্ত লিপি |
বর্ণমালা |
সম্পর্কিত |
দাপ্তরিক লিপি ভারতের লিখন পদ্ধতি ভারতের ভাষা |
মালয়ালম লিপি (Malayāḷalipi; আধ্বব: [mələjɑːɭə lɪpɪ](শুনুন)/ মালয়ালম: മലയാളലിപി) ব্রাহ্মী লিপি পরিবারের একটি সদস্য এবং সাধারণত এটি মালয়ালম ভাষা লিখতে ব্যবহৃত হয়, যা কেরালা, ভারত-এর মূল ভাষা ও সারা বিশ্ব জুড়ে প্রায় সাড়ে তিন কোটি লোকের দ্বারা বলা হয়।[৩] মালয়ালম লিপি কেরালাতে সংস্কৃত পাঠ্য লিখতেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য অনেক ভারতীয় লিপির মতন এটিও একটি শব্দীয় বর্ণমালা লিপি, আংশিক বর্ণানুক্রমিক ও আংশিক শব্দাংশ-ভিত্তিক। আধুনিক মালয়ালম বর্ণমালায় ১৩টি স্বরবর্ণ, ৩৬টি ব্যঞ্জনবর্ণ ও সামান্য কিছু চিহ্ন আছে। মালয়ালম লিপিটি একটি ভাট্টেলুত্তু বর্ণমালা যা-তে গ্রন্থ লিপি থেকে কিছু চিহ্ন সম্প্রসারিত করা হয়েছে ইন্দো আর্য ঋণকৃত শব্দসমূহকে চিত্রিত করতে।[৪] এই লিপিটি কিছু সংখ্যালঘু ভাষা লিখতেও ব্যবহৃত হয় যেমন - পানীয়া, বেট্টা কুরুম্বা ও রাভুলা।[৫] ঐতিহাসিকভাবে মালয়ালম ভাষা স্বয়ং বহুবিধ লিপিতে লেখা হয়েছিল।
প্রাথমিক অক্ষরগুলি নিম্ন-উল্লেখিত ভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যায়:
একটি স্বাধীন স্বরবর্ণ সেই শব্দের প্রথম অক্ষর হিসাবে ব্যবহৃত হয় যেই শব্দটি একটি স্বরধ্বনি দিয়ে শুরু হয়। একটি ব্যঞ্জনবর্ণ, এমন নামকরণের সত্ত্বেও, কোনও শুদ্ধ ব্যঞ্জনধ্বনিকে বোঝায় না, পুর্বনির্ধারিত ভাবে দেখায় একটি ব্যঞ্জনধ্বনি + হ্রস্ব স্বরধ্বনি /a/ (অ)। উদাহরণস্বরূপ, ക হচ্ছে মালয়ালম বর্ণমালার প্রথম ব্যঞ্জনবর্ণ, যা দেখায় /ka/ (ক্+অ), শুধু /k/ (ক্) নয়। স্বরচিহ্ন হচ্ছে একটি বিশেষ চিহ্ন যা ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে যুক্ত করা হয় এই দেখাতে যে ব্যঞ্জনধ্বনিটি /a/ ছাড়া অন্য কোনও স্বরধ্বনির সাহায্যে উচ্চারিত হচ্ছে। যদি ব্যঞ্জনবর্ণের অনুসরণকারী স্বরধ্বনিটি /a/ হয় তাহলে কোনও স্বরচিহ্নের প্রয়োজন নেই। /a/ ধ্বনিটি, যা পূর্বনির্ধারিত ভাবে একটি ব্যঞ্জনধ্বনিকে অনুসরণ করে তাকে সহজাত স্বরধ্বনি বলে। মালয়ালমে এর ধ্বনিমূলক মূল্য হচ্ছে অগোলাকৃত 'ɐ',[৬] অথবা 'ə' একটি অ্যালোফোন হিসাবে। একটি বিশুদ্ধ ব্যঞ্জনধ্বনি যা কোনও স্বরধ্বনি দ্বারা অনুসরণ করা হচ্ছে না এমন দেখাতে একটি বিশেষ বৈশিষ্টসূচক চিহ্ন বিরাম (হসন্ত চিহ্ন) ব্যবহার করা হয়। নিম্নোক্ত উদাহরণগুলি দেখায় কোথায় ব্যঞ্জনবর্ণটি বৈশিষ্টসূচক চিহ্ন ছাড়া বা নিয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে।
মালয়ালম বর্ণমালা একই মাপের অক্ষরের তৈরী, অর্থাৎ কোনও বড় হাতের-ছোট হাতের অক্ষরের বিভাজন নেই। এটি বামদিক থেকে ডানদিকে লেখা হয়, কিন্তু বেশ কয়েকটি স্বরচিহ্ন সেই অক্ষরের বামদিকে (অর্থাৎ উলটো দিকে) যুক্ত হয় যেই অক্ষরটিকে আসলে স্বরবর্ণটি দ্বারা অনুসরণ করা হচ্ছে। একটি শব্দ, കേരളം (কেরলম্)-এ স্বরচিহ্ন േ (ে)-কে চাক্ষুষরূপে সবচেয়ে বামদিকে দেখা যাচ্ছে, যদিও স্বরচিহ্ন 'এ' আসলে ব্যঞ্জনবর্ণ 'ক'কে অনুসরণ করছে।
মালয়ালম প্রথমে ভাট্টেলুত্তু লিপিতে লেখা হয়েছিল, যা তামিল-এর প্রাচীন লিপি। তবে আধুনিক মালয়ালম বর্ণমালার উৎস গ্রন্থ লিপি, যা আসলে সংস্কৃত লিখতে ব্যবহৃত হত। ভাট্টেলুত্তু ও গ্রন্থ, দুইটি লিপিই ব্রাহ্মি লিপি থেকে তৈরী হয়েছে, কিন্তু স্বাধীনভাবে।
