হার্টমুট মিশেল | |
---|---|
জন্ম | |
জাতীয়তা | জার্মান |
মাতৃশিক্ষায়তন | টুবিঙেন বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | ঝিল্লি প্রোটিন সমূহের স্ফটিকীকরণ |
দাম্পত্য সঙ্গী | এলেনা ওলকোভা |
পুরস্কার |
|
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | প্রাণরসায়ন |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট অফ বায়োফিজিক্স |
ওয়েবসাইট | www |
হার্টমুট মিশেল (জন্ম ১৮ই জুলাই ১৯৪৮) হলেন একজন জার্মান প্রাণরসায়নবিদ। অবিচ্ছেদ্য ঝিল্লি প্রোটিনের প্রথম স্ফটিক কাঠামোর নিরূপণের জন্য তিনি ১৯৮৮ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। এটি সালোকসংশ্লেষের জন্য প্রয়োজনীয় একটি ঝিল্লি-আবদ্ধ জটিল প্রোটিন এবং সহকারক।[২][৩][৪][৫]
হার্টমুট ১৯৪৮ সালের ১৮ই জুলাই লুডভিসবার্গে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি কার্ল এবং ফ্রিদা মিশেলের জ্যেষ্ঠ পুত্র ছিলেন। এগারো বছর বয়সে স্থানীয় গ্রন্থাগারের সদস্য হবার পর তিনি বইয়ের জগতে ডুবে গিয়েছিলেন, প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে চারটি বই তিনি শেষ করতেন। তাঁর পড়ার বিষয়ের মধ্যে প্রত্নতত্ত্ব থেকে শুরু করে জাতিতত্ত্ব, ভূগোল, প্রাণিবিদ্যা ইত্যাদি নানা ধরনের বই থাকত। বাধ্যতামূলক সামরিক পরিষেবা দেওয়ার পরে, তিনি টুবিঙেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়ন অধ্যয়ন করেছিলেন। টুবিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার পরে, ১৯৭৪ সালে, ডায়েটার ওস্টারহেল্টের পরীক্ষাগারে তিনি জৈব রসায়ন নিয়ে তাঁর ডিপ্লোমার পরীক্ষামূলক অংশটি সম্পন্ন করেন।[৬]
১৯৭৭ সালের জুন মাসে ডক্টরেট প্রাপ্ত করার পর ডিয়েটার ওস্টারহেল্টের সহায়তায় তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছিলেন, এবং চার সপ্তাহের মধ্যেই তাঁরা ব্যাকটিরিওরোডপসিনের একটি নতুন দ্বি-মাত্রিক ঝিল্লি স্ফটিক পেয়েছিলেন। ১৯৮১ সালের জুলাইয়ের শেষে, একটি নতুন বিচ্ছিন্নতা প্রক্রিয়ার ক্রমবিকাশের পরে তিনি বেগুনি ব্যাকটিরিয়া রোডোপসিউডোমোনাস ভিরিডিস থেকে সালোকসংশ্লেষণ কেন্দ্রের প্রথম স্ফটিক পেয়েছিলেন। ১৯৮১ সালের সেপ্টেম্বরে, ওল্ফ্রাম বোদকে নিয়ে তিনি প্রথম প্রতিক্রিয়া কেন্দ্রের স্ফটিকটি এক্স-রে করেছিলেন, এবং সেটি চমৎকার মানের হয়েছিল। ১৯৮৮ সালে তিনি ইয়োহান ডিসেনহফার এবং রবার্ট হুবারের সাথে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। মিশেল হুবার এবং ডিসেনহফার একত্রে একটি জটিল প্রোটিনের ত্রি-মাত্রিক কাঠামো নির্ধারণ করেছিলেন। এই ঝিল্লি প্রোটিন কমপ্লেক্স, যাকে সালোকসংশ্লেষ প্রতিক্রিয়া কেন্দ্র বলা হয়, একটি সাধারণ ধরনের সালোকসংশ্লেষের সূচনা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার জন্য পরিচিত ছিল। ১৯৮২ সাল থেকে ১৯৮৫ সালের মধ্যে, এই তিনজন বিজ্ঞানী প্রোটিন কমপ্লেক্স তৈরি করে এমন ১০,০০০ টিরও বেশি পরমাণুর সঠিক বিন্যাস নির্ধারণ করার জন্য এক্স-রে স্ফটিকবীক্ষণ ব্যবহার করেছিলেন। তাদের গবেষণার ফলে সালোকসংশ্লেষের প্রক্রিয়াগুলির সাধারণভাবে বোঝা সহজ হয়েছিল, উদ্ভিদ এবং ব্যাকটেরিয়াগুলির সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়াগুলির মধ্যে সাদৃশ্যগুলি সামনে এসেছিল এবং ঝিল্লি প্রোটিনকে স্ফটিকীকরণের জন্য একটি পদ্ধতি স্থাপিত হয়েছিল।[৭]
সাফল্যের অন্যতম ফলাফল হিসাবে তিনি অনেক স্থান থেকে কাজের প্রস্তাব পেয়েছিলেন। তার মধ্যে একটি গ্রহণ করে তিনি ১৯৮৭ সালের অক্টোবর থেকে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট/মেইনের ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর বায়োফিজিক্সের আণবিক ঝিল্লি জীববিজ্ঞান বিভাগের পরিচালক।[৬] এছাড়াও তিনি ফ্রাঙ্কফুর্টের গ্যেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক।
১৯৮৬ সালে, তিনি ডয়শে ফোরসুংসেমেইমেনশ্যাফট থেকে গটফ্রিড উইলহেলম লিবনিজ পুরস্কার পেয়েছিলেন, এটি জার্মান গবেষণার ক্ষেত্রে দেওয়া সর্বোচ্চ সম্মান। ১৯৮৮ সালে, তিনি রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি ১৯৮৯ সালে উট্রেশট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজোয়েট সেন্টার ফর বায়োমোলিকুলার রিসার্চ থেকে বিজোয়েট পদক পেয়েছিলেন।[৮] তিনি ১৯৯৫ সালে রয়েল নেদারল্যান্ড একাডেমি অফ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের বিদেশী সদস্য হন।[৯] তিনি ২০০৫ সালে রয়্যাল সোসাইটির বিদেশী সদস্য (ফরমেমআরএস) নির্বাচিত হন।[১]