শেংগেন অঞ্চল

শেংগেন (শেনজেন) অঞ্চল
শেংগেন (শেনজেন) অঞ্চলের মানচিত্র      শেংগেন (শেনজেন) অঞ্চল      যেসব দেশের শেংগেন অঞ্চলে উন্মুক্ত সীমান্ত আছে।      ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরাষ্ট্র যেগুলি চুক্তির কারণে ভবিষ্যতে শেংগেন অঞ্চলে যোগদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
শেংগেন (শেনজেন) অঞ্চলের মানচিত্র

     শেংগেন (শেনজেন) অঞ্চল      যেসব দেশের শেংগেন অঞ্চলে উন্মুক্ত সীমান্ত আছে।

     ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরাষ্ট্র যেগুলি চুক্তির কারণে ভবিষ্যতে শেংগেন অঞ্চলে যোগদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
ধরনইউরোপীয় ইউনিয়নের উন্মুক্ত সীমান্ত অঞ্চল
সদস্য
প্রতিষ্ঠা২৬শে মার্চ, ১৯৯৫
আয়তন
• মোট
৪৫,৯৫,১৩১ কিমি (১৭,৭৪,১৯০ মা)
জনসংখ্যা
• 2021 আনুমানিক
453,324,255
• ঘনত্ব
৯৮.৭/কিমি (২৫৫.৬/বর্গমাইল)
জিডিপি (পিপিপি)2023 আনুমানিক
• মোট
বৃদ্ধি $25.926 trillion[]
• মাথাপিছু
বৃদ্ধি $56,997
জিডিপি (মনোনীত)2023 আনুমানিক
• মোট
বৃদ্ধি $19.213 trillion[]
• মাথাপিছু
বৃদ্ধি $42,237

শেংগেন অঞ্চল[][][][][] (Schengen Area; উচ্চারণ শুনুন) বা শেনজেন অঞ্চল অনেকগুলি ইউরোপীয় রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত একটি অঞ্চল যে রাষ্ট্রগুলি আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের পারস্পরিক সীমান্তগুলিতে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করে দিয়েছে। শেংগেন অঞ্চলটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৃহত্তর মুক্তি, নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার অঞ্চলের একটি উপাদান। আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশীদারি ভিসা নীতির অধীনে এটি একটিমাত্র আইনি এখতিয়ারভুক্ত অঞ্চল হিসেবে কাজ করে। লাক্সেমবার্গের শেঙেন শহরে ১৯৮৫ সালে স্বাক্ষরিত শেঙেন চুক্তি এবং ১৯৯০ সালে স্বাক্ষরিত শেঙেন সমঝোতার নামে এই অঞ্চলটির এরূপ নামকরণ করা হয়েছে।

২৭টি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে অদ্যাবধি ২৫টি রাষ্ট্র শেংগেন অঞ্চলের সাথে যুক্ত হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩১শে মার্চ বুলগেরিয়ারোমানিয়া অঞ্চলটিতে যোগ দিয়েছে, তবে তারা কেবলমাত্র সামুদ্রিক ও আকাশ সীমান্ত উন্মুক্ত করেছে, স্থলসীমান্ত নয় (ভবিষ্যৎ চুক্তিসাপেক্ষে যেগুলি খুলে দেওয়া হতে পারে)। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরাষ্ট্রগুলির মধ্যে শুধুমাত্র সাইপ্রাসআয়ারল্যান্ড শেংগেন অঞ্চলের অংশভুক্ত নয়। সাইপ্রাস আইনগতভাবে ভবিষ্যতে যোগ দিতে বাধ্য, তবে আয়ারল্যান্ড এই নীতি প্রত্যাহার করেছে এবং তার নিজস্ব ভিসা নীতি প্রয়োগ করছে। ডেনমার্ক বৃহত্তর মুক্তি, নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার অঞ্চল সংক্রান্ত নীতি প্রত্যাহার করলেও আন্তঃসরকারি ভিত্তিতে শেংগেন আকি (Schengen acquis) গ্রহণ করেছে, ফলে এটি শেংগেন অঞ্চলভুক্ত। কিন্তু এই প্রত্যাহারের কারণে ডেনমার্ক শেংগেন অঞ্চলে প্রযুক্ত আইন বা বিধানের সংযোজন বা বাতিলকরণের উপরে ভোটদানের ক্ষমতা রাখে না।[]