ভাট্টেলুত্তু (মালয়ালম: വട്ടെഴുത്ത്, Vaṭṭeḻuttŭ বা ভাট্টেলুত্তু, “গোলাকার লিখন”) একটি লিপি যা তামিল-ব্রাহ্মি থেকে উদ্ভূত এবং একসময় এটি বর্তমান তামিলনাড়ু ও কেরালার দক্ষিণ অংশে ব্যাপক ব্যবহৃত ছিল। মালয়ালম প্রথমে ভাট্টেলুত্তুতে লেখা হয়েছিল। রাজশেখর বর্মন কর্তৃক প্রেরিত ভাজ়হাপল্লি শিলালিপি হচ্ছে প্রাচীনতম উদাহরণ; আনুমানিক ৮৩০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে।[১][২] তামিল দেশে ১৫তম শতাব্দীর মধ্যে আধুনিক তামিল লিপি ভাট্টেলুত্তু লিপিকে স্থানচ্যুত করে দিয়েছিল, কিন্তু মালাবার এলাকায় ভাট্টেলুত্তুর সাধারণ ব্যবহার চলতে থাকল ১৭তম,[৭] অথবা ১৮তম শতাব্দী অবধি।[৮] এই লিপির একটি বৈকল্পিক সংস্করণ, কোলেজ়ুট্টু, ১৯তম শতাব্দী অবধি ব্যবহৃত হতে থাকল মূলত মালাবার এলাকার কোচি এলাকায়।[৯] আরেকটি বৈকল্পিক রূপ, মালয়ানমা, তিরুবনন্তপুরম-এর দক্ষিণে ব্যবহৃত হতে থাকল।[৯]
আর্থার কোক বার্নেলের মতে, গ্রন্থ বর্ণমালার একটি ধরন, যা আসলে চোল সাম্রাজ্যে ব্যবহৃত হত, ৮ম বা ৯ম শতাব্দীর মধ্যে ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে আমদানি করা হয়েছিল, যা সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত করা হয়েছিল এই বিচ্ছিন্ন জায়গায়, যেখানে পূর্ব উপকূলের সাথে যোগাযোগ অতি-সীমিত ছিল।[১০] এটি পরে টিগালারি-মালয়ালম লিপিতে উদ্ভূত হল যা ব্যবহার করা হত মালয়ালী, হাভ্যাকা ব্রাহ্মণ ও টুলু ব্রাহ্মণদের দ্বারা, কিন্তু আসলে শুধু সংস্কৃত লিখতেই এটি ব্যবহৃত হত। এই লিপি দুইটি লিপিতে বিভাজিত হয়ে গেল: টিগালারি এবং মালয়ালম। মালয়ালম লিপিকে সম্প্রসারিত ও পরিবর্তিত করা হয়েছিল স্বদেশীয় ভাষা মালয়ালম লিখতে, কিন্তু টিগালারি শুধু সংস্কৃত লেখার জন্যই ব্যবহার করা হতে থাকল।[১০][১১] মালাবারে এই লিপিকে বলা হত 'আর্য-এলেত্তু' (ആര്യ എഴുത്ത്),[১২] অর্থাৎ আর্য লিখন (সংস্কৃত একটি ইন্দো-আর্য ভাষা কিন্তু মালয়ালম একটি দ্রাবিড় ভাষা)।
ভাট্টেলুত্তু সাধারণ ব্যবহারে ছিল, কিন্তু এটী সাহিত্যের জন্য উপযুক্ত ছিল না যেখানে প্রচুর সংস্কৃত শব্দ ছিল। তামিল-ব্রাহ্মির মত, এটিও আসলে তামিল লিখতে ব্যবহৃত হত, সুতরাং, এতে ঘোষধ্বনিযুক্ত ও উষ্ম-ব্যঞ্জনবর্ণ ছিল না যা সংস্কৃতে ব্যবহৃত হত কিন্তু তামিলে নয়। এই কারণে, ভাট্টেলেত্তু ও গ্রন্থ বর্ণমালাকে মাঝেমধ্যে মিশিয়ে দেওয়া হত, যেমন মণিপ্রভলম্-এ। মণিপ্রভলম্ সাহিত্যের সবচেয়ে পুরনো উদাহরণগুলির মধ্যে একটি হচ্ছে বৈশিকান্তন্ত্রম্ (വൈശികതന്ത്രം), আনুমানিক ১২তম শতকের,[১৩][১৪] যেখানে মালয়ালম লিপির প্রাচীনতম ধরন ব্যবহার করা হয়েছে, যা আনুমানিকভাবে ১৩তম শতকের প্রথমার্ধে বেশ কিছুটা শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে পড়েছিল।[১][৮]
থুঞ্চাত্থু এষুথাচান, আনুমানিক ১৭তম শতকের একজন কবি, ব্যবহার করেছিলেন আর্য-এলুত্তু তার প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্য-ভিত্তিক মালয়ালম কবিতার জন্য।[১০] কয়েকটি অক্ষর যেগুলি 'আর্য-এলেত্তু'তে নেই (ḷa, ḻa, ṟa) সেগুলির জন্য তিনি ভাট্টেলুত্তু ব্যবহার করলেন। তার রচনাবলীগুলি অভূতপূর্বভাবে এত বিখ্যাত হয়ে উঠতে লাগল যে লোকে তাকে মালয়ালম ভাষার জনক হিসাবে ডাকতে লাগল, যা মালয়ালম লেখার জন্য আর্য-এলেত্তু লিপির ব্যবহারেও উৎসাহ বাড়াল। যদিও, গ্রন্থতে e ও ē, এবং o ও ō-এর মধ্যে বিভাজন থাকল না, যেহেতু এটি সংস্কৃত লেখার জন্য একটি লিপি। আধুনিক মালয়ালম লিপি তৈরী করা হয়েছিল মধ্য-১৯ শতকের সময় যখন হার্মান গুন্ডার্ট নতুন স্বরচিহ্নগুলি তৈরী করেন তাদের বিভাজনের জন্য।[১০]
