পূর্ব গোদাবরী জেলা తూర్పు గోదావరి జిల్లా | |
---|---|
অন্ধ্রপ্রদেশের জেলা | |
![]() অন্ধ্রপ্রদেশে পূর্ব গোদাবরীর অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | অন্ধ্রপ্রদেশ |
প্রশাসনিক বিভাগ | পূর্ব গোদাবরী জেলা |
সদরদপ্তর | কাকিনাড়া |
তহশিল | ৫৯[১] |
সরকার | |
• লোকসভা কেন্দ্র | কাকিনাডা, অমলাপুরম, রাজামুন্দ্রি |
• বিধানসভা আসন | ১৯ |
আয়তন | |
• মোট | ১০,৮০৭ বর্গকিমি (৪,১৭৩ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৫১,৫১,৫৪৯[২] |
• পৌর এলাকা | ২৫.৫২% |
জনতাত্ত্বিক | |
• সাক্ষরতা | ৭১.৩৫% |
• লিঙ্গানুপাত | ১০০৫ |
প্রধান মহাসড়ক | ৫ নং জাতীয় সড়ক |
স্থানাঙ্ক | ১৬°৫৭′ উত্তর ৮২°১৫′ পূর্ব / ১৬.৯৫০° উত্তর ৮২.২৫০° পূর্ব |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
পূর্ব গোদাবরী জেলা(তেলুগু: తూర్పు గోదావరి జిల్లా, প্রতিবর্ণী. তূর্পু গোদাভ়রি জিল্লা) হল ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের উপকূলীয় অন্ধ্র অঞ্চলের একটি জেলা। এই জেলার সদর শহর হল কাকিনাড়া। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, এই জেলার জনসংখ্যা ৫,১৫১,৫৪৯।[২] রাজামুন্দ্রি ও কাকিনাড়া হল জনসংখ্যার হিসেবে গোদাবরী জেলাদ্বয়ের দুটি বৃহত্তম শহর।
১৮৫৯ সালে রাজামুন্দ্রি জেলা বিভাজিত করে গোদাবরী ও কৃষ্ণা জেলা গঠিত হয়। ১৯২৫ সালে আবার গোদাবরী জেলা বিভাজিত করে পূর্ব ও পশ্চিম গোদাবরী জেলা গঠিত হয়।[৩][৪] ১৯৫৬ সালের নভেম্বর মাসে নিজাম, সেডেড ও সরকার যুক্ত করে অন্ধ্রপ্রদেশ গঠিত হয়। এরপর ১৯৫৯ সালে ভদ্রাচলম ও নাগুরু তালুকদ্বয় (১৯৫৯ সালে ছিল দুটি তালুক। পরে তা ওয়াজেদু, বেঙ্কটপুরম, চেরলা, দুম্মুগুদেম, ভদ্রাচলম, নেল্লিপাকা, চিন্টুরু, কুনাবরম ও বররামচন্দ্রপুরম মণ্ডলে বিভক্ত হয়।) নিয়ে গঠিত পূর্ব গোদাবরী জেলার ভদ্রাচলম রাজস্ব বিভাগ খাম্মাম জেলার সঙ্গে যুক্ত হয়।[৫] ২০১৪ সালের জুন মাসে অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য পুনর্গঠন ও বিভাজনের সময় ভদ্রাচলম (ভদ্রাচলম মন্দির ছাড়া), নেল্লিপাকা, চিন্টুরু, কুনাবরম ও বররামচন্দ্রপুর মণ্ডলগুলি আবার পূর্ব গোদাবরী জেলার সঙ্গে যুক্ত হয়।[৬]
দাক্ষিণাত্যের অন্যান্য অঞ্চলের মতো পূর্ব গোদাবরী জেলার ভূখণ্ডটিও প্রাচীনকালে নন্দ ও মৌর্য সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের পর এই জেলা সাতবাহন সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। ৩য় শতাব্দীতে বিখ্যাত কবি রাজা হালের রাজত্বকাল পর্যন্ত এই জেলা সাতবাহনদের রাজ্যভুক্ত থাকে। প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের ফলে প্রাপ্ত মুদ্রা থেকে জানা গিয়েছে, এই জেলা গৌতমীপুত্র সাতকর্ণী, বাশিষ্ঠী-পুত্র পুলুময়ী ও যজ্ঞশ্রী সাতকর্ণীর রাজ্যভুক্ত ছিল। ৩৫০ খ্রিষ্টাব্দে গুপ্ত সম্রাট সমুদ্রগুপ্ত এই জেলার পিষ্টপুরা ও অবমুক্ত দখল করেন। সমুদ্রগুপ্তের পর ৩৭৫ থেকে ৫০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত পূর্ব গোদাবরী মাথারা রাজবংশের অধীনে ছিল। এই রাজবংশের প্রাচীনতম যে রাজার নাম জানা যায়, তিনি হলেন মহারাজা শক্তি বর্মা।
