রোবের্ট হুবার | |
---|---|
জন্ম | |
জাতীয়তা | জার্মানি |
নাগরিকত্ব | জার্মানি |
মাতৃশিক্ষায়তন | মিউনিখ কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | সায়ানোব্যাকটিরিয়া ক্রিস্টালোগ্রাফি |
পুরস্কার |
|
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | প্রাণরসায়ন |
ডক্টরেট শিক্ষার্থী | নেদিলজকো বুদিসা |
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী | পিটার কলম্যান (পোস্টডোক)[৩][৪][৫] |
ওয়েবসাইট | www |
রোবের্ট হুবার (জার্মান: Robert Huber; জন্ম ২০শে ফেব্রুয়ারি ১৯৩৭) প্রখ্যাত জার্মান বায়োকেমিস্ট এবং নোবেল বিজয়ী। [৬][৭][৮][৯][১০] সালোকসংশ্লেষণের গুরুত্বপূর্ণ একটি আন্তঃপর্দা প্রোটিনের স্ফটিকীভবন এবং পরবর্তীকালে প্রোটিনের কাঠামোটি বিশদকরণের জন্য এক্স-রে ক্রিস্টালোগ্রাফি প্রয়োগের জন্য তিনি পরিচিত।
তিনি ১৯৩৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি মিউনিখে জন্মগ্রহণ করেছিলেন যেখানে তার বাবা সেবাস্তিয়ান ছিলেন একজন ব্যাংক ক্যাশিয়ার। তিনি ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত হিউম্যানিস্টিচস কার্লস-জিমনেসিয়ামে পড়াশোনা করেন এবং ১৯৬০ সালে তিনি ডিপ্লোমা পেয়ে টেকনিশে হচসচুলে রসায়ন অধ্যয়ন করেন। তিনি সেখানে অবস্থান করেন এবং জৈব যৌগের কাঠামোকে সুস্পষ্ট করতে ক্রিস্টালোগ্রাফি ব্যবহার করে গবেষণা করেছিলেন।
১৯৭১ সালে তিনি ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক প্রাণরসায়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক পদে নিযুক্ত হন। সেখানে তার দল প্রোটিনের স্ফটিকীভবনের পদ্ধতি তৈরি করেছিল।১৯৮৮ সালে তিনি জোহান ডেইজনহোফার এবং হার্টমুট মিশেলের সাথে যৌথভাবে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। বেগুনি ব্যাকটিরিয়ায় সালোকসংশ্লেষণের জন্য পর্দার অভ্যন্তরে অবস্থিত প্রোটিনকে প্রথম স্ফটিকীভবন এবং পরবর্তীকালে প্রোটিনের কাঠামোকে ব্যাখ্যা করার জন্য এক্স-রে স্ফটিকীভবন প্রয়োগ করার জন্য এই ত্রয়ী তাদের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পুরস্কার লাভ করেন।[১১] এ বিষয়ে তারা যে অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করেছিলেন, সায়ানোব্যাকটেরিয়ায় আলোক সংশ্লেষণের মত আরও জটিল ঘটনা বোঝার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। উচ্চতর উদ্ভিদের ক্লোরোপ্লাস্টগুলোর সালোকসংশ্লেষণের জন্যও এ প্রক্রিয়া ব্যবহার করা যেতে।পারে। ২০০৬ সালে, তিনি খণ্ডকালীন ভিত্তিতে গাঠনিক জীববিজ্ঞানের প্রগতিকল্পে কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পদ গ্রহণ করেছিলেন। ২০০৫ সাল থেকে তিনি সেন্টার ফর ডুইসবার্গ-এসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা জীবপ্রযুক্তি কেন্দ্রে গবেষণা করে চলেছেন। হুবার ছিলেন এনসাইক্লোপিডিয়া অফ অ্যানালিটিক্যাল কেমিস্ট্রি-র প্রথমদিককার সম্পাদকগুলোর অন্যতম।