১৯তম শতাব্দীর মধ্যে, পুরনো লিপিগুলি যেমন কোলেজ়ুট্টু আর্য-এলেত্তু দ্বারা স্থানচ্যুত হয়ে পড়ল – যা এখন বর্তমান মালয়ালম লিপি। ইদানীং, এটি কেরালার মালয়ালী জনসংখ্যার ছাপাখানায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।[১৫]
মালয়ালম ও টিগালারি লিপি উভয় সহোদ পদ্ধতি এবং গ্রন্থ বর্ণমালা থেকে উদ্ভূত। উভয়ের একই গ্লিফিক ও লিখনবিধি বৈশিষ্ট আছে।
১৯৭১ সালে, কেরালা সরকার মালয়ালমের লিখনবিধি বদলায় শিক্ষা দফতরে একটি সরকারী নির্দেশ পাঠিয়ে।[১৬][১৭] মূল উদ্দেশ্য ছিল তৎকালীন মূদ্রণ ও টাইপরাইটিং প্রযুক্তির জন্য লিপিটি সহজতর করা, প্রয়োজনীয় গ্লিফ সংখ্যা কমানোর মাধ্যমে। ১৯৬৭ সালে, সরকার একটি কমিটি গঠন করে সুরানাদ কুঞ্জান পিল্লাইকে ভারপ্রাপ্তাধীন রেখে, যিনি মালয়ালম লেক্সিকন প্রকল্পের সম্পাদক ছিলেন। এর ফলে মালয়ালম মূদ্রণের জন্য প্রয়োজনীয় গ্লিফ ১০০০ থেকে কমে প্রায় ২৫০-তে নামল। উক্ত কমিটির সুপারিশ ১৯৬৯ সালে আরেকটি কমিটি দ্বারা সংশোধিত হয়েছিল।
সুপারিশটি পরে জানুয়ারী ১৯৭১ সালে বড় সংবাদপত্রগুলিতে গৃহীত হয়েছিল। সংস্কার করা লিপিটি চালু হল ১৫ই এপ্রিল ১৯৭১-এ (কেরালার নববর্ষে), একটি সরকারী আদেশ দ্বারা যা ২৩ মার্চ ১৯৭১ সালে মুক্তি পেয়েছিল।
ঐতিহ্যগত লিখনবিধিতে, প্রাথমিক শিক্ষায় ততদিন অবধি এই শেখানো হচ্ছিল যে, যে কোনও ব্যঞ্জনবর্ণ যা উ, ঊ বা ঋ স্বরচিহ্ন দ্বারা অনুসরণ করা হচ্ছে সেটি কে ব্যঞ্জনবর্ণ ও স্বরচিহ্নটির সমন্বয়ে তৈরী একটি জড়ানো অক্ষরের চিহ্ন দিয়ে দেখানো হবে। প্রত্যেকটি ব্যঞ্জনবর্ণের গ্লিফের স্বরচিহ্নটির সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়ার নিজস্ব রূপ আছে। এই অনিয়মটি সহজ করা হয়েছিল নতুন লিপিতে। সেই কারণে, একটি স্বরবর্ণ চিহ্ন বা ব্যঞ্জনবর্ণ চিহ্নর সর্বদা একটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন প্রতীক থাকবে যা মূল ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে গুলিয়ে যায় না।
উদাহরণ:
ঐতিহ্যগত লিখনবিধিতে, রেফ-কে অক্ষরটির উপর একটি বিন্দু যোগ করে দেখানো হত। তার বদলে, স্পষ্ট তুলনারহিত হওয়া চিল্লু র-এর ব্যবহার করা হবে।
বেশির ভাগ ব্যঞ্জনবর্ণ-ব্যঞ্জনবর্ণ লিখনবিধি, মূলত কম প্রচলিতগুলি যেগুলি সংস্কৃত থেকে উদ্ভাবিত শব্দগুলি লিখতে ব্যবহৃত হত, স্পষ্ট চন্দ্রক্কলা-যুক্ত অপ্রচলিত রূপে বিভক্ত করা হল। উদাহরণস্বরূপ:
র দ্বারা অনুসরণকৃত যেকোনও ব্যঞ্জনবর্ণ অথবা ব্যঞ্জনবর্ণ লিখনবিধিকে অক্ষরটির সঙ্গে যুক্ত একটি বক্র লেজ দিয়ে দেখানো হয়। নবগঠিত লিপিতে, এই ব্যঞ্জনচিহ্নটি তল থেকে অসংযুক্ত করা হবে ও বাম-বন্ধনীর অনুরূপ চিহ্নটি যুক্তবর্ণটির বাম দিকে দেখা যাবে।
বর্তমানে নবগঠিত লিখনবিধিটি, সাধারণভাবে পুতিয়া লিপি (মালয়ালম: പുതിയ ലിപി) বলা হয় এবং ঐতিহ্যগত বিধিটিকে পলয় লিপি (মালয়ালম: പഴയ ലിപി) বলা হয়।[১৮] এখন প্রায় সব মূদ্রণ মাধ্যম পুরোটাই নবগঠিত লিপি ব্যবহার করে। রাজ্য চালিত শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীদেরকে সংশোধিত মালয়ালম বর্ণমালারই পরিচয় দেয় সুতরাং পাঠ্যপুস্তকও সেইভাবেই মূদ্রিত। তবে, ডিজিটাল মাধ্যমগুলি ঐতিহ্যগত ও সংশোধিত দুইটি লিখনবিধিই প্রায় সমান মাপে ব্যবহার করে যেহেতু দুইটি লিখনবিধিরই ফন্ট সমানভাবে উপলধ্ব।
নিম্নোক্ত তালিকাগুলি দেখায় মালয়ালম বর্ণমালার স্বাধীন স্বরবর্ণ ও তাদের পরাধীন স্বর-চিহ্ন (বৈশিষ্টসূচক চিহ্ন), আইএসও ১৫৯১৯-এ রোমানিকরণ ও আন্তর্জাতিক ধ্বনিমূলক বর্ণমালা (আধ্বব)-এ বর্ণটির প্রতিলিপি।