৫ম শতাব্দীতে প্রথম বিক্রমেন্দ্র বর্মার রাজত্বকালে এই জেলা বিষ্ণুকুণ্ডিন রাজবংশের অধীনে আসে। নথি থেকে জানা যায়, বিষ্ণুকুণ্ডিনদের রাজত্ব পূর্ব গোদাবরী ছাড়াও বিশাখাপত্তনম জেলা, পশ্চিম গোদাবরী জেলা, কৃষ্ণা জেলা ও গুন্টুর জেলায় পরিব্যাপ্ত ছিল। ইন্দ্র ভট্টারক বাশিষ্ঠ কূলের শাসকদের পরাজিত করে এই অঞ্চলে বিষ্ণুকুণ্ডিন রাজত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কিন্তু কিছুকাল পরেই বিষ্ণুকুণ্ডিনরা কলিঙ্গ বাহিনীর কাছে পরাজিত হয়। ইন্দ্র ভট্টারকের পরে সিংহাসনে কয়েক জন রাজা বসেছিলেন। এঁদের মধ্যে দ্বিতীয় মাধব বর্মা ও মনচন্ন ভট্টারক তাদের রাজত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছিলেন। দ্বিতীয় মাধব বর্মা এই পরিবারের শেষ গুরুত্বপূর্ণ শাসক।
৭ম শতাব্দীতে বাদামী চালুক্য সম্রাট দ্বিতীয় পুলকেশী ও তার ভাই কুব্জ বিষ্ণুবর্ধন পিষ্টপুরা দখল করেন। কুব্জ বিষ্ণুবর্ধন প্রতিষ্ঠিত পূর্ব চালুক্য সাম্রাজ্যের রাজধানী প্রথমে ছিল পিষ্টপুরা। পরে বেঙ্গি ও শেষে রাজামুন্দ্রিতে পূর্ব চালুক্য সাম্রাজ্যের রাজধানী স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে অনেক শাসক এই সাম্রাজ্য শাসন করেছিলেন। এর ইতিহাসে সিংহাসনের অধিকার নিয়ে বিরোধের ঘটনাও অনেক ঘটেছিল। চালুক্য প্রথম ভীম দ্রাক্ষা রামমে একটি শিব মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। ৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে পেদা কাল্লুর (কুর্নুল জেলা) জটা চোড ভীম এই রাজবংশের দানার্ণবকে হত্যা করে বেঙ্গি দখল করেন। দানার্ণবের দুই পুত্র প্রথম শক্তি বর্মা ও বিমল আদিত্য রাজ্য থেকে পালিয়ে গিয়ে চোল রাজা প্রথম রাজরাজ চোলের রাজসভায় শরণ নেন। তাদের হয়ে প্রথম রাজরাজ চোল বেঙ্গি দখল করেন এবং জটা চোড ভীমকে হত্যা করেন। কল্যাণীর পশ্চিম চালুক্য রাজবংশের সত্য রায় বেঙ্গিতে চোল সাম্রাজ্যের প্রভাব মেনে নিতে পারেননি। সেই সময় এই অঞ্চলে চোল ও চালুক্যদের মধ্যে অনেকগুলি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। ১০৭৫ খ্রিষ্টাব্দে সপ্তম বিজয় আদিত্যের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে পূর্ব চালুক্য রাজবংশেরও পতন ঘটে।
সপ্তম বিজয় আদিত্যের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রথম কুলোতুঙ্গা চোল (রাজেন্দ্র চালুক্য) চোলেদের সপক্ষে যুদ্ধ করে চালুক্য চোল প্রদেশ স্থাপন করেন। বেঙ্গি রাজ্যের অবশিষ্টাংশের মতো এই জেলাও তাদের সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। এই জেলার অধিকাংশই তার বিশ্বস্ত দলপতি বেলানতি চোডদের অধীনে ছিল। এই রাজবংশের বিখ্যাত শাসকেরা ছিলেন প্রথম গোঙ্কা, প্রথম রাজেন্দ্র চোড, দ্বিতীয় গোঙ্কা ও দ্বিতীয় রাজেন্দ্র চোড। পশ্চিম চালুক্য সাম্রাজ্যের ষষ্ঠ বিক্রমাদিত্য অল্প সময়ের জন্য এই অঞ্চল দখল করেছিলেন। কিন্তু চালুক্য চোল ও বেলানতি চোডরা আবার তাদের রাজ্য পুনরুদ্ধার করেন। বেলানতি দলপতিরা কোনার হৈহয়, দ্বিতীয় গোঙ্কা ও কাকতীয় রাজবংশের রুদ্রের বিদ্রোহ দমন করেছিলেন।