১৯৭৭ সালে হুবারকে অটো ওয়ারবার্গ পদক দেওয়া হয়।[১২] ১৯৮৮ সালে তিনি নোবেল পুরস্কার এবং ১৯৯২ সালে স্যার হান্স ক্রেবস পদক পান।[১৩] ১৯৯৩ সালে হুবার সায়েন্সেস অ্যান্ড আর্টসের জন্য পোর লে মেরিটের[১৪] সদস্য এবং ১৯৯৯ সালে রয়েল সোসাইটির[১৫] বিদেশি সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। নির্বাচনের শংসাপত্রটি লেখা ছিল: হুবার সবচেয়ে উৎপাদনশীল প্রোটিন স্ফটিকীভবন বিজ্ঞানাগার তৈরি করেছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং এখনও নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রায় ২৫ বছর ধরে ক্রিস্টালোগ্রাফিতে তিনি ব্যাপক অবদান রেখেছেন। পিএইচডি অভিসন্দর্ভের জন্য তিনি গুরুত্বপূর্ণ পতঙ্গ হরমোন এডিটিসনের রাসায়নিক সংকেত নির্ণয় করেছিলেন, যা রসায়নবিদদের ধন্দে ফেলে দিয়েছিল। তারপরে তিনি দেখিয়েছিলেন যে লার্ভা চিরোনোমাস মাছির হিমোগ্লোবিনে পলিপেপটাইড শৃঙ্খলের প্রান্তীয় ভাঁজটি খুব কাছাকাছি মিলিত হয়েছিল যা কেন্দ্রুর শুক্রাণু তিমি মায়োগ্লোবিনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ, যেটি পুরো বিবর্তন জুড়ে সংরক্ষণ করা হয়েছিল।
হুবারের পরবর্তী অর্জন ছিল ট্রিপসিন ইনহিবিটারের কাঠামো নির্ণয় করা। তিনি এ-ও প্রদর্শন করেন, ট্রিপসিনের সাথে গঠিত জটিল অবস্থায়, উৎসেচক সাবস্ট্রেটের চতুস্তলকীয় উত্তরণকালীন অবস্থার অনুরূপ। তার পর থেকে তিনি আরও অনেক প্রোটিনেজের কাঠামো, তাদের নিষ্ক্রিয় পূর্বসূচক এবং প্রতিরোধকারী উপাদানগুলো নির্ণয় করেছেন এবং নিজেকে এই ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম পণ্ডিত ব্যক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এদের মধ্যে অসামান্য কাঠামোগুলো হলো প্রোকার্বক্সিপেপটাইডেজ, যা এই এনজাইমের উল্লেখযোগ্য সক্রিয় কর্মপদ্ধতি আবিষ্কার করতে সাহায্য এবং হিরুডিন ও থ্রোমবিনের যুক্ত জটিল অবস্থা আবিষ্কারেও সাহাঢ়্য করেছিল। এই বিষাক্ত দ্রব্যের মাধ্যমে রক্ত জমাট বাধাদান প্রক্রিয়ায় আণবিক কলাকৌশল আবিষ্কৃত হয় । এই কাজের সমান্তরালে হুবার বেশ কয়েকটি ইমিউনোগ্লোবুলিন খণ্ডের কাঠামো নির্ণয় করেছিলেন। তিনিই প্রথম পরিপূরক-সক্রিয়করণকারী এফ-খণ্ডের কাঠামো নির্ণণয় করেছিলেন, যা ফ্যাব খণ্ডের প্রথম চলক ও প্রথম ধ্রুবক ডোমেন।
হুবার-আবিষ্কৃত সাইট্রেট সিনথেজ কাঠামোটি ইনডিউসড ফিট প্রক্রিয়ায় সাবস্ট্রেট ও উৎসেচকের সংযুক্তির মাধ্যমে রূপান্তরিত পরিবর্তনের এক অনন্য উদাহরণ।
হুবার ১৯৮৮ সালে যৌথভাবে মিশেল এবং ডেইজনহোফারের সাথে রসায়নে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। রোডোপসুডোমোনাস ভাইরিডিস ও ফাইকোসায়ানিনের গুরুত্বপূর্ণ কাঠামো আবিষ্কারের জন্য তারা এই সম্মান পান। এটি নীল-সবুজ অ্যালগে বা মাস্টিগ্লোকাদুস ল্যামিনোসাসের আলোক উৎপাদনকারী প্রোটিন। এই প্রোটিনটি প্রান্তীয় ভাঁজে সরলরৈখিক টেটেরাপিরোলসমূহ আবদ্ধ করে, যেটি গ্লোবিনের অনুরূপ। এটি হুবারকে তার আবিষ্কৃত এরিথ্রোক্রায়ারিনের উপর পুনরায় কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে। হুবার অ্যাসকরবেট অক্সিডেস সহ বেশ কয়েকটি তামাযুক্ত ইলেক্ট্রন-ট্রান্সফার প্রোটিনের কাঠামো ও অন্যান্য ধাতব-এনজাইমগুলির কাঠামো নির্ণয় করেছেন। এই গবেষণাগুলি ইলেক্ট্রন-ট্রান্সফার সিস্টেম এবং প্রোটিনে দস্তা সমন্বয়ের উপর নতুনভাবে আলোকপাত করেছে। তিনি ক্যালসিয়াম আবদ্ধকারী প্রোটিনগুলির একটি গুরুত্বপূর্ণ শ্রেণি অ্যানেক্সিনের কাঠামো বের করেছেন। তার নির্ণীত নিখুঁত কাঠামো প্রোটিন অণুর মধ্যে বিভিন্ন মাত্রায় গতিশীলতা বিষয়ে জানার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্দৃষ্টি প্রদান কররে। হুবার প্রায় ৪০০টি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন।
হুবার বিয়ে করেছেন এবং তার চারজন সন্তান আছে।