হ্রস্ব স্বরধ্বনি | দীর্ঘ স্বরধ্বনি | |||||
---|---|---|---|---|---|---|
স্বাধীন | পরাধীন | স্বাধীন | পরাধীন | |||
স্বর-চিহ্ন | উদাহরণ | স্বর-চিহ্ন | উদাহরণ | |||
a | അ a বা অ
/a/ |
(নেই) | പ pa বা প
/pa/ |
ആ ā বা আ
/aː/ |
ാ | പാ pā বা পা
/paː/ |
i | ഇ i বা ই
/i/ |
ി | പി pi বা পি
/pi/ |
ഈ ī বা ঈ
/iː/ |
ീ | പീ pī বা পী
/piː/ |
u | ഉ u বা উ
/u/ |
ു | പു pu বা পু
/pu/ |
ഊ ū বা ঊ
/uː/ |
ൂ | പൂ pū বা পূ
/puː/ |
r̥ | ഋ r̥ বা ঋ
/rɨ/ |
ൃ | പൃ pr̥ বা পৃ
/prɨ/ |
ൠ r̥̄ বা ৠ
/rɨː/ |
ൄ | പൄ pr̥̄ বা পৄ
/prɨː/ |
l̥ | ഌ l̥ বা ঌ
/lɨ/ |
ൢ | പൢ pl̥ বা পৢ
/plɨ/ |
ൡ l̥̄ বা ৡ
/lɨː/ |
ൣ | പൣ pl̥̄ বা পৣ
/plɨː/ |
e | എ e বা এ
/e/ |
െ | പെ pe বা পে
/pe/ |
ഏ ē (দীর্ঘ এ)
/eː/ |
േ | പേ pē
/peː/ |
o | ഒ o বা ও
/o/ |
ൊ | പൊ po বা পো
/po/ |
ഓ ō (দীর্ঘ ও)
/oː/ |
ോ | പോ pō
/poː/ |
r̥, r̥̄, l̥, l̥̄ (ঋ, ৠ, ঌ, ৡ), যেগুলি সংস্কৃত শব্দ লিখতে ব্যবহৃত হত, সেগুলিকে স্বরধ্বনি হিসাবে ধরা হয়। এরা মালয়ালম ও ক্লাসিক্যাল সংস্কৃতে উচ্চারণানুযায়ী স্বরধ্বনি নয়, কিন্তু আসলে এরা ছিল (দেখুন প্রত্ন-ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা)। ৠ, ঌ, ৡ-এর অক্ষর ও চিহ্ন খুবই বিরল, এবং এদেরকে বর্তমান সংশোধিত লিখনবিধির অংশ হিসাবে ধরা হয় না।[১৯]
আ, ই, ঈ-এর স্বরচিহ্নগুলি সেই ব্যঞ্জনবর্ণের ডানদিকে যুক্ত হয় যেই ব্যঞ্জনবর্ণটি এদের সাহায্যে উচ্চারিত হচ্ছে। এ, দীর্ঘ এ, ঐ-এর স্বর-চিহ্নগুলি ব্যঞ্জনবর্ণের বামদিকে যুক্ত হয়। ও এবং দীর্ঘ ও-এর স্বরচিহ্নের দুইটি ভাগ: প্রথম অংশটি ব্যঞ্জনবর্ণের বামদিকে যুক্ত হয় ও দ্বিতীয় অংশটি সেই ব্যঞ্জনবর্ণেরই ডানদিকে যুক্ত হয়। সংশোধিত লিখনবিধিতে উ, ঊ, ঋ-এর স্বরচিহ্নটি সাধারণভাবে ব্যঞ্জনবর্ণটির ডানদিকে যুক্ত হয়, যদিও ঐতিহ্যগত লিখনবিধিতে এই স্বরচিহ্নগুলি মাঝেমধ্যেই ব্যঞ্জনবর্ণ-স্বরবর্ণ অক্ষর তৈরী করত।
স্বাধীন | পরাধীন | ||
---|---|---|---|
স্বরচিহ্ন | উদাহরণ | ||
ai | ഐ ai বা ঐ
/ai̯/ |
ൈ | പൈ pai বা পৈ
/pai̯/ |
au | ഔ au বা ঔ
/au̯/ |
ൌ(প্রাচীন) | പൌ pau বা পৌ
/pau̯/ |
ൗ(আধুনিক) | പൗ pau বা পৌ
/pau̯/ |
স্বরধ্বনির স্থিতিকাল লক্ষ্য করা জরুরি যেহেতু এটি ব্যবহার করা যাবে কিছু শব্দকে আলাদা করতে যেগুলি নতুবা এক ধরনের হবে। উদাহরণস্বরূপ, /kalam/ (কলম্)-এর অর্থ "মৃন্ময় পাত্র" কিন্তু /ka:lam/ (কালম্)-এর অর্থ "কাল" ("সময়") অথবা "ঋতু"।[২০]
aṁ | അം aṁ বা অং/অম্
/am/ |
ം ṁ বা ং/ম্
/m/ |
പം paṁ বা পং/পম্
/pam/ |
---|
একটি অনুস্বারম্ (അനുസ്വാരം anusvāram), অথবা একটি অনুস্বার, আসলে নাসিকীকরণ বোঝায় যে কোথায় পূর্ববর্তী স্বরধ্বনিটি একটি নাসিক্য স্বরধ্বনিতে বদলে গেছে, এবং সেইহেতু ঐতিহ্যগতভাবে স্বরচিহ্ন হিসাবে দেখা হয়। তবে, মালয়ালমে, একে শুধু একটি স্বরধ্বনির পরে একটি ব্যজনধ্বনি /m/ (ম্) হিসাবে দেখা হয়, যদিও এই /m/ (ম্)-কে আরেকটি নাসিক্য ব্যঞ্জনধ্বনির সাথে সম্মিলিত করা যায়। এটি একটি বিশেষ ব্যঞ্জনবর্ণ, একটি "সাধারণ" ব্যঞ্জনবর্ণের থেকে ভিন্ন, তাতে এটি কখনও একটি সহজাত স্বরধ্বনি বা অন্য স্বরধ্বনি দ্বারা অনুসরণকৃত হবে না। সাধারণভাবে, একটি অনুস্বার একটি ভারতীয় ভাষার শব্দের শেষে বসলে তাকে আইএসও ১৫৯১৯-এ ṁ (ঙ্) লিখে রোমানিকরণ করা হয়, কিন্তু একটি মালয়ালম অনুস্বার শব্দের শেষে বসলে তাকে বিন্দু ছাড়া m (ম্)-রোমানিকরণ করা হয়।
aḥ | അഃ aḥ বা অঃ