দ্রাক্ষা রামম ও অন্যান্য অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত ১৩শ শতাব্দীর শিলালিপিগুলি এই অঞ্চলের ইতিহাসের উপর আলোকপাত করেছে। কাকতীয় রাজবংশের দ্বিতীয় প্রোল পশ্চিম চালুক্য সাম্রাজ্য থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং চালুক্য চোলদের প্রজায় পরিণত হন। তার পুত্র রুদ্র চালুক্য চোল সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় রাজরাজের কাছ থেকে গোদাবরী বদ্বীপ অঞ্চলটি উপহার হিসেবে পান। বেলানদু চোডরা গোদাবরী বদ্বীপে রুদ্রের কর্তৃত্ব মেনে নিতে অস্বীকার করেন। বেলানতি রাজা দ্বিতীয় রাজেন্দ্র চোড তার মন্ত্রী দবন প্রেগগদের নেতৃত্বে রুদ্রের বিরুদ্ধে সেনা পাঠিয়েছিলেন। রুদ্রের পর তার ভাই মহাদেব সিংহাসনে বসেছিলেন। তিনি দেবগিরির যাদবদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে নিহত হন। তার পুত্র গণপতি কাকতীয় সিংহাসনে বসেন। তিনি নেল্লোর চোডদের সহায়তায় উত্তরের কলিঙ্গ সেনাবাহিনী, মাদুরাইয়ের পাণ্ড্য ও চোলদের পরাজিত করেন। গণপতি ও তার কন্যা রুদ্রামা দেবীর রাজত্বকালে গোদাবরী উপত্যকায় কাকতীয় শক্তি অপ্রতিহত ছিল। ১২৯৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রতাপ রুদ্র সিংহাসনে আরোহণ করেন। তার রাজত্বকালে দিল্লির সুলতানেরা এই অঞ্চলে হানা দিতে শুরু করেন। ১৩২৩ খ্রিষ্টাব্দে মহম্মদ-বিন-তুঘলকের হাতে প্রতাপ রুদ্র পরাজিত হন। এরপর এই জেলা দিল্লি সুলতানির অধীনে আসে। মহম্মদ-বিন-তুঘলক দক্ষিণ ভারতকে পাঁচটি প্রদেশে ভাগ করে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ করেছিলেন।
দিল্লির সুলতানেরা মুসুনুরি নায়ক বংশের প্রোলয়দের অধীনস্থ স্থানীয় শাসকদের বিদ্রোহের সম্মুখীন হয়েছিলেন। আদ্দানকি, কোপুলা, তেলগ ও পীঠপুরমের রেড্ডিরা এবং রচকোন্ডার রেচেরলা বেলমরা তাদের সক্রিয়ভাবে সাহায্য করেছিলেন। ওয়ারাঙ্গল স্বাধীনতা অর্জন করেছিল এবং তেলুগু দেশ এই স্বাধীনতা পঞ্চাশ বছর উপভোগ করেছিল। মুসুনুরি কাপায় নায়ক তোয়েতি আনবোতা নায়ক ও মুম্মাদি নায়কের (কোরুকোন্ডা) আত্মীয়দের গোদাবরী অঞ্চলের শাসনকর্তা হিসেবে নিযুক্ত করেন। মুম্মুদি নায়ক কাপায় নায়কের ভ্রাতুষ্পুত্রীকে বিবাহ করেন। মুম্মুদি নায়ক ১৩৮৮ সালে মারা যান। তার পুত্ররা ৪০ বছর রাজ্যশাসন করেন। পরে তারা কোন্ডাবিদুর রেড্ডিদের হাতে পরাজিত হন এবং তাদের রাজ্য কোন্ডাদিভুর অন্তর্ভুক্ত হয়। এরপর কলিঙ্গের চতুর্থ নরসিংহ দেব এই অঞ্চল জয় করতে সমর্থ হন। কিন্তু রাজামুন্দ্রির আনাবোতা রেড্ডির হাতে পরাজিত হন। তার পর এই অঞ্চল শাসন করেন একই রাজবংশের অনবেম রেড্ডি ও কুমারগিরি।
