সুফিবাদ এবং তরিকা |
---|
প্রবেশদ্বার |
মৌলভি তরিকা (তুর্কি:Mevlevilik বা Mevleviyye; ফারসি:طریقت مولویه) কোনিয়ার একটি সুফি তরিকা। ১৩শ শতাব্দীর কবি, আইনবিদ ও ধর্মতাত্ত্বিক জালালউদ্দিন রুমির অনুসারীরা তার মৃত্যুর পর এই তরিকা প্রতিষ্ঠা করেন।[১] এই তরিকার অনুসারীদেরকে ঘূর্ণায়মান দরবেশও বলা হয়।
উসমানীয় সাম্রাজ্যে মৌলভি তরিকা সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল। তরিকার অনেক সদস্য খিলাফতে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদে আসীন ছিলেন। কোনিয়া ছিল তরিকার কেন্দ্রস্থল। এখানে জালালউদ্দিন রুমিকে দাফন করা হয়েছিল।
উসমানীয় যুগে মৌলভি তরিকার মধ্য থেকে শেখ গালিব, ইসমাইল আনকারাভি ও আবদুল্লাহ সারির মত বিখ্যাত কবি ও সুরকার জন্ম নিয়েছেন। উসমানীয় শাসনামলে বলকান, সিরিয়া, লেবানন, মিশর ও ফিলিস্তিনে মৌলভি তরিকার বিস্তার ঘটে। কাদেরিয়া সহ কিছু সুফি তরিকার সাথে মৌলভি তরিকার মিল রয়েছে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ৪র্থ আর্মির অধীনে মৌলভি রেজিমেন্ট সিরিয়া ও ফিলিস্তিনে দায়িত্বপালন করেছে। ১৯১৪ সালের ডিসেম্বরে কোনিয়ায় ৮০০ দরবেশকে নিয়ে গঠিত একটি ব্যাটেলিয়নকে দামেস্কে প্রেরণ করা হয়। ১৯১৬ সালের আগস্টের শেষের দিকে নিয়মিত রিক্রুটদের নিয়ে গঠিত আরেকটি ব্যাটেলিয়ন যুক্ত করা হয়। এই দুই ব্যাটিলিয়ন মিলে মৌলভি রেজিমেন্ট গঠিত হয়েছিল। ফিলিস্তিন অভিযানের শেষ অংশের পূর্বে এই সেনা ইউনিটকে লড়াইয়ে নিয়োজিত করা হয়নি। ১৯১৮ সালের সেপ্টেম্বরে রেজিমেন্ট ভেঙে দেয়া হয়।
অবৈধ ঘোষণার পূর্বে মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক ১৯২৩ সালে মৌলভি তরিকার সদস্যদের সাথে সাক্ষাত করেছিলেন।[২]
১৯২৫ সালে নবগঠিত তুর্কি প্রজাতন্ত্র কর্তৃক মৌলভি তরিকা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। কোনিয়ার দরবেশদের আবাসস্থলকে মাওলানা জাদুঘর হিসেবে রূপান্তর করা হয়।[৩][৪]
পর্যটক আকর্ষণের জন্য ১৯৫৩ সালে স্বল্প পরিসরে তুরস্কে সামা চর্চার সুযোগ দেয়া হয়। তবে সুফি তরিকা হিসেবে এর চর্চা নিষিদ্ধ থাকে।[৫]