/ah/ |
ഃ ḥ বা ঃ
/h/ |
പഃ paḥ বা পঃ
/pah/ |
---|
একটি বিসর্গম্ (വിസർഗം, visargam), অথবা একটি বিসর্গ, /h/ (হ্) ব্যঞ্জনধ্বনিটিকে একটি স্বরধ্বনির পরে দেখায়, এবং ḥ (হ্) রোমানিকরণ করা হয়। অনুস্বারের মত, এটিও একটি বিশেষ চিহ্ন, এবং কখনও একটি সহজাত স্বরধ্বনি বা অন্য স্বরধ্বনি দ্বারা অনুসরণকৃত হবে না।
নিম্নোক্ত তালিকাগুলি দেখায় মালয়ালম বর্ণমালার মূল ব্যঞ্জনবর্ণগুলি, আইএসও ১৫৯১৯-এ তাদের রোমানিকরণ, আ-ধ্ব-ব-তে প্রতিলিপি, এবং ইউনিকোডে 'অক্ষরের নাম'। কেরালা সরকার কমিটি (২০০১)-এর রিপোর্টে ব্যবহৃত নামগুলি ছোট হাতের বাঁকা অক্ষরগুলি দিয়ে দেখানো হয়েছে যখন সেগুলি ইউনিকোড নামগুলি থেকে ভিন্ন।[১৯] এই বৈকল্পিক নামগুলি মালয়ালী জনসংখ্যার ঐতিহ্যগত রোমানিকরণের উপরে ভিত্তি করে। উদাহরণস্বরূপ, "Thiruvananthapuram" (তিরুবনন্তপুরম্)-এর tha আইএসও tha (থ)-ও নয়, ইউনিকোড 'tha' (থ)-ও নয়, এখানে tha বোঝায় ത (ত)। ISCII - "ইস্কি" অর্থাৎ "তথ্য বিনিময়ের জন্য ভারতীয় লিপি সংহিতা" (IS 13194:1991) অক্ষরের নামগুলি লঘুবন্ধনীর মধ্যে দেখানো হয়েছে যখন সেগুলি উল্লেখিতের চেয়ে আলাদা।
অঘোষ | ঘোষ | ||||
---|---|---|---|---|---|
অল্পপ্রাণ | মহাপ্রাণ | অল্পপ্রাণ | মহাপ্রাণ | নাসিক্য | |
পশ্চাত্তালব্য | ക ka বা ক
/ka/ |
ഖ kha বা খ
/kʰa/ |
ഗ ga বা গ
/ɡa/ |
ഘ gha বা ঘ
/ɡʱa/ |
ങ ṅa বা ঙ
/ŋa/ |
তালব্য | ച ca বা চ
/t͡ʃa/ |
ഛ cha বা ছ
/t͡ʃʰa/ |
ജ ja বা জ
/ɟa/ |
ഝ jha বা ঝ
/ɟʱa/ |
ഞ ña বা ঞ
/ɲa/ |
মূর্ধন্য | ട ṭa বা ট
/ʈa/ |
ഠ ṭha বা ঠ
/ʈʰa/ |
ഡ ḍa বা ড
/ɖa/ |
ഢ ḍhaবা ঢ
/ɖʱa/ |
ണ ṇa বা ণ
/ɳa/ |
দন্ত্য | ത ta বা ত
/t̪a/ |
ഥ tha বা থ
/t̪ʰa/ |
ദ da বা দ
/d̪a/ |
ധ dha বা ধ
/d̪ʱa/ |
ന na বা ন
/n̪a, na/[ক] |
ওষ্ঠ্য | പ pa বা প
/pa/ |
ഫ pha বা ফ
/pʰa/ |
ബ ba বা ব
/ba/ |
ഭ bha বা ভ
/bʱa/ |
മ ma বা ম
/ma/ |
/ʈ, ɖ, ɳ/ (ট, ড, ণ) ব্যঞ্জনধ্বনিগুলি মূর্ধন্য। মালয়ালমে, এরা উচ্চারিত হয় জিভের ডগার নিচের দিকটি কঠিন তালুতে ঠেকিয়ে।
യ ya বা য, সঠিক উচ্চারণ হবে 'ইয়'
/ja/[ক] |
ര ra বা র
/ɾa/[খ] |
ല la বা ল
/la/[গ] |
വ va বা ভ/স্বর ব
/ʋa/[ঘ] |
ശ śa বা শ
/ʃa/[ঙ] |
ഷ ṣa বা ষ
/ʂa/[চ] |
സ sa বা স
/sa/[ছ] |
ഹ ha বা হ
/ɦa/ |
ള ḷa, দীর্ঘ ল | ഴ ḻa, মূর্ধন্য র
/ɻa/[ঞ] |
റ [ট] ṟa, ṯa; ড়, ট্ট
/ra, ta/ |
ഩ ṉa, দীর্ঘ ণ
/na/[ঠ] |
ഺ ṯa দীর্ঘ ট
/ta/[ড] |
আরও দেখুন: ↓ ইউনিকোডে চিল্লু
একটি চিল্লু, বা চিল্লক্ষরম্ (ചില്ലക്ഷരം), একটি বিশেষ ব্যঞ্জনবর্ণ যা একটি শুদ্ধ ব্যঞ্জনধ্বনি-কে স্বাধীনভাবে দেখায়, হসন্ত-এর সাহায্য ছাড়াই। একটি সাধারণ ব্যঞ্জনবর্ণ দিয়ে দেখানো একটি ব্যঞ্জনধ্বনির উলটো, এই ব্যঞ্জনবর্ণটি কখনও কোনও সহজাত স্বরধ্বনি দ্বারা অনুসরণকৃত হয় না। অনুস্বার ও বিসর্গ এই শর্ত অবলম্বন করে কিন্তু অন্তর্গত করা হয় না। ইস্কি (ISCII) ও ইউনিকোড ৫.০ চিল্লু কে ভিত ব্যঞ্জনবর্ণটির বৈকল্পিক গ্লিফ মানে।[২৪] ইউনিকোড ৫.১ এবং পরবর্তী সংস্করণগুলিতে, যদিও, চিল্লু বর্ণগুলিকে স্বাধীন বর্ণ ধরা হয়, মৌলিকভাবে কোড করা।[২৫]
জ্ঞাত চিল্লু বর্ণের সংখ্যা অন্তত ছয়। চিল্লু-ক্ বিরল। বাকি পাঁচটি বেশ প্রচলিত।
বর্ণ | ইউনিকোড নাম | ভিত | মন্তব্য |
---|---|---|---|
ൺ | 'CHILLU NN' বা চিল্লু ণ্
|
ণ ണ | |
ൻ | 'CHILLU N' বা চিল্লু ন্
|
ন ന | |
ർ | 'CHILLU RR' বা চিল্লু ড়্
|
র ര | ঐতিহাসিকভাবে র থেকে, ড় ('RRA' ) റ থেকে নয়।
|
ൽ | 'CHILLU L' বা চিল্লু ল্