কুমারগিরির সঙ্গে রচকোন্ডার রাচেরল ও কলিঙ্গের শাসকদের অনেকগুলি যুদ্ধ হয়েছিল। তিনি তার সেনাপতি কাতয় বেমা ও রাজপুত্র অনবোতাকে পূর্বাঞ্চল জয় করতে প্রেরণ করেন। এর ফলে সীমাচলম পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চল তার রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। নব্য বিজিত অঞ্চল রেড্ডি রাজ্যের অন্তর্গত হওয়ার পর পূর্ব রাজ্য নামে একটি আলাদা প্রদেশ গঠিত হয়। এই প্রদেশের রাজধানী ছিল রাজামহেন্দ্রপুরম এবং শাসনকর্তা ছিলেন অনবোতা। ১৩৯৫ নাগাদ তার অকালমৃত্যুর পর কাতয় বেমা ও তার শ্যালক কুমারগিরিকে রাজ্যের প্রতি তাদের আনুগত্যের স্বীকৃতি স্বরূপ রাজামহেন্দ্র রাজ্য দান করা হয়। কাতয় বেমা রাজামহেন্দ্রপুরম চলে গেলে পেদা কোমতি বেমা কোন্ডাবিদুর সিংহাসন দখল করে বসেন।
কাতয় বেমা পেদা কোমতি বেমার কর্তৃত্ব স্বীকার করে নেন। কাতয় বেমা এরুব শাসনকর্তা অন্নদেব চোডের সঙ্গেও সংঘর্ষে লিপ্ত হন। অন্নদেব চোড রাজামহেন্দ্র রাজ্যের একটি বড়ো অংশ দখল করেছিলেন। কাতয় বেমা তাকে পরাজিত করে বিতাড়িত করেন। পরে অন্নদেব চোডের সঙ্গে একটি যুদ্ধে কাতয় বেমা নিহত হন। তার মৃত্যুর পর অল্লদ রেড্ডি কাতয় বেমার পুত্র কোমারগিরিকে রাজামহেন্দ্রপুরমের সিংহাসনে বসান এবং তার প্রতিনিধি হিসেবে রাজ্যশাসন করতে থাকেন। কোমারগিরির অকালমৃত্যু ঘটেছিল। ১৪২০ সালে মৃত্যু পর্যন্ত অল্লদ রেড্ডি এই অঞ্চল শাসন করেছিলেন। ১৪২৩ সালে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের শাসক দ্বিতীয় দেব রায় তৎকালীন শাসক বীর ভদ্রকে পরাজিত করে এই রাজ্য অধিকার করেন।
১৪৭০ সালে কপিলেশ্বর গজপতির মৃত্যুর পর তার পুত্র হাম্বীর ও পুরুষোত্তমের মধ্যে সিংহাসনের অধিকার নিয়ে যুদ্ধ হয়েছিল। বাহমানিদের সাহায্যে হাম্বীর সিংহাসন দখলে সমর্থ হন। কিন্তু তিনি বেশিদিন রাজ্যশাসন করতে পারেননি। পুরুষোত্তম হাম্বীরকে ক্ষমতাচ্যুত করেন এবং রাজামুন্দ্রি ও অন্যান্য অঞ্চল জয়ের চেষ্টা করেন। কিন্তু তৃতীয় মহম্মদ শাহ তার বাহিনী নিয়ে রাজামুন্দ্রিতে উপস্থিত হয়। যুদ্ধটি যদিও একটি শান্তি চুক্তির মাধ্যমে শেষ হয়েছিল। তৃতীয় মহম্মদ শাহের মৃত্যুর পর পুরুষোত্তম গজপতি সমগ্র গোদাবরী-কৃষ্ণা দোয়াব অঞ্চল জয় করেন এবং বাহমানি বাহিনীকে কোন্ডাদিভু পর্যন্ত দক্ষিণে বিতাড়িত করেন। তার মৃত্যুর পর তার পুত্র প্রতাপরুদ্র সিংহাসনে বসেন। বিজয়নগরের সম্রাট কৃষ্ণ দেব রায় তার রাজ্য অধিকার করে রাজামুন্দ্রি দখল করেন। যদিও একটি চুক্তির মাধ্যমে কৃষ্ণ দেব রায়ের সঙ্গে নিজের কন্যার বিবাহ দিয়ে প্রতাপরুদ্র কৃষ্ণ দেব রায়ের বিজিত অঞ্চলের উত্তরাংশ ফেরত পান।
অস্থির পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে গোলকোন্ডার কুতুব শাহি শাসক সুলতান কুলি কুতুব শাহ উপকূলীয় অঞ্চল আক্রমণ করেন এবং রাজামুন্দ্রি ও পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলি দখল করে নেন। সুলতান কুলিকে তার পুত্র জামশিদ কুতুব শাহ হত্যা করেন এবং তার সিংহাসনে বসেন। এরপর তার পৌত্র সুভান কুতুব শাহ সিংহাসনে বসেছিলেন। তার শাসনকালে ইব্রাহিম কুতুব শাহকে শিতাব খান ও বিদ্যাধরের আক্রমণের সম্মুখীন হতে হয়েছিল। এই রাজবংশের শেষ শাসক আবদুল হাসান তানা শাহ ১৬৭২ থেকে ১৬৮৭ সাল অবধি রাজ্য শাসন করেছিলেন।
