১৯৩০-এর দশক থেকে ১৯৭০-এর দশক পর্যন্ত রকেটের নকশা প্রণয়ন ও মানোন্নয়নে কাজ করে গেছেন।[২] তাকে রকেট বিজ্ঞানের জনক নামে অভিহিত করা হয়। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, বিংশ শতকের রকেট প্রকৌশলী হিসেবে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।[৩]
পোজেনের উইরসিৎজ এলাকার (বর্তমান - পোজনান, পোল্যান্ড) সংখ্যালঘু অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ফন ব্রাউন। শৈশবকালেই মহাকাশযান নিয়ে ব্যাপকভাবে আগ্রহী ছিলেন তিনি। ১৯২৯ সালে জার্মান রকেট সমিতি ভেরেই ফার রাউমসিফারতে (মহাকাশ ভ্রমণ সমিতি) যোগদান করেন। পরের বছরই বার্লিনের প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন।
১৯২০-এর দশক থেকে শুরু করে ১৯৩০-এর দশক পর্যন্ত ফন ব্রাউন ছিলেন জার্মানির রকেট উন্নয়ন প্রকল্পের প্রধান চরিত্র। অসম্ভব মেধাবী জার্মান বিজ্ঞানী বার্নার ফন ব্রাউন সর্বপ্রথম তরল-জ্বালানী ব্যবহার উপযোগী রকেট আবিষ্কার করেন। ১৯৩২ সালে ফন ব্রাউন জার্মান গোলন্দাজ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ও শক্তিশালী রকেট তৈরীতে মনোনিবেশ ঘটান। ১৯৩৪ সালের মধ্যেই তার বিভাগটি সাফল্যজনকভাবে ম্যাক্স ও মরিৎজ নামের দুইটি রকেট উৎপাদনে সক্ষম হয়। একই বছরে বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মহাকাশ প্রকৌশলে ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালে জার্মানির পক্ষে কাজ করেন। ১৯৩৭ সালে ফন ব্রাউন ও তার দলকে বাল্টিক উপকূলের পিনিমান্ডের গোপন এলাকায় স্থানান্তরিত করা হয়। ভি-২ রকেটের নকশা প্রণয়ন ও প্রভাব বিস্তারে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।[৪] লন্ডন শহরে ভি-২ ব্যালেস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়। এ বছরেই তিনি নাজি পার্টিতে যোগদান করেন। ১৯৪৩ সালে মিত্র বাহিনীর বোমারু বিমান পিনিমান্ডে এলাকায় আঘাত হানলে ভি-২ মিসাইলের উৎপাদন ও পরীক্ষণ কার্যক্রম জার্মানির মধ্যাঞ্চল হিসেবে পরিচিত নর্দহসেনের কাছাকাছি মিতেলবাউ এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। মাটির নিচে কারখানা স্থাপিত হয় ও দাস শ্রমিকদের মাধ্যমে উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালিত হতো। ১৯৪৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে ইউরোপকে লক্ষ্য করে প্রথমবারের মতো ভি-২ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। হাজারো হাজারো নিরীহ সাধারণ নাগরিক ভি-২ আক্রমণের শিকারে পরিণত হয়। এছাড়াও, রকেট কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কর্মরত হাজারো কয়েদী রকেট উৎপাদনে নিহত হয়েছিলেন।
যুদ্ধ পরবর্তীকালে তিনিসহ কিছুসংখ্যক নির্বাচিত রকেট উন্নয়ন দলের সদস্যকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নেয়া হয় ও তাকে অত্যন্ত গোপণীয় অপারেশন পেপারক্লিপের সদস্য করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীরআইআরবিএম প্রকল্পে কাজ করেন। এ প্রকল্পটি নাসা কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত ছিল। নাসার নিয়ন্ত্রণে থেকে নতুন প্রতিষ্ঠিত মার্শাল স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের পরিচালক পদে আসীন হন ও স্যাটার্ন-৫ এর প্রধান রূপকার ছিলেন। এর মাধ্যমে অ্যাপোলো ১১ মহাকাশযানকে চাঁদে প্রেরণের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।[৫]
নাসা’র একটি সূত্র অনুযায়ী বলা হয়, কোন সন্দেহ নেই যে তিনি (ফন ব্রাউন) রকেট বিজ্ঞানের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী।[৬] তার এ অসম্ভব রাজকীয় প্রচেষ্টার ফলে স্যাটার্ন-৫ বুস্টার রকেটের সাহায্যে ভূমি থেকে চাঁদে প্রথম নভোচারী প্রেরণে সহায়তা করেছিল ১৯৬৯ সালের জুলাই মাসে।[১][৭]
↑ কখ"Biography of Wernher von Braun in German" (German ভাষায়)। Deutsches Historisches Museum। ২০১৪-০৮-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-১৫।উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অচেনা ভাষা (link)
↑"Wernher von Braun, a biography" (German ভাষায়)। who's who.de। ২০১৪-০৮-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৪।উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অচেনা ভাষা (link)
↑"Biography of Wernher Von Braun"। MSFC History Office। NASA Marshall Space Flight Center। ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
Ordway, Frederick I., III (২০০৩)। "The Rocket Team: Apogee Books Space Series 36 (Apogee Books Space Series) (Hardcover)"। Collector's Guide Publishing Inc; Har/DVD edition (September 1, 2003)। আইএসবিএন1-894959-00-0।
Petersen, Michael B. (২০০৯)। Missiles for the Fatherland: Peenemuende, National Socialism and the V-2 missile। Cambridge Centennial of Flight। New York: Cambridge University Press। আইএসবিএন978-0-521-88270-5। ওসিএলসি644940362।
Warsitz, Lutz (২০০৯)। The First Jet Pilot: The Story of German Test Pilot Erich Warsitz। Trans. Geoffrey Brooks। Barnsley, Yorkshire, England: Pen and Sword Books। আইএসবিএন978-1-84415-818-8। ওসিএলসি244653641। Includes von Braun’s experiments with rocket aircraft.
Ward, Bob (২০০৫)। Dr. Space: The Life of Wernher von Braun। Annapolis, MD, United States: Naval Institute Press। আইএসবিএন978-1-59114-927-9।