|
ল ല | ঐতিহাসিকভাবে ত ത থেকে। |
ൾ | 'CHILLU LL' বা চিল্লু দীর্ঘ ল্
|
দীর্ঘ ল ള | ঐতিহাসিকভাবে ট ട থেকে। |
ൿ | 'CHILLU K' বা চিল্লু ক্
|
ক ക |
চন্দ্রক্কলা ് (ചന്ദ്രക്കല) একটি বৈশিষ্টসূচক চিহ্ন যা একটিব্যঞ্জনবর্ণের সাথে যুক্ত করা হয় এই দেখাতে যে ব্যঞ্জনধ্বনিটি কোনও সহজাত স্বরধ্বনি বা অন্য কোনও স্বরধ্বনি দ্বারা অনুসরণকৃত হচ্ছে না (উদাহরণস্বরূপ, ക ক → ക് ক্)। এই ধরনের বৈশিষ্টসূচক চিহ্ন ভারতীয় লিপিগুলিতে সাধারণ, সাধারণত সংস্কৃতে বলা হয় বিরাম, হিন্দিতে বলা হয় হলন্ত্, বা বাংলায় বলা হয় হসন্ত।
একটি শব্দের শেষে, একই চিহ্নটি কখনও একটি অতিহ্রস্ব স্বরধ্বনি বোঝায়, যা অর্ধ-উ নামে, অথবা সংভ্রুতোকারম্ (സംവൃതോകാരം) নামে, অথবা কুট্টিয়াল উকরম্ (കുറ്റിയൽ ഉകരം) নামে পরিচিত।[২৬] এর সঠিক উচ্চারণটি কথার উপর নির্ভর করে বদলায়, কিন্তু এটি প্রায় [ə][২৭] বা [ɨ], এবং এর রোমানিকরণ হবে ŭ (উদাহরণস্বরূপ, ന na বা ন → ന് nŭ বা নু)। বৈকল্পিকভাবে, একটি স্বরচিহ্ন উ ঢোকানো হয়, যেমন, നു് (= ന + ു + ്)। একজন লেখকের মতে, এই বৈকল্পিক রূপটিই ঐতিহাসিকভাবে অধিক সঠিক, যদিও স্বরচিহ্ন উ ছাড়া এই সহজকৃত ধরনটিই বর্তমানে সাধারণ রূপ।[২৮] এর অর্থাৎ এই একই বানান ന് ন্ ও নু দুইটিই দেখাতে পারে প্রসঙ্গের উপর নির্ভর করে। সাধারণত, একটি শব্দের শেষে এটি নু, এবং অন্যথা এটি ন্ ; നു് সর্বদা নু বোঝায়।
অন্যান্য ব্রাহ্মী লিপির মতই, মালয়ালম লিপিতে একটি 'বিরাম' অর্থাৎ হসন্ত ব্যবহার করা হয় ব্যঞ্জনবর্ণটি থেকে সহজাত স্বরধ্বনি অপসারণ করে—অথবা "নিহত" করে—ব্যঞ্জনধ্বনিটিকে স্বরধ্বনি-বিহীন করতে, তাই একে বলা হয় "মৃত" ব্যঞ্জনবর্ণ। উদাহরণস্বরূপ,
যদি এই ন্ ന് -টি আবার কোনও অক্ষর দ্বারা অনুসরণকৃত হয়, উদাহরণস্বরূপ, ম മ, তাহলে উত্তরটি এরকম দেখতে হতে পারে: ന്മ, যা দেখায় ন + হসন্ত + ম। এই ক্ষেত্রে, দুইটি উপাদান ন্ ന് ও ম മ সাধারণভাবে এক-এক করে, পাশাপাশি বসানো হয়েছে। বৈকল্পিকভাবে, ন্ম-কে বন্ধনী-যুক্ত ന്മ হিসাবেও লেখা যায়।
সাধারণত, যখন একটি মৃত ব্যঞ্জনবর্ণ ব্য১ এবং আরেকটি ব্যঞ্জনবর্ণ ব্য২ সংযুক্ত করা হয়, তখন উত্তর হতে পারে:
যদি উত্তরটি সম্পূর্ণ বা অর্ধ-সংযুক্ত হয়, হসন্ত (ধারণামূলক)-টি যা ব্য১ -কে একটি মৃত ব্যঞ্জনবর্ণ বানায় তা অদৃশ্য হয়ে যায়, যা শধুমাত্র যুক্তিগতভাবে ইউনিকোডের মত ক্যারেক্টার এনকোডিং পরিকল্পনায় উপস্থিত। যদি উত্তরটি অ-বন্ধনাবদ্ধ হয়, হসন্তটি দৃশ্যমান হয়, ব্য১ -এর সঙ্গে সংযুক্ত। ন্ম-এর জন্য গ্লিফগুলিতে একটিদৃশ্যমান হসন্ত থাকে যদি সেটি অবন্ধনাবদ্ধ (ന്മ) হয়, কিন্তু যদি বন্ধনী-যুক্ত হয়, হসন্তটি অদৃশ্য হয়ে যায় (ന്മ)। সাধারণত এই দুইটি ধরনের পার্থক্য শুধু পৃষ্ঠস্থ ও শব্দার্থগতভাবে একসমান, যেমন ইংরেজি শব্দ palaeography-র মানে বদলায় বন্ধনী æ ব্যবহার করে palæography বানান লিখলেও চলে, এবং বাংলায় অহংকারের বদলে অহঙ্কার লিখলেও চলে।
প্রচুর ব্যঞ্জনবর্ণ-ব্যঞ্জনবর্ণ বন্ধনী সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয়, এমনকী সংশোধিত লিখনবিধিতেও।
ক্ক | ঙ্ক | ঙ্ঙ | চ্চ | ঞ্চ | ঞ্ঞ | ট্ট | ণ্ট | ণ্ণ | ত্ত | ন্ত | ন্ন | প্প | ম্প | ম্ম | |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
অ-বন্ধনাবদ্ধ | ക്ക | ങ്ക | ങ്ങ | ച്ച | ഞ്ച | ഞ്ഞ | ട്ട | ണ്ട | ണ്ണ | ത്ത | ന്ത | ന്ന | പ്പ | മ്പ | മ്മ |
বন্ধনাবদ্ধ | ക്ക | ങ്ക | ങ്ങ | ച്ച | ഞ്ച | ഞ്ഞ | ട്ട | ണ്ട | ണ്ണ | ത്ത | ന്ത | ന്ന | പ്പ | മ്പ | മ്മ |