১৬৮৭ সালে আওরঙ্গজেব গোলকোন্ডার সুলতানি দখল করেন। এর বর্তমান পূর্ব গোদাবরী জেলার ভূখণ্ড সহ গোলকোন্ডা মুঘল সাম্রাজ্যের বাইশটি প্রদেশের অন্যতম প্রদেশে পরিণত হয়। নিজাম-উল-মুলক (গোলকোন্ডার শাসনকর্তা) ফৌজদার নামের সামরিক আধিকারিকদের সাহায্যে প্রশাসন পরিচালনা করতেন। বিজিয়ানগরমের নতুন রাজা পশুপতি আনন্দ গজপতি রাজু ইংরেজদের আমন্ত্রণ জানান উত্তর সরকার দখল করার জন্য। ফরাসি ও ইংরেজদের মধ্যে যে বিরোধ বেধেছিল, তার পরিণতিতে ইয়ানাম বাদে সমগ্রহ উত্তর সরকারের অধিকার ফরাসিদের হাত থেকে চলে যায়।
সালাবত জংকে তার ভ্রাতা নিজাম আলি খান সিংহাসনচ্যুত করেন। তিনি হাসান আলি খানকে রাজামুন্দ্রি ও চিকাকোল লিজ দেন। ১৭৬৫ সালের অগস্ট মাসে লর্ড রবার্ট ক্লাইভ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হয়ে তৎকালীন মুঘল সম্রাট শাহ আলমের কাছ থেকে একটি ‘ফরমান’ আদায় করেন। এই ফরমানে উত্তর সরকারের অধিকার কোম্পানির হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে এটি ১৭৬৬ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত গোপন ছিল। ব্রিটিশরা কোন্ডাপল্লির দুর্গটি দখল করে নেয়। জেনারেল সিলাউডকে প্রয়োজনে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মছলিপত্তনমে পাঠানো হয়। নিজামরাও যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে শুরু করে। ১৭৬৬ সালের ১২ নভেম্বর কোম্পানির সঙ্গে একটি চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধ এড়ানো হয়। এই চুক্তি বলে সরকার প্রত্যর্পণ করা হয় এবং নিজামের সহায়তায় সেনাবাহিনী রাখা হয়।
১৭৬৮ সালের ১ মার্চ সাক্ষরিত একটি দ্বিতীয় চুক্তির মাধ্যমে নিজাম শাহ আলমের অনুদানের বৈধতা স্বীকার করে নেন এবং সরকারগুলি কোম্পানিকে ছেড়ে দেন। পরিবর্তে তিনি বাৎসরিক ৫০,০০০ টাকা মৈত্রী ভাতা লাভ করেন। শেষে ১৮২৩ সালে উত্তর সরকারের উপর নিজামের কর্তৃত্ব শেষ হয় এবং এই অঞ্চল ব্রিটিশদের অধীনে আসে। এই অঞ্চল মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত হয় এবং গোদাবরী জেলা গঠিত হয়। গোদাবরী জেলাই বর্তমানে পূর্ব ও পশ্চিম গোদাবরী জেলায় বিভক্ত হয়েছে।
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর পূর্বতন ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি ভারতের মাদ্রাজ রাজ্য হয়। ১৯৫৩ সালে মাদ্রাজ রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলি নিয়ে নতুন অন্ধ্র রাজ্য গঠিত হয়। এই সময় গোদাবরী জেলা অন্ধ্র রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৫৪ সালে ফ্রান্স ফরাসি উপনিবেশ ইয়ানাম ভারতের হাতে প্রত্যর্পণ করে। কিন্তু প্রত্যর্পণ চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল এই জেলার পৃথক অস্তিত্ব বজায় রাখতে হবে। এই শর্ত অধুনা পুদুচেরি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের অন্যান্য দক্ষিণ ভারতীয় ভূখণ্ডগুলির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য ছিল। সেই কারণে ইয়ানাম গোদাবরী জেলার সঙ্গে মিশে যায়নি।
