লুইগি গ্যালভানি | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ৪ ডিসেম্বর ১৭৯৮ বলোগনা, পেপাল স্টেটস | (বয়স ৬১)
পরিচিতির কারণ | জীববিদ্যুৎ (প্রাণী বিদ্যুৎ) |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | বলোগনা বিশ্ববিদ্যালয় |
লুইগি গ্যালভানি [১][২][৩][৪] (৯ সেপ্টেম্বর ১৭৩৭ – ৪ ডিসেম্বর ১৭৯৮) ছিলেন একজন ইতালীয় চিকিৎসক, পদার্থবিজ্ঞানী, জীববিজ্ঞানী এবং দার্শনিক, যিনি প্রাণী বিদ্যুৎ আবিষ্কার করেন। তিনি বায়োইলেক্ট্রোম্যাগনেটিকের অগ্রদূত হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। ১৭৭৮ সালে, তিনি এবং তার স্ত্রী লুসিয়া আবিষ্কার করেন যে মৃত ব্যাঙের পায়ের পেশী একটি বিদ্যুৎ প্রাপ্ত হয় যখন সেটিকে একটি স্ফুলিঙ্গ দ্বারা আঘাত করা হয়। [৫]:৬৭–৭১ এটি ছিল জৈব বিদ্যুৎ গবেষণার প্রথম পদক্ষেপগুলোর একটি, একটি ক্ষেত্র যেখানে স্নায়ু এবং পেশীর মত টিস্যু থেকে বৈদ্যুতিক প্যাটার্ন এবং সংকেত নিয়ে আলোচনা করা হয়।
লুইগি গ্যালভানি পোপ রাজ্যের অংশ বলোগনায় ডোমেনিকো এবং বারবারা ক্যাটারাইনা ফোশি এর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ডোমেনিকো একজন স্বর্ণকার ছিলেন, এবং বারবারা ছিলেন তার চতুর্থ স্ত্রী। তার পরিবার অভিজাত ছিল না, কিন্তু এতটুকু সামর্থ্য ছিল যে তারা তাদের অন্তত একজন ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য পাঠাতে পারত। প্রথমে গ্যালভানি চার্চে কাজ করতে চেয়েছিলেন, তাই তিনি ১৫ বছর বয়সে ওরাতোরিও দেই পাদ্রি ফিলিপ্পিনি নামে একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। তিনি ধর্মীয় শপথ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন, কিন্তু তার পিতামাতা তাকে তা না করতে রাজি করান। ১৭৫৫ সাল গ্যালভানি বলোগনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদে ভর্তি হন। গ্যালভানি মেডিসিন কোর্সে অংশগ্রহণ করেন, যা চার বছর স্থায়ী হয়।
ঔষধবিদ্যার পাশাপাশি গ্যালভানি আরেকটি বিদ্যা রপ্ত করেছিলেন তা হল অস্ত্রোপচার।
পাভিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষামূলক পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ভোল্টা ঐ সকল প্রথম বিজ্ঞানীদের মধ্যে ছিলেন যারা গ্যালভানির পরীক্ষাগুলোকে নিরীক্ষা করেছিলেন। প্রথমে তিনি পশুবিদ্যুৎ নিয়ে কাজ করেন।
ভোল্টার গবেষণা শীঘ্রই একটি ব্যাটারি আবিষ্কার এর পথ সুগম করে। গ্যালভানি বিশ্বাস করতেন যে পশু থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ পশুর পেলভিস পেশী থেকে আসে। কিন্তু ভোল্টা এর বিরোধিতা করেন।
বোলোনায় গালভানির বাড়িটি সংরক্ষিত এবং কেন্দ্র থেকে দেখা যায়।
গালভানির স্মৃতিস্তম্ভ এটি হলো একটি বড় মার্বেল পাথরের মূর্তি। যাতে তার বিখ্যাত ব্যাঙের পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ অবস্থার অবয়ব ফুঁটে উঠেছে।
লিসিও জিন্নাসিও লুইগি গালভানি। ১৮৬০ সালের এই বিখ্যাত মাধ্যমিক বিদ্যালয়টির নাম করণ করা হয় লুইগি গালভানির নামানুসারে।
উইলিয়াম ফক্সের মতে- গালভানি ছিলেন, "স্বভাবতই সাহসী"। জঁ-লুই-মার্ক আলিবার্ট গালভানি সম্পর্কে বলেন যে তিনি কখনোই তার পাঠ শেষ করতেন না "তার শ্রবণকারীদের উপদেশ না দিয়ে এবং তাদের সেই শাশ্বত প্রভিডেন্সের ধারণায় ফিরিয়ে নিয়ে যান, যা অনেক বৈচিত্র্যময় প্রাণীর জীবনের বিকাশ, সংরক্ষণ।
গ্যালভানি তার জীবনের শেষ পর্যন্ত সক্রিয়ভাবে প্রাণীবিদ্যুৎ নিয়ে পরীক্ষা চালান। ১৭৯৭ সালে ফরাসিরা উত্তর ইতালি দখল করার পর প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নতুন কর্তৃপক্ষের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতঃ একটি শপথ করতে হতো। কিন্তু গ্যালভানি এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেন, তিনি তার অন্যান্য সহকর্মীদের মতো আনুগত্যের শপথ নিতে অস্বীকৃতি জানান। এর ফলে নতুন কর্তৃপক্ষ তাকে সকল একাডেমিক এবং সরকারী পদ থেকে বঞ্চিত করে, যার ফলে তিনি সকল ধরনের আর্থিক সহায়তা থেকেও বঞ্চিত হন। গ্যালভানি ৪ মার্চ, ১৭৯৮ সালে তার ভাইয়ের বাড়িতে,বিষণ্ণতা এবং দারিদ্র্য এর মাঝে, তার মা এবং বাবার উপস্থিতিতে মারা যান। [৬]