ম্প മ്പ বন্ধনীটি ঐতিহাসিকভাবে এর থেকে উদ্ভূত: ন্প ന്പ। বন্ধনী চ্চ, স্বর ব্ব, য্য, এবং ভ্ভ বিশেষ যেহেতু দ্বিত্ব ব্যঞ্জনবর্ণটিকে একটি ব্যঞ্জনবর্ণের নিচে ত্রিকোণ চিহ্ন দিয়ে বোঝানো হয়।
চ্চ | স্বর ব্ব | য্য | ভ্ভ | |
---|---|---|---|---|
অ-বন্ধনাবদ্ধ | ച്ച | ബ്ബ | യ്യ | വ്വ |
বন্ধনাবদ্ধ | ച്ച | ബ്ബ | യ്യ | വ്വ |
(১) ব্যঞ্জনবর্ণ য-টি সাধারণত ব্য২ যা ব্যঞ্জনবর্ণের পরে যুক্ত, দুইটি লিখনবিধিতেই। উদাহরণস্বরূপ,
ক্য ക്യ-তে, য -এর বৈকল্পিক রূপ () ক -এর সম্পূর্ণ ধরনের পাশে বসানো হয়েছে, ঠিক যেমন কি കി-কে লেখা হয় ক ക -এর পাশে অনুসরণকারী স্বরচিহ্ন ই ി বসিয়ে। সহজ কথায়, য -এর বৈকল্পিক রূপ () যা ব্যঞ্জনবর্ণের পরে ব্যবহার করা হয় তাকে বৈশিষ্টসূচক চিহ্ন বলে মানা যাবে। যেহেতু এটি বেস বর্ণটির পাশে বসে, তাই একে কখও পোস্ট-বেস ধরন বলা হয়। একটি ব্যতিক্রম হচ্ছে য্য യ്യ (উপরে দেখুন)।
(২) একইভাবে, একটি ব্যঞ্জনধ্বনির পরে ভ বসলে পোস্ট-বেস ধরন গ্রহণ করে:
একটি ব্যতিক্রম হচ্ছে স্বর ব্ব വ്വ (উপরে দেখুন)।
(৩) একটি স্বরধ্বনির পরে স্বরবর্ণ ল বসলে ঐতিহ্যগতভাবে তা একটি নীচ-কাঠামো ধরনের রূপ নেয়। এই ধরনগুলি নতুন লিখনবিধিতেও ব্যবহৃত হয়, যদিও কিছু ফন্ট এদের সমর্থন করে না।
(৪) একটি স্বরধ্বনির পরে স্বরবর্ণ র বসলে সেটি প্রাক্-বেস রূপ নেয় নতুন লিখনবিধিতে, তবে এই যুক্তবর্ণটি ঐতিহ্যগত লিখনবিধিতে একটি সম্পূর্ণ সংযুক্ত বন্ধনী তৈরী করে।
লিখনবিধি ন্ট টি লেখা হয় ন্ ന് + ড় റ এবং উচ্চারণ হয় /nda/। লিখনবিধি ট্ট লেখা হয় ড়্ റ് + ড় റ।
ন্ট | ট্ট | |
---|---|---|
অ-বন্ধনাবদ্ধ | ന്റ | റ്റ |
বন্ধনাবদ্ধ | റ്റ | |
সংযুক্তাক্ষর | ൻറ | ററ |
এই দুইটি লিখনবিধিতে, একটি ছোট ড় റ প্রথম অক্ষরের নিচে লেখা হয় (চিল্লু-ন্ যদি এটি একটি মৃত ন্ হয়)। বৈকল্পিকভাবে, ড় অক্ষরটি মাঝেমধ্যে প্রথম অক্ষরটির পাশে বসে, যা একটি সংযুক্তাক্ষর তৈরী করে (ঠিক গ্রীক ভাষায় ῳ-এর বদলে ωι-এর ব্যবহারের মত)। ൻറ বানানটি সুতরাং হয় পড়া পড়া হতে পারে হয় ন্ড় (দুইটি অসংযুক্ত অক্ষর) নয় ন্ট (সংযুক্তাক্ষর) শব্দের উপর নির্ভর করে। একইভাবে, ററ-এর উচ্চারণ ড়ড় নয়তো ট্ট হতে পারে।
ঐতিহ্যগত লিখনবিধিতে, ব্যঞ্জনধ্বনির আগে মৃত ব্যঞ্জনধ্বনি র্ বসলে সেটি মাঝেমধ্যে একটি উপরি-ভিত চেহারা নেয়, যা বিন্দু রেফ নামে পরিচিত, যা একটি ছোট খাড়া লাইন বা বিন্দুর মত দেখতে। সাধারণত, সংশোধিত লিখনবিধিতে একটি বিন্দু রেফের পরিবর্তে একটি চিল্লু-র্ ব্যবহার করা হয়।
এই অনুচ্ছেদটি খালি। আপনি এখানে যোগ করে সাহায্য করতে পারেন। (মার্চ ২০১৮) |
প্রশ্লেষম্ | ഽ | দেবনাগরী অবগ্রহ-এর অনুরূপ, ব্যবহৃত হয় যখন অবগ্রহ-ধারী কোনও সংস্কৃত বাক্য মালয়ালম লিপিতে লেখা হয়। চিহ্নটি কোনও শব্দ যা আ, দীর্ঘ এ, দীর্ঘ উ দিয়ে শেষ হয় তার পরবর্তী শব্দের শুরু যদি অ দিয়ে হয় তাহলে সেই স্বরকে বিলোপ করতে ব্যবহৃত হয় এবং একটি উর্ধকমা (') দিয়ে রোমানিকরণ করা হয়, বা মাঝেমধ্যে একটি কোলন + একটি উর্ধকমা (:’) দিয়ে রোমানিকরণ হয়।
(মালয়ালম: പ്രശ്ലേഷം, praślēṣam) |
---|---|---|
মালয়ালম তারিখ চিহ্ন | ൹ | একটি তারিখের সংক্ষিপ্ত রূপে ব্যবহৃত হয়। |
দণ্ড বা দাঁড়ি | । | ঐতিহাসিক যতি চিহ্ন যা ব্যবহৃত হয় ইংরেজি ফুল স্টপ ও বাংলা দাঁড়ি-র মত একটি শ্লোক বা বাক্যকে সীমিত করতে। |
দ্বিদণ্ড বা দুই-দাঁড়ি | ॥ |
নিচে মালয়ালম সংখ্যা ও ভগ্নাংশগুলি লেখা হয়েছে। এগুলি ঐতিহাসিক ও বর্তমানে সাধারণ ব্যবহারে নেই।