পূর্ব গোদাবরী জেলার আয়তন ১০,৮০৭ বর্গকিলোমিটার (৪,১৭৩ বর্গমাইল)।[৭] এই জেলার আয়তন ইন্দোনেশিয়ার সুম্বা দ্বীপের আয়তনের প্রায় সমান।[৮] এই জেলার উত্তর দিকে বিশাখাপত্তনম জেলা, উত্তরপশ্চিম দিকে ওডিশার মালকানগিরি জেলা, পূর্ব দিকে তেলঙ্গানার খাম্মাম জেলা, দক্ষিণ দিকে বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিম দিকে পশ্চিম গোদাবরী জেলা অবস্থিত। পুদুচেরির ইয়ানাম জেলার একটি ছোটো অংশ (১২ বর্গ মাইল (৩০ বর্গ কিলোমিটার)) এই জেলার মধ্যে অবস্থিত।
২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, পূর্ব গোদাবরী জেলার জনসংখ্যা ৫১,৫১,৫৪৯।[৯] এই জেলার জনসংখ্যা সংযুক্ত আরব আমিরশাহি রাষ্ট্র[১০] বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় সমান। জনসংখ্যার হিসেবে ভারতের ৬৪০টি জেলার মধ্যে এই জেলার স্থান ১৯তম এবং অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের জেলাগুলির মধ্যে ২য়।[৯] পূর্ব গোদাবরী জেলার জনঘনত্ব ৪৭৭ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (১,২৪০ জন/বর্গমাইল)।[৯] ২০০১-২০১১ দশকে এই জেলার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ৫.১%।[৯] পূর্ব গোদাবরী জেলার লিঙ্গানুপাতের হার প্রতি ১০০০ জন পুরুষে ১০০৫ জন নারী[৯] এবং সাক্ষরতার হার ৭১.৩৫%।[৯]
পূর্ব গোদাবরী জেলার মোট জনসংখ্যার মধ্যে ২৫,৬৯,৪১৯ জন পুরুষ এবং ২৫,৮২,১৩০ জন নারী। ২০০১ সালের জনগণনার পর এই জেলায় মোট জনসংখ্যার হারে ৫.১০% পরিবর্তন এসেছে। ২০০১ সালের জনগণনার সময় এই জেলায় জনঘনত্বের হার ছিল ৪৫৪, যা ২০১১ সালে হয়েছে ৪৭৭।[১১]
২০০৮-২০০৮ সালে ইন্টারন্যাশানাল ইনস্টিটিউট ফর পপুলেশন সায়েন্সেস পূর্ব গোদাবরী জেলার ৩৮টি গ্রামে ১০১৯টি বাড়িতে একটি সমীক্ষা চালায়।[১২] এই সমীক্ষা থেকে জানা যায়, ৯২.৫% বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ আছে, ৯৬.৭% বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ আছে, ৫০.৪% বাড়িতে শৌচাগার আছে এবং ৩০.৯% পাকা বাড়িতে বাস করেন।[১২] এই জেলার ২৮.৬% বালিকার বিয়ে বিবাহযোগ্য বয়স অর্থাৎ ১৮ বছরে পদার্পণের আগেই হয়ে যায়। ৭৯% ব্যক্তির একটি বিপিএল রেশন কার্ড আছে।[১২]
পূর্ব গোদাবরী জেলা সাতটি রাজস্ব বিভাগে বিভক্ত। এগুলি হল: অমলাপুরম, এটাপাকা, কাকিনাডা, পেদ্দাপুরম, রাজামুন্দ্রি, রামচন্দ্রপুরম ও রামপাচোদাবরম। এই রাজস্ব বিভাগগুলি আবার ৫৯টি মণ্ডলে বিভক্ত।[১৩][১৪][১৫] মোট ১,৩৭৪টি গ্রাম, ২টি পৌরসংস্থা, ৭টি পুরসভা ও ১০টি সেন্সাস টাউন নিয়ে এই ৫৯টি মণ্ডল গঠিত। অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যে মাত্র দুটি জেলাতেই দুটি পৌরসংস্থা আছে। একটি চিত্তুর এবং অপরটি এই পূর্ব গোদাবরী জেলা। এই জেলার দুটি পৌরসংস্থা হল কাকিনাডা ও রাজামুন্দ্রি। জেলার ৭টি পুরসভা হল অমলাপুরম, মন্ডপেটা, পেদ্দাপুরম, পীঠপুরম, রামচন্দ্রপুরম, সামালকোটা ও তুনি। ডলেশ্বরম, হুকুমপেটা ও কাতেরু সেন্সাস টাউনদুটি রাজামুন্দ্রি পৌরসংস্থার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর এই জেলার অবশিষ্ট ৭টি সেন্সাস টাউন হল আরেমপুদি, বন্ডারুলঙ্কা, চিদিগা, মোরামপুদি, রামনায়াপেটা, রামপাচোদাবরম ও সূর্যরাওপেটা।[১৬]