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরাষ্ট্রগুলির পাশাপাশি ইউরোপীয় মুক্ত বাণিজ্য সংঘের সমস্ত সদস্য রাষ্ট্র যথা আইসল্যান্ড, লিশটেনস্টাইন, নরওয়েসুইজারল্যান্ডও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে সংযুক্তিমূলক চুক্তি স্বাক্ষর করে শেংগেন অঞ্চলের অংশ হয়েছে। অধিকন্তু, চারটি অতিক্ষুদ্র রাষ্ট্র  – অ্যান্ডোরা,[] মোনাকো, সান মারিনোভ্যাটিকান সিটি – কার্যত শেংগেন অঞ্চলের সদস্য কেননা এগুলি আকারে খুবই ক্ষুদ্র এবং এগুলির পক্ষে সক্রিয়ভাবে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করা দুরূহ।[]

শেংগেন (শেনজেন) অঞ্চলের জনসংখ্যা ৪৫ কোটিরও বেশি এবং আয়তন ৪৫,৯৫,১৩১ বর্গকিলোমিটার। প্রায় ১৭ লক্ষ মানুষ প্রতিদিন একটি অভ্যন্তরীণ ইউরোপীয় সীমান্ত পেরিয়ে কাজ করার জন্য অন্য দেশে যাতায়াত করে এবং কিছু অঞ্চলে এরা কর্মশক্তির এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত গঠন করে। ২০১৫ সালে শেংগেন অঞ্চলে মোট ১৩০ কোটি সীমান্ত পারাপার ঘটেছিল। এর মধ্যে সড়কপথে ২ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি ইউরো সমমূল্যের ৫ কোটি ৭০ লক্ষটি আমদানি-রপ্তানির ঘটনা সংঘটিত হয়।[১০][১১][১২] ভৌগোলিক অবস্থা, বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব এবং অন্যান্য কারণের উপর নির্ভর করে শেংগেন অঞ্চলের মধ্য দিয়ে বাণিজ্যের ব্যয় ০.৪২% থেকে ১.৫৯% পর্যন্ত হ্রাস পায়। শেংগেন এলাকার বাইরের দেশগুলিও এ কারণে উপকৃত হয়।[১৩] শেংগেন অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলি শেংগেন চুক্তিভুক্ত নয় এমন দেশগুলির সাথে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ জোরদার করেছে৷[১৪]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "World Economic Outlook Database, October 2023"IMF.org। International Monetary Fund। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০২৪ 
  2. "ইউরোপ ভ্রমণ: শেঙ্গেন ভিসা আবেদনে নতুন নিয়ম, বাংলাদেশীদের জন্যও প্রযোজ্য হবে"বিবিসি। ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০২৪ 
  3. "শেঙেন চুক্তির সংস্কার চায় ফ্রান্স ও ইটালি"ডয়চে ভেলে। ২৭ এপ্রিল ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০২৪ 
  4. "আকাশ ও সমুদ্রপথে শেঙেনে যুক্ত হলো রুমানিয়া-বুলগেরিয়া"। কালের কণ্ঠ। ৩১ মার্চ ২০২৪। 
  5. "এক বছরে দুই লাখ বিদেশিকে নাগরিকত্ব দিয়েছে জার্মানি"ঢাকা ট্রিবিউন। ২৯ এপ্রিল ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০২৪ 
  6. "আর 'গোল্ডেন' ভিসা দেবে না পর্তুগাল"দৈনিক ইত্তেফাক। ৮ মার্চ ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০২৪ 
  7. "Schengen, your gateway to free movement in Europe" (পিডিএফ)Council of the European Union 
  8. "Schengener Übereinkommen"auswaertiges-amt.de (জার্মান ভাষায়)। German Ministry of Foreign Affairs। সংগ্রহের তারিখ ২ জুন ২০২৪ 
  9. "Tourist, Student and Work visa to Europe"। Swift Tourism। ২০১০। ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১১ [অকার্যকর সংযোগ]
  10. European Parliamentary Research Service (মার্চ ২০১৬)। "The economic impact of suspending Schengen" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৬-১৫ 
  11. European Council on Foreign Relations (২০১৬)। "The Future of Schengen"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৬-১৫ 
  12. "Schengen's economic impact: Putting up barriers"The Economist। ২০১৬-০২-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৬-১৫ 
  13. Felbermayr G, Gröschl J, Steinwachs T (২০১৬-০৪-২৭)। "Trade costs of border controls in the Schengen area"Centre for Economic Policy Research। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৬-১৫  See also: Felbermayr G, Gröschl J, Steinwachs T (মার্চ ২০১৭)। "The Trade Effect of Border Controls: Evidence from the European Schengen Agreement" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৬-১৫ 
  14. "The refugee crisis: Fixing Schengen is not enough"। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ 


উদ্ধৃতি ত্রুটি: "lower-alpha" নামক গ্রুপের জন্য <ref> ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="lower-alpha"/> ট্যাগ পাওয়া যায়নি