০ | ১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১০০ | ১০০০ | ১/৪ | ১/২ | ৩/৪ |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
൦ | ൧ | ൨ | ൩ | ൪ | ൫ | ൬ | ൭ | ൮ | ൯ | ൰ | ൱ | ൲ | ൳ | ൴ | ൵ |
মালয়ালম লিপি ইউনিকোড স্ট্যান্ডার্ডে যোগ করা হয় অক্টোবর, ১৯৯১ -এ ১.০ সংস্করণের মুক্তিপ্রাপ্তের সঙ্গে।
মালয়ালম লিপির জন্য ইউনিকোড ব্লক হচ্ছে U+0D00–U+0D7F:
মালয়ালম[১][২] অফিসিয়াল ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম কোড চার্ট (PDF) | ||||||||||||||||
0 | 1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 | 9 | A | B | C | D | E | F | |
U+0D0x | ഀ | ഁ | ം | ഃ | അ | ആ | ഇ | ഈ | ഉ | ഊ | ഋ | ഌ | എ | ഏ | ||
U+0D1x | ഐ | ഒ | ഓ | ഔ | ക | ഖ | ഗ | ഘ | ങ | ച | ഛ | ജ | ഝ | ഞ | ട | |
U+0D2x | ഠ | ഡ | ഢ | ണ | ത | ഥ | ദ | ധ | ന | ഩ | പ | ഫ | ബ | ഭ | മ | യ |
U+0D3x | ര | റ | ല | ള | ഴ | വ | ശ | ഷ | സ | ഹ | ഺ | ഻ | ഼ | ഽ | ാ | ി |
U+0D4x | ീ | ു | ൂ | ൃ | ൄ | െ | േ | ൈ | ൊ | ോ | ൌ | ് | ൎ | ൏ | ||
U+0D5x | ൔ | ൕ | ൖ | ൗ | ൘ | ൙ | ൚ | ൛ | ൜ | ൝ | ൞ | ൟ | ||||
U+0D6x | ൠ | ൡ | ൢ | ൣ | ൦ | ൧ | ൨ | ൩ | ൪ | ൫ | ൬ | ൭ | ൮ | ൯ | ||
U+0D7x | ൰ | ൱ | ൲ | ൳ | ൴ | ൵ | ൶ | ൷ | ൸ | ൹ | ൺ | ൻ | ർ | ൽ | ൾ | ൿ |
টীকা |
উদাহরণস্বরূপ, অবন അവൻ ("সে") লেখা হয় অ അ + ব വ + চিল্লু-ন্ ൻ, যেখানে চিল্লু-ন্ দেখায় স্বরধ্বনি ছাড়া ন্ ধ্বনি। অন্যান্য ভারতীয় লিপিতে এই একই শব্দ হয়তো লেখা হবে অ + ব + ন + হসন্ত। তবে, মালয়ালম লিপিতে, এই ক্রমটি একটি ভিন্ন অর্থের শব্দ দেখায়, অবনু അവന് (“তাকে”), এবং অবন্-এর বিকল্প নয়।[৩০] এটির কারণ এই যে আধুনিক মালয়ালম লিপিতে, হসন্ত চিহ্নটি স্বর উ -এর কাজ করে একটি শব্দের শেষে, এবং এই ক্ষেত্রে সহজাত স্বরধ্বনিটিকে পুরোপুরি "নিহত" করতে সক্ষম নয়।[২৭]
একটি শুদ্ধ ব্যঞ্জনধ্বনি (চিল্লু) ও উ -যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণকে বিভাজিত করতে, শূন্য-প্রস্থ সংযোগকারী (ZWJ - Zero-Width Joiner) এবং শূন্য-প্রস্থ অসংযোগকারী (ZWNJ - Zero-Width Nono-Joiner) ব্যবহার করা হত ইউনিকোড ৫.১ -এর আগে অবধি।[২৪] যদিও, এই ব্যবস্থাটি ত্রুটিপূর্ণ ছিল। অন্যান্য জিনিসের মধ্যে, ZWJ বা ZWNJ দিয়ে দেখানো গ্লিফ বিকল্পগুলি অ-শব্দার্থিক হওয়া উচিত, যেখানে একটি চিল্লু (দেখানো হত অক্ষর + হসন্ত + ZWJ) এবং সেই একই ব্যঞ্জনবর্ণ যা উ দ্বারা অনুসরণকৃত (দেখানো হত অক্ষর + হসন্ত + ZWNJ) মাঝেমধ্যেই শব্দার্থগতভাবে আলাদা। একটি লম্বা বিতর্কের পরে,[২৭][২৮] ছয়টি চিল্লু-র এখন নিজস্ব কোড পয়েন্ট আছে যা ইউনিকোড ৫.১ থেকে শুরু হয়, যদিও অ্যাপ্লিকেশানগুলিকে ইউনিকোড ৫.০ -এ নির্ধারিত করা অক্ষরেও তথ্য পরিচালনা করতে সক্ষম হওয়া উচিত।[২৫] এর অর্থাৎ, ফন্টগুলির দুইটি ক্রমেই চিল্লু দেখানো উচিত; যেখানে একটি ইনপুট পদ্ধতির স্ট্যান্ডার্ড চিল্লু দেখানো উচিত।
লিখনবিধি ন্ট -টি খুবই স্বাভাবিক এবং এবং সিংহভাগ মালয়ালম ফন্ট দ্বারা সমর্থিত এক বা অন্য দিক দিয়ে, কিন্তু ঠিক কী ভাবে একে এনকোড করা হবে তা ইউনিকোড ৫.০ ও পূর্ববর্তী সংস্করণগুলিতে পরিষ্কার ছিল না, এবং দুইটি পরস্পর-বিরুদ্ধ রূপায়ণই বর্তমানে ব্যবহৃত।[৩১] ইউনিকোড ৫.১ (২০০৮) -এ, এটি দেখাতে ক্রমটি স্পষ্টভাবে পুনঃনির্ধারিত করা হয়েছিল চিল্লু-ন্ + হসন্ত + ড় (ൻ്റ)।[২৫]