পোলাবরম অধ্যাদেশ অনুসারে চিন্টুরু, কুনাবরম, নেল্লিপাকা ও বররামচন্দ্রপুরম মণ্ডলগুলি পূর্ব গোদাবরী জেলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।[১৭][১৮]
এই জেলার ৭টি রাজস্ব বিভাগের অন্তর্গত ৬৪টি মণ্ডল হল:[১৬]
# | অমলাপুরম বিভাগ |
এটাপাকা বিভাগ[১৪] |
কাকিনাডা বিভাগ |
পেদ্দাপুরম বিভাগ |
রাজামুন্দ্রি বিভাগ |
রামচন্দ্রপুরম বিভাগ[১৯] |
রামপাচোদাবরম বিভাগ |
---|---|---|---|---|---|---|---|
১ | আত্রেয়পুরম | চিন্টুরু | গোল্লাপ্রোলু | আদ্দাটিগালা | অলমেরু | অনপার্থি | দেবীপত্তনম |
২ | আইনাভিল্লি | কুনাবরম | কাকিনাডা (গ্রামীণ) | গন্দেপাল্লে | গোকাবরম | বিক্কাভোলু | গঙ্গাবরম |
৩ | অল্লবরম | নেল্লিপাকা | কাকিনাডা (শহরাঞ্চলীয়) | জগ্গমপেটা | কাদিয়াম | কে. গঙ্গাবরম | রামপোচাদাবরম |
৪ | অমলাপুরম | বররামচন্দ্রপুরম | করপা | কিরলামপুদি | কোরুকোন্ডা | কাজুলুরু | মারেদুমিল্লি |
৫ | আম্বাজিপেটা | কোথাপাল্লে | কোটানন্দুরু | পামারু | কপিলেশ্বরপুরম | রাজাবোম্মাঙ্গি | |
৬ | কাতরেনিকোন্টা | পীঠপুরম | পেদ্দাপুরম | রাজামুন্দ্রি | মন্ডপেটা | ওয়াই. রামাবরম | |
৭ | কোথাপেটা | সামালকোটা | প্রাথীপ্রোদু | রাজামুন্দ্রি (শহরাঞ্চলীয়) | পেদ্দাপুডি | ||
৮ | মালিকিপুরম | থাল্লারেবু | রৌথুলাপুডি | রাজনগরম | রামচন্দ্রপুরম | ||
৯ | মামিদিকুদুরু | শঙ্খাবরম | সীতানগরম | রঙ্গমপেটা | |||
১০ | মুম্মিদিবরম | তোনদাঙ্গি | রায়াবরম | ||||
১১ | পি. গন্নাবরম | তুনি | |||||
১২ | পোলাবরম | ইয়েলেশ্বরম | |||||
১৩ | রাবুলাপেলম | ||||||
১৪ | রাজোল | ||||||
১৫ | সখিনেতিপল্লি | ||||||
১৬ | উপ্পলগুপ্তম |
পূর্ব গোদাবরী জেলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এই জেলায় অন্ধ্রপ্রদেশের সংস্কৃতির সত্যকার প্রতিফলন ঘটেছে। পূর্ব গোদাবরী জেলা বেদ-পণ্ডিত, গোদাবরী নদী ও জেলাবাসীর আতিথেয়তার জন্য খ্যাত। একটি মত অনুসারে, তেলুগু ভাষার উৎপত্তি ঘটেছিল এই জেলার রাজামুন্দ্রি বা রাজামাহেন্দ্রী শহরে।
পূর্ব গোদাবরী জেলায় সংস্কৃতি, সংগীত, শিল্পকলা ও চলচ্চিত্রের একাধিক ব্যক্তিত্ব জন্মগ্রহণ করেছেন। কবি ও লেখক দেবুলাপল্লি কৃষ্ণশাস্ত্রী, সংগীতজ্ঞ এম. বালমুরলীকৃষ্ণন, পি. বি. শ্রীনিবাস, আদুর্থি সুব্বা রাও, সি. পুল্লাইয়া, অভিনেত্রী জয়া প্রদা এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী, সমাজকর্মী ও রাজনীতিবিদ দুর্গাবাই দেশমুখ এই জেলার ব্যক্তিত্ব।
পূর্ব গোদাবরী জেলা দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে রেল, সড়ক, জল ও আকাশপথে সুসংযুক্ত। চেন্নাই ও হাওড়ার মধ্যে সংযোগ-রক্ষাকারী ৫ নং জাতীয় সড়ক এই জেলার উপর দিয়ে গিয়েছে। রাজামুন্দ্রি, তুনি ও সামালকোট এই জেলার গুরুত্বপূর্ণ রেল জংশন। চেন্নাই ও হাওড়ার মধ্যে সংযোগ-রক্ষাকারী রেল লাইনটিও এই জেলার উপর দিয়ে গিয়েছে। জেলায় একটি বিমানবন্দর আছে। এটি হল রাজামুন্দ্রি বিমানবন্দর। এটি রাজামুন্দ্রির নগরকেন্দ্র থেকে ১০ কিলোমিটার ও জেলাসদর কাকিনাডা থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। রাজামুন্দ্রি থেকে হায়দ্রাবাদ, চেন্নাই, বিজয়ওয়াড়া, বেঙ্গালুরু ইত্যাদি শহরে নিয়মিত বিমান চলাচল করে। কাকিনাডা একটি গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রবন্দর। ভারতের পূর্ব উপকূলে এই বন্দরের স্থান চেন্নাই, পারাদীপ, কলকাতা ও বিশাখাপত্তনম বন্দরের পরেই।
