হাবাসপুরি হল ভারতের ওড়িশা রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী সুতিভিত্তিক হস্তচালিত তাঁতে বোনা বস্ত্র। হাবাসপুরি শাড়ি হল এই বয়ন শিল্পের একটি প্রধান পণ্য। মূলত ওড়িশার কালাহাণ্ডি জেলার চিচেগুড়া অঞ্চলের খোণ্ড আদিবাসী তাঁতিরা প্রথম হাবাসপুরি শাড়ি বোনা শুরু করেছিল।[১] বয়ন, নকশা এবং উৎপাদনের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্রতার জন্য, এটি ওডিশার ১৪ টি ভৌগোলিক নির্দেশকের মধ্যে একটি হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে।[২][৩] এই শাড়িগুলিতে এই অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন, যেমন কুম্ভ (মন্দির), মাছ, ফুল ইত্যাদির মোটিফ রয়েছে।
হাবাসপুরি তাঁতের শাড়ির নামকরণ করা হয়েছে কালাহাণ্ডি জেলার হাবাসপুর গ্রামের নামানুসারে। সেখানেই উনবিংশ শতকে এই শাড়ি বোনা শুরু হয়েছিল।[১] তবে ভারতীয় স্বাধীনতার সংগ্রামের সময় রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতা ক্ষীণ হতে থাকার সাথে সাথে এই শিল্প ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে। এই তাঁত শিল্প পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন চিচেগুড়ার তাঁতি উগ্রসেন মেহের, তবে সরকারী সহায়তা আরও কমতে থাকায় তাঁতিদের সংখ্যা আরও হ্রাস পায়। এই শিল্পকে বাঁচানোর শেষ প্রচেষ্টা হিসেবে ওড়িশা সরকারের টেক্সটাইল ও তাঁত বিভাগ যুব তাঁতিদের জন্য একটি হাবাসপুরি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করেছে।[৪]
চিচেগুড়া গ্রামের প্রায় ৩০ জন তাঁতির পরিবার হাবাসপুরি তাঁত শিল্পের পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ করছে।[১]
স্বতন্ত্র তাঁতি ও তাঁতিগোষ্ঠী দ্বারা উৎপাদিত হাবাসপুরি শাড়ি এবং অন্যান্য বয়নজাত পণ্যগুলি ওড়িশা সরকারের হ্যান্ডলুম, টেক্সটাইল এবং হ্যান্ডলুম বিভাগের অধীনে সরকারী দোকানগুলিতে বিপণন ও বিক্রয় করা হয়।[৫]