পূর্ব গোদাবরী জেলার রাজামুন্দ্রিতে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত। এগুলি হল আদিকবি মান্নায়া বিশ্ববিদ্যালয় (রাজামুন্দ্রি), তেলুগু বিশ্ববিদ্যালয়, আচার্য এন. জি. রঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও পেট্রোলিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া আছে জওহরলাল নেহেরু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কাকিনাডা, ডিস্ট্রিক্ট ইনস্টিটিউট অফ এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং (ডিআইইটি), রাজামুন্দ্রি। শেষোক্ত প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮৯ সালে স্থাপিত হয় শিক্ষক-পদপ্রার্থী ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে। এগুলি ছাড়াও অনেক ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিক্যাল, আইন, ফার্মাসি, পলিটেকনিক ও স্নাতকোত্তর কলেজ আছে এই জেলায়। এই জেলার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় হল রঙ্গরায় মেডিক্যাল কলেজ (কাকিনাডা), জিএসকেএম ল কলেজ, রাজীব গান্ধী ইনস্টিটিউট অফ ল, এসকে কলেজ অফ নার্সিং, বোনাম বেঙ্কট চলমায়া গ্রুপ অফ ইনস্টিটিউশনস, কাকিনাডা ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইত্যাদি। উপর্যুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি ছাড়াও এই জেলায় অনেক বি. এড কলেজ, ফার্মা ও ইন্টারমিডিয়েট কলেজ আছে।
পূর্ব গোদাবরী জেলায় অনেক পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। এই কেন্দ্রগুলি গড়ে উঠেছে ঐতিহাসিক মন্দির, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও নার্সারিকে কেন্দ্র করে। অমলাপুরম, অন্নাবরম, অন্তরবেদী, দ্রাক্ষারামম, কোটিপল্লী, পীঠপুরম, রাজামুন্দ্রি ও সামালকোটায় অনেক ঐতিহাসিক মন্দির রয়েছে। এই মন্দিরের অনেকগুলিই ‘স্বয়ম্ভু ক্ষেত্রে’র মর্যাদা প্রাপ্ত এবং এগুলির নিজস্ব ‘স্থলপুরাণ’ (স্থানীয় ইতিহাস) রয়েছে।
কাকিনাডা থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে কাকিনাডা-ইয়ানাম রোডের ধারে কোরিঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য অবস্থিত। রাজামুন্দ্রি থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে কাডিয়াপুলঙ্কায় অনেক গাছের নার্সারি আছে। অন্যান্য চিত্তাকর্ষক স্থানের মধ্যে কোরিঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের ডলেসওয়ারামে স্যার আর্থার কটন সংগ্রহালয় উল্লেখযোগ্য। রাম্পার মারেদুমিল্লিতে ইকো পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। টুনি তলুপুলাম্মা লোভা পূর্ব গোদাবরী জেলার সবচেয়ে জনপ্রিয় মন্দির।[২০]
Sumba 10,711
United Arab Emirates 51,48,664